img

চসিকে ছিটানো কীটনাশকে মশা মরে না, পরীক্ষায় প্রমাণিত

প্রকাশিত :  ০৭:৪৭, ০৪ আগষ্ট ২০২১

চসিকে ছিটানো কীটনাশকে মশা মরে না, পরীক্ষায় প্রমাণিত

জনমত ডেস্ক: মশক নিধনে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) দেওয়া পাঁচটি কীটনাশকের কার্যকারিতা যাচাই করেছে টেকনিক্যাল কমিটি। এর মধ্যে একটি কীটনাশকের কার্যকারিতা শতভাগ হলেও বাকি চারটির ফল আশানুরূপ নয়। এদিকে কম কার্যকারিতার ওই চার কীটনাশকের দুইটি বর্তমানে মশক নিধনে ব্যবহার করছে চসিক, যেগুলোর কার্যকারিতা মাত্র ৮ ও ১২ শতাংশ। তাই সেগুলো বাদ দিয়ে শতভাগ কার্যকর কীটনাশকটি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে মশক নিধনের জন্য কার্যকর ওষুধ নিশ্চিতে গঠিত টেকনিক্যাল কমিটি।

এ বিষয়ে টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়াবলেন, ‘মশক নিধনের জন্য কার্যকর ওষুধ নিশ্চিতে আমাদেরকে চসিক থেকে পাঁচটি কীটনাশকের নমুনা দেওয়া হয়। এসব নমুনা পরীক্ষা করে মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) দুপুরে চসিক মেয়রের কাছে পরীক্ষার ফলাফল উপস্থাপন করেছি। পরীক্ষায় একটি কীটনাশকের কার্যকারিতা শতভাগ পেয়েছি। হারবাল ওই কীটনাশকটি ব্যবহার করে দেখেছি, তাতে মশার লার্ভা শতভাগ নিধন হচ্ছে। শুধু লার্ভা নয়, এডিস ও অ্যানোফিলিস মশাও শতভাগ নিধন হয়েছে। আমরা এই কীটনাশকটি ব্যবহারের জন্য চসিককে পরামর্শ দিয়েছি।’

কীটনাশকগুলোর নাম জানতে চাইলে বলতে রাজি হননি ড. রবিউল। তিনি বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট কীটনাশক প্রতিষ্ঠানগুলো যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেজন্য নাম বলতে পারছি না। চসিক থেকে আমাদেরকে পাঁচটি কীটনাশকের নমুনা দেওয়ার পর আমরা সেগুলো নমুনা এক, দুই—এভাবে কোডিং করি। এরপর সেই ভিত্তিতে কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করি।’

টেকনিক্যাল কমিটি সূত্রে জানা গেছে, কীটনাশকের কার্যকারিতা পরীক্ষা ৯১ শতাংশ আর্দ্রতা এবং ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার একটি পরীক্ষাগারে পরিচালিত। এডিস ও অ্যানোফিলিস দুই ধরনের মশা এবং লার্ভার ওপর এসব কীটনাশকের কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় ফগিংয়ের চেয়ে স্প্রে করে বেশি কার্যকারিতা পেয়েছে টেকনিক্যাল টিম।

ফলাফলে দেখা যায়, একটি কীটনাশক পরীক্ষাগারে রাখা ৫০টি লার্ভার ওপর ব্যবহার (সুপারিশ করা প্রয়োগমাত্রা প্রতি লিটারে ১৬ দশমিক ৯ মিলিলিটার) করে দেখা যায়, দুই ঘণ্টা পর শতভাগ মারা গেছে। শতভাগ কার্যকর কীটনাশকটিই প্রয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে।

১০০টি মশার ওপর প্রয়োগ করে দেখা যায়, ওই কীটনাশকটি সে ক্ষেত্রেও শতভাগ কার্যকর। দ্বিতীয় কীটনাশকটি সুপারিশ করা প্রয়োগমাত্রায় ব্যবহার করে দেখা যায়, তাতে ৩৪ শতাংশ মশার মৃত্যু হয়েছে। সুপারিশ করা প্রয়োগমাত্রার ১০ গুণ বেশি ব্যবহার করেও দ্বিতীয় কীটনাশকে মশার মৃত্যুহার সর্বোচ্চ ৭৪ শতাংশ পর্যন্ত পাওয়া গেছে। অপর তিনটির মধ্যে দুইটি কীটনাশক ব্যবহার করে আট শতাংশ কার্যকারিতা পাওয়া যায়। এই দুইটি কীটনাশক সুপারিশকৃত মাত্রার ১০ গুণ বেশি প্রয়োগ করেও এর বেশি কার্যকারিতা পাওয়া যায়নি। পঞ্চমটিতে ১২ শতাংশ কার্যকারিতা পাওয়া যায়। চতুর্থ ও পঞ্চম কীটনাশক বর্তমানে সিটি করপোরেশন মশক নিধনে ব্যবহার করছে। যে দুইটি কীটনাশক প্রয়োগ করে টেকনিক্যাল টিম যথাক্রমে ৮ ও ১২ শতাংশ কার্যকারিতা পেয়েছে।

এর আগে নগরে মশক নিধনে ব্যবহৃত ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর গুণগত মান পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় চসিক। এর অংশ হিসেবে গত ১৪ মার্চ ব্যবহৃত ওষুধ পরীক্ষা করতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীন আখতারকে অনুরোধ করে। এরপর ২৪ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রাণ রসায়ন এবং অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. রবিউল হাসান ভূঁইয়াকে আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন চবি উপাচার্য।

গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন—রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. তাপসী ঘোষ রায়, ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. শহীদুল ইসলাম, মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. এইচ এম আবদুল্লাহ আল মাসুদ ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহেদ চৌধুরী। কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মাদ ওমর ফারুক।

গত ৫ জুলাই থেকে পুরোদমে কাজ শুরু করেন গবেষকরা। এরপর টানা ২৫ দিন ৯৯টি এলাকা পরিদর্শন করে নগরের ৫১টি মশার লার্ভা সংগ্রহ করেন। ফলাফলে ৫১টি স্থানের মধ্যে ৩৩টিতে এডিসের লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ৩৯টি স্থানে অ্যানোফিলিস লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া যায়। ২২টি স্থানে এডিস ও অ্যানোফিলিস দুই ধরনের লার্ভার উপস্থিতি পাওয়া যায়।

img

রাজবাড়ীতে ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে চালক নিহত

প্রকাশিত :  ০৯:৩৭, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

রাজবাড়ীতে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে কাভার্ডভ্যানের চালক মো. আব্দুর রহিম (৩৫) নিহত হয়েছেন। 

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ভোর সোয়া ৫টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের সদর উপজেলার বসন্তপুর ইউনিয়নে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত চালক আব্দুর রহিম ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানার দনিয়া ইউনিয়নের দোলাইরপাড় গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে।

দুর্ঘটনায় আহত সারোয়ার হোসেন বলেন, আমরা ঢাকা থেকে কোম্পানির কাভার্ডভ্যানে ফ্যান নিয়ে ভোর ৪টায় ফরিদপুরে যাই। সেখানে একটি দোকানে ফ্যান ডেলিভারি দিয়ে ঢাকায় ফিরছিলাম। পথে মজলিশপুর আখ সেন্টারের সামনে এলে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক সামনে থাকা একটি পিকআপভ্যানকে ওভারটেক করতে গিয়ে আমাদের গাড়ির সামনে চলে আসে। এ সময় ট্রাকটির সঙ্গে আমাদের গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হলে ঘটনাস্থলেই চালক আব্দুর রহিম মারা যান।

আহলাদিপুর হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুয়েল শেখ জানান, নিহত চালকের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানটি মহাসড়কের পাশে রয়েছে। তবে ট্রাকচালক ও হেলপার পালিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।