img

ঢাকা মেডিকেলে একদিনে আরও ১২ জনের মৃত্যু

প্রকাশিত :  ০৭:২৭, ০৩ জুলাই ২০২০
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:৪২, ০৩ জুলাই ২০২০

ঢাকা মেডিকেলে একদিনে আরও ১২ জনের মৃত্যু

জনমত ডেস্ক :ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৯ জনই করোনার উপসর্গে আর বাকি তিনজন ভাইরাসটিতে ভুগে মারা যান। 

বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) ঢামেক হাসপাতাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ১২টা পর্যন্ত হাসপাতালটির দুটি করোনা ইউনিটে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। 

করোনায় মারা যাওয়া ওই তিন ব্যক্তি হলেন, ঢাকার কেরানীগঞ্জের হাজী শওকত আলী (৬০), মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার নিখিল মন্ডল (২০) ও ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার মো. সজল মিয়া (৩২)

এর আগে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির উদ্দিন জানান, ‘গত দুই মাসে এ হাসপাতলের করোনা ইউনিটে ৩ হাজার ৯০৪ জন ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২১০ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন এক হাজার ৫৮০ জন।’

প্রসঙ্গত, গত ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা দীর্ঘ হয়েই চলেছে। যা এখন পর্যন্ত ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৭৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে প্রাণহানি ঘটেছে ১ হাজার ৯২৬ জনের। আর সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন ৬৬ হাজার ৪৪২ জন। 

img

ইলিয়াস আলীসহ সব গুম রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে: রিজভী

প্রকাশিত :  ১২:৩৯, ১৭ এপ্রিল ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৮, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে রাজধানী বনানীর ২ নম্বর সড়কের সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা গাড়িচালক আনসার আলীসহ ইলিয়াস আলীকে তুলে নিয়ে যায়।’

বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

রিজভী বলেন, ‘বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীর গুমের বুধবার ১২ বৎসর পূর্ণ হলো। তাকে ফিরে পাওয়ার অধীর অপেক্ষায় আজও প্রহর গুনছেন তার স্ত্রী-সন্তান-পরিবারসহ দেশের অগণিত নেতাকর্মী। শেখ হাসিনা সরকারের নির্দেশে ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে রাজধানী বনানীর ২ নম্বর সড়কের সাউথ পয়েন্ট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনে থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গাড়িচালক আনসার আলীসহ তুলে নিয়ে যায় ইলিয়াস আলীকে। এরপর গাড়িটি পাওয়া গেলেও হদিস মিলেনি তাদের। একথা আজ জনগণের সামনে স্পষ্ট যে, এই ফ্যাসিবাদী সরকারই ইলিয়াস আলীকে গুম করেছে।’ 

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম আর টিপাইমুখ বাঁধ ও সীমান্ত আগ্রাসনের প্রতিবাদে সিলেট অঞ্চলে গড়ে উঠা গণআন্দোলনে নেতৃত্বের কারণে ইলিয়াস আলী রাষ্ট্রযন্ত্র ও দেশি-বিদেশি অপশক্তির গাত্রদাহের প্রধান কারণ ছিলেন। ইলিয়াস আলী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন। ইলিয়াস আলীর জনপ্রিয়তা ও সাংগঠনিক দক্ষতায় ঈর্ষান্বিত সরকার রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে তাকে গুম করে রেখেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইলিয়াস আলীকে গুম করার পর সরকার বহুবিধ নাটক সাজিয়েছে। ওই সময় তার বিরুদ্ধে অশোভন কথা লিখে দেয়ালে পোস্টার সাঁটিয়েছিল সরকারের এজেন্টরা। গুমের ঘটনার পর তার স্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে খুদে বার্তা পাঠিয়ে শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাতের আয়োজন এবং ইলিয়াস আলীকে খুঁজে বের করার আশ্বাস ছিল লোক দেখানো। কারণ, ওই সময় বিএনপির পাঁচ দিন হরতাল ছিল। আর বিএনপির সে হরতাল ও আন্দোলনকে বন্ধ করার জন্যই ছিল ওই মিথ্যা আশ্বাস।’

বিএনপি নেতা রিজভী বলেন, ‘গুম হওয়ার পরে থানায় জিডি করা হয়, কোর্টে মামলা করা হয়। এরপরও তাকে ফিরিয়ে দেননি শেখ হাসিনা। ইলিয়াস আলীর সন্ধানে দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অভিযান চালানোর হাস্যকর নাটক করতে দেখা যায়। উচ্চ আদালতে করা ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনার রিট আবেদনের শুনানিও আটকে দেয় সরকার। অর্থাৎ অদৃশ্য হওয়া নাগরিককে ফেরত দেওয়ার উচ্চ আদালতের নির্দেশনাকে বাধাগ্রস্ত করে সরকার। সুতরাং ইলিয়াস আলীসহ সব গুম রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় হয়েছে। বেআইনি গুম-খুনের ফেস্টিভ্যাল পালন করে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা।’

‘যারা অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার, তাদেরই অত্যন্ত সচেতনভাবে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে, আয়নাঘরে আটক করে রাখা হচ্ছে। ভারতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে,’ বলেন রিজভী।

তার ভাষ্য, ‘তার প্রমাণ অভিনব গুমের শিকার হয়েছেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাচার করা হয়েছে ভারতে। সেখানে তারা তাকে মুমূর্ষু অবস্থায় ফেলে দেয়।’

রিজভী বলেন, ‘দ্য এশিয়ান হিউমান রাইটস কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত গুম হয়েছেন ৬২৩ জন। বাংলাদেশের মানবাধিকার সংস্থা অধিকারের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত দেশে নিখোঁজ বা গুম হয়েছেন ১৬ জন। এই সময়ের মধ্যে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ৮ জন। এর মধ্যে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রসফায়ারে মারা গেছে তিন জন। এ পর্যন্ত গুম হয়েছে ৬৫০ জনের বেশি। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের হিসাবে গত ১৫ বছরে ৬ শতাধিক মানুষ গুম হয়েছেন।’