চাঁদপুরে ইউপি সদস্যের গোয়াল ঘর থেকে ৫ টন ইলিশ আটক

প্রকাশিত :  ০৫:১৭, ২৭ অক্টোবর ২০১৮

চাঁদপুরে ইউপি সদস্যের গোয়াল ঘর থেকে ৫ টন ইলিশ আটক

 জনমত ডেস্ক ।। ৭ থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত উপকূলীয় এলাকার সব নদ-নদী থেকে মা ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরা, বহন, মজুত ও বিক্রি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে সরকার। কিন্তু নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বিভিন্ন স্থানে জেলেদের মাছ ধরার খবর পাওয়া যাচ্ছে। প্রশ্ন হলো নিষেধাজ্ঞা যদি বাস্তবায়নই না হয়, তাহলে তা জারি করার অর্থ কী? অবশ্য আমাদের দেশে কোনো ক্ষেত্রেই সরকারি নিষেধাজ্ঞা যথাযথভাবে প্রতিপালিত হওয়ার সংস্কৃতি গড়ে ওঠেনি। নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মাছ ধরার অপরাধে ইতিমধ্যে উপকূলীয় বিভিন্ন জেলায় ২৫ জন জেলের জেল-জরিমানা হয়েছে।

\'মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আর মাত্র দু\'দিন আছে। মা ইলিশ রক্ষায় মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই চাঁদপুরে প্রায় ৭৫০ মণ ইলিশ জব্দ করেছে টাস্কফোর্স

শুক্রবার সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের জাহাঙ্গীর মেম্বারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাছগুলো জব্দ করা হয়। অভিযান চালানোর সময় তারা পুলিশের ওপর হামলা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৪০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি নিক্ষেপ করে।

রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বন্দুকশীকান্দি গ্রামের জাহাঙ্গীর মেম্বারের বাড়িতে বিপুল পরিমাণ ইলিশ সংরক্ষণ করে রাখা হয়েছে— এমন তথ্যের ভিত্তিতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল্লাহ আল মাহমুদ জামান ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) জাহেদ পারভেজ চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশ, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, মৎস্য বিভাগের সমন্বয়ে গঠিত টাস্কফোর্স সদস্যরা শুক্রবার দুপুরে সেখানে অভিযান চালান। পরে জাহাঙ্গীর মেম্বারের বাড়ির দুটি গোয়াল ঘরে রক্ষিত প্রায় ৭৫০ মণ ইলিশ জব্দ করা হয়।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী বলেন, অভিযান চালিয়ে সেখানে রক্ষিত গোয়াল ঘর থেকে মাছগুলো জব্দ করেছি। জব্দকৃত মাছের মধ্য থেকে প্রায় ২৫০ মণ ইলিশ চাঁদপুরে নিয়ে আসা হয়েছে। সেখানে আরও ৫০০ মণেরও বেশি মাছ রয়েছে। ওই মাছগুলো রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হযরত আলীসহ স্থানীয় ৫ জনের জিম্মায় রাখা হয়েছে।\'

চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবদুলল্গাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, \'অভিযান চালাতে গেলে সেখানকার অসাধু লোকজন আমাদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় ৪০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।\'

চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান জানান, \'মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আর মাত্র দু\'দিন আছে। এ অবস্থায় জেলেরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কিন্তু আমাদের প্রশাসনের সব সদস্য মা ইলিশ রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মা ইলিশ রক্ষায় আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।\'

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আজিজুন নাহার শম্পা ও কোস্টগার্ড কমান্ডার এনায়েতুল্লাহ জানান, মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত নদীতে মাছ ধরার ওপর ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা চলছে; কিন্তু কিছু অসাধু জেলে ও স্থানীয় প্রভাবশালী নদীতে মা ইলিশ শিকার করে সংরক্ষণ করছে।

গাজীপুরে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে ২ জন নিহত

প্রকাশিত :  ০২:২৮, ২৯ মার্চ ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০২:২৯, ২৯ মার্চ ২০২৪

গাজীপুরের কাপাসিয়ায় গরু চুরি সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) দিবাগত রাত ২টার দিকে কাপাসিয়ার সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামের চান মিয়ার বাড়িতে একজন ও একই ইউনিয়নের বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেত অপর একজন নিহত হন। কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাত ২টার দিকে কাপাসিয়া থানাধীন সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামে মো. চান মিয়ার বাড়িতে কিছু লোক গরু চুরির উদ্দেশে প্রবেশ করেন। এ সময় চান মিয়া গরু চুরির বিষয়টি টের পেয়ে ডাকাডাকি করে এলাকাবাসীকে জড়ো করেন। এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে একজনকে ধরে ফেলে এবং গণপিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। অন্যজনকে স্থানীয়রা ধাওয়া দিলে পার্শ্ববর্তী বড়িবাড়ি গ্রামে ধানক্ষেতের আড়ালে লুকান। পরে উত্তেজিত এলাকাবাসী তাকে ধানক্ষেতের আড়াল থেকে খুঁজে বের করে পিটুনি দিলে ঘটনাস্থলেই তিনিও নিহত হন।

সিংহশ্রী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার পারভেজ জানান, গরু চুরিরোধে এলাকায় গ্রামবাসী পাহারা বসিয়েছিল। শুক্রবার রাতে গাড়িতে করে একটি কৃষকের গরু চুরি করতে কয়েকজন আসেন। গ্রামবাসী গরু চুরির বিষয়টি টের পেয়ে একজোট হয়ে দুইজনকে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলে নামিলা গ্রামে একজন ও পাশ্ববর্তী বড়িবাড়ি গ্রামের ধানক্ষেতে আরেকজন নিহত হন।

তিনি বলেন, আরও চার-পাঁচজন গরু চোর এখনো এলাকায় আছে, গ্রামবাসী তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে।

কাপাসিয়া থানার ডিউটি অফিসার আরিফ হোসেন বলেন, রাত ২টার দিকে কাপাসিয়ার সিংহশ্রী ইউনিয়নের নামিলা গ্রামে ও বড়িবাড়ি গ্রামে গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। 

কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর মিয়া বলেন, গরু চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে দুইজন নিহত হয়েছেন। তাদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।