নিউইয়র্কে ৯৬ হাজার ড্রাইভারের অর্থ চুরির মামলা উবারের বিরুদ্ধে

প্রকাশিত :  ১৩:৪৯, ০৮ নভেম্বর ২০১৯

নিউইয়র্কে ৯৬ হাজার ড্রাইভারের অর্থ চুরির মামলা উবারের বিরুদ্ধে

নিউইয়র্ক সিটিতে ২০ হাজারের অধিক বাংলাদেশীসহ ৯৬ হাজার ট্যাক্সি ড্রাইভারের অর্জিত অর্থের বড় একটি অংশ চুরির অভিযোগে উবারের বিরুদ্ধে নিউইয়র্কে ফেডারেল কোর্টে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৬ নভেম্বর ম্যানহাটানে ফেডারেল কোর্টে এই মামলা দায়ের করেছে ‘নিউইয়র্ক ট্যাক্সি ওয়ার্কার্স এলায়েন্স’।

মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে যে, উবার ড্রাইভারের অর্জিত মোট অর্থ থেকে সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে ট্যাক্স কর্তনের পাশাপাশি ব্ল্যাক কার ফান্ড সারচার্জ এবং তাদের সার্ভিস ফি কেটে নিয়েছে ২০১৩ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। এরফলে দিনভর ট্যাক্সি চালিয়ে যাত্রীভাড়া বাবদ ১০০ ডলার আয় হলে, তার বড় একটি অংশ উবারের একাউন্টে চলে যায়। সেই ড্রাইভারের ভাগ্যে জোটে বড়জোর ৪০ ডলার। শুধু তাই নয়, ড্রাইভারের সাথে উবারের প্রতারণার বড় একটি অভিযোগ রয়েছে যে, বৃষ্টি অথবা দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া কিংবা বিশেষ কোন কারণে যাত্রীর সংখ্যা বেড়ে গেলেই উবারের সিস্টেমে ভাড়া বাড়ানো হয়, যার হিস্যা পান না ড্রাইভাররা। ড্রাইভারের সাথে স্বাভাবিক যে চুক্তি রয়েছে সে অনুযায়ী প্রদান করা হয়। এ বিষয়টি অবশ্য দায়েরকৃত মামলায় এখনও অন্তভর্’ুক্ত করা হয়নি বলে জানা গেছে।

কঠোর পরিশ্রমী ড্রাইভারের সাথে প্রতারণার মাধ্যমে টাক্স এবং সারচার্জ কেটে নেয়ার ঘটনায় ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৫ বছরে উবার কমপক্ষে ৮৬ মিলিয়ন ডলার হাতিয়ে নিয়েছে বলে মামলা দায়েরকারি ট্যাক্সি ওয়ার্কার্স এলায়েন্সের কর্মকর্তা টিপু সুলতান এনআরবি নিউজকে জানান। এই সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ভৈরবী দেশাই উবারের ছলচাতুরির বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ট্যাক্সি ড্রাইভাররা দিনশেষে খালি পকেটে বাসায় ফিরলেও উবারের মালিক বিলিয়ন ডলারের মুনাফা গড়েন বছর শেষে। আর এভাবেই অভিবাসী সমাজের সদস্য ট্যাক্সি ড্রাইভারের সাথে প্রতারণায় অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে উবার কর্তৃপক্ষ। ড্রাইভারের অর্জিত অর্থ চুৃরির এমন ঘটনাকে বরদাশত করা যায় না বলেই আমরা আদালতে যেতে বাধ্য হলাম।

প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য যে, উবার প্রতারণার ঘটনাগুলোকে পরিসংখ্যাণগত ভুল হিসেবে মেনে নিয়ে ২০১৭ বেশ ক’জন ড্রাইভারের অর্থ ফেরৎ দিয়েছে। তারা নাকি ভুলে অধিক অর্থ কেটে রেখেছিল। তবে মোট কতজনের কাছে থেকে কত মিলিয়ন ডলার কথিত সেই ভুলে কেটে রাখা হয়েছিল, তা বিস্তারিতভাবে প্রকাশ করেনি কিংবা মোট কতজনকে সেই ডলার ফিরিয়ে দিয়েছে তাও জানা যায়নি। যদিও ভুলের সেই ধারাবাহিকতা এখনও অব্যাহত রয়েছে বলেই মামলার উদ্ভব হলো।

ডিপফেক ভিডিও থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন যেভাবে

প্রকাশিত :  ১০:১৪, ২৮ মার্চ ২০২৪

বিজ্ঞানের উৎকর্ষকালে প্রযুক্তি যেমন মানুষের উপকার করছে, তেমনি কিছু প্রযুক্তি মানুষের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি প্রযুক্তি হলো ডিপফেক প্রযুক্তি বা ডিপফেক ইন্টেলিজেন্সি।

অনেকে ডিপফেক এআইকে একুশ শতকের ফটোশপিং বলে থাকে। সহজ ভাষায় ডিপফেক হলো এআই নির্ভর এমন এক প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে যেকোনো ভিডিও, ছবি এবং অডিও রেকর্ডিংয়ে বিশ্বাসযোগ্যভাবে মানুষের মুখমণ্ডল বা কণ্ঠস্বর নকল করা যায়।

দিন দিন বাড়ছে ডিপফেক প্রযুক্তির অপব্যবহারের সংখ্যা। প্রথম প্রথম বিশ্বের নামকরা সেলিব্রিটি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ডিপফেক ইন্টেলিজেন্সি দিয়ে তৈরি নকল ভিডিও দ্বারা হেনস্তার শিকার হন।

ডিপফেক প্রযুক্তি থেকে নিজের ডেটার সুরক্ষার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যায়। সেগুলো উঠে এসেছে এনডিটিভির প্রতিবেদনে। 

১. যতদূর সম্ভব নিজের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্য কোনো পাবলিক প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন। এসব প্ল্যাটফর্মে প্রাইভেসি সেটিংসগুলো সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হবে। 

২. শক্তিশালী ও অনন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অনলাইন অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। ফলে ছবি ও ভিডিওগুলোয় অননুমোদিত অ্যাকসেস লাভ করা হ্যাকারদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে এবং ডিপফেক প্রযুক্তি দিয়ে নিজের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের সম্ভাবনা কমে যায়। 

৩. কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে হ্যাকাররা ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ডেটা ও ছবি চুরি করতে পারে। এসব ডেটা ও ছবি দিয়ে ডিপফেক কনটেন্ট তৈরি করে হ্যাকাররা। এজন্য কম্পিউটারে ভালোমানের অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা উচিত। এভাবে ব্যক্তিগত মিডিয়াতে ক্ষতিকারক টুলগুলোর অ্যাকসেস পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

৪. ডিপফেক কনটেন্টের সাধারণ লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। যদি কোনো ভিডিও, ছবি ও কণ্ঠ খুবই নিখুঁত বা অবাস্তব বলে মনে হয় তবে এটি শেয়ার করা বা বিশ্বাস করার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হওয়ার মাধ্যমে এ ধরনের কারসাজি ভিডিও শনাক্ত করা যাবে। 

৫. নিজের ছবি ও ভিডিওতে জলছাপ বা ওয়াটারমার্ক যুক্ত করুন। এসব ওয়াটারমার্ক অনেক সময় সম্পূর্ণ মুছে ফেলা যায় না। আর সম্পূর্ণ মুছে ফেলার সময় ছবি ও ভিডিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে এসব ছবি ও ভিডিও দিয়ে ডিপফেক তৈরি কঠিন হয়ে পড়ে। জলছাপ একটি অতিরিক্ত সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে।

৬. নিজের ফাইলগুলোয় মেটাডেটা সঠিকভাবে এম্বেড করা হয়েছে নাকি তা নিশ্চিত করতে হবে। মেটাডেটা হলো ফাইল সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক তথ্য। যেমন- কে তৈরি করেছে, কবে তৈরি করা হয়, কোথায় তৈরি হয়েছে, কবে এডিট করা হয়েছে, টাইটেল ইত্যাদি। মিডিয়া ফাইল ব্যবহার নিয়ে বিরোধ বা দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে এটি মালিকানার প্রমাণ হিসেবে কাজ করতে পারে। 

তবে এসব পদ্ধতি নিজের ডেটা সুরক্ষা দেবে তার শতভাগ নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।