img

মধ্যপ্রাচ্যে ‘প্রতিশোধের চক্র’ বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

প্রকাশিত :  ১১:২৪, ২০ এপ্রিল ২০২৪

মধ্যপ্রাচ্যে ‘প্রতিশোধের চক্র’ বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি হামলার খবরের পর মধ্যপ্রাচ্যে ‘প্রতিশোধের বিপজ্জনক চক্র’ বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

শুক্রবার তার মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, জাতিসংঘ প্রধান ‘প্রতিশোধমূলক যে কোনো কর্মকাণ্ডের’ নিন্দা জানিয়েছেন এবং ‘যে সকল কর্মকাণ্ড সমগ্র অঞ্চল ও অঞ্চলের বাইরে ধ্বংসাত্মক পরিণতি বয়ে আনতে পারে সে ধরনের কর্মকাণ্ড রোধ করার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সপ্তাহান্তে আক্রমণের প্রতিশোধ হিসেবে ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। শুক্রবার ভোরে ইরানের মধ্যাঞ্চলীয় ইস্ফাহান প্রদেশ একাধিক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে। 

মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে এবিসি, সিবিএস এবং সিএনএন, অন্যান্য মিডিয়া মধ্যপ্রাচ্যের সময় শুক্রবার ভোরে ইরানে ইসরায়েলের হামলার কথা জানিয়েছে। 

যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলোকে বলেছেন, ইসরায়েল ইরানে প্রতিশোধমূলক হামলা চালিয়েছে। তবে বিদেশ থেকে ইরানে কোনো ‘হামলা’ হয়নি বলে খবর দিয়েছে ইরানি গণমাধ্যম।

এর আগে গত ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়। এই হামলায় ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর বিদেশে কার্যক্রম পরিচালনাকারী কুদস ফোর্সের জ্যেষ্ঠ কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ রেজা জাহেদিসহ কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা নিহত হন। এই হামলার জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে।

এ ঘটনার পর ইরান এক সপ্তাহের কম সময় শনিবার রাতে ইসরায়েলে প্রথমবারের মতো সরাসরি হামলা চালায়। তারা ৩০০টির বেশি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছিল।

img

ইসরায়েলি বসতকারীদের উপর কানাডার নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত :  ০৮:৩৯, ১৮ মে ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৮:৪০, ১৮ মে ২০২৪

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অঞ্চলে সহিংস কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে চার ইসরায়েলি বসতকারীর বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কানাডার সরকার। কানাডার ইতিহাসে এই প্রথম কারো বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলো।

নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়া এই চার বসতকারী হলেন ডেভিড চাই চাসদাই, ইয়িনন লেভি, জাভি বার ইউসেফ এবং মোশে শারভিত।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে কানাডার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটিতে প্রচলিত ‘স্পেশাল ইকোনোমিক মেজার্স অ্যাক্ট’ নামের একটি আইনের আওতায় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহার হওয়ার আগ পর্যন্ত এই চারজন কানাডায় প্রবেশ বা সম্পত্তি ক্রয় করতে পারবেন না।

মন্ত্রণালয় বিবৃতি জারির পর কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানিয়ে জোলি এক বার্তায় বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমি পশ্চিম তীর সফরে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ইসরায়েলি বসতকারীদের সহিংসতার ব্যাপারে আমরা স্পষ্টভাবে জানতে পারি। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, নানা অত্যাচার ও সহিংসতার মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিজ বাড়ি ও কৃষিভূমি থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করছেন বসতকারীরা।’

‘এই নিষেধাজ্ঞা জারির মাধ্যমে আমরা ইসরায়েলকে স্পষ্ট বার্তা দিতে চাই যে কানাডা কখনও ইসরায়েলি বসতকারীদের সহিংসতা সমর্থন করবে না এবং যেসব বসতকারী এ ধরনের কর্মকাণ্ডে সংশ্লিষ্ট, তাদেরকে ফলাফল ভুগতে হবে।’

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে বিস্তৃত, যথাযথ এবং টেকসই শান্তি স্থাপনে সেখানকার অংশীদারদের সঙ্গে সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করতে কানাডা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই শান্তি প্রক্রিয়ার প্রাথমিক ধাপ হলো দ্বিরাষ্ট্র সমাধান এবং পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে অবৈধ বসততি স্থাপান এই সমাধানের পথে বড় একটি বাধা।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, কানাডা জাতিসংঘের চতুর্থ জেনেভা কনভেনশনের ঘোষণাকে স্বীকৃতি দানকারী দেশ। সেই ঘোষণায় বলা হয়েছে, দখলকৃত এলাকার জনগণের প্রতি কোনো প্রকার অমানবিক ব্যবহার করা যাবে না।

প্রসঙ্গত, ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের পর ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের সীমানা নির্ধারণ করা হয়। সে সময় ইসরায়েল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে কোনো দখল কার্যক্রম চালানো হবে না। কিন্তু পরে আর সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি ইসরায়েল। প্রায় প্রতি বছরই একটু একটু করে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গ্রাস করছে বিশ্বের এই একমাত্র ইহুদি রাষ্ট্রের ক্ষমতাবানরা।

গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিফ) ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধার পর থেকে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরেও ছড়িয়ে পড়তে থাকে সহিংসতা। জাতিসংঘের হিসেব অনুযায়ী, গত ৭ মাসে মোট ৮০০টি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে পশ্চিম তীরের বিভিন্ন শহরে। এসব সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন শতাধিক মানুষ।

এর আগে গত ২ ফেব্রুয়ারি পশ্চিম তীরে সহিংসতায় সংশ্লিষ্টতার দায়ে চার ইসরায়েলি বসতকারীকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার যে চারজনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কানাডা, তাদের মধ্যে দু’জনের বিরুদ্ধে সেই মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে। এই দু’জন হলেন ডেভিড চাই চাসদাই এবং ইয়িনন লেভি।

সূত্র : রয়টার্স