img

শ্রীমঙ্গলে কলেরায় ২ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩ শতাধিক :

প্রকাশিত :  ১০:৫১, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮
সর্বশেষ আপডেট: ১০:৫৩, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮

শ্রীমঙ্গলে কলেরায় ২ জনের মৃত্যু, আক্রান্ত ৩ শতাধিক :

জনমত ডেস্ক ।। মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল চা বাগান এলাকায় গত একমাসে কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে তিন শতাধিক নারী-শিশুসহ চা শ্রমিক। এর মধ্যে দুইজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে পরিস্থিতি সামাল দিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ডাক্তার তানভীরের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি টিম কাজ করছে। 

শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, গত অক্টোবর মাসের ২৬ তারিখ থেকে অদ্য ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উপজেলার ফিনলে চা কোম্পানির কালিঘাট ইউনিয়নের ভুড়ভুড়িয়া এলাকায় প্রায় তিন শতাধিক চা শ্রমিক ডায়রিয়া বা কলেরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এর মধ্যে পারশ মৃধা (৪০) ও বঙ্কি রিকিয়াসন (৫৫) নামের দুই চা শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ডায়রিয়ার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি দেখা দিয়েছে কালিঘাট ইউনিয়নের দুই নং ওয়ার্ডের ছয় নং লাইনে। এই লাইনে মঙ্গলবার পর্যন্ত ৯৭ জন কলেরা রোগিকে সনাক্ত করা হয়েছে বলে মঙ্গলবার দুপুরে নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে শ্রীমঙ্গলে আসা চার সদস্যের টিম লিডার ডাক্তার তানভীর।

বাগান ডিসপেনসারির ডা: সাদাত হাসান মো: আসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘গত ২৮ আগস্ট থেকে চা বাগানে ডায়রিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। কি কারণে শ্রমিকরা এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তা এখোনো বুঝা যাচ্ছে না।’

ডায়রিয়ার কারণ অনুন্ধানে গত শুক্রবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ ইনস্টিটিউট থেকে চারজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বাগানে এসেছেন। এছাড়া ১ সেপ্টেস্বর থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টিম ডায়রিয়া প্রতিরোধে এখানে কাজ করছে।

তবে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে আসা ডাক্তার তানভীর নয়া দিগন্তকে বলেন, আমরা বিভিন্ন সোর্স থেকে কিছু স্যাম্পল কালেকশন করে পাঠিয়ে দিয়েছি পরীক্ষার জন্য। কি কারণে এতো কলেরা রোগে আক্রান্ত সেটার রিপোর্ট এখনও আসেনি। তবে আমাদের গবেষণা কিন্তু এখনও চলমান। আমরা কিছু হট পয়েন্ট আইডেন্টিফাই করেছি যেখান থেকে এর উৎপত্তি হচ্ছে।’

তবে আরো কিছু কথা আছে বলে তিনি বলেন, ‘চা শ্রমিকরা যে আট ঘন্টা বাগানে কাজ করে, তখন তারা বাগানের স্যানিটেশন ব্যবস্থা না থাকায় চা শ্রমিকরা লাইনের মধ্যেই খোলা জায়গায় মল-মূত্র ত্যাগ করে, পানির ব্যবস্থা না থাকায় পানির পরিবর্তে তারা বালি ও মাটি ব্যবহার করে ঠিকমতো হাত না ধুয়া। এছাড়া খাবারের বিশুদ্ধ পানির মারাত্মক অভাব এবং পানি নিষ্কাশনের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকাসহ ময়লাযুক্ত কূপের পানি ব্যবহার করা, সর্বোপরি স্বাস্থ্য সচেতন না থাকার কারণে বাগানে কলেরার প্রকোপ দেখা দিয়েছে বলে আমরা মনে করছি।’

ডাক্তার তানভীর আরো বলেন, ‘শুনেছি চা বাগান এলাকায় হাঁড়িয়া নামের একটা মদ আছে, এটা সাধারণত পঁচা ভাতের সাথে একটা মেডিসিন মিশিয়ে তৈরী করে, সেটা যদি আমরা দেখতে পারতাম তাহলে বুঝতাম সেটাতে কি রকম পয়জন আছে। সেটা পান করার কারণেও হতে পারে। এছাড়া শ্রমিকদের ছড়ায় যাওয়া বন্ধ করতে হবে। তাহলে তাদের স্বাস্থ্যের উন্নতি করা সম্ভব। আরেকটি বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশ থেকে এখনও ডায়রিয়া নির্মূল করা সম্ভব হয়নি। এটা বিভিন্ন সিজনে হয়, কোথাও সারা বছর ধরে হয়, কোথায় নির্দিষ্ট কিছু সময়ে হয়, এটা থেকে আমরা এখনও বের হতে পারিনি। এর মূল কারণ হচ্ছে এ ধরনের কিছু এলাকায় এখনো স্যানিটেশনের এবং বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা ও ড্রেনেজ সিস্টেমের কারণে। এটা চলতেই থাকবে যতদিন পর্যন্ত আমরা এসবের উন্ন্য়ন করতে না পারবো।’

স্থানীয় আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘একমাত্র মির্জাপুর ও জেরীন চা বাগান ব্যতীত সব বাগানেই স্যানিটেশন ও বিশুদ্ধ পানির মারাত্মক অবস্থা। তিনি বলেন, বাগানগুলোতে ৪০০ শ্রমিকের জন্য মাত্র ৪০টি টয়লেট রয়েছে। এছাড়া স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানি ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার অবস্থা খুব নাজুক। এছাড়া চা শ্রমিক আইনে ৫০০ শ্রমিকের জন্য একজন ডাক্তার বরাদ্দ থাকার কথা থাকলেও বাগান মালিকরা এসব মানছেন না।’

ডিজিএম জিএম শিবলী সাংবাদিকদের জানান, এর আগে তাদের বাগানে এই রোগ হয়নি। এটা পানিবাহীত রোগ। বাগানের এক ঘরের একজনের হলে পরিবারের সবাই আক্রান্ত হচ্ছেন। রোগ প্রতিরোধে এরই মধ্যে বাগানে বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: জয়নাল আবেদীন টিটো মঙ্গলবার দুপুরে নয়া দিগন্তকে বলেন, ‘প্রথম দিকে বেশি আক্রান্তরা হাসপাতালে আসছিল, এখন কিছুটা আতঙ্কিত হয়ে ১/২বার পাতলা পায়খানা হলেই হাসপাতালে আসছে। আজো কয়েকজন নতুন রোগী আসছে। তবে সবাই ভর্তির যোগ্য না। আমি অনুরোধ করবো আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হওয়ার জন্য। কারণ অনুসন্ধানে ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে চার সদস্যের টিম এসে কাজ করছে। তবে হাসপাতালে স্যালাইন সংকট রয়েছে।’

 

img

গোলাপগঞ্জে চাচাতো ভাইয়ের দায়ের কোপে যুবক খুন

প্রকাশিত :  ১২:০৯, ১২ মে ২০২৪

নিহত বাচ্চু আহমদ (৩৫)

পারিবারিক বিরোধের জেরে সিলেটের গোলাপগঞ্জে চাচাতো ভাইয়ের দায়ের কোপে বাচ্চু আহমদ (৩৫) নামে এক যুবক খুন হয়েছেন।

শনিবার (১১ মে) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের দত্তরাইল গ্রামে এ-ঘটনা ঘটে৷

নিহত বাচ্চু আহমদ দত্তরাইল গ্রামের আকন আলীর ছেলে৷ তিনি ঢাকাদক্ষিণ মাইক্রোবাস শাখার সদস্য৷

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে পারিবারিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু\'পক্ষের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়৷ বাগবিতণ্ডার এক পর্যায়ে চাচাতো ভাই রেদওয়ান আহমদ রনির (৩০) দায়ের আঘাতে গুরুতর আহত হয় বাচ্চু আহমদ। গুরুতর আহত অবস্থায় স্বজনরা তাকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার সাথে জড়িত রেদওয়ান আহমদ রনিসহ ৫ জনকে আটক করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ।

এ ঘটনার সততা নিশ্চিত করেছেন গোলাপগঞ্জ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাছুদুল আমিন।

সিলেটের খবর এর আরও খবর