img

গরুর মাংস কতটুকু খাওয়া নিরাপদ?

প্রকাশিত :  ১৪:০৮, ২০ জুলাই ২০২০
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:১৩, ২০ জুলাই ২০২০

গরুর মাংস কতটুকু খাওয়া নিরাপদ?

আসছে কোরবানির ঈদ। এ সময় রেড মিট খাওয়া পড়ে একটু বেশিই। গরুর মাংসে যেমন আছে উপকারিতা, তেমনি মাত্রাতিরিক্ত খেলে তা স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণও কিন্তু হতে পারে। নিজেকে সুস্থ রাখতে গরুর মাংস কতটুকু খাবেন, কীভাবে খাবেন, জেনে নিন সেটাই।

গরুর মাংস রান্না করুন সবজি দিয়ে 

দৈনিক গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা হলো ৩ আউন্স বা ৮৫ গ্রাম। ৩ আউন্স মাংসে আছে ২০০ কিলো ক্যালোরি যা দৈনিক মাত্র ১০ ক্যালোরির জোগান দেবে।


এই ৩ আউন্স মাংসে কোলেস্টেরল থাকে ৫৩ মিলিগ্রাম। একজন সুস্থ ব্যক্তির দৈনিক নিরাপদ মাত্রা হলো ৩০০ মিলিগ্রাম এবং হার্টের রোগীদের জন্য ২০০ মিলিগ্রাম। তাই তিন আউন্স গরুর মাংস খাওয়া নিরাপদ।

প্রোটিন

গরুর মাংসে প্রচুর প্রোটিন পাওয়া যায়। এছাড়াও হাড়, কলিজা, মগজ ইত্যাদি থেকেও প্রোটিন পাওয়া যায়। প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে ২২.৬ গ্রাম প্রোটিন পাওয়া যায়।

ফ্যাট

ছোট গরুর মাংসে ফ্যাটের পরিমাণ কম থাকে। এই মাংসে অনেক সম্পৃক্ত ফ্যাট রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম মাংসে ফ্যাট রয়েছে ২.৬ গ্রাম।

খনিজ পদার্থ

প্রচুর পরিমাণে জিংক, আয়রন, সোডিয়াম, ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ও কপার রয়েছে গরুর মাংসে। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় এসব খনিজ পদার্থ। এগুলো আমাদের শরীরের রক্ষণাবেক্ষণ ও রোগ প্রতিরোধ করে। ৩ আউন্স মাংসে ৩৯ শতাংশ জিংক পাওয়া যায়।

ভিটামিন

গরুর মাংস ভিটামিন বি এর ভালো উৎস। ভিটামিন বি ১২, বি ৬, রিবোফ্লাবিন ইত্যাদি পাওয়া যায় গরুর মাংসে, যা মানসিক স্বাস্থ্যরক্ষায় সাহায্য করে। আমাদের দেহে ২.৪ মিলিগ্রাম ভিটামিন বি১২ এর প্রয়োজন প্রতিদিন। এর ৩৭ শতাংশ চাহিদা পূরণ করে গরুর মাংস।

খাবার প্রক্রিয়া

গরুর মাংস খেয়েও আপনি ভালো থাকতে পারবেন যদি নিয়ম মেনে রান্না করেন। রান্নায় তেলের ব্যবহার কমিয়ে রান্না করুন। ভুনা করে বেশি মসলাযুক্ত রান্না করবেন না। গরুর মাংসের চর্বির পরিমাণ কমাতে বাড়তি চর্বি ফেলে দিয়ে রান্না করা যেতে পারে। কারণ চর্বির পরিমাণ বেশি হলে ক্ষতি শরীরের জন্যই। তবে গরুর মাংস কতটুকু ক্ষতিকর, সেটা নির্ভর করবে আপনি কী পরিমাণে খাচ্ছেন তার উপর। আবার সবজি দিয়ে রান্না করে খাওয়া যেতে পারে। তবে সপ্তাহে দুই থেকে একবার খাওয়াই ভালো। এটি ক্যানসার প্রতিরোধ ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে বলে গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে। তাই গরুর মাংস খাবেন, কিন্তু পরিমাণ সীমিত।

ঝুঁকি

মাংসে আঁশের পরিমাণ কম থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। কোলন ক্যানসারে হওয়ার আশংকা থাকে এতে।

অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়বে।

img

প্রচণ্ড গরমে সুস্থ থাকতে চিকিৎসকের ১১ পরামর্শ

প্রকাশিত :  ১৫:৩০, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপদাহ, পুড়ছে পথঘাট। গত কয়েক দিনের তাপে তেতে উঠেছে মাঠ-ঘাট, প্রান্তর। এ সময় অনেকেরই শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিচ্ছে। হিট স্ট্রোকেও আক্রান্ত হন অনেকে। এই অবস্থায় নিজেকে সুস্থ রাখতে কী করবেন আর কী করবেন না—

সূর্যের আলো এড়িয়ে চলা

সকাল ১২টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রোদের তীব্রতা বেশি থাকে। এ সময় জরুরি কাজ না থাকলে বাইরে বের না হওয়াটাই ভালো।

ছাতা ব্যবহার

বাইরে বের হলে অবশ্যই ছাতা ব্যবহার করা, যাতে সরাসরি রোদের মধ্যে থাকতে না হয়। এ সময় চওড়া কিনারাযুক্ত টুপি, ক্যাপও ব্যবহার করা যেতে পারে।

ডা. বেনজীর আহমেদ বলছেন, যারা মাঠেঘাটে কাজ করেন, তারা মাথায় \'মাথাল\' জাতীয় টুপি ব্যবহার করতে পারবেন, যা তাদের রোদ থেকে রক্ষা করবে।

বেশি করে পানি পান করা

গরমে ঘাম হয়ে শরীর থেকে প্রচুর পরিষ্কার পানি বের হয়ে যায়, তখন ইলেট্রোলাইট ইমব্যালান্স তৈরি হতে পারে। এ কারণে এই সময়টাতে প্রচুর পানি পান করতে হবে।

লবণ মিশিয়ে পানি পান করতে পারলে আরও ভালো। ফলের জুস খাওয়া শরীরের জন্য ভালো, তবে এ জাতীয় জুস খাওয়ার সময় দেখে নিতে হবে সেটি পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত পানি দিয়ে তৈরি কিনা। খোলা, পথের পাশের দুষিত পানি বা সরবত এড়িয়ে চলতে হবে।

সূতির কাপড় পরতে হবে

গরমের এই সময়টায় জিন্স বা মোটা কাপড় না পরে সুতির নরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে।

এ ধরণের কাপড়ে অতিরিক্ত ঘাম হবে না এবং শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সহায়তা করবে।

গরমের সময় কালো বা গাঢ় রঙের কাপড় এগিয়ে সাদা বা হালকা রঙের কাপর পরিধান করা ভালো, কারণ হালকা কাপড় তাপ শোষণ করে কম।

সঠিক জুতা নির্বাচন

গরমের সময় খোলামেলা জুতা পরা উচিত, যাতে পায়ে বাতাস চলাচল করতে পারে।

কাপড় বা সিনথেটিকে বাদ দিয়ে চামড়ার জুতা হলে ভালো, কারণ এতে গরম কম লাগে। সম্ভব হলে মোজা এড়িয়ে চলা যেতে পারে।

ভারী ও ফাস্টফুড এড়িয়ে চলুন

এ জাতীয় খাবার হজম করতে সময় বেশি লাগে। ফলে সেটি শরীরের ওপর বাড়তি চাপ ফেলে এবং শরীরের উষ্ণতা বাড়িয়ে দেয়।

বিশেষ করে অসুস্থ ব্যক্তিদের জন্য সেটি আরো বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে।

খাবারের মেন্যু থেকে গরমের সময় তেলযুক্ত খাবার, মাংস, বিরিয়ানি, ফাস্টফুড ইত্যাদি বাদ দেয়া যেতে পারে। বরং শাকসবজি ও ফলমূল বেশি করে খাওয়া যেতে পারে।

পুরনো বা বাসী খাবার না খাওয়াগরমে খাবার-দাবার তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।

ফলে বাসী খাবার বা আগের দিন রান্না করা খাবার খাওয়ার আগে দেখে নিতে হবে যে, সেটি নষ্ট কিনা। এ জাতীয় খাবার খেলে ডায়রিয়া, পাতলা পায়খানাসহ পেটের অসুখ হতে পারে।

ঘরে পানি ভর্তি বালতি রাখা

এসি না থাকলেও সমস্যা নেই। ঘরের ভেতর ফ্যানের নীচে একটি পানি ভর্তি বালতি রাখুন, যা ঘরকে খানিকটা ঠাণ্ডা করে তুলবে।

প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করা

গরমের সময় প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করতে হবে, যা শরীর ঠাণ্ডা রাখবে। দিনে একাধিকবার হাত, মুখ, পায়ে পানি দিয়ে ধুতে পারলে ভালো।

বাইরে বের হলে একটি রুমাল ভিজিয়ে সঙ্গে রাখতে হবে, যা দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর মুখ মুছে নেয়া যাবে।

হিট স্ট্রোকের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকা

প্রচণ্ড গরমে শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হতে পারে।

ফলে মাংসপেশি ব্যথা, দুর্বল লাগা ও প্রচণ্ড পিপাসা হওয়া, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, মাথাব্যথা, ঝিমঝিম করা, বমিভাব ইত্যাদি লক্ষণ দেখা গেলে প্রেশার পরীক্ষা করে দেখতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা