মুক্তিযোদ্ধা আতিক হত্যা মামলায় ৭ জনের ফাঁসি
জনমত ডেস্ক : বীর মুক্তিযোদ্ধা আতিক উল্লাহ চৌধুরী হত্যা মামলার রায়ে ৭ আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সাথে মামলার এক আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামানের আদালত এই রায় ঘোষণা দেন।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার আসামিরা হলো- গুলজার হোসেন, শম্পা, আশিক, শিহাব আহম্মেদ ওরফে শিবু, আহসানুল কবির ইমন, তাজুল ইসলাম তানু, জাহাঙ্গীর খাঁ ওরফে জাহাঙ্গীর এবং রফিকুল ইসলাম ওরফে আমিন ওরফে টুণ্ডা আমিন। এদের মধ্যে আসামি শম্পাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। আর বাকি ৭ জনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
এছাড়া আরেকটি ধারায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের সাত বছর করে কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ১ বছরের জেল দেওয়া হয়েছে।
এর আগে বুধবার সকালে কারাগারে আটক তিন আসামি শম্পা, জাহাঙ্গীর ও আহসানুল কবীর আদালত হাজির করা হয়। এরপর রায় পড়া শেষে বেলা ১টা ৮ মিনিটে রায় ঘোষণা করেন বিচারক।
এ দিকে জামিনে যাওয়ার পর অপর পাঁচ আসামি পলাতক থাকায় আদালতে অনুপস্থিত ছিলেন। তারা হলো- গুলজার হোসেন, আসিফ, শিহাব আহম্মেদ ওরফে শিবু, তাজুল ইসলাম তানু ও রফিকুল ইসলাম ওরফে আমিন ওরফে টুণ্ডা আমিন। এই মামলায় আসামি আসিফ ও শম্পা আদালতে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
প্রসঙ্গত, ২০১৩ সালের ১০ ডিসেম্বর ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার কোণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন আহ্বায়ক আতিক উল্লাহ চৌধুরী নিখোঁজ হন। পরদিন ১১ ডিসেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের দোলেশ্বর এলাকার একটি হাসপাতালের পাশ থেকে তার আগুনে পোড়া বিকৃত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আসামিরা তাকে হত্যা করে এবং মৃতদেহ গোপন করার উদ্দেশ্যে মরদেহ পুড়িয়ে ফেলে রাখে। পরে তার সঙ্গে থাকা কাগজ ও এটিএম কার্ড দেখে লাশ শনাক্ত করেন নিহতের ছেলে সাইদুর রহমান ফারুক চৌধুরী।
ওই ঘটনায় নিহতের ছেলে কোণ্ডা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান ফারুক চৌধুরী বাদী হয়ে একই বছরের ১২ ডিসেম্বর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ মামলাটি তদন্ত করে ২০১৫ সালের ৩১ জানুয়ারি ৮ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর একই বছরের ২ জুলাই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
গত ১০ সেপ্টেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। এ মামলা চলাকালে বিভিন্ন সময় মোট ২১ সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। সর্বশেষ বুধবার চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার রায় দিল আদালত।