ব্রেক্সিটে উত্তপ্ত রাজপথ

img

দ্বিতীয় গণভোটের দাবিতে লন্ডনে লাখো মানুষের ঢল

প্রকাশিত :  ১৭:৩০, ২১ অক্টোবর ২০১৮
সর্বশেষ আপডেট: ১৭:৪৯, ২১ অক্টোবর ২০১৮

 দ্বিতীয় গণভোটের দাবিতে লন্ডনে লাখো মানুষের ঢল

জনমত ।। ইইউ পরিত্যাগ করার বিষয়ে দ্বিতীয়বার গণভোটের দাবিতে লন্ডনের রাজপথে আন্দোলনে নেমেছিল লাখ লাখ ব্রিটিশ নাগরিক। ব্রেক্সিট নিয়ে এটাই এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সমাবেশ বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো।

শনিবার (২০ অক্টোবর) লন্ডনে আন্দোলনটি অনুষ্ঠিত হয়। আন্দোলনকারীদের হাতে ছিলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নীল ও সোনালি পতাকা। ব্যানারগুলোতে লেখা ছিলো আরেকটি গণভোটের দাবির কথা। 

আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো জানায়, এ আন্দোলনের কারণে আবারও চাপের মুখে পড়বেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়ন নেতাদের সঙ্গে ব্রেক্সিট আলোচনায় ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।

জানা যায়, আগামী বছরের মার্চ মাসেই ইইউ ত্যাগ করছে যুক্তরাজ্য। কয়েক মাস আলোচনার পর দেশটির প্রধান দলগুলোর মধ্যে ব্যাপক বিভেদ দেখা দিয়েছে। কনজারভেটিভরা নিজেদের মধ্যে কোন্দল শুরু করা ছাড়াও কীভাবে ইইউ ছাড়া হবে তা নিয়ে দ্বিধান্বিত হয়ে আছে লেবার পার্টি। তবে দুই দলের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, দ্বিতীয়বার গণভোট করার সময় পর্যাপ্ত সময় কি আসলেই আছে?

মিছিলের আয়োজকদের একজন জেমস ম্যাকগ্ররি বলেন, ভোটারদের সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের সুযোগ দেওয়া উচিৎ। কারণ এ সিদ্ধান্তে পরবর্তী প্রজন্মের ওপরও প্রভাব ফেলবে। সবাই মনে করছে ব্রেক্সিট আলোচনায় জট পাকিয়ে গেছে। সরকারের ওপর কোনও আস্থা নেই তাদের।

আয়োজকদের দাবি, মিছিলে সাত লাখ ব্রিটিশ নাগরিক অংশ নেয়। ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের বিরোধিতার ঘটনার পর এটাই যুক্তরাজ্যে এটাই সবচেয়ে বড় মিছিল।

দেশটির মেট্রোপলিটন পুলিশ বলছে, যে পরিমাণ লোক ছিল তার সঠিক সংখ্যা জানানো সম্ভব না। 


লন্ডনের মেয়র সাদিক খান, যিনি মূল রাজনৈতিক দলগুলোর সহায়তা নিয়ে পার্লামেন্ট স্কয়ার এলাকা থেকে এ সমাবেশের যাত্রা শুরু করেছিলেন। তার সঙ্গে ছিলো জনপ্রিয় বক্তা স্টিভ কোগান, ডেলিয়া স্মিথ এবং দেবোরাহ মেডেন। 

সাদিক খান বলেন, কোনটা আসলে গুরুত্বপূর্ণ যে, ভোটটি আনডেমোক্রেটিক, আনপ্যাট্রিয়োটিক। তবে এটা বোঝা যাচ্ছে সঠিক বিরোধীরাই যা বলছে তা সত্য। তাহলে আরও ডেমোক্রেটিক বিষয়টি কি বা আরো ব্রিটিশ নাগরিকে পরিণত হওয়া মানে কি? এক্ষেত্রে ব্রিটিশ সাধারণ নাগরিকদের বিচার মেনে নিতে হবে।

হ্যারোগেট এলাকায় প্রো-ব্রেক্সিট এলাকায় যখন সমাবেশ শুরু হয়েছিল তখনই যাত্রাটি শুরু হয়েছিল। যার মূল আয়োজক ছিল ইউকেআইপি’র সাবেক নেতা নিগেল ফারাজ।

গত জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যের চেকার্সে অনুষ্ঠিত বৈঠকে ব্রেক্সিটের জন্য থেরেসা মে যেসব শর্তের খসড়া লিপিবদ্ধ করেছিলেন সেগুলোর বিষয়ে ইইউ নেতারা অস্ট্রিয়ার সালজবার্গে বৈঠকে বসেছিলেন। গত ২০ সেপ্টেম্বর সেখানে থেরাসে মের অনুপস্থিতিতেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তার পরিকল্পনা সফল হবে না। 

মূল সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে ইইউ সদস্য রাষ্ট্র আয়ারল্যান্ড ও যুক্তরাজ্যের নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড অংশের মধ্যে বাণিজ্যের শর্ত নির্ধারণ নিয়ে। আইরিশ সীমান্তের বিষয়ে ইইউয়ের পরামর্শ হচ্ছে- নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ইউরোপীয় বাজারের অংশ হিসেবে থাকবে। আর বাকি যুক্তরাজ্য ইইউ থেকে আলাদা হয়ে যাবে। কিন্তু ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে তাদের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, এই সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিকভাবে এবং সাংবিধানিকভাবে যুক্তরাজ্যকে বিভক্ত করে ফেলবে।

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

img

ইরানের ওপর ব্রিটেন-আমেরিকার নতুন নিষেধাজ্ঞা

প্রকাশিত :  ১৮:২২, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৪:০২, ১৯ এপ্রিল ২০২৪

ইহুদিবাদী ইসরায়েলের প্রধান মিত্রদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইরানের ওপর ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘোষণা দিয়েছে। ইসরায়েলে ইরানের হামলার পর পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে দেশ দুটি। খবর পলিটিকো ইইউ ও আল জাজিরার।

যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইরানের ইউএভি (ড্রোন) উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত ১৬ ব্যক্তি এবং ২টি প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। এরা ইরানের শাহেদ ড্রোন নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত। ওই ড্রোন ১৩ এপ্রিলের হামলায় ব্যবহার করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যও ইরানের ড্রোন ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরির সঙ্গে যুক্ত দেশটির সামরিক বাহিনী-সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি সংস্থা, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে।

শনিবার রাতে ইসরাইলে প্রত্যাশিত ও অভাবনীয় হামলা চালায় ইরান। ১ এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ইসরাইলের বিমান হামলায় কয়েকজন জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা নিহতের প্রতিশোদ হিসেবে ওই হামলা চালানো হয়।

এ হামলায় তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইরান। এগুলোর বেশির ভাগই আকাশে ধ্বংস করার দাবি করেছে ইসরাইল। এ হামলা রুখতে ইসরাইলকে সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জর্ডান।

এ হামলার জবাবে ইরানে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইল। দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, নিজেদের সুরক্ষার অধিকার ইসরাইলের রয়েছে।

ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়ে এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, আজকে যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সমন্বয় এবং অংশীদার ও মিত্রদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে আমরা ইসরাইলে ইরানের নজিরবিহীন হামলার জবাব দিতে দ্রুত ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিচ্ছি।

ইরানের মারাত্মক কর্মকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো ব্যাহত ও নস্যাৎ করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক উপকরণগুলো (টুল) ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। আগামীতে ইরানের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার লক্ষ্যে কর্তৃপক্ষগুলোর তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।