img

লৌকিকতা বিবর্জিত জীবনযাপনই আল্লাহর পছন্দ

প্রকাশিত :  ০৯:৫৫, ১৮ নভেম্বর ২০১৮
সর্বশেষ আপডেট: ১১:০৪, ১৮ নভেম্বর ২০১৮

লৌকিকতা বিবর্জিত জীবনযাপনই আল্লাহর পছন্দ

মাওলানা ইসমাঈল আযহার

লৌকিকতা কাকে বলে তা নতুন করে বলার কিছু নেই। লোক দেখানোর জন্য কিছু করার নাম হল লৌকিকতা। আজ আমাদের সমাজের সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে লৌকিকতা রয়েছে। লৌকিকতা দেখানো যেন জীবনের একটা অংশ হিসেবে পরিগণিত আজ। কেউ সাধলে পেটে ক্ষুধা থাকা সত্ত্বেও বলতে হবে না ক্ষুধা নেই, এইমাত্র খেয়ে এসেছি।

আবার অনেক সময় পেটে ক্ষুধা নিয়ে খাওয়া শেষ করতে হবে। সৌজন্যমূলক প্লেটে খাবার রেখে দিতে হবে। নতুবা মেজবান খারাপ ভাবতে পারে। লৌকিকতা এখন তার আপন গণ্ডি ছাড়িয়ে সবখানে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে লৌকিকতা কাম্য নয় সেখানেও লৌকিকতা অহরহ। ধর্মেকর্মে পড়েছে বাড়াবাড়ি রকমের লৌকিকতা।

আবার অনেকে ঘর-বাড়ি সাজায়, সুন্দর সুন্দর আসবাব জোগাড় করে। কিন্তু সে এসব নিজের শান্তির জন্য করে না, করে না ছেলেমেয়ের জীবন থেকে কষ্ট দূর হয়ে একটু শান্তি আসবে সেই জন্য। ঘরে দামি দামি সোফা ফার্ণিচারের ব্যবস্থা করে মানুষ দেখানোর জন্য। লোকে দেখবে আমার ঘরে কী পরিমাণ আসবাব আছে। অনেকে আবার এগুলোকে সম্মানের বস্তু মনে করে। ঘরে আহামরি সব জিনিসপত্র না থাকলে তার যেন খুব মান হানি ঘটবে।

এখন আমরা নামাজ পড়ি রোজা রাখি মানুষ দেখানের জন্য। লোকে আমাকে ভালো বলবে, নামাজি বলবে, বাহবা দিবে সেই জন্য।এখলাছ আমাদের অন্তর থেকে যেন একেবারে বিদায় নিয়েছে। কিন্তু আমাদের আদেশ  দেয়া হয়েছে কোন কাজ-ইবাদাত-উপাসনা একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করতে। কিছু মানুষের অন্তরে এখলাছ আছে তবে তাদের সংখ্যা সীমিত। আবার সকলের সব কাজের মধ্যে যে এখলাছ থাকে তাও না।

ইসলাম কী আমাদের লৌকিকতা পছন্দ করে? কুরআন ও হাদিসে এসম্বন্ধে একাধিক আয়াত ও হাদিস বর্নিত হয়েছে। কুরআনের অগণিত জায়গায় আল্লাহ মানুষকে লৌকিকতামুক্ত ইবাদাত করার কথা বলেছেন। ‘‘ আমি মানুষ এবং জ্বিন জাতি সৃষ্টি করেছি একমাত্র আমার ইবাদাত করার জন্য। (সূরা নিসা) ।

‘ হে রাসূল আপনি বলে দিন,  তারা যেন শুধু আমারই ইবাদাত করে’।এখন আমরা যদি লোক দেখানোর জন্য ইবাদত করি তাহলে একমাত্র আল্লাহর জন্য ইবাদত করা হলো না। আল্লাহর সঙ্গে ব্যক্তিকেও জড়ানো হলো। যেটা কাম্য ছিল না।

রাসূল স. ইরশাদ করেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ একজনকে ডেকে বলবেন, তুমি ওইদিনের নামাজটা কার জন্য আদায় করেছিলে? বান্দা তখন উত্তর দিবে, হে আল্লাহ তায়ালা! একমাত্র আপনার জন্যই নামাজ আদায় করেছিলাম। আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছো। তুমি লোক দেখানোর জন্য নামাজ পড়েছিলে।

লোকে তোমাকে নামাজি বলবে তাই নামাজ আদায় করেছিলে। তোমাকে মানুষ হাজী বলবে তাই হজ করেছিলে। দুনিয়াতে তা বলা হয়েছে। তুমি তোমার প্রত্যাশিত জিনিস পেয়ে গেছো এখন তোমাকে জাহান্নামের আগুনে পুড়তে হবে।

এমনভাবে আরো অনেক মানুষকে আল্লাহ তায়ালা ডাকবেন যারা লোক দেখানোর জন্য নামাজ, রোজা, হজ, ইবাদাত বন্দেগি করত তাদের সকলকে কিয়ামতের মাঠে সবার সামনে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।
নেক আমল করেও যদি সেগুলো কাজে না আসে তাহলে এরচে‘ দুর্ভাগ্য আর কী আছে।

অতএব ভাল কাজ করে তা যেন কাজে আসে, বিফলে না যায়। তাই আসুন আমরা লৌকিকতা মুক্ত জীবন গড়ি। ইসলাম পছন্দ করে লৌকিকতা বিবর্জিত জীবন।


img

শেষ দিনে ভিসার অপেক্ষায় ৩৭ শতাংশ হজযাত্রী

প্রকাশিত :  ১০:৫৯, ১১ মে ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৪, ১১ মে ২০২৪

হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করার জন্য দ্বিতীয় দফায় আবেদনের জন্য বাড়ানো সময় শেষ হচ্ছে আজ শনিবার।  কিন্তু এখন পর্যন্ত ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়নি। 

শনিবার সকালে আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৮৯৯ হজযাত্রীর ভিসা হয়েছে। এ বছর সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন। সেই হিসাবে এখনো ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

হজ এজেন্সি মালিক ও ধর্ম মন্ত্রণালয় আশা করছে, শনিবারের মধ্যে বেশিরভাগ হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়ে যাবে। অল্প কিছু বাকি থাকলে, সেটাও দু-একদিনের মধ্যে করার জন্য সময় পাওয়া যাবে। তাই ভিসা জটিলতায় কেউ হজে যেতে পারবেন না- এমনটা হওয়ার সুযোগ নেই।

ধর্ম মন্ত্রণালয় এর আগে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ভিসা সম্পন্নের নির্দেশনা দিয়েছিল । এরপর সেটি ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সবশেষ ভিসা আবেদনের সময় বাড়িয়ে ১১ মে করা হয়। এ সময়ের মধ্যে হজযাত্রীর ভিসা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে বলে জানিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৫৬২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে ৮০ হাজার ৬৯৫ জনসহ মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিন পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরব গেছেন ৬ হাজার ৩৯২ জন যাত্রী। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ পালনে বাংলাদেশ থেকে সাতটি ফ্লাইটে সৌদি আরব গেছেন ২ হাজার ৭৬৯ জন যাত্রী। দ্বিতীয় দিন শুক্রবার ৯টি ফ্লাইটে সৌদি আরব গেছেন ৩ হাজার ৬২৩ জন হজযাত্রী। 

এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইন্সে চারটি ফ্লাইটে ১ হাজার ৬৬৮ জন, সৌদি এয়ারলাইন্সের ১টি ফ্লাইটে ৪৪৫ জন, ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সে চারটি ফ্লাইটে ১ হাজার ৫১০ জন সৌদি আরব গেছেন। দুই দিনে তিন বিমান সংস্থার ১৬টি ফ্লাইটে ৬ হাজার ৩৯২ হজযাত্রী ঢাকা ছেড়েছেন।

বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। কোনো অভিযোগ ছাড়াই যাত্রীরা ঢাকা ত্যাগ করছেন।

এদিকে বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে যাদের ভিসা হয়নি তারা উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। যদিও ধর্মমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন ভিসা নিয়ে জটিলতা কেটে যাবে। ২৫৯টি বেসরকারি হজ এজেন্সির অনেকেই প্রথম দফার বর্ধিত সময়ের মধ্যে ভিসার কার্যক্রম শেষ না করায় দ্বিতীয় দফা সময় বাড়ানো হয়েছে।