এমপি মজিদ খানকে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা, সঙ্গী নিহত

প্রকাশিত :  ০৭:৪১, ১৩ অক্টোবর ২০১৮

এমপি মজিদ খানকে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা, সঙ্গী নিহত
 জনমত ডেস্ক । দলীয় নেতাকর্মীসহ শুভাকাক্সক্ষীগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন ॥ ঘাতক গাড়িচালককে খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি প্রদানের দাবি
এসএম সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জ শহরে প্রধান সড়কের টাউন হল রোড এলাকায় প্রাতভ্রমণকালে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানের প্রাতভ্রমণ সঙ্গী ঠিকাদার শাহ মাসুদ আহমেদ (৫৫) পিকআপ ভ্যানের চাপায় নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় কোন ধরণের আহত না হলেও অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন এমপি আব্দুল মজিদ খান। এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও শুভাকাক্সক্ষীদের ধারণা এমপি মজিদ খানকে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। এ খবর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে দলীয় নেতাকর্মীগণসহ শুভাকাক্সক্ষীগণ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। সকলেই ঘাতক গাড়িচালককে খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি প্রদানের দাবি জানিয়েছেন। দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে যাওয়া এমপি মজিদ খানকে দেখার জন্য ও তাঁকে শান্তনা দেয়ার জন্য দিনভর এমনকি রাতেও তাঁর টাউনহল রোডস্থ বাসা বাঁধন কুটিরে ভিড় জমান দলীয় নেতাকর্মী ও শুভাকাক্সক্ষীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান প্রতিদিন ফজরের নামাজ শেষে প্রাতভ্রমণ বা হাটতে বের হন। মঙ্গলবারও নিয়মিতভাবে কয়েক সঙ্গীসহ হাটতে বের হন। তারা টাউন হল রোডের বলাকা ডেকোরেটার্সের কাছে চৌধুরী বাজার থেকে শায়েস্তাগঞ্জমুখী একটি পিকাআপ ভ্যান বেপরোয়া গতিতে এসে এমপি মজিদ খান সহ তাঁর সঙ্গীদের উপর দিয়ে চলে যায়। এ সময় গাড়িটির ধাক্কায় এমপি মজিদ খানের সঙ্গী ঠিকাদার শাহ মাসুদ আহমেদ গুরুতর আহত হন। এ সময় এমপি মজিদ খানের উপর সঙ্গীর ধাক্কা লাগে। তবে তিনি আহত হননি। সাথে সাথে এমপি মজিদ খানসহ সঙ্গীয় অন্যরা আহত শাহ মাসুদ আহমেদকে উদ্ধার করে সিএনজি অটোরিকশাযোগে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যান। তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় সেখানে কর্মরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। পথে তিনি মারা যান। 
এদিকে এ ঘটনাটি ছড়িয়ে পড়লে এমপি’র বাসায় দলীয় নেতাকর্মীরা এসে ভিড় জমান। তাদের দাবি, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এমপি মজিদ খানের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান তারা। অপরদিকে ঘটনার পর পরই হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যাহ নিহতের বাসায় যান। তিনি নিহতের লাশের ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণের জন্য স্বজনদের অনুরোধ করেন। নিহতের বাসায় অবস্থানরত এমপি মজিদ খানের প্রতি পুলিশ সুপার অনুরোধ জানান, লাশের ময়না তদন্তের জন্য। কিন্তু নিহতের স্বজনরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন সম্পন্ন করতে চাইলে তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়া দাফন করা হয়। 
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক সেলিম চৌধুরী জানান, এমপি মজিদ খান ছিলেন রাস্তার ডান দিকে। আর পিকআপ গাড়ীটির সাইড ছিল বাম দিকে। এছাড়াও সকালে রাস্তা ফাঁকা ছিল। এ সময় কোন ধরণের যানজট ছিল না। এতে বুঝা যাচ্ছে, ষড়যন্ত্রকারীরা এমপিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মহান আল্লাহতায়ালার অশেষ মেহেরবাণীতে তিনি বেঁচে গেছেন। এই আওয়ামী লীগ নেতা ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
জেলা আওয়ামী লীগ নেতা তজম্মুল হক চৌধুরী জানান, ফাঁকা রাস্তার মধ্যে বাম দিকের গাড়ী ডান দিকে এসে চাপা দেয়ার বিষয়টি আমার কাছে পরিকল্পিত মনে হচ্ছে। এ ঘটনা দ্রুত তদন্ত করে রহস্য উদঘাটন করতে হবে। এ ব্যাপারে নিহতের সাথে থাকা অ্যাডভোকেট মোস্তফা মিয়া জানান, প্রতিদিন এমপি মজিদ খানসহ কয়েকজন ভোর সকালে রাস্তায় হাঁটাহাটি করেন। প্রতিদিনের ন্যায় গতকাল তারা এক সাথে হাটছিলেন। তারা ৪জন একই লাইনে ছিলেন। এক পর্যায়ে মোস্তফা মিয়া নিহত মাসুদ আহমেদ, এমপি মজিদ খান ও ফারুকুল আনছারী পেছনে পড়ে যান। একই লাইনে তারা ৩জন হাঁটছিলেন। একদিকে ছিলেন নিহত মাসুদ আহমেদ অপরদিকে ফারুকুল আনছারী। মধ্যস্থানে ছিলেন এমপি মজিদ খান। হঠাৎ করে বেপরোয়া পিকআপ গাড়ীটি তাদেরকে ধাক্কা মারলে মাসুদ আহমেদ রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। এ সময় এমপি মজিদ খান মাসুদ আহমেদের ধাক্কা খেয়ে দূরে সড়ে যান। ধাক্কা দেয়ার পরপরই চালক আবারও গাড়ীটি মাসুদ আহমেদের উপরে তুলে পালিয়ে যায়। আহত অবস্থায় এমপি মজিদ খান, ফারুকুল আনছারী তাৎক্ষণিক মাসুদ আহমেদকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। পথিমধ্যে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। অ্যাডভোকেট মোস্তফা মিয়া আরো বলেন- আমাদের যেভাবে চাপা দিয়েছে, এতে মনে হচ্ছে এটি একটি পরিকল্পিত ঘটনা। আমি ব্যক্তিগতভাবে এই ঘটনাটি তদন্তের দাবি জানাচ্ছি। 
এ ব্যাপারে এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান দৈনিক খোয়াইকে জানান, প্রতিদিন ফজরের নামাজ শেষে সকালে রাস্তায় হাটাহাটি করা আমার অভ্যাস। আমার সাথে নিহত মাসুদ আহমেদও প্রায় দিন মর্নিং ওয়ার্ক করতেন। রাস্তা ফাঁকা সত্ত্বেও চালক আমাদের উপর গাড়িটি তুলে দিল। সেটা আমি ভাবতে পারছি না। অথচ তার গাড়ীর সাইড ছিল ডান দিকে। আমরা বাম দিকে হাঁটছিলাম। এ ঘটনাটি পরিকল্পিত কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন- এ ঘটনাটি নিয়ে আমি বুঝে উঠতে পারছি না। তিনি এ ঘটনার তদন্তের দাবি জানান। এ ব্যাপারে নিহতের ছোট ভাই শাহ মহিবুর রহমান জানান, এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানের সাথে তার ভাই মাসুদ আহমেদের সুসম্পর্ক ছিল। তিনি তার সাথে দীর্ঘদিন চলাফেরা করছেন। গতকাল নামাজ শেষে হাটতে গিয়েছিলেন। কিন্তু অকালেই আমার ভাইকে প্রাণ হারাতে হল। আমরা দুর্ঘটনা মনে করে আমার ভাইয়ের লাশের দাফন সম্পন্ন করেছি। আমার ভাইয়ের এ ঘটনার বিচার মহান আল্লাহতায়ালাই করবেন। এ ব্যাপারে আমাদের কোন অভিযোগ নেই। 
পারিবারিক সূত্র জানায়, নিহত মাসুদ আহমেদরা ৫ ভাই। এর মধ্যে মাসুদ আহমেদ ৩ নাম্বার। তার ১ পুত্র ও ১ কন্যা সন্তান রয়েছে। ছেলে শাহ মোজাহিদুর রহমান জামিল সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্সের ছাত্র। মেয়ে নুরসাত জাহান শিমু ১০ম শ্রেণীতে লেখাপড়া করছে। এলাকাবাসী জানান ব্যক্তিগত জীবনে মাসুদ আহমেদ ভাল মানুষ ছিলেন। তিনি সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। 
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সহিদুর রহমান জানান, ঘটনার ৩ ঘন্টা পর সংবাদ পেয়েছি। আমরা ঘটনাস্থল থেকে সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। কিন্তু ভিডিও ফুটেজ পরিস্কারভাবে বুঝা যাচ্ছে না। তারপরও আমরা আশাবাদী এ ঘটনায় পরিবহন ও চালককে আটক করতে পারবো। এদিকে গতকাল বাদ জোহর নিহত মাসুদ আহমেদের ১ম জানাজার নামাজ হবিগঞ্জ শহরের সওদাগর জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়। এতে এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। পরবর্তীতে মরহুমের লাশ নিজ গ্রাম নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুর দরগাহ পাড়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ২য় জানাজার নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়। এদিকে এমপি মজিদ খানকে গাড়িচাপা দিয়ে হত্যা চেষ্টার ঘটনায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করে তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে।
ফেসবুকে এমপি মজিদ খানের একান্ত সচিবের স্ট্যাটাস ঃ ঘটনাটি সম্পর্কে এমপি মজিদ খানের একান্ত সচিব সেলিম উদ্দিন ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। এতে তিনি লিখেন- “হবিগঞ্জ-২ বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল মজিদ খান মহোদয়কে হত্যার চেষ্টা। একজন নিহত। আজ ফজরের নামাজ পড়ে ভোর ৫:৩৫ ঘটিকায় হবিগঞ্জ প্রধান সড়কে বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোঃ আব্দুল মজিদ খান মহোদয় চার জনকে সাথে নিয়ে রাস্তার ডান পাশে হাঁটা শুরু করেন রওশন রেজা এম্পায়ারের সামনে আসামাত্রই এমপি মহোদয়কে উদ্দেশ্য করে একটি পিকআপ রংসাইডে এসে পিছন দিক থেকে সজোরে ধাক্কা মারে তখন এমপি মহোদয়ের বাম পাশে থাকা বিশিষ্ট ঠিকাদার শাহ মাসুদ আহমেদ রাস্তায় পড়ে যান তাকে গাড়ি চাপা দিয়ে মেরে ফেলে এবং এমপি মহোদয় ধাক্কা খেয়ে ডান পাশে থাকা অ্যাডভোকেট মোঃ মস্তোফা মিয়া সাহেবের উপরে পরে যান আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি বেঁচে যান। আমার ধারণা পরিকল্পিতভাবে গাড়ী চাপা দিয়ে এমপি মহোদয়কে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। আল্লাহ্র অশেষ রহমতে তিনি বেঁচে গিয়েছেন। এই ষড়যন্ত্রকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জোরালো দাবি জানাচ্ছি।”
ফেসবুকে এমপি কেয়া চৌধুরীর স্ট্যাটাস ঃ গাড়িচাপায় এমপি মজিদ খানের প্রাতভ্রমণ সঙ্গী নিহত হওয়ার ঘটনায় ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট কেয়া চৌধুরী। এতে তিনি লিখেন “আমাদের হবিগঞ্জ-২ আসনের মাননীয় সাংসদ ও হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুল মজিদ খান ভাই একজন ভালো মনের মানুষ। তার নির্বাচনী এলাকায় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গেলে মজিদ ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে জনগণের মুখে তার অনেক উন্নয়নের বা ভাল কাজের সুনাম শুনি। ভাল লাগে, একজন সৎ রাজনীতিবিদ নম্র-ভদ্র-বিনয়ী মানুষ হিসাবে হবিগঞ্জ জেলায় তার সুনাম দেখে। শুনলাম, সামান্যের জন্য ঘাতকের হাত হতে তিনি রক্ষা পেয়েছেন। দুর্ভাগ্য আমাদের, ভাল মানুষের ওপর অপশক্তির এমন আগ্রাসন। তবে, সৎ আন্তরিকতা, নীতি আদর্শ নিয়ে যারা রাজনীতি করেন, তাদের উপর আল্লাহ সহায় থাকেন। এটাই সত্য। কিন্তু কিছু সময়ের জন্য কোনো বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহল হয়ত আঘাত আনতে পারে। তবে তা স্থায়ী হয় না।”
এমপি মজিদ খানের বাসভবনে বিএনপি নেতা ডা. জীবন ঃ দুর্ঘটনার খবর পেয়ে এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানকে দেখতে তাঁর বাসভবনে যান বিএনপি কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন। এ সময় তিনি দুর্ঘটনার বিষয়ে খোঁজখবর নেন। ডা. জীবনের সাথে ছিলেন বানিয়াচং উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ বশির আহমেদ।

সিলেটের খবর এর আরও খবর

সিলেটে র‍্যাবের অভিযানে ১২ ছিনতাইকারী গ্রেফতার

প্রকাশিত :  ০৫:০০, ২৮ মার্চ ২০২৪

সিলেটে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে সক্রিয় থাকা ছিনতাই চক্রের ১২ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৯)।

বুধবার (২৭ মার্চ) সিলেট মহানগরীর বন্দর বাজার, চৌহাট্টা পয়েন্ট, মহাজনপট্টি, রেলস্টেশন ও শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

সন্ধ্যায় র‌্যাব-৯ এর সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন অধিনায়ক উইং কমান্ডার মো. মোমিনুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে উইং কমান্ডার মো. মুমিনুল হক জানান, পবিত্র রমজান এবং আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক সময়ে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজ, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি ও ছিনতাইকারী চক্রের তৎপরতা বেপরোয়াভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যরা নিরীহ মানুষকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে টাকা-পয়সা, ব্যাগ, মোবাইল, স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করে জনজীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে। এরই প্রেক্ষিতে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনতে র‍্যাব-৯, সিলেট গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে এবং শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত সংঘবদ্ধ চক্রকে শনাক্ত করে।

এরই ধারাবাহিকতায় র‍্যাব-৯ সিলেটের একাধিক দল বুধবার সিলেট মহানগরীর বন্দর বাজার, চৌহাট্টা পয়েন্ট, মহাজনপট্টি, রেলস্টেশন ও শহরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ ছিনতাই চক্রের ১২ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

তিনি আরও বলেন, গ্রেফতাররা সিলেট শহরের বিভিন্ন জনবহুল এলাকায় একাধিক সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী চক্র। এসব ছিনতাইকারী সাধারণ পথচারী, রিকশা আরোহী, সিএনজি আরোহী, যানজটে থাকা যানবাহনের যাত্রীদের টার্গেট করে তাদের সুবিধাজনক স্থান ও সময়ে ছিনতাই কার্যক্রম পরিচালনা করে। সিএনজিতে যাত্রী বেশে অবস্থান নিয়ে সুবিধাজনক স্থানে সিএনজি থামিয়ে সিএনজিতে থাকা অন্যান্য যাত্রীদের কাছ থেকে মোবাইল, মানিব্যাগ কিংবা পার্স ছিনিয়ে নেয়।