মুন সিনেমা হলের মালিককে ৯৯ কোটি টাকা দেবে সরকার
জনমত রিাপোর্ট ।। পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাট এলাকার আলোচিত মুন সিনেমা হলের মালিককে ৯৯ কোটি টাকা পরিশোধের যে নির্দেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, তা পরিশোধ করার জন্য সম্মত হয়েছে সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়। আজ সোমবার (৮ অক্টোবর) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ৪ বিচারপতির আপিল বেঞ্চকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিষয়টি অবহিত করেন।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একরামুল হক। অন্যদিকে মুন সিনেমা হলের মালিকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ও সাইফুল্লাহ মামুন।
এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, এ মামলা শুনতে শুনতে আমরা ক্লান্ত। আর কতদিন এভাবে ঘুরাবেন?
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছ টাকা পেলেই এ অর্থ নিয়ে তা ইটালিয়ান মার্বেলকে দেবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। পরে আদালত এ অর্থ পরিশোধের জন্য ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেন।
এ প্রক্রিয়ার জন্য আজ ৩ মাস সময় চাওয়া হলে আদালত আগামী ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত পরর্র্বতী তারিখ নির্ধারিত করেছেন। অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক চিঠির বরাতে আদালতকে জানানো হয়েছে, সংশোধিত বাজেট থেকে ওই অর্থ বরাদ্দ দেয়ার প্রস্তাব রয়েছে।
এর আগে গত ১ জুলাই পুরান ঢাকার মুন সিনেমা হলের মালিককে দ্রুত অর্থ পরিশোধের জন্য মুক্তিযুদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্ট কর্তৃপক্ষকে মৌখিক নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। ওই দিন আদালত বলেছিলেন, অর্থ পরিশোধ না করলে সংশ্লিষ্ট সবাইকে তলব করা হবে।
চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি পুরান ঢাকার মুন সিনেমা হলের মালিককে ৯৯ কোটি টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টকে তিন কিস্তিতে এ টাকা পরিশোধ করতে বলা হয়।
আলোচিত মুন সিনেমা হলের মালিকানা নিয়ে মামলার পর সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনী বাতিল হয়েছিল। সেই সিনেমা হলের জমি এবং তার ওপর গড়ে তোলা বর্তমান স্থাপনার নির্ধারিত মূল্য পরিশোধের নির্দেশ দেন আদালত। ওই দিন আদালত আদেশে বলেন, মুন সিনেমা হলের মূল মালিক ইটালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেড কোম্পানিকে তিন কিস্তিতে এই ৯৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা পরিশোধ করবে মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্ট। প্রথম কিস্তিতে দুই মাসের মধ্যে ২৫ কোটি টাকা, পরের দুই মাসের মধ্যে আরও ২৫ কোটি এবং বাকি টাকা আগামী ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে দিতে হবে।
এর আগে গত বছরের ১৫ জানুয়ারি মুন সিনেমা হলের জমি এবং তার ওপর গড়ে তোলা বর্তমান স্থাপনার মূল্য নির্ধারণের নির্দেশ দিয়েছিল আপিল বিভাগ। সেইসঙ্গে একজন ‘অভিজ্ঞ ও নিরপেক্ষ’ প্রকৌশলীকে দিয়ে হলের সিনেমা হলের জমি ও স্থাপনার মূল্য নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
তার ধারাবাহিকতায় মূল্য নির্ধারণ করে অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীর দেওয়া প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করা হলে আদালত মূল্য পরিশোধের এ আদেশ দেন।
পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাটে এক সময়ের মুন সিনেমা হলের মূল মালিক ছিল ইটালিয়ান মার্বেল ওয়ার্কস লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি। মুক্তিযুদ্ধের সময় ওই সম্পত্তি ‘পরিত্যক্ত’ ঘোষণা করা হয় এবং পরে শিল্প মন্ত্রণালয় ওই সম্পত্তি মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টের অধীনে ন্যস্ত করে।