img

ব্রেক্সিট পরবর্তী অভিবাসন : কম দক্ষ শ্রমিকদের ভিসা দেবে না ব্রিটেন

প্রকাশিত :  ১৪:২৮, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২০

ব্রেক্সিট পরবর্তী অভিবাসন : কম দক্ষ শ্রমিকদের ভিসা দেবে না ব্রিটেন

জনমত ডেস্ক: ব্রেক্সিট পরবর্তী অভিবাসন প্রক্রিয়ায় কম দক্ষ শ্রমিকদের ভিসা না দেওয়ার একটি পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্য সরকার।

নতুন পরিকল্পনায় তারা নিয়োগকর্তাদের ইউরোপের ‘সস্তা শ্রমিকদের’ ওপর থেকে নির্ভরশীলতা ছাড়তে এবং এখনকার কর্মী ও স্বয়ংক্রিয় প্রযুক্তির ওপর বিনিয়োগ বাড়ানোরও পরামর্শ দিয়েছে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যে বাধাহীন চলাফেরার সময়সীমা শেষ হলে ইইউ ও ইইউবহির্ভুত দেশের নাগরিকদের একই মাপকাঠিতে বিচার করা হবে বলেও জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ব্রিটেনের বিরোধী লেবার পার্টি সরকারের এ পরিকল্পনার সমালোচনা করে বলছে, নতুন এ নিয়মের ফলে সৃষ্ট ‘প্রতিকূল পরিবেশ’ শ্রমিকদের আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।

কিন্ত যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেছেন, নতুন অভিবাসন নীতিতে ‘মেধাবী ও সেরা মানুষরা যুক্তরাজ্যে আসার সুযোগ পাবেন’।

বরিস জনসন নেতৃত্বাধীন টোরি সরকার জানিয়েছে, তারা যুক্তরাজ্যে অভিবাসীর সংখ্যা কমানোর লক্ষ্য হিসেবে একটি ‘নম্বরভিত্তিক অভিবাসন প্রক্রিয়া’ চালু করতে চাইছেন। গত বছরের সাধারণ নির্বাচনের আগেও তাদের এমনই প্রতিশ্রুতি ছিল বলে জানিয়েছে তারা।

নতুন এ পরিকল্পনায় বিদেশি শ্রমিকরা যুক্তরাজ্যে আসতে চাইলে তাদের অবশ্যই ইংরেজিতে কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে এবং ‘অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের’ অধীনে দক্ষতানস্পন্ন কোনো চাকরিতে নিয়োগ পেতে হবে।

এসব শর্ত পূরণ হলে তারা ৫০ নম্বর পাবেন। যুক্তরাজ্যে কাজ করতে হলে অভিবাসীদের সবমিলিয়ে ৭০ নম্বর থাকতে হবে; নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, চাকরির বেতন এবং শ্রমিক ঘাটতি আছে এমন খাতে কাজ করার প্রমাণ দিতে হবে।

নতুন পরিকল্পনায় স্বল্প দক্ষ শ্রমিকদের জন্য কোনো সুযোগ থাকবে না বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাজ্য সরকার। ইইউ সদস্য রাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অবাধ চলাচল শেষ হওয়ার পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিতে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরামর্শও দিয়েছে তারা।

কম দক্ষ শ্রমিকদের পথ বন্ধ হলেও যুক্তরাজ্যে থাকতে চাওয়া ইইউ দেশগুলোর ৩২ লাখ নাগরিকদের দিয়ে শ্রমবাজারের চাহিদা মেটানো যাবে বলেও আশা তাদের। এর পাশাপাশি, কৃষিখাতে মৌসুমি শ্রমিক আসার অনুমোদন চার গুণ বাড়িয়ে ১০ হাজার করা এবং ‘ইয়ুথ মোবিলিটি অ্যাগ্রিমেন্ট’-এর অধীনে প্রতি বছর ২০ হাজার তরুণকে যুক্তরাজ্যে আসার সুযোগ করে দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার।

নতুন এ পরিকল্পনায় প্রতিবছর কি পরিমাণ দক্ষ শ্রমিক আসার অনুমতি পাবে, তার কোনো সীমা রাখা হয়নি। বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান একে স্বাগত জানিয়েছে।

বিদেশি কেউ যুক্তরাজ্যে পড়তে চাইলে তাদেরকে অবশ্যই ইংরেজি জানতে হবে এবং যুক্তরাজ্যের কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রস্তাব পেতে হবে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য এসব নিয়ম শিথিল হতে পারে। তবে ইইউভুক্ত দেশগুলো থেকে যারা যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করতে চাইবেন তাদের জন্য কড়াকড়ি থাকবে।

দর্শনার্থীরা ভিসা ছাড়া ছয় মাসের জন্য থাকতে পারলেও কাজ করার অনুমতি পাবেন না। যাদের দক্ষতা রয়েছে তাদের চাকরির অনুমোদন নিয়ে আসতে হবে এবং অভিবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ৭০ পয়েন্ট পেতে হবে।

রেস্টুরেন্ট, হোটেল, সেবা খাত এবং খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় দক্ষতা নেই এমন কোনও অভিবাসী চাকরি করতে পারবে না।

নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, অভিবাসীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত আয়-সংক্রান্ত সুবিধা ছাড়া অন্য কোনো সুবিধা পাবে না। বর্তমানে সাধারণত ৫ বছর ধাকার পর অভিবাসীরা যুক্তরাজ্যে অনির্দিষ্টকাল থাকার অনুমতি পান।

জনসন সরকার অভিবাসন নিয়ে তাদের এ নতুন পরিকল্পনার কথা জানালেও পার্লামেন্টের সদস্যদের অনুমোদন ছাড়া এটি কার্যকর হবে না।

ব্রেক্সিট এর আরও খবর

img

অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি স্টেলার আহ্বান

প্রকাশিত :  ০৭:৩১, ০৭ জানুয়ারী ২০২১

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : লন্ডনের আদালতে উইকিলিকস-এর সহ প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের জামিন আবেদন প্রত্যাখ্যাত হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেছেন তার জীবনসঙ্গী স্টেলা মরিস। বুধবার (৬ জানুয়ারি) অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত অভিযোগগুলো প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

২০১২ সালের জুন থেকে লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে রাজনৈতিক আশ্রয়ে ছিলেন উইকিলিকস প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ। ২০১৯ সালের এপ্রিলে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রত্যাহার করে তাকে ব্রিটিশ পুলিশের হাতে তুলে দেয় ইকুয়েডর। ওইদিনই তাকে জামিনের শর্ত ভঙ্গের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করেন ব্রিটিশ আদালত। এরইমধ্যে তার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি কম্পিউটার হ্যাক ও গুপ্তচর আইন লঙ্ঘনসহ ১৮টি অভিযোগ দায়ের করা হয়। সোমবার (৪ জানুয়ারি) লন্ডনের একটি আদালতে অ্যাসাঞ্জকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণসংক্রান্ত মামলার রায় দেওয়া হয়। বলা হয়, তাকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দেওয়া হবে না। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দুই সপ্তাহের মধ্যে আইনি যুক্তি উপস্থাপনের কথা জানিয়েছে তারা।

বুধবার (৬ জানুয়ারি) অ্যাসাঞ্জের জামিন আবেদন খারিজ হয়ে যাওয়ার পর আদালত প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকার দেন তার জীবনসঙ্গী স্টেলা মরিস। জামিন খারিজ হওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি প্রচণ্ড হতাশার। জুলিয়ানের বেলমার্শ কারাগারে থাকা ঠিক হবে না। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য আমি আইন বিভাগের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি। একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকেও আহ্বান জানাচ্ছি যেন তারা জুলিয়ানকে ক্ষমা করে দেয়।’

এর আগে গত এপ্রিলেও অ্যাসাঞ্জের জামিন চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন স্টেলা মরিস। জামিন আবেদনের সঙ্গে দেওয়া এক বিবৃতিতে কীভাবে অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছিল তাও প্রকাশ করেছিলেন এ আইন গবেষক। মরিস জানান, অ্যাসাঞ্জের সঙ্গে তার দেখা হয় ২০১১ সালে। তখন তাকে সুইডিশ আইন তত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করতে বলা হয়েছিল। মরিস বিবৃতিতে লিখেছিলেন, ‘সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জুলিয়ান ও আমার মধ্যে ভালো রকমের বুদ্ধিভিত্তিক ও আবেগী বন্ধন গড়ে ওঠে। আমরা একে অপরের সেরা বন্ধুতে পরিণত হই।’

প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও বন্ধুত্ব জোরালো হতে থাকে উল্লেখ করে মরিস জানান, তাদের দুই জনের সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে ২০১৫ সাল থেকে। লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে থাকার সময় তাদের দুটি সন্তানও হয়। তাদের একজনের নাম গ্যাব্রিয়েল, অপরজনের নাম ম্যাক্স। অ্যাসাঞ্জ যে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে তা থেকে সন্তানদের আড়াল রাখতে চেয়েছিলেন বলে তখন জানান এ আইন বিশেষজ্ঞ।

ব্রেক্সিট এর আরও খবর