img

বিশ্ব ইজতেমা: প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত আজ

প্রকাশিত :  ০৪:৩২, ১২ জানুয়ারী ২০২০

বিশ্ব ইজতেমা: প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত আজ

জনমত ডেস্ক : আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে আজ রোববার শেষ হচ্ছে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। মোনাজাতে যোগ দিতে টঙ্গীর তুরাগতীরে ঢল নেমেছে লাখ লাখ মুসল্লির।

বেলা ১১টা থেকে ১২টার মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে আখেরি মোনাজাত। মোনাজাত পরিচালনা করবেন কাকরাইল জামে মসজিদের খতিব ও তাবলীগ জামাতের কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য হাফেজ মাওলানা জুবায়ের আহমেদ।

কনকনে শীত ও হিমেল বাতাসে শনিবার ইজতেমায় যোগ দেন মুসল্লিরা। ঠাণ্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেকেই। ময়দানে পানি স্বল্পতা ও ময়লার স্তূপের জন্যও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে মুসল্লিদের। বার্ধক্য ও অসুস্থতাজনিত কারণে এ পর্যন্ত ১২ মুসল্লি মারা গেছেন। ১৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব।

ইজতেমার রেওয়াজ অনুযায়ী, দ্বিতীয় দিন শনিবার অনুষ্ঠিত হয় যৌতুকবিহীন বিয়ে। মাঝে কয়েক বছর বন্ধ থাকার পর শনিবার আবারও এ ঐতিহ্যে ফিরল ইজতেমা।

এদিন বয়ানমঞ্চে ১০০ জোড়া যৌতুকবিহীন বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এসব বিয়ে পড়ান মাওলানা জোহায়েরুল হাসান।

ইজতেমা ময়দানে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। এর পরও শনিবার বহু মুসল্লিকে ময়দানের উদ্দেশে আসতে দেখা গেছে।

তবে ভেতরে ঠাঁই না পেয়ে তাদের অবস্থান নিতে হয়েছে বিভিন্ন সড়ক ও আশপাশের এলাকার মাঠে। কয়েক লাখ মুসল্লির সমাগমে শিল্পনগরী টঙ্গী পরিণত হয়েছে ধর্মীয় নগরীতে।

বাদ ফজর ভারতের মাওলানা আবদুর রহমানের বয়ানের মধ্য দিয়ে ইজতেমার দ্বিতীয় দিনের কার্যক্রম শুরু হয়। এ বয়ান বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা আবদুল মতিন।

বাদ জোহর বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ইসমাইল গোদরা। তা বাংলায় ভাষান্তর করেন মাওলানা মো. নূর-উর-রহমান। বাদ আসর বয়ান করেন ভারতের মাওলানা জোহায়েরুল হাসান। বাদ মাগরিব বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা। আজ বাদ ফজর বয়ান করেন মাওলানা জিয়াউল হক। আখেরি মোনাজাতের আগে বিশেষ সমাপনী বয়ান করবেন মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা।

মাওলানা আবদুর রহমান ইমান ও আমল, জাহান্নাম-জান্নাত এবং দাওয়াতের মেহনতের ওপর বয়ান করেন।

তিনি বলেন, ঘর তৈরি করতে গেলে যে পরিমাণ মেহনত প্রয়োজন, আমরা সে পরিমাণ মেহনত করলে একটি ঘর তৈরি হয়। ঠিক একইভাবে দাওয়াতের কাজে যে পরিমাণ মেহনত করা প্রয়োজন, সে পরিমাণ মেহনত করলে আল্লাহ-জাল্লাহ-শানহু আমাদের দাওয়াতকে কবুল করবেন।

আর দাওয়াত কবুল হলে আমাদের দোয়া কবুল হবে। দোয়া কবুল হলে আমাদের জীবন পরিবর্তন হয়ে যাবে।

তাবলিগের এ শীর্ষ মুরব্বি বলেন, উম্মতকে যে জিম্মাদারি দেয়া হয়েছে তা সাহাবায়ে আজমাইন বুঝতেন। তাই তারা দুনিয়ার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়তেন। সাহাবায়ে আজমাইনগণ তাদের জান ও মাল দাওয়াতের কাজে ব্যবহার করতেন।

তাই আল্লাহ-জাল্লাহ-শানহু প্রতি কদমে তাদের সাহায্য করতেন। আল্লাহ তাদের দাওয়াতের মাধ্যমে দেশের পর দেশ জয় করে দিয়েছেন। যেদিকে তারা মেহনত করেছেন আল্লাহতায়ালা সেদিকে হেদায়েত পৌঁছে দিয়েছেন।

মাওলানা আবদুর রহমান আরও বলেন, দুনিয়া ও আখেরাতে মানুষের জন্য সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো ইমান ও আমল। আল্লাহর কাছে ইসলাম ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণযোগ্য নয়। একেকজন মানুষকে ইসলামে দাখিল করা ও নাফরমানি থেকে বাঁচানো- এটিও আমাদের ওপর বড় জিম্মাদারি।

তিনি বলেন, যার কাছে ধনসম্পদ নেই, আমরা তাকে মিসকিন বা ফকির বলি। কিন্তু প্রকৃত মিসকিন হলো সেই ব্যক্তি, যার কাছে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ’ (সা.) মানে কালেমা নেই। যার কাছে বেহেশতে যাওয়ার সামানা নেই সে প্রকৃত মিসকিন।

img

জুমার দিনে যে পোশাক পরা সুন্নত

প্রকাশিত :  ০৫:৫৩, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন জুমাবার। এদিনের সওয়াব-মর্যাদা ঈদুল ফিতর ও আজহার মতো। জুমাবার মুসলমানদের কাছে একটি কাঙ্ক্ষিত দিন। আল্লাহ তায়ালার কাছে জুমার গুরুত্ব এত বেশি যে, পবিত্র কোরআনে ‘জুমা’ নামে একটি সূরা নাজিল করা হয়েছে।

রাসুল (স.) বলেন, ‘জুমার দিন সপ্তাহের মধ্যে শ্রেষ্ঠ এবং তা আল্লাহর নিকট অধিক সম্মানিত।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৮৪) আরও ইরশাদ হয়েছে, ‘মুমিনের জন্য জুমার দিন হলো সাপ্তাহিক ঈদের দিন।’ (ইবনে মাজাহ: ১০৯৮) 

জুমার দিনে বিশেষ কিছু আমলের কথা এসেছে হাদিস শরিফে। এর একটি হলো উত্তম পোশাক পরে জুমার নামাজ আদায় করা। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) ও আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জুমার দিন গোসল করল, তার কাছে থাকা সুন্দরতম জামাটি পরিধান করল এবং সংগ্রহে থাকলে সুগন্ধি ব্যবহার করল, এরপর জুমায় উপস্থিত হলো, কারও কাঁধ ডিঙিয়ে গেল না, তারপর আল্লাহর তাওফিক অনুযায়ী সুন্নত-নফল পড়ল, এরপর খতিব বের হওয়া থেকে নামাজ শেষ করা পর্যন্ত নীরব থাকল, তার এই নামাজ এ জুমা থেকে সামনের জুমা পর্যন্ত (গুনাহের) কাফফারা হবে।’ (আবু দাউদ: ৩৪৩) 

জুমার দিনে উত্তম পোশাক

রাসুলুল্লাহ (স.) জুমার দিনে উত্তম পোশাক পরিধানে জোর দিয়েছেন। অধিকাংশ মানুষ এক্ষেত্রে উদাসীন। ঈদের নামাজের মতোই জুমার প্রস্তুতি নিতে হয়। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (স.) জুমার দিন মানুষের উদ্দেশে ভাষণ দেন। তিনি তাদের বেদুইনদের পোশাক পরিহিত দেখেন। তখন তিনি বলেন, ‘তোমাদের কী হলো? যার সামর্থ্য আছে সে যেন তার কাজকর্মের সময়ে ব্যবহৃত কাপড় দুটি ছাড়া জুমার নামাজের জন্য আরও দুটি কাপড়ের ব্যবস্থা করে।’ (আবু দাউদ: ১০৭৮, ইবনে মাজাহ: ১০৯৬)

রাসুল (স.)-এর সাদা রংয়ের জামা পছন্দ করতেন। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুল (স.) বলেছেন, ‘তোমরা সাদা কাপড় পরিধান করবে। কারণ তা তোমাদের জন্য উত্তম। আর তোমরা সাদা কাপড় দিয়ে মৃতদের দাফন করবে এবং তোমাদের জন্য উত্তম সুরমা হলো ইসমাদ। এতে দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং পলকে পশম উৎপন্ন করে।’ (আবু দাউদ: ৩৮৩৮) 

উত্তম পোশাকে নামাজ পড়ার ফজিলত

নামাজ মহান ইবাদত। আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎস্বরূপ। এমন ইবাদতের জন্য পোশাক হওয়া চাই যথোপযুক্ত। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন- يَا بَنِي آدَمَ خُذُوا زِينَتَكُمْ عِندَ كُلِّ مَسْجِدٍ ‘হে আদম সন্তান! প্রত্যেক নামাজের সময় সাজসজ্জা (সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদ) গ্রহণ করো।’ (সুরা আরাফ: ৩১) ভালো জামা না থাকলে পুরনো কাপড় পরাতেও দোষ নেই। তবে তা যেন পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অহংকার আসতে পারে—এমন কাপড় পরিধান করা বাঞ্ছনীয় নয়। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি: ৫/৩৩৩)