img

মহাকাশ নোংরা করছে ভারত, অভিযোগ বিজ্ঞানিদের

প্রকাশিত :  ০৭:৩২, ২০ জুলাই ২০২০
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:৪৮, ২০ জুলাই ২০২০

মহাকাশ নোংরা করছে ভারত, অভিযোগ বিজ্ঞানিদের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের মহাকাশ কর্মসূচীর সমালোচনা করে পাকিস্তানের একজন জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছিলেন, মহাশূন্যের বর্জ্য তৈরির জন্য দেশটি একটি প্রধান উৎস হয়ে উঠেছে।

‌এসব আবর্জনা হলো পুরনো রকেটের অংশ অথবা ইন্টারগাইডেড স্যাটেলাইটের টুকরো টুকরো অংশ- যেহেতু পৃথিবীর কক্ষপথে ঘুরতে থাকে। গত সেপ্টেম্বর মাসে চাঁদে ভারতের একটি মহাকাশযান বিধ্বস্ত হওয়ার পর মহাকাশে সেগুলোর বর্জ্য নাসা খুঁজে পাওয়ার প্রেক্ষাপটে ফাওয়াদ চৌধুরী এই বক্তব্য দিলেন।

পৃথিবীর কক্ষপথে যেসব আবর্জনা ঘুরছে, তার মধ্যে যেগুলোর আকার দশ সেন্টিমিটারের বেশি, সেগুলো সনাক্ত করেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্পেস সার্ভেইল্যান্স নেটওয়ার্ক, বলছে নাসার অরবিটাল ডেব্রিস প্রোগ্রাম অফিস (ওডিপিও)

এসব জিনিস ভূপৃষ্ঠের ১২৫০ মাইলের ভেতরে ঘোরাফেরা করছে, যার সঙ্গে রয়েছে আরো দুই হাজারের বেশি কৃত্রিম উপগ্রহ এবং আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন।

২০০৭ সালে নিজেদের একটি স্যাটেলাইটের ওপর চীনের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালায়, ধারণা করা হয় যে, তখন মহাকাশে প্রায় তিন হাজারের মতো বর্জ্য সৃষ্টি হয়েছে।

ওডিপিও তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার যোগাযোগ উপগ্রহের একটি দুর্ঘটনার ফলে বেশ বিশাল সংখ্যক বড় আকারের বর্জ্যের সৃষ্টি হয়েছে।

ওডিপিও তথ্য অনুযায়ী, অপর তিন দূষণকারী, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের তুলনায় ভারত এখনো অনেক কম মহাকাশ বর্জ্য সৃষ্টি করছে।

তবে ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে ভারতের এ ধরণের বর্জ্য সংখ্যা বেড়েছে। ১১৭ মহাকাশ বর্জ্য থেকে একবছরে বেড়ে হয়েছে ১৬৩।

এ বছরের মার্চ মাসে চতুর্থ দেশ হিসাবে ভারত একটি অ্যান্টি-স্যাটেলাইট মিসাইল পরীক্ষা বা এএসএটি চালায়।

ভারত দাবি করেছে, তারা এমন উচ্চতায় ওই পরীক্ষাটি চালিয়েছে, যা মহাকাশের কক্ষপথে কোন আবর্জনা তৈরি করবে না।

তবে যুক্তরাষ্ট্র ওই পরীক্ষার নিন্দা জানিয়েছে এবং নাসা জানিয়েছে, তিনমাস পরে ওই ঘটনার ফলে সৃষ্ট ৫০টি আবর্জনা খুঁজে পেয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক সিকিউর ওয়ার্ল্ড ফাউন্ডেশনের মহাকাশ আইন পরামর্শদাতা ক্রিস্টোফার ডি জনসন বলছেন, মহাকাশের আবর্জনা সমস্যায় ভারতও বেশ অবদান রাখছে।

বেশ কয়েকটি দেশ, এবং কয়েকটি প্রাইভেট কোম্পানি মহাকাশের আবর্জনা নিরসনের চেষ্টা করছে।

ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি ২০২৫ সালে তাদের প্রথম মহাকাশ মিশন শুরু করবে যার লক্ষ্য হবে পৃথিবীর কক্ষপথ থেকে আবর্জনা দূর করা।

তবে মহাকাশ থেকে আবর্জনা দূর করার বিষয়টি প্রযুক্তি এবং অর্থনৈতিকভাবে বড় একটি চ্যালেঞ্জ বলে বর্ণনা করেছে নাসা।


img

কৃত্রিম বৃষ্টি ঝরাতে গিয়েই কী এমন বন্যার কবলে দুবাই?

প্রকাশিত :  ১০:১৬, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

শুষ্ক জলবায়ু আর মরুভূমির জন্য সুপরিচিত শহর দুবাই এখন বন্যায় তলিয়ে গেছে। শহরটিতে মঙ্গলবার গত ৭৫ বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাতে তলিয়ে গেছে। অপ্রত্যাশিত বর্ষণ শুধু শহরের স্বাভাবিক গতিকেই রুখে দেয়নি বরং এই অঞ্চলে চরম আবহাওয়া জনিত ঘটনায়জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব সম্পর্কে উদ্বেগও সৃষ্টি করেছে। খবর দ্য ইকোনমিক টাইমস।

এই পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণে বিশ্লেষকরা কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের প্রচেষ্টাকে দায়ী করছেন। কৃত্রিম বৃষ্টিপাত বা ক্লাউড সিডিং হল একটি কৌশল যা ঘনীভূতকরণ প্রক্রিয়াকে উদ্দীপিত করতে এবং বৃষ্টিপাত ঘটাতে মেঘের মধ্যে ‘সিডিং এজেন্ট’ প্রবর্তন করে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত ১৯৮২ সালে প্রথম ক্লাউড সিডিং পরীক্ষা করে। ২০০০ এর দশকের গোড়ার দিকে উপসাগরীয় দেশটির কৃত্রিম বৃষ্টির প্রোগ্রামটি কলোরাডো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সেন্টার ফর অ্যাটমোস্ফিয়ারিক রিসার্চ (এনসিএআর), দক্ষিণ আফ্রিকার উইটওয়াটারসরান্ড ইউনিভার্সিটির এবং নাসার সঙ্গে যৌথ বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত গবেষণার মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়েছিল।

এই প্রোগ্রামের পেছনের বিজ্ঞানীরা আরব আমিরাতের বায়ুমণ্ডলের ভৌত এবং রাসায়নিক বৈশিষ্ট্যগুলো বিশেষত অ্যারোসল ও দূষণকারী এবং মেঘ গঠন নিয়ে তাদের প্রভাব বিশ্লেষণের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিলেন। লক্ষ্য ছিল মেঘের বৃদ্ধিকে উদ্দীপিত করার জন্য একটি কার্যকরী এজেন্ট সনাক্ত করা এবং শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিপাত বাড়ানো।

তবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে,  মঙ্গলবার কোনো ধরনের ক্লাউড সিডিং (কৃত্রিমভাবে বৃষ্টি নামানোর পদ্ধতি) করা হয়নি। এটা মৌসুমি বৃষ্টিপাত।  

খালিজ টাইমসকে আবহাওয়া দপ্তরের প্রধান আহমেদ হাবিব বলেছেন, আবহাওয়ার চরম অবস্থার কারণেই এমন বৃষ্টি হয়েছে। কোনো ধরনের ক্লাউড সিডিং করা হয়নি। 

গত দুই দিনে ৭৫ বছরের মধ্যে দুবাইতে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে। আর তাতেই তলিয়ে গেছে অনেক এলাকা। রাস্তাঘাট নদীতে পরিণত হয়েছে। 

ভারী বৃষ্টিতে অনেক রাস্তাঘাট ও বিমানবন্দরের অধিকাংশ এলাকা তলিয়ে যাওয়ায় গত দুই দিনে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরের ৮৮৪ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।