img

শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ শুরু

প্রকাশিত :  ১৬:০৫, ২৯ এপ্রিল ২০২১

শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজ শুরু

জনমত ডেস্ক: শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলে তিনজন বিনিয়োগকারী কর্তৃক নির্মিতব্য শিল্প প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজের শুভ- সূচনা করা হয় আজ। প্রতিষ্ঠানসমূহ হল পলমল গ্রুপের আয়েশা ক্লথিং লিমিটেড ও আসোয়াদ কম্পোসিট লিমিটেড, গ্রেট ওয়াল সিরামিকস লিমিটেড এবং ডাবল গ্লেজিং লিমিটেড।

করোনা মহামারীর কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে এবং সীমিত পরিসরে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী সভাপতিত্ব করেন। সভায় মৌলভীবাজার জেলার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসানসহ বিনিয়োগকারীগণ উপস্থিত ছিলেন। 

শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চল মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুরে ৩৫২ একর জমির উপর অবস্থিত যার পূর্বে সিলেট, পশ্চিমে হবিগঞ্জ, উত্তরে সুনামগঞ্জ ও দক্ষিণে মৌলভীবাজার জেলা। শিল্পের বিকেন্দ্রীকরণ ও প্রায় ৪৪,০০০ লোকের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ কর্মসংস্থানে অর্থনৈতিক অঞ্চলটি গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। ০৬টি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে ২৩১ একর জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে যেখানে ১৯টি শিল্প কলকারখানা নির্মাণ করা হবে।  উক্ত ০৬টি প্রতিষ্ঠান প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে উল্লিখিত চারটি প্রতিষ্ঠান প্রায় ৪২ একর জমিতে শিল্প কারখানা নির্মাণকাজ শুরু করেছেন। এতে ১১৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে সাড়ে পাঁচ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। এছাড়া অপর দুটি প্রতিষ্ঠান হল আব্দুল মোনেম লিমিটেড এবং ডিবিএল গ্রুপের ফ্ল্যামিঙ্গো ফ্যাশন, তাদেরও পরিকল্পনা রয়েছে এ বছরের মধ্যে শিল্প নির্মাণের। এ অঞ্চলে ইতোমধ্যে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানি সংযোগ প্রদানের কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া অভ্যন্তরীণ সড়ক নির্মাণের কাজ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

সভাপতির বক্তব্যে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, করোনাকালেও বেজা তার কাজের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। সিলেটের প্রথম অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে এটি অর্থনৈতিক গতিধারায় পুরোধা হয়ে উঠবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চলের হাত ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত স্বমহিমায় অর্থনীতির সঙ্গে যুক্ত হবে। এতে প্রমাণিত হয় যে বাংলাদেশ বিনিয়োগ-বান্ধব সুস্থ পরিবেশ গড়ে তুলতে সমর্থ হয়েছে এবং বিশ্বের কাছে উন্নয়নের একটি রোল মডেল স্থাপন করেছে। তিনি উল্লেখ করেন, এর ফলে এদেশে শিল্পায়নের অভূতপূর্ব বিপ্লব সাধিত হবে এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যসমূহ পূরণ হবে। তিনি কাজ শুরু করার জন্য বিনিয়োগকারীদের অভিনন্দন জানান।  প্রতিষ্ঠানসমূহ দ্রুত শিল্প স্থাপনের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরী করবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন। 

পলমল গ্রুপের পরিচালক কে এম মাহতাব উদ্দিন বলেন, তারা এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে সবার আগে শিল্প নির্মাণ করতে পেরে আনন্দিত, তিনি আশা করেন আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে তাদের শিল্প নির্মাণ কাজ শেষ হবে। 

গ্রেট ওয়াল সিরামিকস লিমিটেড-এর নির্বাহী পরিচালক মো: খালেদুজ্জামান বলেন, এ সিরামিক ইন্ড্রাস্টি হবে অন্যতম আধুনিক শিল্প যা ১০০%কমপ্লায়ান্স নিশ্চিত করে নির্মাণ করা হবে। তিনি উল্লেখ করেন তার প্রতিষ্ঠান এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে দুই হাজারের অধিক লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। 

ডাবল গ্লেজিং লিমিটেড-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যারিষ্টার মইনুল ইসলাম বলেন, তাদের শিল্প পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে কারন উৎপাদিত পণ্য হবে ১০০% এনার্জি এফিসিয়েন্ট ।  

মৌলভীবাজার জেলার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান বলেন, অর্থনৈতিক অঞ্চলসমুহে দক্ষ এবং চাহিদাভিত্তিক জনবল তৈরীর জন্য ইতোমধ্যে নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের হাত ধরে এ জনপদ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন এবং বিনিয়োগকারীদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার আশ্বাস দেন। 

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন পলমল গ্রুপের পরিচালকবৃন্দ আদনান ইমতিয়াজ ও জনাব নাইম এবং ডাবল গ্লেজিং লিমিটেডের অপারেশন্স ডিরেক্টর মিসেস মনোজাহা পলি। 

অনুষ্ঠান শেষে মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী চারটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজের শুভ সূচনা করেন। সভায় মৌলভীবাজার চেম্বার অফ কমার্সের সদস্যবৃন্দসহ জেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তাগণ এবং সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

img

মৌলভীবাজারে কালবৈশাখীর তাণ্ডব

প্রকাশিত :  ১৯:২৯, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

সংগ্রাম দত্ত: আজ ২৮ শে এপ্রিল বিকাল প্রায় ৫ ঘটিকার দিকে শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজার উপজেলার উপর দিয়ে প্রবল ঝড়বৃষ্টির বয়ে যায়। ফলে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘর বাড়ি, গাছপালা, বিদ্যুতের খুঁটি ইত্যাদি বিনষ্ট হয়।

ঝড়ের পাশাপাশি অল্প পরিমাণে শিলাবৃষ্টিও হয়েছে, শিলাবৃষ্টি ও ঝড়ে হাওরের বোরো ফসল ও সবজিরও ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ায় গাছ পড়ে সিলেটের সাথে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।

রোববার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে কালবৈশাখী ঝড়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান এলাকায় রেললাইনের ওপর গাছ ভেঙে পড়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গাছ সরিয়ে নেয়ার পর সন্ধ্যা ৭টা ৪২ মিনিটের দিকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

শ্রীমঙ্গলে সিলেট অভিমুখী জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরা জানান, রোববার বিকেলে হঠাৎ করেই কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। শ্রীমঙ্গল স্টেশনে জয়ন্তিকা ট্রেন আসার পরপরই স্টেশনের পাশে থাকা গাছ ভেঙে ট্রেনের ওপর পড়ে।

ঝড়ে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে বেশ ক্ষতি হয়েছে। বনের ভেতর দিয়ে যাওয়া আখাউড়া-সিলেট রেলপথের একাধিক স্থানে গাছ ভেঙে পড়েছে। এর ফলে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন ট্রেনের কয়েক শ’ যাত্রী। তারা আরও জানান, রেললাইনের ওপর থেকে ভেঙে পড়া গাছ সরিয়ে নেয়ার পর সন্ধ্যা ৭টা ৪২ মিনিটে ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।

কমলগঞ্জের ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমেদ বলেন, ‘ঝড়ে সিলেট-শ্রীমঙ্গল রেললাইনের ওপর কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়ে। এতে বিকেল থেকে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের ট্রেন যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। গাছ সরানোর পর সন্ধ্যা ৭টা ৪২ মিনিটের দিকে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।’

মৌলভীবাজার বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিস ও আমরা বন বিভাগের সদস্যরা মিলে লাইনের ওপর ভেঙে পড়া গাছ সরানোর পর ট্রেন যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়।’

এদিকে, শ্রীমঙ্গলে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ে ও গাছ উপড়ে পড়ায় ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কসহ অভ্যন্তরীণ অনেক সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে উপজেলাজুড়ে ৫০ হাজার গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।

শ্রীমঙ্গলের আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান, ঝড়টির গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৮৯ কিলোমিটার। ঝড়ের পিক টাইমের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় ৬ মিনিট।

শ্রীমঙ্গল কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা রকেন্দ্র শর্মা বলেন, ‘হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড় ও অল্প শিলাবৃষ্টি হয়েছে। আমরা মাঠপর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বলতে পারব কৃষির কেমন ক্ষতি হয়েছে।’