img

বন‍্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের অর্ধকোটি মানুষ

প্রকাশিত :  ০৫:০৫, ২৯ জুলাই ২০২০

বন‍্যায় ক্ষতিগ্রস্ত দেশের অর্ধকোটি মানুষ

জনমত ডেস্ক : দেশের  উত্তর ও পূর্বাঞ্চল থেকে বানের পানি নামছে খুব ধীরগতিতে। এ অঞ্চল থেকে নেমে আসা পানি জমা হচ্ছে মধ্যাঞ্চলে। মৌসুম সক্রিয় এবং চাঁদের অবস্থানের কারণে বঙ্গোপসাগরের পানির স্তর বেড়েছে।

তাই সাগরের দিকে পানি নেমে যাওয়ার গতি অনেক কমে গেছে। যে কারণে মধ্যাঞ্চলের জেলাগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে না।

তিস্তা ও রাজধানীর আশপাশের তিনটিসহ সারা দেশের ১৯টি নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে ঢাকা শহরের নিম্নাঞ্চল স্বল্প থেকে মাঝারি ধরনের বন্যায় কবলিত হওয়ার দিকে অগ্রসর হচ্ছে। চলতি বন্যায় এখন পর্যন্ত দেশের ৩১ জেলার অর্ধকোটি মানুষ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। খবর সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

আরও জানা গেছে, সরকার ইতোমধ্যে বন্যা কবলিত জেলার ১৫৩ উপজেলাকে বন্যা উপদ্রুত হিসেবে ঘোষণা করেছে। উপদ্রুত এলাকাগুলোর ৯০৮ ইউনিয়নের ৯ লাখ ৮৪ হাজার ৮১৯ পরিবার বর্তমানে পানিবন্দি। সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত ৩৯ জন বন্যায় মারা গেছেন।

দিন দিন ক্ষতিগ্রস্ত এবং পানিবন্দি লোকের সংখ্যা বাড়ছে। দেশি-বিদেশি আবহাওয়া সংস্থাগুলোর পূর্বাভাস বিশ্লেষণ করে বন্যা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে।

বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয়, আসাম, অরুণাচলসহ হিমালয় পর্বতমালার পাদদেশীয় অঞ্চলে গত ২ দিন ধরে ভারি বৃষ্টিপাত হচ্ছে।

ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায় ১ আগস্ট পর্যন্ত বৃষ্টি আছে। এরপর হয়তো এ অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি শুরু হবে। কিন্তু মেঘালয়ের দিকে এরপর প্রায়

পাঁচশ’ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। এতে মনে হচ্ছে, আপার মেঘনা অববাহিকা ৪-৫ আগস্টের পর ফের বন্যাকবলিত হতে পারে। যেহেতু এ দুই অববাহিকার পানি দেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে সাগরে নিষ্কাশিত হয়। তাই মধ্য আগস্টের আগে দেশ বন্যামুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে সিলেট ও সুনামগঞ্জ থেকে শুরু করে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুরসহ মধ্যাঞ্চল বন্যাকবলিত থাকতে পারে। আর আগামী কয়েক দিন মধ্যাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি তুলনামূলক তীব্র হওয়ার আশঙ্কা আছে। কেননা ঢাকার আশপাশের নদ-নদীতে পানি বাড়ছে। এতে রাজধানীর নিম্নাঞ্চল বিশেষ করে পূর্বাঞ্চল ১০-১২ দিনের জন্য বন্যাকবলিত থাকতে পারে।

আবহাওয়া সংস্থাগুলোর বুলেটিনে দেখা যায়, দেশের ভেতরে ও বাইরে ২ দিন ধরে চলছে ভারি বৃষ্টিপাত। ফলে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় বিভিন্ন রাজ্য থেকে বানের পানি আসা আবার শুরু করেছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিস্তা আবার বিপদসীমা পার করতে পারে। বর্তমানে ১৯টি নদী ২৯ পয়েন্টে প্রবাহিত হচ্ছে বিপদসীমার উপরে।

যদিও খুব ধীরগতিতে ব্রহ্মপুত্র-যমুনা এবং আপার মেঘনা অববাহিকার নদীগুলো থেকে পানি নামছে। এ কারণে পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের সাত জেলায় আগামী ২৪ ঘণ্টা বন্যার পানি কিছু কমবে। কিন্তু বাকি ২৬ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। গঙ্গা-পদ্মা অববাহিকার নদীগুলোতে পানির সমতল একই রকম আছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় এ অঞ্চল থেকে পানি কমার লক্ষণ নেই।

বরং ঢাকার আশপাশের নদ-নদীগুলো আরও ৪৮ ঘণ্টা পানির সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে। গত ৪-৫ দিন ধরে বালু নদ রাজধানীর ডেমরা পয়েন্টে বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত হচ্ছিল। সোমবার থেকে মিরপুর পয়েন্টে তুরাগ এবং টঙ্গীতে টঙ্গী খালের পানি বিপদসীমার উপরে আছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র (এফএফডব্লিউসি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, চলতি সপ্তাহে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাত ঘটার সম্ভাবনা আছে। এ কারণে নেমে আসা বানের পানি বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে দেবে না। বরং আগস্টের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করবে। দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে।

একই অবস্থা বিরাজ করতে পারে গঙ্গা অববাহিকার জেলাগুলোতে। অপরদিকে দেশের পূর্বাঞ্চলীয় জেলাগুলোর নদী সারিগোয়াইন, যদুকাটা, সোমেশ্বরী, ভূগাই ও কংস এ মুহূর্তে বিপদ সীমার নিচে থাকলেও চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে বিপদসীমা পার করতে পারে। এ অঞ্চলের বন্যার পানি আগস্টের প্রথম সপ্তাহ থেকে অব্যাহতভাবে হ্রাস পেতে পারে। সার্বিকভাবে আগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে দেশে বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর (ডিডিএম) এবং এফএফডব্লিউসি বলছে, এ মুহূর্তে দেশের ৩১টি জেলা বন্যা উপদ্রুত এবং ৩২টি বন্যাকবলিত। জেলাগুলো হচ্ছে- কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, নাটোর, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নওগাঁ, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, চাঁদপুর, শরীয়তপুর, রাজবাড়ী, ঢাকা, সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, লালমনিরহাট, নীলফামারী, নারায়ণগঞ্জ, রংপুর, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী।

\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n\r\n

বিপদসীমার উপরে প্রবাহিত নদ-নদীগুলো হচ্ছে- পদ্মা, মেঘনা, যমুনা, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, ঘাগট, গুড়, আত্রাই, ধলেশ্বরী, পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, বালু, শীতলক্ষ্যা, তুরাগ, টঙ্গী খাল, কালীগঙ্গা, আড়িয়ালখাঁ, মেঘনা ও তিতাস।

img

থাইল্যান্ডের সঙ্গে ৫ সমঝোতা ও চুক্তি সই

প্রকাশিত :  ১০:০১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের মধ্যে পাঁচটি কূটনৈতিক দলিলে স্বাক্ষর হয়েছে। এর মধ্যে  একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি লেটার অব ইনটেন্ট বা অভিপ্রায়পত্র সই হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে এসব দলিলে সই করেন সংশ্লিষ্টরা।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কার্যালয়ে পৌঁছলে তাকে গার্ড অব অনার দেয় দেশটির সশস্ত্র বাহিনী। এরপর থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে বসেন বাংলাদেশের সরকারপ্রধান।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের কাছে থাইল্যান্ড একটি সম্ভাবনাময় অংশীদার। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সরাসরি সমুদ্রবন্দরকেন্দ্রিক যোগাযোগের চেষ্টা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেকপার্কে বিনিয়োগে থাইল্যান্ডকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরই দেশটির সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সই হবে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য থাইল্যান্ডের সহযোগিতা চান বঙ্গবন্ধুকন্যা। এছাড়া বাংলাদেশের স্বাস্থ্যখাতে থাই বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

২৪ থেকে ২৯ এপ্রিল সফরকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা করবেন। দুই দেশের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনার আগ্রহপত্রসহ বেশ কয়েকটি সহযোগিতার নথিতে স্বাক্ষর করবে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ড।

জাতীয় এর আরও খবর