পাঠ প্রতিক্রিয়া : কোটি মানুষের কণ্ঠস্বর

প্রকাশিত :  ১৪:৫০, ০২ নভেম্বর ২০২০
সর্বশেষ আপডেট: ১৫:৩০, ০২ নভেম্বর ২০২০

পাঠ প্রতিক্রিয়া : কোটি মানুষের কণ্ঠস্বর
সজল আহমেদ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রকাশিত স্মরণিকা ‘কোটি মানুষের কণ্ঠস্বর’। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি স্মরণিকাটি প্রকাশ করেছে। স্মরণিকার মুখবন্ধে কমিটির সভাপতি অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম ও প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী যৌথ মুখবন্ধের শুরুতে বলেছেন ‘বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধু অভিন্ন সত্তা’। যা থেকেই স্মরণিকাটির নামকরণের সার্থকতা খুঁজে পাই। 
স্মরণিকার প্রধান সম্পাদনা উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সম্পাদনা উপদেষ্টা জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম। সম্পাদক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। এছাড়া সম্পাদনা সহযোগী রয়েছেন আরও নয়জন। লে-আউট, ডিজাইন ও অক্ষর-বিন্যাস করেছে পাঠক সমাবেশ ডিজাইন স্টুডিও। সব্যসাচী হাজরা অঙ্কিত জ্যামিতিক নকশায়, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের এপ্রিলে মুক্তিযুদ্ধকালীন ‘নিউজ উইকের’ প্রচ্ছদে ব্যবহৃত জাতির পিতার পোট্রেইটের ছবিটি দিয়ে সেলিম আহমেদ স্মরণিকার মূল কাভার করেছেন। ব্যাক কাভারে স্টং লাইনে তুলিতে আঁকা বঙ্গবন্ধুর আটপৌরে ক্লোজআপ সাইড রেখচিত্র ব্যবহৃত হয়েছে।
স্মরণিকার আধেয় বা কন্টেইন হল : শেখ রেহানার কবিতা ‘বাবা’, মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বাণী, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাণী, জাতির পিতার সচিত্র সংক্ষিপ্ত জীবনী; নিবন্ধ : শেখ হাসিনা, ভাইয়েরা আমার, প্রণব মুখোপাধ্যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান : নিরলস এক রাষ্ট্রনায়ক, শেখ রেহানা, আমার বাবা শেখ মুজিব, রফিকুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু ও একাত্তরের অগ্নিঝরা মার্চ, জুলিয়ান ফ্রান্সিস, মননে স্মরণে বঙ্গবন্ধু, কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু : চিরন্তন আলোকশিখা, সৈয়দ বদরুল আহসান, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর রাজনৈতিক দর্শন।
এছাড়া বঙ্গবন্ধুর স্মরণীয় বাণী, বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বিশিষ্টজনের স্মরণীয় উক্তি, ছয় দফা, সাতই মার্চের ভাষণ, স্বাধীনতার ঘোষণা, জাতিসংঘে বাংলায় দেয়া ভাষণ, বঙ্গবন্ধুর গ্রন্থসমূহের পরিচিতি, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় কমিটি ও জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
পুস্তানির পরে বঙ্গবন্ধুর অফিশিয়াল পোট্রেইট ও কবি অন্নদাশঙ্কর রায়ের বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে রচিত কবিতার চার লাইন দেয়া হয়েছে। প্রকাশনাটির সকল কিছু বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায় বিধৃত হয়েছে। জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির ওয়েবসাইটে এর পিডিএফ সংস্করণ দেয়া আছে। মোট পৃষ্ঠা সংখ্যা ২১১।
স্মরণিকায় অক্ষর বিন্যাস চোখের জন্য অত্যন্ত আরামদায়ক। একই পৃষ্ঠায় পাশাপাশি বাংলা ও ইংরেজিতে দু’টি কলামে প্রবাহমান থাকায় কোন কোন কৌতুহলী পাঠক বাংলার সাথে আন্তর্জাতিক ভাষার তর্জমা মিলিয়ে পড়তে পারবেন। যা প্রকারান্তরে পাঠকের কোন কোন প্রত্যয় বিশেষণ বা অভিধাকে যথার্থভাবে বুঝতে সহায়তা করবে। কলামগুলির দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ৫ সেন্টিমিটার হওয়া পাঠের ক্ষেত্রে বেশি সুবিধা দেয়।
প্রকাশনাটির আকার পিনচড ক্রাউন কোয়ারটো, দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে সাড়ে নয়-সাত সেন্টিমিটারের কিছু বেশি। আকারেও স্মরণিকাটি আকর্ষণীয়। সম্পূর্ণটিই তার চাররঙা। ব্যবহৃত কাগজ উন্নত ও উজ্জ্বল ছাপার সর্বোচ্চ উপযোগ নিশ্চিত করায় যেন সোনায় সোহাগা হয়েছে।
জাতির পিতার সচিত্র জীবনী (১৯২০-১৯৭৫) তথ্য প্রযুক্তি মনস্ক প্রজন্মের জন্য উপযোগী একটি অভিনব ভাবনা। ইন্টারনেটে সহজ ও সার্বক্ষণিক যাঁরা, তাঁরা অনায়াসেই পাতা উল্টে-উল্টে সাল ভিত্তিক বিন্যস্ত এ উপস্থাপনাটি পাঠে অত্যন্ত স্বস্তিতে থাকবেন তা বলাই বাহুল্য। এক্ষেত্রে প্রত্যেক সালের সাথে প্রাসঙ্গিক একটি করে (কেবলমাত্র ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দ ভিন্ন) ছবি ব্যবহার করে ২৮টি সাদাকালো ছবিযোগে উপস্থাপনাটি সুসম্পন্ন হয়েছে। ছবির ক্ষেত্রে পরিস্ফুটন দুর্বলতা, অস্পষ্টতা ও সুচারুতার অভাববোধ কিছুটা আছে। ঐতিহাসিক পুরাতন ছবিগুলো, সেকালের প্রাযুক্তিক সীমাবদ্ধতার আবর্তে এরচেয়ে হয়ত কিছু ভাল সম্ভব ছিল না। অনুসন্ধানী পাঠকের ইলাস্ট্রেশনের ক্যাপশনে কখনো সখনো অতৃপ্ত বা সম্পূর্ণতার অভাববোধ হতে পারে। এ অংশের এটি হল আরেক সীমাবদ্ধতা।
কবিতা ও নিবন্ধ থেকে কয়েকটি নির্বাচিত অংশ উদ্ধৃত করে পঠনপাঠনের অবিস্মৃত অনুভূতি বিবৃত করতে পারি। শেখ রেহানা, বাবা, কবিতা :
“ ... যদি সন্ধ্যাতারাদের মাঝে থাকো/
আকাশের দিকে তাকিয়ে বলবো/
শুভ জন্মদিন।/
তুমি কি মিটি মিটি জ্বলবে?”

শেখ হাসিনা, ভাইয়েরা আমার, নিবন্ধ : “... যে ভাষণ মুক্তিযুদ্ধের সময় রণাঙ্গনে এবং বাংলাদেশের জনগণের প্রেরণা ছিল, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে বজ্রকণ্ঠের এ ভাষণ মানুষের মাঝে শক্তি যুগিয়েছিল, রণাঙ্গনে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণা দিয়েছিল, সে ভাষণ ছিল নিষিদ্ধ।”
প্রণব মুখোপাধ্যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিরলস এক রাষ্ট্রনায়ক, নিবন্ধ : “ . . . গর্বিত বাঙালি জাতির স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে কী কী দরকার তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ভালভাবেই জানতেন। তিনি কোনো সময় নষ্ট না করে সেই স্বপ্নপূরণের নেতৃত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন।”
ভারতের প্রয়াত এ রাষ্ট্রপতির নিবন্ধটি পাঠে বেশ বোঝা যায় বঙ্গবন্ধুর ওপর তাঁর অধীত বিদ্যা যেমন ব্যাপক তেমনি তিনি তাঁর প্রতি গভীরভাবে শ্রদ্ধাশীল। বঙ্গবন্ধুর সম্মোহনী ব্যক্তিত্বের প্রতি আকর্ষণবোধও প্রবল।
শেখ রেহানা, আমার বাবা শেখ মুজিব, নিবন্ধ : “. . . এই সময় আমার মনে হলো, আব্বা আর বন্দী হবেন না। আমরা মুক্ত। দেশ মুক্ত। . . . আব্বা আমাদের সুর করে একটা কবিতা সারাক্ষণ বলতেন, ‘পরহিংসা পরচর্চা না করিও মনে, কভু না করিও মন লোভ পরধনে।’ সবসময় বলতেন, ‘এমনভাবে চলবে, যেন তোমার কথায়-কাজে বিন্দুমাত্র অহংকার প্রকাশ না পায়।’...”
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক জীবন ও ঘটনাবলী জানার বহুমাত্রিক সুযোগ থাকলেও পারিবারিক জীবনযাপন সম্পর্কে অতটা তথ্যের অভিগম্যতা নেই। সেই বিচারে শেখ রেহানার লেখাটি থেকে পরিবার প্রধান চিরায়াত আদর্শিক বাঙালি বাবার কথা আমার মতই জানতে পারবেন আগ্রহী পাঠক সমাজ।
রফিকুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু ও একাত্তরের অগ্নিঝরা মার্চ নিবন্ধে উত্তাল মার্চের ত্রিশঙ্কু অবস্থায় বঙ্গবন্ধুর কৌশলী অথচ সাবলীল-সাহসী নেতৃত্বের কথা বিবৃত হয়েছে।
জুলিয়ান ফ্রান্সিস, একজন বৃটিশ নাগরিক। গত শতাব্দীর সপ্তম দশকে অক্সফামের হয়ে ভারতে বাংলাদেশ প্রত্যাগত শরণার্থী শিবিরে ও পরে স্বাধীন বাংলাদেশে উন্নয়ন কাজের অভিজ্ঞতা আছে। সেই সূত্রে বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্য লাভ। সেই অমলিন স্মৃতি ও বঙ্গবন্ধুর দেশগঠনের উদ্যোগের প্রত্যদর্শীতা বলে লিখেছেন নিবন্ধটি : মননে স্মরণে বঙ্গবন্ধু। 
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর রাজনৈতিক দর্শন নিবন্ধে সাংবাদিক, গবেষক সৈয়দ বদরুল আহসান নাতিদীর্ঘ সূচনা আলোচনান্তে গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষ, সমাজতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, কূটনীতি ও তিনি আমাদেরই লোক এই ছয়টি উপ-শিরোনামে নিবন্ধটি উপস্থাপন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শনের পাঠ, তাঁর আটপৌরে চালচলন, পাঠাভ্যাস, লেখালেখি, সাহিত্য-সংস্কৃতি-শিল্পজনোচিত মন সবকিছুর ওপর সংক্ষিপ্ত অথচ তীক্ষ্ণ আলোকপাত বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোচনায় সম্পূর্ণতা আনায়নে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে। এই নিবন্ধের স্বল্পায়তন ‘একাডেমিক ডিসকাসন’ বঙ্গবন্ধু চর্চায় আরও উদ্দীপনা সৃষ্টিকারী ও নির্দেশিকা প্রদায়ক।
ইন্দিরা গান্ধী, ফিদেল ক্যাস্ত্রো, ইয়াসীর আরাফাতসহ দশজন বিদেশী মনীষীর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে মন্তব্যের উল্লেখ আছে এতে। যার প্রতিটিই অত্যন্ত হৃদয়গ্রাহী।
বঙ্গবন্ধুর উক্তিগুলির উল্লেখের মধ্যদিয়ে তাঁর প্রবাদপ্রতীম ব্যক্তিত্ব, আপোষহীন সংগ্রাম, অবিস্মরণীয় মূল্যবোধ, অমিত সাহসিকতা ও বীরত্বগাঁথাকে ধারণ করার সফল প্রয়াস নেয়া হয়েছে। যেমন উল্লেখ করা যেতে পারে : “একজন মানুষ হিসাবে সমগ্র মানবজাতি নিয়েই আমি ভাবি। ... এই নিরন্তর সম্পৃক্তির উৎস ভালোবাসা।” ঈষৎ সংক্ষেপিত।
বঙ্গবন্ধুকে জানতে ও প্রয়োজনীয় রেফারেন্স পেতে আবশ্যকীয় বিষয় ভিত্তিক নির্বাচিত হয়েছে এ প্রকাশনার আধেয় । এজন্য প্রকাশনার সাথে জড়িত সকলে বিশেষ করে সম্পাদনা পর্ষদ সর্বমহলে ধন্যবাদ পাবেন বলে বিশ্বাস করি। প্রকৃতপক্ষে স্মরণিকা হলেও বিষয়গুণে এটি একটি আকর গ্রন্থনা। জাতির পিতার নিবেদিতপ্রাণ সংগ্রাম ও সংশপ্তক নেতৃত্বকে জানতে পাঠক মাত্রই এটি পড়ে উপকৃত হবেন।
কোটি মানুষের কণ্ঠস্বর পাঠে যে সন্তুষ্টি আভা লেগে আছে মনে, এ সুবাদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেমন জানতে পারি, সে আলোকে বঙ্গবন্ধুকে অনুভব করে আউরে যাই, বারবার মনমুখে বলি, কবি কামাল চৌধুরীর [ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী] নিবন্ধ থেকে শিকরণ করে :

“. . . এ এক মহাকাব্যিক জীবন, যা গৌরব, অর্জন ও আত্মত্যাগের মহিমায় আজ সারা পৃথিবীতে পরিব্যাপ্ত।”


লেখক : সজল আহমেদ, কবি ও চলচ্চিত্রকার

আজ পর্দা নামছে একুশে বইমেলার

প্রকাশিত :  ০৪:৪৩, ০২ মার্চ ২০২৪

আজ শনিবার (২ মার্চ) পর্দা নামছে অমর একুশে বইমেলার। তবে যে প্রত্যাশা নিয়ে মেলার সময় বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছিল সে অনুযায়ী বই বিক্রি হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রকাশক ও বিক্রয়কর্মীরা। তাদের ভাষ্য— বেইলি রোডের মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ড ও প্রাণহানির ঘটনা পাঠকদের আলোড়িত করেছে। এ অবস্থায় মেলা শেষ হওয়ার আগের দিন শুক্রবার হওয়া সত্ত্বেও ভিড় ও বিক্রি ছিল কম।

আবার অনেকে বলছেন, মেলার সময় বাড়ানোর তথ্যটা যে পরিমাণে প্রচার হওয়া দরকার ছিল সেই পরিমাণে হয়নি। তাই অনেকে জানেনই না যে মেলার সময় বেড়েছে।

সাধারণত বইমেলা হয় ২৮ দিনে। তবে এ বছর অধিবর্ষ হওয়ায় মেলা এক দিন বেশি পেয়ে দাঁড়ায় ২৯ দিনে। তার ওপর ২৯তম দিনটি বৃহস্পতিবার হওয়ায় প্রকাশকদের দাবি ছিল মেলার সময় বাড়িয়ে শনিবার পর্যন্ত নেওয়ার। তাদের দাবি মেনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ অনুমোদনক্রমে ২৭ ফেব্রুয়ারি ঘোষণা দিয়ে বইমেলার সময় দুদিন বাড়ানো হয়।

এবারের বইমেলা শুরু থেকেই ছিল জাঁকজমকপূর্ণ। প্রথম সপ্তাহের পর থেকে মেলা পুরোদমে জমে ওঠে। এর মধ্যে আবার মেট্রো ট্রেন বইমেলায় যোগ করেছে ভিন্ন মাত্রা। দূরত্ব ও যানজট বিবেচনায় আগে যারা বইমেলায় আসতে নিরুৎসাহ বোধ করতেন এবার মেট্রো ট্রেন তাদেরও নিয়ে এসেছে বইমেলায়। ফলে বিগত বছরগুলোর তুলনায় দর্শনার্থীর ভিড় এবং ভালো বেচাবিক্রি হওয়ায় প্রকাশকদের মুখেও ছিল সন্তুষ্টির ছাপ।

এছাড়া আবহাওয়া ভালো থাকায় প্রকৃতির বিরূপ প্রভাবও পড়েনি মেলায়। ২২ ফেব্রুয়ারি অল্প সময়ের বৃষ্টি মেলার বেচা-বিক্রিতে কিছুটা বিঘ্ন সৃষ্টি করলেও তা প্রকাশক ও পাঠকদের বড় ভোগান্তির কারণ হয়নি। তবে পাঠকের অত্যধিক সমাগমের দিন মেলার ধুলোবালি কিছুটা অস্বস্তিতে ফেলেছে দর্শনার্থীদের।

এদিকে মেলার শেষ সময়েও নতুন বই নিয়ে আসছেন প্রকাশকরা। শুক্রবার বইমেলার ৩০তম দিনেও নতুন বই এসেছে ২১৯টি। শুক্রবার হওয়ায় এদিন মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায় আর শেষ হয় রাত ৯টায়। তবে এদিন ছিল না কোনো শিশুপ্রহর। শনিবারও থাকবে না কোনো শিশুপ্রহর।

মেলার শুরু থেকে মূল মঞ্চে প্রতিদিনই থেকেছে আলোচনা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। লেখক বলছি মঞ্চে থাকতো বই নিয়ে কথোপকথন। বর্ধিত দুই দিনে তা-ও থাকছে না। এই সময়টাতে মূলত বই বিক্রিই মুখ্য বিষয় থাকবে প্রকাশকদের।

শনিবার সমাপনী দিনে মেলা শুরু হবে সকাল ১১টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৫টায় সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৪’-এর সদস্য সচিব ডা. কে এম মুজাহিদুল ইসলাম। প্রধান অতিথি থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী। বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। অনুষ্ঠানে চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার এবং শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে।