img

কুপ্রস্তবে রাজি না হওয়ায় পুত্রবধূর মাথায় আঘাত করে চুল কেটে দিল লম্পট শ্বশুর

প্রকাশিত :  ০৬:৪০, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২০

কুপ্রস্তবে রাজি না হওয়ায় পুত্রবধূর মাথায় আঘাত করে চুল কেটে দিল লম্পট  শ্বশুর

জনমত ডেস্ক: সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় নার্গিস খাতুন (৩০) নামে এক গৃহবধূ শ্বশুরের কুপ্রস্তবে রাজি না হওয়ায় মাথায় কাচি দিয়ে আঘাত এবং চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার উধুনিয়া ইউনিয়নের মহেশপুর গ্রামে। 

নার্গিস ওই গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী ও একই গ্রামের ইব্রাহিমের আলীর মেয়ে। পরে আহতাবস্থায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

চিকিৎসাধীন নার্গিস শ্বশুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে করেছি। বিয়ের পর থেকেই শ্বশুর হবিবরের কুনজর পড়ে। শ্বাশুড়ি অনেকদিন ধরে অসুস্থ থাকায় শ্বশুর বিভিন্ন সময় আকার ইঙ্গিতে কুপ্রস্তাব দিলে গুরুত্ব দিতাম না। কিন্তু গত রোববার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাতে আমার স্বামী ঘরে না থাকার সুযোগে তিনি ঘরে ঢুকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। এ সময় কাচি দিয়ে আমার মাথায় আঘাত করে। পরে আমার চিৎকারে বাড়ির পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে পালিয়ে যায়। পাশাপাশি বিষয়টি ভিন্নখাতে নেয়ার জন্য আমার শ্বশুর, ভাসুর জামাল ও শাহাদত বাড়িঘর ভাংচূর করে আমাকে বেদরক মারধর ও মাথার চুল কেটে দেয়।’

এ বিষয়ে নার্গিসের স্বামী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভালোবেসে নিজের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করার কারণেই তার বাবা তার ওপর ক্ষুব্ধ। এ কারণে তাদের ওপর প্রায়ই নির্যাতন চালায় বাবাসহ পরিবারের অন্যরা।’ 

এলাকাবাসী জানান, মেয়েটার বিয়ে হবার পর থেকেই তাকে শ্বশুর হবিবরসহ পরিবারেব লোকজন নানাভাবে অত্যাচার করত। হবিবরের অত্যাচারে গ্রামের মানুষও অতিষ্ঠ। এর আগেও গ্রামে নানা অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। 

নার্গিসের বাবা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই আমার মেয়ের উপর শ্বশুর বাড়ির লোকেরা যৌতুকের জন্য নির্যাতন চালিয়ে আসছে, যা গ্রামের লোকজন সবাই জানে। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় সালিশ হলেও তারা মানেনি। হঠাৎ ১৩  সেপ্টেম্বর রাতে আমার মেয়ের জামাই না থাকার সুযোগে হবিবর আমার মেয়েকে ধর্ষণ ও হত্যা চেষ্টা চালায়। এ বিষয়ে আমরা মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

এ ব্যাপারে উধুনিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেন, ‘নার্গিসের শ্বশুর বাড়ির লোকেরা যৌতুকের জন্য দীর্ঘদিন ধরেই চাপ প্রয়োগ করে আসছিল এবং বিভিন্ন সময় নার্গিস ও তার স্বামী নির্যাতনের শিকারও হয়েছেন। এমনকি নিজের ছেলের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলাও দায়ের করেছিলেন হবিবর। এসব বিষয় নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে বৈঠকও হয়েছে। কিন্তু সে কোনো বিচার মানে না।’

চাঞ্চল্যকর ঘটনায় উল্লাপাড়া থানার ওসি দিপক কুমার দাস জানান, ‘ঘটনা জানতে পেরে অন্যতম অভিযুক্ত হবিবর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে এখনও মামলা হয়নি। মামলা হলে সকল আইনগত প্রক্রিয়া শেষ করে বাকিদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।’

img

২৩ নাবিকসহ কুতুবদিয়ায় নোঙর করল এমভি আবদুল্লাহ

প্রকাশিত :  ১৪:৫০, ১৩ মে ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৯:৩৩, ১৩ মে ২০২৪

সোমালিয়ান জলদস্যুদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত ২৩ নাবিককে নিয়ে দেশে পৌঁছাল বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। দীর্ঘ যাত্রা শেষে সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে জাহাজটি। বিষয়টি জানিয়েছেন জাহাজের মাস্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ।

কুতুবদিয়ায় চুনাপাথরের কিছু চালান খালাস করে জাহাজটি ১৫ মে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছবে। সেখানে বাকি মালামাল খালাস করার পর বন্দর জেটিতে আসবে এমভি আব্দুল্লাহ। এর আগে মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকালে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত নাবিকদের চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হবে।

কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, এমভি আবদুল্লাহ বর্তমানে কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে। জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত নাবিকদের লাইটার জাহাজে মঙ্গলবার সরাসরি সদরঘাট কেএসআরএম জেটিতে নিয়ে আসা হবে। সেখানেই তাদের বরণ করা হবে।

তিনি বলেন, নাবিকদের জেটিতে বরণ করার জন্য কেএসআরএমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। নাবিকদের স্বজনদের কেউ কেউ এ সময় জেটিতে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানা গেছে। তারা নাবিকদের বরণ করে নেবেন।

জাহাজটির পরিচালনা প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের দায়িত্ব নেবে নতুন একটি নাবিক দল। বর্তমান নাবিকরা দীর্ঘ ভ্রমণ ও জিম্মিদশার ট্রমা কাটিয়ে ওঠার জন্য ছুটিতে যাবেন। তবে তারা মঙ্গলবারই ছুটি পাচ্ছেন কিনা এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এরপর থেকে নানা শঙ্কায় ছিলেন জিম্মি নাবিকদের স্বজনরা। দীর্ঘদিন পর তাদের অপেক্ষার প্রহর ফুরাল।

শিপিং কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাহাজের নাবিকরা সুস্থ আছেন। কুতুবদিয়ায় আসার পর নাবিক ও ক্রু সদস্যদের একটি নতুন ব্যাচ জাহাজটিতে পাঠানো হবে। জাহাজে বর্তমানে যে ২৩ জন ক্রু আছেন তাদের আগামীকাল মঙ্গলবার একটি লাইটার জাহাজে করে কেএসআরএম লাইটার জেটি সদরঘাটে আনা হবে। সেখানে তাদের বরণ করবেন স্বজনরা। সেখান থেকে তারা নিজ নিজ বাড়িতে যাবেন।

এমভি আব্দুল্লাহ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আমদানি করা ৫৬ হাজার টন চুনাপাথর নিয়ে এসেছে। কার্গোর কিছু অংশ কুতুবদিয়ায় খালাস করা হবে এবং বাকি পণ্য খালাসের জন্য জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আসবে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, এমভি আবদুল্লাহ ৫০ হাজার টন কয়লা নিয়ে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে গত ৪ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা হয়। ১৯ মার্চ আবদুল্লাহ আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছার কথা ছিল।

মাপুতু থেকে রওনা হওয়ার চার দিন পর গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল।    

সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার দীর্ঘ ৩৩ দিন পর গত ১৩ এপ্রিল ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ মুক্ত হয়। মুক্ত হওয়ার আট দিনের মাথায় গত ২১ এপ্রিল বিকালে নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ দুবাই পৌঁছে। জাহাজটি দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরের জেটিতে ভিড়ে ২২ এপ্রিল। এরপর ওই বন্দরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা খালাসের পর নতুন ট্রিপের পণ্য (পাথর) লোড করতে ইউএইর মিনা সাকার বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় জাহাজ। সেখানে ৫৬ হাজার টন চুনা পাথর নিয়ে এমভি আবদুল্লাহ গত ৩০ এপ্রিল দুবাই মিনা সাকার বন্দর থেকে দেশের পথে রওনা হয়।