img

মহাসনদ ম্যাগনাকার্টা চুরির চেষ্টা

প্রকাশিত :  ০৮:১০, ২৮ অক্টোবর ২০১৮

মহাসনদ ম্যাগনাকার্টা চুরির চেষ্টা

জনমত ডেস্ক ।।  ব্রিটেনের নিরিবিলি শহর স্যালিসবারি থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে ব্রিটেনের পুলিশ। অভিযোগ, শহরটির স্বনামধন্য এক গির্জা থেকে ম্যাগনাকার্টা দলিলের একটি কপি চুরির চেষ্টা করেছিলেন তিনি। খবর সিএনএন উইলশায়ার পুলিশের বিবৃতির উদ্ধৃতি দিয়ে সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, ম্যাগনাকার্টা দলিলের একটি কপি চুরির চেষ্টাকালে বৃহস্পতিবার ৪৫ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। ওই ব্যক্তি স্থানীয় সময় বিকেল পাঁচটার দিকে গুরুত্বপূর্ণ দলিলটি চুরির উদ্দেশ্যে দলিল রাখার পাত্রটির গ্লাস ভেঙে ফেলেন। তবে দলিলটি হাতে আসার আগেই তিনি পুলিশের হাতে ধরা পড়েন।

তবে ওই ব্যক্তির নাম প্রকাশ করা হয়নি। পুলিশ বলছে, এ ঘটনায় কেউ আহত হননি। এছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ওই দলিলটিও অক্ষত রয়েছে।
ইংল্যান্ডের অ-জনপ্রিয় রাজা জন ও বিদ্রোহী ব্যারনদের মধ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য যে চুক্তি করা হয়, সেটিই ম্যাগনাকার্টা বা গ্রেট চার্টার নামে পরিচিত। রাজা জনের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বেশ কিছু জমি ছিল ফ্রান্সে। ১২০৪ সালে ওই সম্পত্তির অধিকাংশই হাতছাড়া হয়। সম্পত্তি ফিরে পেতে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেন জন। অর্থ জোগান দিতে রাজ্যে কর বাড়িয়ে দেয়া হয়। ব্যয়ভার বহন করতে হয় ব্যারনদের। যুদ্ধ ঠিকই হয়; কিন্তু জিততে পারেনি জন। ফলে রাজা ও ব্যারনদের মধ্যে দূরত্ব বাড়ে। রাজা অন্যায়ভাবে জবরদখল শুরু করে। কদিন পর পরই চালু করে নতুন কর।

একপর্যায় ব্যারনরা রাজার বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে ওঠে ও শান্তিচুক্তির প্রস্তাব দেয়। ব্যারনদের বিদ্রোহের মুখে জন শান্তিপ্রস্তাব মেনে নিতে বাধ্য হয়। ১২১৫ সালের ১৫ জুন রানিমেইড নামক স্থানে বসে কিং জন চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করে।

এই চুক্তি মানবাধিকারের মহাসনদ নামেও পরিচিত। এই চুক্তির ধারাগুলো্র উপর ভিত্তি করেই পরবর্তীতে বিশ্বব্যাপী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সূত্রপাত হয় এবং আইনের শাসনের ভিত্তি রচিত হয়। ম্যাগনাকার্টাকে ব্রিটিশ শাসনতন্ত্রের বাইবেল এবং ইংল্যান্ডের প্রথম শাসনতন্ত্র বলা হয়ে থাকে।

এই দলিলের চার কপির একটি স্যালিসবারির গির্জায় সংরক্ষিত আছে। এটি হাতে লেখা এবং ল্যাটিন ভাষায় লিখিত। অন্য তিনটি কপি ব্রিটিশ লাইব্রেরি ও লিংকন গির্জায় সংরক্ষিত রয়েছে।

এদিকে ঐতিহাসিক এ দলিলটি চুরি হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়ায় ধন্যবাদ জানিয়েছে স্যালিসবারি গির্জা। এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, পরিস্থিতি খুব দ্রুত এবং কার্যকরভাবে মোকাবেলা করার জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ।

এতে এ ঘটনার পর সাময়িক সময়ের জন্য দর্শানার্থীদের জন্য আর উন্মুক্ত থাকছে না মানবাধিকারের এই মহাসনদ। তবে খুব শিগগিরই এটি দর্শনার্থীদের জন্য আবার উন্মুক্ত করে দেয়া বলে বিবৃতিতে জানানো

যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিহত ৫ | JANOMOT | জনমত

img

ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে চান না ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত :  ১৯:০৯, ১২ মে ২০২৪

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় নগরী রাফায় ইসরায়েল পূর্ণ মাত্রায় অভিযান পরিচালনা করলে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে অস্ত্রের চালান স্থগিতের যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তার সঙ্গে একমত নয় যুক্তরাজ্য সরকার।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন মনে করেন, ইসরাইলের ওপর যুক্তরাজ্যের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা হামাসকে আরও শক্তিশালী করবে। খবর বিবিসির

ক্যামেরন জানান, গাজার রাফাহ শহরে বড় ধরনের স্থল অভিযানকে সমর্থন করেন না তিনি। তবে দেশটির কাছে অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পথে হাঁটার পক্ষে না তিনি। 

এদিকে দেশটির প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জনাথন অ্যাশওয়ার্থ বলেছেন, তিনি চান না যুক্তরাজ্যের তৈরি অস্ত্র রাফায় ব্যবহার হোক।

ইসরাইল প্রতিবছর যে অস্ত্র কেনে তার মাত্র ১ শতাংশ যুক্তরাজ্য থেকে যায় বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যামেরন।

যু্ক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা আরও কয়েকটি দেশ ইসরাইলকে সতর্ক করে বলেছে, যদি তারা রাফায় সর্বাত্মক অভিযান শুরু করে তবে সেখানে গণহারে বেসামরিক ফিলিস্তিনিরা নিহত হবে এবং বড় ধরণের মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে।

এদিকে সব সতর্কবার্তা এবং হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী রাফায় স্থল অভিযান পরিচালনা করবেন।

ইসরাইলের দাবি, রাফায় হাজারের বেশি হামাস যোদ্ধা অবস্থান করেছে। তাই সেখানে পূর্ণমাত্রায় অভিযান ছাড়া গাজায় হামাসকে নির্মূল করার তাদের লক্ষ্য পূরণ হবে না।

সোমবার থেকে রাফায় আকাশ হামলা শুরু করেছে ইসরাইল। মিশর সীমান্তবর্তী এই নগরীতে স্থল অভিযানের প্রস্তুতিও নিচ্ছে তারা। এজন্য রাফার বাসিন্দা এবং সেখানে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১৪ লাখ ফিলিস্তিনিকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।

গাজায় ইসরাইলের আকাশ হামলায় তিন ব্রিটিশ ত্রাণকর্মী নিহত হওয়ার পর ক্যামেরন নিজেই ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

সে কথা উল্লেখ করে ক্যামেরন আরও বলেন, শেষবার আমি যখন ইসরাইলে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে বলেছিলাম তার মাত্র কয়েকদিন পর ইরান নিষ্ঠুরভাবে ইসরাইলে হামলা করে বসে। তাই আমি আজ খুব সাধারণ ভাবে ঘোষণা দিতে চাই যে, আমরা আমাদের অস্ত্র রপ্তানির কৌশল পরিবর্তন করলে সেটা হামাসকে আরও শক্তিশালী করবে এবং এটা জিম্মিদের মুক্ত করে আনার চুক্তিকে আরও কঠিন করে তুলবে।