সেদিন আসিবে কবে, যেদিন মানুষগুলো আবার মুক্ত স্বাধীন হবে

প্রকাশিত :  ১২:৩৮, ০৫ নভেম্বর ২০২০
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৪০, ০৫ নভেম্বর ২০২০

সেদিন আসিবে কবে, যেদিন মানুষগুলো আবার মুক্ত স্বাধীন হবে

আজকাল বাইরে গেলে কারও সাথে দেখা হলে প্রথমে একটাই কথা, ভাই কেমন আছেন? আজকালতো আর দেখাই হয়না, বন্ধু বান্ধবের সাথে আড্ডা দেওয়া হয়না, আত্মীয় স্বজনের বাসায় গিয়ে কেউর সাথে দেখা করা যায়না, একমাত্র টেলিফোনেই সবার ভালমন্দের খবর নেয়ার একমাত্র মাধ্যম। পরিবারের সবাই আছেন কিন্তু থেকেও যেন নেই। ঘরবন্দী হয়ে এভাবে আর কতদিন থাকবো আল্লাহই জানেন।  আসলেও তো তাই। এমন এক ভাইরাস এসেছে যা পৃথিবীর যত নামি দামি ডাক্তার আছেন, সবাইর নাকের ডগা দিয়ে উড়ছে বিশ্ব কাঁপানো এই ভাইরাস। এটাকে সামলাতে গিয়ে জনগণের জন্য নাক মুখ ঢেকে রাখার জন্য মাস্ক ব্যবহার, হ্যান্ড সেনিটাইজার ব্যবহার এবং ঘন ঘন হাত ধোঁয়ার উপর জোর দিয়ে বিশ্বের সকল দেশের স্বাস্থ্য বিভাগের উপদেশে সরকার থেকে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সবাই ঠিক মতোই এসব ব্যবহার করছে কিন্তু ফল তেমন কিছু পাওয়া যাচ্ছেনা। এক দিকে কিছু কমলেও অন্যদিকে দেখা যায় বেড়ে গেছে তার প্রকোপ । কোন মতেই যেন সামাল দেয়া যাচ্ছেনা।

চীন থেকে যখন প্রথম এই রোগ শুরু হয়, তখন আমেরিকা চীনকে দোষারোপ করে বলেছিলো চীনই এই রোগের আবিস্কারক, তারাই বিশ্বকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এই রোগ আবিস্কার করে সবাইকে এক অস্বস্থিকর অবস্থায় ফেলেছে। অন্যদিকে চীন তার প্রত্যুত্তরে আমেরিকাকে দোষারোপ করে বলেছে, এই রোগ শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ আগে আমেরিকা থেকে কয়েকজন আর্মি অফিসার চীনে এসেছিলো এবং তারাই একটা কিছু করে গেছে। যাই হোক, এরপর উভয় পক্ষই নীরব হয়ে যায়। উভয় পক্ষই বিশ্বের মোড়ল। বেশি বাড়াবাড়ি করলে, কেঁচো খুঁড়তে শাপ বেড়িয়ে আসবে। তাই আর বাড়াবাড়ি না করে দু’পক্ষই চুপ। কথা হচ্ছে, যদি চীন এই রোগের আবিস্কারক হতো, তা হলে স্বভাবত:ই সে তার নিজের দেশে ব্যবহার করে দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করার চেষ্টা করতো না, নিশ্চয়ই সে তার প্রতিদ্ব›্ধি কোন দেশের উপর তা প্রয়োগ করতো। আমি মনে করি এতো শক্তিশালী এই ভাইরাস মানুষের দ্বারা সৃষ্টি করা কোন মতেই সম্ভব নয়। যদি মানুষের দ্বারা সৃষ্টি হতো, তা হলে হয়তো কয়েকটা দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতো। এই ভাইরাস বিশ্বের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে ঘুরে বেড়াতে পারতোনা, কোথা না কোথাও দুর্বল হয়ে পড়তো। বিশ্বের এমন কোন দেশ নেই যেখানে ভাইরাস আক্রমন করেনি। এ পর্য্যন্ত সারা বিশ্বে প্রায় ৬ কোটি ৭ লাখের উপর মানুষ মারা গিয়েছে। বৃটেনে আজকের সর্বশেষ খবর হচ্ছে, করোনায় প্রায় ৪০০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন এবং আক্রান্ত হয়েছেন ২০,০১৮ জন।  কি ভয়ঙ্কর সময় আমরা অতিবাহিত করছি এই পৃথিবীর মানুষগুলো। 

পৃথিবীর ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, এর আগেও এভাবে বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন ধরণের রোগের আবির্ভাব হয়েছে এ পৃথিবীতে। কিন্তু রোগগুলো কোন সময়ই কোন মানুষের দ্বারা সৃষ্টি করা সম্ভব হয়নি। এ ধরণের বিভিন্ন রোগগুলো আল্লাহ পাক মানুষের উপর নাজিল করেছেন মানুষকে হেদায়েতের জন্য। মানুষ যখন তার সীমানা লংঘন করে চলে যায়, যখন তারা প্রমাণ করতে চায় আমরা যা খুশী তাই করতে পারি। আমরা ইচ্ছা করলে পারমাণিক শক্তি দিয়ে দুনিয়া ধ্বংস করে দিতে পারি। সব কিছুই আমাদের হাতে। আল্লাহ পাক এবং রাসুল (স:) এর দেয়া আমাদের চলা ফেরার ক্ষেত্রে যে আদেশ নির্দেশ দেয়া হয়েছে তা অমান্য করে যখনই মানুষ অবাধ্য হতে শুরু করে তখনই আল্লাহ পাক রাব্বুল আ’লামীনের তরফ থেকে গজব নাজিল হয়। এই গজব শুরু হওয়ার আগে থেকেই আল্লাহ পাক মানব জাতিকে হুঁশিয়ার করার জন্য বিভিন্ন ধরণের আলামত দেখান, যাতে তারা তাদের ভুল বুঝে ঠিক পথে আসতে পারে। কিন্তু মানুষ তা বুঝতে চেষ্টা করেনা। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের দিকে তাকালে দেখা যায়, গত কয়েক বছর ধরে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে টর্ণেডো, হারিকেন ইত্যাদি বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নামে সাগর থেকে যে ঝড় ওঠে হাজার হাজার  ঘর বাড়ি ধ্বংস  করে, হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুরবণ করে। এই ঝড় থামাবার কোন বুদ্ধি বা শক্তি কি আছে মানুষের মধ্যে? তা কোন দিনই সম্ভব নয়। এছাড়াও আসে শক্তিশালী ভূমিকম্প, যা এক নিমিষেই ধ্বংস করে দেয় এক এক এলাকা, ঘরবাড়ি, গাছ গাছালির চাপা পড়ে নিহত হয় অসংখ্য মানুষ। দুনিয়ায় কারিগরি শিক্ষার দিক দিয়ে জাপান সবার উপরে। তার দেশের যে ঘরবাড়ি বানানো হয় তা খুবই উন্নতমানের, শক্তিশালী এবং টেকসই। ইতিমধ্যেই আমরা দেখেছি, জাপানে সাগর থেকে ওঠা ঝড়ে তাদের শক্তিশালী করে গড়ে তোলা ঘরবাড়ি ঝড়ের তান্ডবে পড়ে কাগজের মতো বাতাসে উড়ে বেড়াতে। ভূমিকম্পে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে অনেক মূল্যবান ঘরবাড়ি অফিস আদালত। এ সবের তান্ডবে মারা গেছে শত শত মানুষ। শুধু জাপানই নয়, আমেরিকায়তো কয়েক মাস পরপরই ঝড়ের আঘাতে হাজার হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে, ধ্বংস হচ্ছে ঘরবাড়ি। চীন দেশে হত্যা করা হয়েছে এবং হচ্ছে হাজার হাজার শিশু কিশোর থেকে শুরু করে বৃদ্ধ মুসলমান নরনারীকে। মসজিদের গম্বুজগুলো ভেঙ্গে দেয়ার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। শুধু চীন দেশেই নয়, ভারত, আমেরিকা, ইউরোপ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে শুরু হয়েছে মুসলমানদের উপর অমানসিক অত্যাচার। শুধু তাদের কথাই বলবো কেন, আমরা তো মুসলমান এবং মহানবী (স:) এর উম্মত। আমরা কি মানছি আল্লাহ পাক ও তাঁর রাসুলের (স:) নির্দেশ। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলমানরাও এখন বিধর্মীদের ছাড়িয়ে অনেক উপরে চলে গেছে। যতো খারাপ কাজ, নির্লজ্বের মতো চলাফেরা অর্থাৎ এমন কোন কুকীর্তি নেই যা আমরা করছিনা অর্থাৎ বেহায়াপনার চূড়ান্ত সীমা অতিক্রম করে চলেছি, কি পুরুষ, কি মহিলা। সুতরাং আল্লাহ তা’আলার পক্ষ থেকে যে গজব এসেছে তা আমাদেরকে হেদায়েত করার জন্যই এসেছে। মুসলমানদের এখনও সময় আছে আল্লাহ পাক রাব্বুল আ’লামীনের কাছে গোনাহের মাফি চাওয়া, তওবা করা, তাহলেই হয়তো আল্লাহ পাক আমাদেরকে এই ভয়ঙ্কর ভাইরাসের আক্রমন থেকে রক্ষা করতে পারেন। সুতরাং বলা যায়, যতদিন পর্য্যন্ত আল্লাহ পাক মানুষের উপর থেকে গজব তুলে না নিবেন, ততদিন পর্য্যন্ত আমরা যতোই টিকা বা যে কোন ধরণের অষুধ আবিস্কার করার চেষ্টা করিনা কেন তা সফল হবেনা, আর যতোদিন পর্য্যন্ত তা সফল হবেনা আমাদেরকে ততদিন বন্দী জীবনই কাটাতে হবে। তাই আমরা শুধু অপেক্ষায়ই থাকবো, সে দিন আসিবে কবে- যে দিন মানুষগুলো আবার মুক্ত স্বাধীন হবে। 

কার্ডিফ, ওয়েলস

৫ নভেম্বর ২০২০

মতামত এর আরও খবর

ফের মধ্যপ্রাচ্য সফরে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, যুদ্ধ কি থামবে?

প্রকাশিত :  ১৪:০৮, ২১ মার্চ ২০২৪

 ইসরায়েল-হামাসের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার জন্য ফের মধ্যপ্রাচ্য সফরে গেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। প্রথমে সৌদি আরব ও তারপর মিসরে আরব নেতাদের সাথে পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন আলোচনা করবেন। যাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলছে ‘অ্যান আর্কিটেকচার ফর লাস্টিং পিস’, অর্থাৎ সেখানে দীর্ঘস্থায়ী শান্তির লক্ষ্যে একটি কাঠামো তৈরির চেষ্টা করা হবে। এবারের আলোচনার মূল বিষয়বস্তুও এটি।

এই উদ্যোগ এমন সময়ে নেয়া হলো, যখন প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন ইসরাইলি বাহিনী গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের চারপাশে অভিযান বাড়িয়েছে, এমনকি তারা বেশ কয়েকটি বিমান হামলাও চালিয়েছে।

এর আগে ইসরাইলের সেনাবাহিনী বলেছিল যে তারা সোমবার থেকে সেখানে ৯০ জন বন্দুকধারীকে হত্যা করেছে।

একইসাথে, যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির জন্য কাতারে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা চলছে। তবে কিছু বিষয় দেখে বোঝা যাচ্ছে যে একটা অগ্রগতি আসন্ন।

গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এই অঞ্চলে এটি মি ব্লিঙ্কেনের ষষ্ঠ সফর। সৌদি নেতাদের সাথে দেখা করতে বুধবার বিকেলে তিনি জেদ্দায় অবতরণ করেন।

সূর্যাস্তের কিছুক্ষণ আগে বিমান থেকে নামার পর সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাজিন আল-হিমালি সহ অপেক্ষমান কর্মকর্তারা তাকে অভ্যর্থনা জানান এবং আলিঙ্গন করেন।

বুধবার রাতে রাজপ্রাসাদে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে তার দেখা করার কথা।

যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেছেন যে তারা একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ও গাজায় চলমান মানবিক সংকটের মাঝে সেখানে ত্রাণ বিতরণ বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করবেন।

এই সপ্তাহে জাতিসঙ্ঘ-সমর্থিত ইন্টিগ্রেটেড ফুড সিকিউরিটি ফেজ ক্লাসিফিকেশন (আইপিসি)-এর একটি খাদ্য নিরাপত্তা জরিপ বলছে যে গাজার এক দশমিক এক মিলিয়ন, অর্থাৎ ১১ লাখ মানুষ ভয়ানক ক্ষুধা ও অনাহারের সাথে লড়াই করছে।

সংস্থাটি আরো বলেছে যে আগামী মে মাসের মাঝে গাজার উত্তরাঞ্চলেও একটি মানবসৃষ্ট দুর্ভিক্ষ আসতে চলেছে।

এছাড়াও মিলার যোগ করেন, ‘পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আলোচ্যসূচিতে আরো থাকবে গাজার জন্য সঙ্ঘাত পরবর্তী পরিকল্পনার সমন্বয়, এটি নিশ্চিত করা যে হামাস আর গাজাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে বা ৭ অক্টোবরের হামলার আর পুনরাবৃত্তি ঘটাতে পারবে না, ফিলিস্তিনি জনগণের জন্য একটি রাজনৈতিক সমাধান, দীর্ঘস্থায়ী শান্তি স্থাপন এবং এই অঞ্চলের নিরাপত্তা।’

ব্লিঙ্কেন মিসরের নেতাদের সাথে দেখা করতে বৃহস্পতিবার কায়রো যাবেন।

আজ থেকে ১৭ বছর আগে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্যালেস্টেনিয়ান অথরিটিকে (পিএ) গাজা থেকে বিতাড়িত করেছিলো হামাস।

এত বছর পর আবার তাদেরকে গাজায় ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে আমেরিকানরা।

এখনো কিছুই এগোয়নি। কিন্তু, আন্তর্জাতিক মহল দীর্ঘদিন ধরে যে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কথা বলে আসছে, ইসরাইলসহ সকল পক্ষ যখন সেদিকে অগ্রসর হবে, তখন আরব দেশগুলোর সমর্থন পাওয়া যাবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত অস্ত্রশস্ত্র এবং তাদের সমর্থিত বেসামরিক পারমাণবিক শক্তি কর্মসূচিতে প্রবেশের বিনময়ে আরব দেশগুলোর প্রধান পৃষ্ঠপোষক দেশ সৌদি আরব ইসরাইলের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারে।

এদিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবার গাজায় পিএ নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।

এই অবস্থায় গাজায় পিএ-কে ফিরিয়ে আবার চেষ্টার কারণে তার এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সম্পর্কে কিছুটা চিড় ধরাতে পারে।

তবে এই পরিকল্পনার বিষয়ে জানেন, এমন কেউ কেউ স্বীকার করেছেন যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অগ্রগতির অভাব, গাজায় চলমান মানবিক সংকট, ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বিদ্যমান অবশিষ্ট আস্থাটুকুও ভেঙে যাওয়ার কারণে আপাতদৃষ্টিতে এটিকে উচ্চাভিলাষী বলে মনে হচ্ছে।

যদিও মার্কিন প্রশাসন তাদের এই পরিকল্পনার বিষয়ে এখনো আশাবাদী।

ব্লিঙ্কেনও তার বর্তমান সফরের অংশ হিসেবে শুক্রবার ইসরাইলেও যাবেন।

মিলারের মতে, তিনি ইসরাইলি নেতাদের সাথে জিম্মিদের বিষয়ে ও রাফাহ-তে বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য হামাসের পরাজয় সুনিশ্চিত করা নিয়েও আলোচনা করবেন।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরাইলকে সতর্ক করেছেন যে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফাহ-তে আক্রমণ শুরু করা ‘ভুল’ হবে। কারণ সেখানে এক মিলিয়নেরও বেশি বাস্তুচ্যুত বেসামরিক লোক আশ্রয় নিয়েছে।

কিন্তু মঙ্গলবার নেতানিয়াহু বলেন, ইসরাইল রাফাহ-তে হামাস ব্যাটালিয়নদের নির্মূল করার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং স্থল আক্রমণ ছাড়া এটি করার আর কোনো উপায় নেই।

হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ৩১ হাজার ৯০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে।

আর ইসরাইল বলছে, সাতই অক্টোবর দক্ষিণ ইসরাইলে হামাসের হামলায় প্রায় এক হাজার ২০০ জন নিহত ও ২৫৩ জন জিম্মি হওয়ার পর থেকে এই সংঘর্ষ শুরু হয়।

বুধবার গাজার মাটিতে, বিশেষত আল-শিফা হাসপাতালের চারপাশে প্রচণ্ড লড়াই হয়েছিল। কারণ সেখানে তৃতীয় দিনের মতো ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর অভিযান অব্যাহত ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বিবিসিকে বলেছেন যে আগে হাসপাতাল কমপ্লেক্সের চারপাশে অবস্থান করা ট্যাঙ্কগুলো এখন আল-ওয়াহদা স্ট্রিট বরাবর পূর্ব দিকে সরে গেছে।

তারা গাজা শহর ও উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধির কথাও জানিয়েছে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাজা শহরে মানবিক সহায়তা বিতরণের সময় ১১ জন নিহত হন। গাজার স্থানীয়রা বলছেন যে তারা শুধু বোমা হামলাই সহ্য করছে না, খাদ্য সংকটেরও সম্মুখীন হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ওসামা তৌফিক বলেন যে কিছুদিন শান্ত থাকার পর তার এলাকায় পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

‘আমরা শুধু বোমা হামলাই সহ্য করছি না, খাদ্য সঙ্কটও মোকাবেলা করছি’, তিনি বলেন।

তিনি জানান, গত রমজানে তারা ইফতারে কিছু একটা খেয়ে রোজা ভাঙতে পারতেন। কিন্তু এখন তারা পানির বাইরে তেমন কিছুই খেতে পান না।

এমনকি যে পানি তারা পান করছেন, সেগুলোও ‘নর্দমার গন্ধযুক্ত ও সুমদ্রের পানির মতো স্বাদযুক্ত’ বলে জানিয়েছেন তিনি।

তৌফিক বলেন যে তারা এখন সামান্য একটু রুটিও খেতে পান না। ‘আমার সন্তানরা ক্ষুধার কষ্টে ভুগছে’, বলছিলেন তিনি।

বুধবার সকালে ইসরাইলের সেনাবাহিনী বলেছে যে প্রায় ৯০ জনকে হত্যা করার পাশাপাশি তারা সেদিন ৩০০ জন সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

এটিকে তারা আল-শিফা হাসপাতালের চারপাশে ‘নির্দিষ্ট অভিযান’ হিসেবে উল্লেখ করেছে।

এই হাসপাতালে প্রথম অভিযান চালানো হয়েছিল গত নভেম্বরে। তখন ইসরাইলি সেনাবাহিনী এটিকে হামাসের ‘কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার’ হিসেবে অভিযুক্ত করেছিল।

যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করেছিল।

ইসরাইলের সামরিক বাহিনী বলছে যে সোমবার ফের অভিযান শুরুর কারণ, ‘জ্যেষ্ঠ হামাস সন্ত্রাসীরা ভেতরে পুনরায় সংগঠিত হয়েছে…এবং তারা এটিকে ব্যবহার করে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আক্রমণ পরিচালনা করছে।’

হামাস স্বীকার করেছে যে সোমবার সেখানে তাদের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর একজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত হয়েছেন। তবে তারা বলেছেন যে তিনি তখন ত্রাণ বিতরণে সমন্বয় করছিলেন। সূত্র : বিবিসি