img

বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী সৌদি আরব

প্রকাশিত :  ১৫:৪০, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১
সর্বশেষ আপডেট: ১৯:৩৫, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১

 বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী সৌদি আরব

জনমত ডেস্ক: বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে বৈঠককালে এ আগ্রহ প্রকাশ করেন সৌদি আরবের বিনিয়োগ বিষয়ক মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ। স্থানীয় সময়  রোববার অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ রয়েছে উল্লেখ করে সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী বাংলাদেশে আরও বেশি সৌদি বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।  

বৈঠকে সালমান এফ রহমান বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বর্তমান সরকারের গৃহীত পদক্ষেপসমূহ বর্ণনা করেন। পাশাপাশি সৌদি বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্ধারণ করারও প্রস্তাব দেন। সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী বাংলাদেশের এ প্রস্তাবকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব ব্যবস্থায় সৌদি বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে খসড়া সমঝোতা স্মারকটি চূড়ান্ত করার জন্য অনুরোধ জানান। উপদেষ্টা আরও বলেন, সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হলে বাংলাদেশের অবকাঠামোসহ বিভিন্ন খাতে সৌদি বিনিয়োগের সুযোগ প্রসারিত হবে।

এ সময় সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রী জানান, সমঝোতা স্মারকটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে এবং তা দ্রুত স্বাক্ষর হবে বলে তিনি আশা করেন। আলোচনাকালে সৌদি মন্ত্রী বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল খাতভিত্তিক বিনিয়োগ বিষয়ে সহযোগিতা চুক্তি বা সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

সালমান এফ রহমান দু’দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিনিধিদল বিনিময়ের ওপর গুরুত্ব তুলে ধরে সৌদি বিনিয়োগ মন্ত্রীকে আগামী ২৮ ও ২৯শে নভেম্বর বাংলাদেশে অনুষ্ঠিতব্য আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের অনুরোধ জানালে মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ তা গ্রহণ করেন।

বিনিয়োগ মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সৌদি আরবের পরিবহনমন্ত্রী সালেহ আল জাসের-এর সঙ্গে বৈঠক করেন। এ সময় তিনি ঢাকা থেকে পায়রাবন্দর পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণে সৌদি বিনিয়োগ প্রত্যাশা করেন। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের পরিবহন খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করা যেতে পারে। এ সমঝোতা স্মারকের অধীনে দক্ষতা বিনিময়, প্রশিক্ষণ ও সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রসমূহ অনুসন্ধান করে দেখা যেতে পারে। এ সময় সৌদি পরিবহন মন্ত্রী তার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন।  

এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান রিয়াদ চেম্বার অব কমার্সের সঙ্গেও পৃথক বৈঠক করেন। এ সময় তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে সরকারি সফরের মাধ্যমে সৌদি-বাংলাদেশ সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সৌদি বিনিয়োগকারীদের জন্য অগ্রাধিকারভিত্তিতে সকল সহযোগিতা নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।  

উপদেষ্টা সৌদি-বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি ও বাংলাদেশে বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন। বর্তমানে সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের এক দশমিক তিন বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়ে থাকে উল্লেখ করে তা আরও বাড়ানোর ওপর জোর দেন তিনি।

বাংলাদেশের বিশাল অভ্যন্তরীণ বাজার রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ইউরোপের বাজারে বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা এখনো অব্যাহত রয়েছে, যা বাংলাদেশকে রপ্তানি সুবিধা দিচ্ছে। উপদেষ্টা দু’দেশের চেম্বার কর্মকর্তাদের পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য দ্বিপক্ষীয় সফর ও বৈঠকের ওপর গুরুত্ব দেন। বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের সঙ্গে সৌদি আরব সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি অনুরোধ করেন।

এর পাশাপাশি উপদেষ্টা দু’দেশের চেম্বার অব কমার্সের মধ্যে ২০০৫ সালে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকটি সংশোধনপূর্বক যুগোপযোগী করার প্রস্তাব দিলে সৌদি ফেডারেশন অব চেম্বার তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেন। বৈঠকে উপস্থিত বাংলাদেশে বিনিয়োগকারী সৌদি কোম্পানিসমূহ বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ নিয়ে তাদের সন্তোষ প্রকাশ করে।

 বৈঠকে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার) উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়াও, বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের সদস্য বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন ও বাংলাদেশ সরকারি- বেসরকারি অংশীদারিত্ব কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সচিব) সুলতানা আফরোজসহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। সৌদি চেম্বারের সঙ্গে বৈঠকের সময় বাংলাদেশ থেকে যাওয়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধিগণও উপস্থিত ছিলেন।


img

পতনের তাণ্ডব শেয়ারবাজারে, ক্রেতাহীন সিংহভাগ কোম্পানি

প্রকাশিত :  ১২:৫১, ১৯ মে ২০২৪

পতনের তাণ্ডবে দিশেহারা দেশের শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীরা। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস আজ রোববার (১৯ মে) তালিকাভুক্ত ২০টি খাতের মধ্যে সব খাতেই বিপর্যয় দেখা গেছে। বেশির ভাগ খাতের শতভাগ কোম্পানির শেয়ারের পতন হয়েছে।

প্রধান শেয়ারবাজার  ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) আজ লেনদেন হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে মাত্র ২২টি প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৪৭টি প্রতিষ্ঠানের। অর্থাৎ যে পরিমাণ প্রতিষ্ঠানের দাম বেড়েছে, তার ১৬.৭৭ গুণ বেশি প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে। এরমধ্যে ২৩০টির বেশি প্রতিষ্ঠান ক্রেতাহীন অবস্থায় ছিল।এদিন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ছিল পতনের তান্ডব।

মোত্তালিব নামে এক প্রবীণ বিনিয়োগকারী বলেন, আমি শেয়ারবাজারে ৩০ বছর যাবত আছি। আমার জীবনে এই রকম পরিস্থিতি দেখিনি। তিনি বলেন, মহামারি করোনার সময়েও শেয়ারবাজারে এই রকম হাহাকার দেখা যায়নি।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পতন, আ্সন্ন বাজেটে গেইন ট্যাক্স আরোপ, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর চড়া সুদ-সহ নানা কারণে শেয়ারবাজারে টানা পতন চলছে। তবে ঢালাওভাবে টানা পতন কোনোভাবেই স্বাভাবিক বলা যায় না। এর পেছনে একটি গোষ্ঠি উদ্দেশ্যমূলকভাবে কাজ করছে বলে তাঁরা মনে করছেন।

তাঁরা অভিযোগ করছেন, এনবিআর-এর কিছু পদস্থ কর্মকর্তা যেকোনো কারণেই হোক শেয়ারবাজারের ওপর সন্তুষ্ট নন। তারা চায় না দেশে শেয়ারবাজার বলে কিছু থাকুক। যে কারণে প্রতি বছরই শেয়ারবাজার নিয়ে অনর্থক টানা-হেঁচড়া করে। যার ফলে প্রতি বছরই বাজেটের আগে আগে শেয়ারবাজার অস্থির হয়ে পড়ে।

রোববারের বাজার পর্যালোচনা: আজ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার (১৯ মে) ডিএসই’র প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৮৬.১৩ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৪৩১ পয়েন্টে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরীয়াহ সূচক ২০.৫২ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ১৯১ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ২৫.৫৫ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ১ হাজার ৯৪৮ পয়েন্টে।

আজ ডিএসইতে ৪০৯ কোটি ১৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কর্মদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৭৬ কোটি ৭৯ লাখ টাকার।

আজ ডিএসইতে ৩৯৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২২ টির, কমেছে ৩৪৭টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৯টির।

অপর শেয়ারবাজার চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএই) আজ লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ৫৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

এদিন সিএসইতে ২২৩টি প্রতিষ্ঠান লেনদেনে অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২৫টির, কমেছে ১৮৬টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১২টি প্রতিষ্ঠানের।

আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ২৫১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এরমধ্যে দাম বেড়েছিল ৫৮টির, কমেছিল ১৬৫টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ২৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট।