বেশি আয় করে ইংল্যান্ডের বাংলাদেশি তরুণ গ্রাজুয়েট চাকরিজীবীরা
জনমত ডেস্ক ।। বিলেতের ইউনিভার্সিটি ডিগ্রীধারী ২৫বছর বয়সী চাকুরীজীবিদের মধ্যে ব্রিটেনে সবচেয়ে বেশি আয় করে বাংলাদেশীরা। বিবিসি’র হয়ে লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিকসের সোস্যাল পলিসি বিভাগের (এলএসই) তৈরী করা সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে এমন তথ্যই বেড়িয়ে এসেছে। ১৬ হাজার ২৫ বছর বয়সী চাকুরীজীবী গ্রাজুয়েটের উপর চালানো এথনিসিটি পে/ ক্যারিয়ার পাথ বিষয়ক এই স্টাডি জরিপের রিপোর্ট মতে, শ্বেতাঙ্গসহ অন্যান্য সব সংখ্যালঘু সম্প্রাদায়ের চাকুরীজীবি গ্রাজুয়েটদের থেকেও গড়ে বেশি আয় করে বাংলাদেশী তরুণরা। তবে সমান বয়সের বাংলাদেশী চাকুরীজীবি মেয়ে গ্রাজুয়েটদের আয় ছেলেদের সমান না হলেও এক্ষেত্রে পাকিস্তানীদের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশী মেয়েরা, স্টাডি রিপোর্টে এটিও উল্লেখ করা হয়।
বাংলাদেশীসহ জাতীগত সংখ্যালঘু সম্প্রাদায়ের ছেলেমেয়েরা পেশাগত জীবনের লক্ষ্যে স্থির থাকতে পারেনা এথনিসিটি পে/ ক্যারিয়ার পাথ বিষয়ক স্টাডিতে এমন তথ্যও বেড়িয়ে এসেছে। লেখাপড়া শেষে কে কোন পেশায় যেতে চায়, ৬হাজার শিশু কিশোরদের কাছে তাদের ভিন্ন ভিন্ন বয়সে এমন প্রশ্ন রাখলে পেশাগত জীবনের নির্দিষ্ট কোন লক্ষ্যে যে তারা স্থির থাকতে পারেনা তা বেরিয়ে আসে। ৭, ১১ ও ১৪ বছর বয়সে তিনবার একই প্রশ্ন করা হয় তাদের, যে লেখাপড়া শেষে কোন পেশা নিতে চায় তারা। সংখ্যালঘু সম্প্রাদায়ের ৭ বছর বয়সী সব মেয়েরাই তখন জানায় তারা ডাক্তার হবে। ১৪ বছর বয়সে এসে একই প্রশ্ন করলে দেখা যায় তাদের কেউই আর ডাক্তার হতে চায়না। কিন্তু শেতাঙ্গরা এ থেকে ব্যতিক্রম। ৭ বছর বয়সে ডাক্তার হওয়ার আকাঙ্খাতাদের না থাকলেও ১৪ বছর বয়সে এসে তারা ডাক্তার হওয়ার আকাঙ্খা ব্যক্ত করে।
উচ্চশিক্ষা লাভ করে ভালো চাকুরী করার উচ্চাকাঙ্খায় শেতাঙ্গদের চেয়ে এগিয়ে আছে বাংলাদেশীসহ জাতীগত সংখ্যালঘু সম্প্রাদায়ের মেয়েরা, স্টাডি রিপোর্টে এমন তথ্যও উঠে আসে। উচ্চশিক্ষা ও ভালো চাকুরী করার আকাঙ্খা সম্পর্কে জানতে চাইলে শ্বেতাঙ্গ মেয়েরা যেখানে ৭০% সম্ভাবনার কথা জানায়, সেখানে বাংলাদেশীসহ কালো আফ্রিকান, ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানী জাতীগোষ্ঠির মেয়েরা তাদের কমপক্ষে ৮০% সম্ভাবনার কথা জানায় জরিপকারীদের।
অল্প বয়সে স্থির করা পেশাগত জীবনের লক্ষ্যের প্রতি বাংলাদেশীসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েরা কেন স্থির থাকতে পারেনা, বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত এলএসই গ্রাজুয়েট চাকুরীজীবি তরুণ রাইয়ান হকের কাছে এমনটি জানতে চাইলে সত্যবাণীকে তিনি বলেন, বাংলাদেশীসহ এথনিক গ্রুপগুলোর মা-বাবাদের মধ্যে শিশু বয়স থেকেই নিজেদের ইচ্ছে সন্তানের উপর চাপিয়ে দেয়ার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। আমার ধারণা, ৭ বছর বয়সের একটি শিশু ডাক্তার হওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে তাঁর মা-বাবার ইচ্ছের প্রতিফলনই করেছে তাদের মতামতে। কিন্তু ১৪ বছর বয়সে এসে যখন এ চাপ সে আর সহ্য করতে পারেনা তখনই শিশু বয়সে নির্ধারিত লক্ষ্যে আর স্থির থাকতে পারেনা।