img

প্যানেলে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে তৃতীয় দিনের কর্মসূচি চলছে

প্রকাশিত :  ০৮:৫৬, ১৩ অক্টোবর ২০২০

প্যানেলে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে তৃতীয় দিনের কর্মসূচি চলছে

জনমত ডেস্ক : প্যানেলের মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে তৃতীয় দিনের অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ২০১৮ সালের নিয়মিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা। তারা দাবি তুলে ধরে বলেন, ‘২ শতাধিক সংসদ সদস্যের ডিও (আধা সরকারি চিঠি) গুরুত্ব না দেওয়া এবং সংসদীয় কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় কোনও পদক্ষেপ না নেওয়ায় লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। মুজিববর্ষে প্যানেলে নিয়োগের ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।’

মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সামনের রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন তারা। কাফনের কাপড় পরে সকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচি ও সমাবেশ শুরু করেছেন প্রার্থীরা।

এর আগে, ২০১৮ সালের নিয়মিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ না পাওয়া ৩৭ হাজার ১৪৮ জনের প্যানেলভুক্তির দাবিতে রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করা হয়। সোমবার (১২ অক্টোবর) দ্বিতীয় দিন বৃষ্টি উপেক্ষা করেই জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় দিনভর কর্মসূচি পালন করে রাতেও সেখানেই অবস্থান নেন প্রার্থীরা। মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) সকাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন তাদের একাংশ। এদিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনেও অবস্থান কর্মসূচি চলছে।

প্যানেল প্রত্যাশী সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আব্দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের দাবির পক্ষে ১৮০ জন সংসদ সদস্যের ডিও রয়েছে। প্যানেলে নিয়োগ দেওয়ার জন্য সংসদীয় কমিটির সুপারিশ রয়েছে। তারপরও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্যানেলে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেয়নি। তাই আমরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি।\'

উল্লেখ্য, গত ২৬ আগস্ট অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় প্রাথমিক শিক্ষকের শূন্য পদে নিয়োগে দীর্ঘসূত্রিতা দূর করতে প্যানেল পদ্ধতি চালুর সুপারিশ করা হয়।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া প্যানেল প্রত্যাশীরা বলেন, ‘দুই শতাধিক সংসদ সদস্যের ডিও এবং সংসদীয় কমিটির সুপারিশ গুরুত্ব দেননি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব। করোনা মহামারির মধ্যে ৩২ হাজারের বেশি শিক্ষক নতুন করে নিয়োগের প্রক্রিয়া হাতে নিয়েছেন। তাই বাধ্য হয়েই আমরা আন্দোলনে নেমেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবো না, আন্দোলন কর্মসূচি চলিয়ে যাবো।’

জানা যায়, ২০১৮ সালের নিয়মিত শিক্ষক বিজ্ঞপ্তির বিপরীতে আবেদন করেন ১৮ লাখ ৮৬ হাজার ৯২৭ জন। ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত এই পরীক্ষায় মোট উত্তীর্ণ হন ৫৫ হাজার ২৯৫ জন। শূন্যপদ বাকি রেখেই নিয়োগ দেওয়া হয় মাত্র ১৮ হাজার ১৪৭ জনকে। উত্তীর্ণ ৩৭ হাজার ১৪৮ জন প্যানেলভুক্তির অপেক্ষায় থাকলেও তাদের বিষয়ে কোনও বিবেচনা করা হয়নি।

অন্যদিকে ২০১৪ সালে স্থগিত করা ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১৯ হাজার ৭৮৮ জনকে প্যানেলে নিয়োগের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করে রাজধানীসহ জেলায় জেলায় আন্দোলন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সংসদ সদস্যদের ডিও নিয়ে মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের আবেদন জানান তারা। এই আন্দোলন কর্মসূচি শেষ হওয়ার পর কাঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে ২০১৮ সালের নিয়মিত উত্তীর্ণ প্রার্থীরা গত রবিবার (১১ অক্টোবর) থেকে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। সব মিলিয়ে দুটি নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ৫৬ হাজার ৯৩৬ জনকে প্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগের দাবিতে গত এক বছরের বেশি সময় ধরে আলাদাভাবে আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।

img

ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলছে, তা অপরাজনীতির নামান্তর: বুয়েট অ্যালামনাই

প্রকাশিত :  ১১:১৯, ০৭ এপ্রিল ২০২৪

ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে নিজেদের মতামত জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের সংগঠন বুয়েট অ্যালামনাই। তারা বলেছে, বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ে বুয়েটের উন্নতি হচ্ছে। বিশ্বের একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে, যদি এখানে একটি রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ বজায় থাকে। বুয়েট অ্যালামনাই সুষ্ঠু রাজনীতির পক্ষে। তবে বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলমান, তা অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ বা নামান্তর।

বুধবার বুয়েট অ্যালামনাই বোর্ড অব ট্রাস্টি ও বুয়েট আবাসিক হল অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং বিশিষ্ট অ্যালামনাইদের সঙ্গে বুয়েট অ্যালামনাইয়ের সভাপতি আইনুন নিশাতের নেতৃত্বে যৌথ জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরে আজ শুক্রবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সভার সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সম্প্রতি বুয়েটে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে উদ্ভূত সংকট ও অনিশ্চয়তার বিষয়ে এ সভায় বিস্তারিত আলোচনা হয়। বর্তমানে বিরাজমান পরিস্থিতিসহ বুয়েটের সামগ্রিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক এবং শিক্ষার মান অক্ষুণ্ণ রাখার ব্যাপারেও আলোচনা শেষে কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সিদ্ধান্তগুলো হলো—প্রথমত, বুয়েট অ্যালামনাই মনে করে যে, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য বিদ্যমান আইন অনুযায়ী পূর্ণ দায়িত্ব উপাচার্য ও সিন্ডিকেটের।

দ্বিতীয়ত, কদিন আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো অনভিপ্রেত। এই সভা সুষ্ঠু রাজনীতির পক্ষে মতপ্রকাশ করছে। তবে বর্তমানে ছাত্ররাজনীতির নামে যা চলমান, তা অপরাজনীতির বহিঃপ্রকাশ বা নামান্তর।

তৃতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ রক্ষা ও শিক্ষার মান সমুন্নত রাখার জন্য বুয়েট অ্যালামনাইদের ভূমিকা অনস্বীকার্য ও এই উদ্দেশ্যে তারা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যুগপৎভাবে দায়িত্ব পালনে সর্বদা অঙ্গীকারবদ্ধ।

চতুর্থত, গত পাঁচ বছরে বুয়েটের শিক্ষা-কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়নি, সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের গবেষণার ক্ষেত্রে সম্মানজনক অর্জন ও স্বীকৃতির ক্রমোন্নতি এই ধারাবাহিক সাফল্যের সাক্ষ্য দেয়। এই পরিবেশ বিঘ্নিত হওয়া কারোরই কাম্য হতে পারে না।

ভবিষ্যতেও বুয়েটের এই সংকল্প ও অভিলাষ লক্ষ্যচ্যুত না হয়ে আরও বেগবান হোক, বুয়েট অ্যালামনাই এই সভার মাধ্যমে সেই আশাবাদ ব্যক্ত করতে চায়।

পঞ্চমত, বুয়েট শিক্ষা ও গবেষণায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে। ক্রমাগতভাবে বৈশ্বিক র্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি সাধন করে চলেছে। ক্রমাগত প্রচেষ্টা এবং একটি অনুকূল শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখার মাধ্যমে বুয়েট তার বৈশ্বিক খ্যাতি আরও বাড়াতে এবং বিশ্বের একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে, যদি এখানে একটি রাজনীতিমুক্ত পরিবেশ বজায় থাকে।

ষষ্ঠত, বুয়েটের স্নাতকেরা দেশে-বিদেশে কর্মক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছেন। পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল, মেট্রোরেল, নতুন বিমানবন্দর, সমুদ্রবন্দরসহ অসংখ্য বৃহৎ প্রকল্পে তারা পেশাদার সহায়তার মাধ্যমে দেশের অবকাঠামো ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরে রেখেও প্রতিষ্ঠানটি তার শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পরিবেশ গড়ে তোলার কারণে একাডেমিক শ্রেষ্ঠত্ব এবং জাতীয় অগ্রগতির লক্ষ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।

সপ্তমত, বুয়েট ঐতিহাসিকভাবে অতি উচ্চ মানের কারিগরি শিক্ষার প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রমাণিত ও স্বীকৃত।

বুয়েট অ্যালামনাই বিশ্বাস করে এই প্রতিষ্ঠান জঙ্গিবাদ লালন করার ক্ষেত্র নয়। এ বিষয়ে ন্যূনতম আভাস বা আশঙ্কা দেখা গেলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সরকার নিশ্চয়ই কঠোর হস্তে তা দমন করবে।

অষ্টমত, ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা বিধান করা বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা যে নিরাপত্তাহীনতার কথা বারবার প্রকাশ করছে, সে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় আনার জন্য বুয়েট অ্যালামনাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছে।

নবমত, বুয়েট অ্যালামনাই বিশ্বাস করে যে সাম্প্রতিক এই সংকট দ্রুত নিরসন হবে। অতীতের মতো আগামীতেও এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, প্রশাসন ও শিক্ষকদের পারস্পরিক সম্মান, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্য সদা জাগ্রত থাকবে এবং সংশ্লিষ্ট সবাই এই বিদ্যাপীঠের গৌরব ও সুনাম সমুন্নত রাখার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকবে।