img

সুরমা'র তীরের ঐতিহ্যবাহী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পাইলটিয়ানদের মিলনমেলা টেমসের পাড়ে

প্রকাশিত :  ১৮:৩২, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২
সর্বশেষ আপডেট: ১৯:০৯, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

সুরমা'র তীরের ঐতিহ্যবাহী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের পাইলটিয়ানদের মিলনমেলা টেমসের পাড়ে

|| আশরাফুল ওয়াহিদ দুলাল ||

‘মুছে যাওয়া স্মৃতিগুলি আমায় যে পিছু ডাকে’, ‘কিংবা স্মৃতি তুমি বেদনা’ — এই লাইন গুলি প্রত্যেকটি মানুষের মুখে মুখে লেগেই থাকে। কিন্তু যদি হয় শৈশবের স্মৃতি তাহলে তো আর কথা নেই। কারণ নিরবে নিভৃতে শৈশব কৈশোরের স্মৃতির কথা মনে পড়লেই আমরা কাতর হই, হারিয়ে যাই অতীতে, আনন্দ বেদনার স্মৃতিময় জগতে। 

আমাদের বিদ্যালয়ের জীবনের শৈশব কৈশোরের ফেলে আসা দিনের স্মৃতি গুলিকে প্রাণবন্ত করে তুলতে, ‘প্রবাহের স্রোতে এসো মাতি উল্লাসে, দূর প্রবাসে’ শ্লোগানকে সামনে রেখে, প্রবাসে বসবাসরত সিলেটের সুরমা পাড়ের সিলেট সরকারী পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রদের সংগঠন পাইলটিয়ান এলামুনাই ইউকে আয়োজন করলো পাইলটিয়ান মিলনমেলা ২০২২।

লন্ডনের স্থানীয় একটি হলে ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা সাড়ে তিন শতাধিক প্রাক্তণ ছাত্রের উপস্থিতিতে জমকালো অনুষ্ঠানে পুরানো সাথীদের প্রাণজ সম্মিলনে মেতে উঠে পুরো মিলনায়তনে। 

কারী একরামুল হকের কোরআন তেলাওয়াত ও রিংকু সিংহার গীতা পাঠের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানের প্রথমে কামরুল আহছানের পরিচালনায় প্রয়াত প্রাক্তণ শিক্ষক ও ছাত্রদের স্মরণে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়। রিংকু সিংহার তত্ত্বাবধানে জাতীয় সংগীতের পরপরই পরিবেশিত হয় বিদ্যালয়ের প্রাক্তণ ছাত্রদের মিলন মেলার থিম সঙ্গীত।

বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের আদলে নির্মিত ফোটকের পাশাপাশি প্রবীনদের মনোরঞ্জন ও শৈশবের স্মৃতি মনে করিয়ে দিতে ছিল ক্যারম বোর্ড, চানাচুর, চটপটি, ফুসকার ব্যবস্থা।

চানাচুর, ফুসকার পাশিপাশি চলেছে জম্পেশ আড্ডা। এক পর্যায়ে প্রাক্তণ ছাত্র ও সাংবাদিক মোঃ এমরান আহমেদ এর পরিচালনায় মিলন মেলা উপলক্ষে উন্মোচিত হয় স্মরনিকা ‘প্রবাসে প্রবাহ’ এর মোড়ক। প্রাক্তন ছাত্র ও এটিএন বাংলার হেড অব মার্কেটিং  মোঃ আদিল চৌধুরীর পরিচালনায় সম্মাননা জানানো হয় মিলন মেলার সকল স্পন্সর ও বিজ্ঞাপন দাতাকে। 

২০১৬/১৭ সালে সদ্য প্রাক্তন ছাত্রদের মাধ্যমে সম্মাননা জানানো হয় প্রাক্তন ছাত্র মোঃ আব্দুর রকিকে। তিনি ১৯৬৭ সালে বিদ্যালয় থেকে এস এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করে পুরো পাকিস্তানের সর্বাধিক নাম্বার পেয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন।

গান নাচ আর কবিতার ফাঁকে ফাঁকে সম্মান জানানো হয় পাইলট এলামুনাইয়ের পক্ষ থেকে প্রথমবার মিলন মেলা আয়োজনকারী মিজানুর রহমান মিজান, শুয়েব আদমজী, তৌহীদ ফিতরাত হুসেইন, শাহেদ শামস, মোহাম্মদ একরাম সিদ্দিক উজ্জ্বল এবং মোহাম্মদ শামসুল করিম টিটুকে।


মাহবুব শুভ ও আব্দুল হাফিজ শিপলু, আবু আরেফ, নজরুল ইসলাম ও মঞ্জুর চৌধুরীর ব্যবস্থাপনায় মধ্যাহ্ন ভোজের সময় ব্রিটেনের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিটি টেবিলে টেবিলে গিয়ে  মাহমুদ হাছানের নবীন প্রবীনের পরিচয় পর্বটি ছিল প্রশংসনীয়।

ইমরান চৌধুরী, আব্দুল ফাত্তাহ চৌধুরী রানা ও আব্দুল্লাহ ফাতেনীর তত্ত্বাবধানে র‌্যাফল পরিচালনা ছিল অনবদ্য। তবে অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে র‌্যাফেল ড্র পরিচালনা করেন জনপ্রিয় টিভি উপস্থাপক সায়েক আহমেদ সওদাগর।

মোহাম্মদ আখলাকুর রহমান ও মেকদাদ খানের তত্ত্বাবধানে মিলন মেলায় আগত সকল প্রাক্তন ছাত্রের মধ্যে উপহার হিসেবে মিলন মেলার লগো সম্বলিত, ব্যাজ মগ, চাবি রিং, ব্যাগ ও কলম প্রদান করা হয়। সঞ্জিত দাশের সহযোগিতায় ও আশরাফুল ওয়াহিদ দুলালের পরিচালনায় সারাদিন ব্যাপী অনুষ্টানের বিভিন্ন পর্যায়ে বড় পর্দার মাধ্যমে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভিডিও স্থির চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এ সময় কবি জিয়াউর রহমান সাকলায়েনের কন্ঠে পৃথিবীর সব বাবাদের উদ্দেশ্যে বাবা কবিতাটি প্রদর্শন এর সময় ছল ছল চোখে সবাই যেন ফিরে গিয়েছিলেন ফেলে আসা অতীতে। প্রদর্শিত হয় স্কুলের বিভিন্ন চিত্র।

রাত ৮টার সময় সরকারি কর্মসূচি অনুযায়ী ব্রিটেনের রাণী ২য় এলিজাবেথ এর মৃত্যুতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

মোঃ সাকিব আলম চৌধুরী, তোফায়েল আহমেদ জাহিদ, আবিদুর রহমান, আব্দুল্লাহ নাইম, মাহফুজুর রহমান তায়েফ,আযহার উদ্দিন, শামাম আহমেদ, অপু তালকদার, মাহমুদুল হাছান চৌধুরী, শাহনেওয়াজ সুবান রাজা, রেজোয়ান, আদনান, মোহাম্মেল প্রমুখ যখন সেচ্ছাসেবক তখন নেই কোন নেতৃত্বের বাহাদুরি, নেই কোন উশৃংখলতা। নবীন প্রবীণদের এই মিলনে উপস্থিত বয়সের ভারে নুয়ে পরা প্রবীণরা যেন তালে তাল মিলেয়ে ফিরে গিয়েছিলেন ফেলে আসা শৈশবে। তাই তারা আয়োজন উত্তরসূরীদের প্রশংসা করতে কুন্ঠা বোধ করেননি।

সর্বপরি সুরমা পাড়ের সন্তানরা যখন টেমসের পাড়ে মিলন মেলায় শৃঙ্খলা ও শ্রদ্ধা ভালবাসা সবাইকে আবদ্ধ করলেন তা ছিলো চোখে পড়ার মতো। একে আপরের প্রতি শ্রদ্ধা স্বরূপ তারা তাদের সহপাঠী  এই অনুষ্ঠানের অন্যতম সমন্বয়ক মাহমুদ হাসানকে একজন দক্ষ সংগঠক হিসেবে সম্মাননা জানাতে কার্পন্য করেন নি।

দিন শেষে রাত যখন আসে তখন বিদায়ের প্রাক্কালে যান্ত্রিক জীবনের একটি দিন পুরানো সহপাঠীদের সাথে কাটিয়ে বিদায় বেলা বিষাদ মনে অশ্রুসিক্ত নয়নে যেন আহবান করছিলে, এই দেখা যেন শেষ দেখা না হয়...আবার দেখা হবে বন্ধু।


কমিউনিটি এর আরও খবর

img

বাংলাদেশ ক্যারম সেন্টার আয়োজিত ইউকে ওপেন সিঙ্গেল ক্যারম চ্যাম্পিয়ন এর ড্র অনুষ্ঠিত

প্রকাশিত :  ১৭:৫৬, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশ ক্যারম সেন্টার আয়োজিত ইউকে ওপেন সিঙ্গেল ক্যারম চ্যাম্পিয়ন এর  ড্র গত রবিবার (২৮ মার্চ) সন্ধ্যা ১০টায় বাংলাদেশ ক্যারম সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। সেন্টারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সাউন্ডেক ক্যারম ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুর রহমান খান সুজার পরিচালনায় ও গোলাপগঞ্জ স্যোশাল এন্ড কালচারাল ট্রাস্ট ইউকে’র সভাপতি ও ক্যারম ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লন্ডন ব্যুরো অফ টাওয়ার হ্যামলেট’স কাউন্সিলের কাউন্সিলর আনা মিয়া। প্রধান বক্তা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন লন্ডন এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকে\'র চেয়ারম্যান সাংবাদিক মো: আব্দুল মুনিম জাহেদী ক্যারল। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো: আব্দুল ওয়াহিদ ও সানরাইজ টুডে’র সম্পাদক এনাম আহমদ চৌধুরী প্রমুখ। 

বাংলাদেশ ক্যারম সেন্টার এর উদ্যোগে বৃটেনে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে  বাংলাদেশ ইউকে জাতীয় ক্যারম চ্যাম্পিয়ন ২০২৪। আগামী ৭মে ২০২৪ ইংরেজি রোজ মঙ্গলবার ইউকে ওপেন সিঙ্গেল ক্যারম চ্যাম্পিয়ন ২০২৪ অনুষ্ঠিত হবে। সমগ্র ব্রিটেন থেকে মোট ৪০টি টিম অংশগ্রহণ করবে। এতে লন্ডনের বিভিন্ন শহর থেকে চ্যাম্পিয়ন খেলোয়াড়রা অংশগ্রহণ করবে। আগামী ৭মে ২০২৪ ইংরেজি বিকাল ৫ঘটিকার সময় খেলা অনুষ্ঠিত হবে। একদিনে খেলার সমাপ্তির জন্য ক্যারম সেন্টার ১২টি বোর্ডের আয়োজন করেছেন। ওই দিনই ইউকের জাতীয় ক্যারম চ্যাম্পিয়ন কে হবেন তা ৭তারিখ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। অতিথিরা সাউন্ডটেক ক্যারম ক্লাবের প্রতিষ্টাতা  আদ্দুর রহমান খান সুজার ভুয়সী প্রশংসা করেন। এত বড় টুর্নামেন্টের জন্য বাংলাদেশ ক্যারম সেন্টার এর সুজা ও রাশেদকে ধন্যবাদ জানান।

কমিউনিটি এর আরও খবর