img

গরুর মাংস বেশি খেলে বাড়বে স্বাস্থ্যঝুঁকি

প্রকাশিত :  ০৮:০০, ০৩ আগষ্ট ২০২০

গরুর মাংস বেশি খেলে বাড়বে স্বাস্থ্যঝুঁকি

জনমত ডেস্ক : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বিশ্বে যে পরিমাণ অ্যান্টিবায়োটিক তৈরি হয় তার অর্ধেকই ব্যবহৃত হয় পশু উৎপাদনে। আর মানুষের জন্য তা বয়ে আনছে ব্যাপক স্বাস্থ্যঝুঁকি।

মাংস এক ধরনের প্রোটিন জাতিয় খাবার। যা পানি, প্রোটিন ও চর্বির সমন্নয়ে তৈরি। কোষ তৈরির জন্য প্রতিদিন আমাদের একটু প্রোটিন খাওয়া প্রয়োজন। তবে তা অবশ্যই পরিমিত হওয়ার উচিত।

প্রাপ্তবয়স্ক একজন মানুষ প্রতিদিন প্রায় ২৮ গ্রাম মাংস খেতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত মাংস খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ঈদ উপলক্ষে প্রচুর গরুর মাংস খাওয়া হয়। কিন্তু অতিরিক্ত মাংস খেলে আমাদের শরীরে অনেক ক্ষতিকর প্রভাব পরে। তাই মাংস খেতে হবে বুঝে শুনে।

পুষ্টি ও ক্যান্সারের ওপর ইউরোপিয়ান প্রসপেকটিভ ইনভেস্টিগেশন (ইপিআইসি) নামে একটি সংস্থা গবেষণা চালায়। মাংস খাওয়ার সঙ্গে হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন রোগ ও ক্যান্সারের সম্পর্ক রয়েছে বলে গবেষণায় দাবি করা হয়।

এই গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী আসুন জেনে নিই অতিরিক্ত মাংস খাওয়ার কিছু কুফল:

ক্যান্সার:

সম্প্রতি দেখা যায়, অতিরিক্ত মাংস, বিশেষ করে লাল মাংস খাওয়ার কারণে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেক অংশে বেড়ে যায়। এতে ফুসফুস ক্যান্সার, খাদ্যনালীর ক্যান্সার, লিভার ক্যান্সার, মলাশয় ক্যান্সার ও অগ্নাশয় ক্যান্সার হতে পারে।

হৃৎপিণ্ডের রোগ:

হৃৎপিণ্ডের বিভিন্ন রোগের সঙ্গে মাংস খাওয়ার অনেক সম্পর্ক রয়েছে। বেশি মাংস খেলে রক্তচাপ বাড়তে পারে, স্ট্রোক, হার্ট ফেইল হতে পারে। ৪৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সের মধ্যে নিয়মিত মাংস খাওয়ার কারণে হৃৎপিণ্ডের রোগ হওয়ার ঝুঁকি ৩ গুণ বেড়ে যায়। হারর্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ১ মিলিয়ন মানুষের ওপর একটি গবেষণা চালায়। এ গবেষণায় দেখা যায়, যারা নিয়মিত ৫০ গ্রাম বা এর চেয়ে বেশি মাংস খান, তাদের হার্টের অসুখ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় মধ্যে ৪২% এবং ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে ১৯%।

পশুকে খাওয়ানো অ্যান্টিবায়োটিকে মানুষের ক্ষতি:

ওজন বৃদ্ধি ও রোগমুক্ত রাখার জন্য পশুকে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ানো হয়। এসব পশুর মাংস খেলে মানুষের শরীরে এই অ্যান্টিবায়োটিক প্রবেশ করে যা অত্যন্ত ক্ষতিকর।

পশুকে খাওয়ানো হরমনে মানুষের ক্ষতি:

১৪ মাসের মধ্যে সদ্য জন্ম নেওয়া ৩৭ কেজি ওজনের একটি বাছুরকে ৩ থেকে ৪ মণ ওজনে পরিণত করার জন্য বিভিন্ন প্রোটিন জাতিও খাবার ও হরমনাল ওষুধ খাওয়ানো হয়। যা পশুর শারীরিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

সাধারণত গবাদি পশুকে Estradiol, Progestereone, Zeranol, Trenbolone Acetate নামে হরমনাল ওষুধ খাওয়ানো হয়। এছাড়া ওজন বাড়ানোর জন্য Melengesterol Acetate নামে এক ধরনের হরমোনাল ওষুধ খাওয়ান হয়। এমন পশুর মাংস খেলে মানুষের শরীরে এসব হরমোন প্রবেশ করে। এতে দ্রুত মানুষের ওজন বেড়ে যেতে পারে, ক্যান্সার হতে পারে। এছাড়া অল্প বয়সে প্রজনন ক্ষমতা অর্জন বা স্পার্ম এর সংখ্যা কমে যেতে পারে।

অন্যান্য সমস্যা:

অতিরিক্ত মাংস খাওয়া হৃৎপিণ্ডের সমস্যা ছাড়াও বিভিন্ন রোগের কারণ হতে পারে:

• ব্রেইনের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়

• স্মৃতি শক্তি ও চিন্তা শক্তি কমে যায়।

• শরীরের ওজন বাড়তে পারে।

• পশুদের খাওয়ানো অ্যান্টিবায়োটিক মানুষের শরীরে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে।

• গরুর মাংস কোষ্ঠকাঠিন্যের (constipation) একটি অন্যতম কারণ।

তাই সুস্থতার জন্য মাংস খেতে হবে পরিমিত। মাংস খাওয়ার সময় অবশ্যই চর্বি বাদ দিয়ে খাওয়া উচিত। তাহলে ঝুঁকি কিছুটা কমে।

img

গরমে বাইক চালাতে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

প্রকাশিত :  ১০:৩০, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে এই প্রচণ্ড রোদে অনেককে বাইরে বের হতে হচ্ছে । অনেকের ক্ষেত্রে চলাচলের জন্য মাধ্যম হলো বাইক বা মোটর সাইকেল। সূর্যের কড়া তাপে তাদের বাইক চালাতে হয়। কেবল রোদই নয়, সেইসঙ্গে থাকে গরম বাতাসও। যারা প্রতিদিন তীব্র রোদে বাইক চালাচ্ছেন, তাদের কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হবে।

হেলমেট ব্যবহার করুন

বাইক চালানোর সময় নিরাপত্তার জন্য তো বটেই, এছাড়া রোদ থেকে বাঁচার জন্যও হেলমেট ব্যবহার করুন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এগুলোতে কালার চেঞ্জিং গ্লাস ব্যবহার করা হয়ে থাকে, যে কারণে তীব্র রোদে চোখও আরাম পায়। সেইসঙ্গে ফুলহাতা ও সুতির পোশাক পরলে রোদের তাপ থেকেও বাঁচতে পারবেন।

ফুয়েল ট্যাঙ্ক

গরমের সময়ে বাইকের ফুয়েল ট্যাঙ্ক পুরোপুরি ভরবেন না। কারণ তাপ সৃষ্টি হলে ডিজেল কিংবা পেট্রল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তেল লিক করলে তা মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তাই গরমের সময়ে ফুয়েল ট্যাঙ্কের অর্ধেক বা চার ভাগের তিন ভাগ তেল নিন।

হাইড্রেটেড থাকুন

মোটরসাইকেল হোক বা সাইকেল, গিয়ারের চাপে গরম অসহ্য হবেই। এজন্য সঙ্গে পানি রাখুন। তীব্র রোদে গাড়ি চালালে ত্বকের ক্ষতি হয়। সেক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেন সানস্ক্রিন। গরমে দীর্ঘসময় বাইরে থাকলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই হিট স্ট্রোকের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নিন। 

বাইকের কুল্যান্ট নিয়ে ভাবুন

গরমের সময় বাইকের কুল্যান্ট ঠিক আছে কী না দেখা জরুরি। এই কুল্যান্ট আসলে কী। কুল্যান্ট এক ধরনের তরল যা বাইকের ইঞ্জিনের মধ্যে তাপের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। সোজা ভাষায় এটি বাইকে কুলিং সিস্টেম হিসেবে কাজ করে। অ্যান্টিফ্রিজ ও পানির মিশ্রণে তৈরি এই তরল গরমে বাইক সুরক্ষিত রাখে। এ কুল্যান্টের অবস্থা পর্যবেক্ষণে রাখুন। কুল্যান্ট খারাপ হলে ইঞ্জিনে সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ইলেকট্রিক পার্টস

তাপদাহে বাইকের ইলেকট্রিক পার্টস ক্ষতি হতে পারে। কমিউটার মোটরসাইকেল হোক অথবা স্পোর্টস বাইক সব রকম টু হুইলারে থাকে একাধিক ইলেকট্রিক পার্টস। তাই রাইড করার সময় অতিরিক্ত ফিউজ সঙ্গে রাখতে পারেন। ব্যাটারির বিষয়টিও মনে রাখবেন।

টায়ারের ক্ষতি হতে সাবধান

গরমে টায়ার প্রেশার সাধারণ সময়ের থেকে একটু কম রাখা ভালো। চাকায় যদি বাতাসের বেগ বেশি থাকে তাহলে গরমকালে চাকা ফেটে যেতে পারে। যারা হাই স্পিডে বাইক চালান তাদের চাকা সরাসরি রাস্তার সংস্পর্শে আসলে অত্যধিক হিট তৈরি হয়। তাই সাবধান না থাকলে টায়ারের ক্ষতি হতে পারে।

ফুয়েল ট্যাংক

গরমে ফুয়েল ট্যাংকের দিকে বাড়তি নজর দিন। গরমের সময় ফুয়েল ট্যাংক সম্পূর্ণ পূর্ণ করা উচিত নয়। কারণ তাপ সৃষ্টি হলে পেট্রল কিংবা ডিজেল দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। গ্রীষ্মকালে ফুয়েল ট্যাংক ভরা থাকলে জ্বালানি উপচে পড়ে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই গরমকালে ফুয়েল ট্যাংক অর্ধেক অথবা চার ভাগের তিন ভাগ পূর্ণ করার চেষ্টা করুন।

চেইন লুব্রিকেট

গরমের সময় বাতাসে ধুলাবালি একটু বেশি থাকে। তাই কিছুদিন পর পর বাইকের চেইন পরিষ্কার ও লুব্রিকেট করার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এটি করার ফলে বাইক আরও মসৃণভাবে চালানো যায়। লুব্রিকেটিং করার আগে বাইকের সব মোটরপার্টস অবশ্যই পরিষ্কার করে নিতে হবে।