চূড়ান্ত প্রতিবেদন

img

মসজিদে বিস্ফোরণ: তিতাস-ডিপিডিসি ও মসজিদ কমিটি দায়ী

প্রকাশিত :  ১৭:১৭, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০

মসজিদে বিস্ফোরণ: তিতাস-ডিপিডিসি ও মসজিদ কমিটি দায়ী

জনমত ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জে পশ্চিম তল্লার বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ, বিদ্যুৎ অফিস (ডিপিডিসি) ও মসজিদ কমিটিকে দায়ী করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিনের কাছে ৪০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরা ববি।

বৈদ্যুতিক স্পার্ক থেকে উৎসারিত আগুন ও তিতাসের পাইপ লাইনের লিকেজ থেকে মসজিদের অভ্যন্তরে জমা হওয়া গ্যাসের কারণে এ ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তদন্তে এমনটা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তদন্ত কমিটির প্রধান খাদিজা তাহেরা ববি।

এছাড়া মসজিদ নির্মাণ ও বৈদ্যুতিক সংযোগের বিষয়ে মসজিদ পরিচালনা কমিটির গাফিলতি রয়েছে বলেও উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে। ৪০ পৃষ্ঠার এই প্রতিবেদনে কয়েকটি পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদন দাখিলের পর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট খাদিজা তাহেরা ববি বলেন, বৈদ্যুতিক স্পার্ক ও মসজিদে জমা হওয়া গ্যাস থেকেই এ বিস্ফোরণ হয়েছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতি পেয়েছি। সব কিছুই উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে। আগামীতে এ রকম দুর্ঘটনা এড়াতে কয়েকটি পরামর্শও দেওয়া হয়েছে প্রতিবেদনের সঙ্গে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর রাতে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার পশ্চিম তল্লা বাইতুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণে অর্ধশতাধিক মানুষ দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে শিশুসহ ৩১ জন মারা যান। 

img

চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চাইলেন শেখ হাসিনা

প্রকাশিত :  ১১:১০, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১১:১২, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগের পাশাপাশি  হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডকে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের। দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ সৌহার্দ্যপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে, যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শুক্রবার (এপ্রিল ২৬) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসা কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে (থাই প্রধানমন্ত্রী) বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে বিনিয়োগের প্রস্তাবও দিয়েছিলাম।

দ্বিপক্ষীয় ও একান্ত বৈঠকের পরে, পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি-একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি আগ্রহপত্র (এল ও আই) - স্বাক্ষরিত হয় দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে।   

বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণবন্ত অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমরা থাইল্যান্ডকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখছি।

বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে, তারা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান আয়তন বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।  

শেখ হাসিনা বলেন, থাই প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) বাংলাদেশে বিনিয়োগ সহজিকরণ এবং ব্যবসা সহজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছি। থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগের এবং বিশেষভাবে একটি এসইজেড নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।

দুই পক্ষ ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রীরা এই বিষয়ে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন (এলওআই)।

থাই এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মধ্যে সহজ যোগাযোগের সুবিধার্থে, ঢাকা এবং ব্যাংকক অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা ছাড় সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ইতোমধ্যে কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য একটি চুক্তি রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জন্য থাইল্যান্ড জ্বালানি সহযোগিতায় নিয়োজিত একটি সম্ভাব্য অংশীদার। জ্বালানি সহযোগিতার সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে, শক্তি সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর এখানে স্বাক্ষরিত দ্বিতীয় নথি।

শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তার বিষয়ে তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, থাই জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সেরা পর্যটন অনুশীলন থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য, আমরা পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি।

তিনি বলেন, জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, দুই পক্ষ কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা অন্বেষণ করেছে।

সামুদ্রিক যোগাযোগের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রণং বন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি শিপিং লাইন নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করেছে।  

থাই পক্ষকে দুই দেশের মধ্যে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিশেষ করে কৃষি, মৎস্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

দুই প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক কাঠামোর অধীনে আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন। চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনে বর্তমান সভাপতি ও আয়োজক হিসেবে থাইল্যান্ড বাংলাদেশের কাছে সভাপতিত্ব হস্তান্তর করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে বিমসটেক মোট ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন জনসংখ্যার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান অর্জনের জন্য বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছে।

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনকে বাংলাদেশে সফরেরও আমন্ত্রণ জানান।

এর আগে গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন স্বাগত জানান এবং এরপর সেখানে তাকে লাল গালিচা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী গার্ড পরিদর্শন করেন।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ছয় দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ডে যান।

জাতীয় এর আরও খবর