img

যে কারণে দলে দলে ব্রিটেন ছাড়ছে অভিবাসীরা

প্রকাশিত :  ০৬:১৬, ১৭ জানুয়ারী ২০২১
সর্বশেষ আপডেট: ০৬:২২, ১৭ জানুয়ারী ২০২১

যে কারণে দলে দলে ব্রিটেন ছাড়ছে অভিবাসীরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাজ্য ছেড়েছেন বিপুল সংখ্যক অভিবাসী। দেশত্যাগের এই স্রোত এতটাই তীব্র যে, ধারণা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটাই ব্রিটিশদের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যা কমার ঘটনা। সাম্প্রতিক এক জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

ব্রিটিশ থিংক ট্যাঙ্ক স্ট্যাটিসটিকস সেন্টার অব এক্সিলেন্স গত বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, ২০১৯ সালের জুন থেকে গত বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১৩ লাখেরও বেশি বিদেশি যুক্তরাজ্য ছেড়েছেন।

এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিবাসী বিদায় নিয়েছেন লন্ডন থেকে। ওই ১৪ মাসে প্রায় সাত লাখ অভিবাসী ব্রিটিশ রাজধানী ছেড়ে গেছেন। এই জরিপ ঠিকঠাক থাকার অর্থ, মাত্র এক বছরের চেয়ে একটু বেশি সময়ে লন্ডনের জনসংখ্যা অন্তত আট শতাংশ কমে গেছে।

যুক্তরাজ্যের শ্রম বিভাগের পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে এই জরিপ চালিয়েছে স্ট্যাটিসটিকস সেন্টার অব এক্সিলেন্স। সংস্থাটি বলেছে, করোনা ভাইরাস মহামারিতে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকটে দেশত্যাগের হার বৃদ্ধি পেয়েছে।

তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘মনে হচ্ছে, মহামারির সময় চাকরি হারানোর বোঝা বিদেশী কর্মীদের ওপরই বেশি পড়েছে এবং এটি বেকারত্বের বদলে উল্টো অভিবাসন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।’

ব্রেক্সিটের প্রভাব

গত কয়েক মাসে করোনাভাইরাসের হানায় তছনছ যুক্তরাজ্য। বৈশ্বিক এ মহামারিতে সেখানে ৮৬ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, শঙ্কায় পড়েছে লাখ লাখ মানুষের জীবিকা। গত ৩০০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ মন্দায় পড়তে হয়েছে দেশটিকে।

তারপরও যুক্তরাজ্যত্যাগী অনেকেই দেশছাড়ার কারণ হিসেবে করোনার চেয়ে ব্রেক্সিটকেই বেশি দায়ী করেছেন।

ফ্রেয়া গ্রাফ-কারুদার্স নামে এক জার্মান নারী জানান, করোনাভাইরাস মহামারি গত জুনে তাকে যুক্তরাজ্য ছাড়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে। তবে এই পরিকল্পনা তিনি করেছিলেন চার বছর আগেই, যখন ব্রিটিশরা ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিল।

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক ৫০ বছর বয়সী এ নারী বলেন, ‘ব্রেক্সিট ভোটের পরেই আমি যুক্তরাজ্য ত্যাগের পরিকল্পনা করেছিলাম। কিন্তু ৩০ বছর থাকার পর দেশটি ছাড়তে খুব খারাপ লাগছিল। মনে হচ্ছিল, নিজের কলিজা ছিড়ে বের করছি।’

গত বছর লন্ডন থেকে নিজ দেশ ফ্রান্সে ফিরে যাওয়ার কারণ হিসেবে ব্রেক্সিটের কথা জানিয়েছেন ফ্যাবিয়াঁ বেলা নামে ৩২ বছর বয়সী এক যুবকও।

একটি প্রকল্পের ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করা এই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি মোটামুটি নিশ্চিত যে, ইউরোপ ভালো জিনিস। আমার মনে হয়নি যে, আমি এমন একটি দেশে থাকতে চাই যে ইইউতে থাকবে না। আর এই মহামারি আমার ফ্রান্সে ফিরে আসার ইচ্ছাকে আরও দৃঢ় করে তুলেছিল।’

ফিরে আসায় অনিচ্ছা

স্ট্যাটিসটিকস সেন্টার অব এক্সিলেন্স জানিয়েছে, গণপ্রস্থানের এই ঘটনা হয়তো সাময়িক, তবে মহামারির শেষ হলে অনেকেই না-ও ফিরতে পারে।

সংস্থাটি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, অর্থনৈতিক পরিবর্তন ও বিভিন্ন ঘটনার কারণে লন্ডনে জনসংখ্যা পরিবর্তনের প্রবণতা অবশ্যই নজিরবিহীন নয়। ১৯৭০-এর দশকে শহরটির জনসংখ্যা পুরো ২০ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছিল।

তবে, হঠাৎ করে বিপুল সংখ্যক অভিবাসী কমে যাওয়া যুক্তরাজ্যে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলে সতর্ক করেছে এ থিংক ট্যাংক।

সূত্র: আল জাজিরা


যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিহত ৫ | JANOMOT | জনমত

img

ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে চান না ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত :  ১৯:০৯, ১২ মে ২০২৪

গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় নগরী রাফায় ইসরায়েল পূর্ণ মাত্রায় অভিযান পরিচালনা করলে যুক্তরাষ্ট্র দেশটিতে অস্ত্রের চালান স্থগিতের যে হুঁশিয়ারি দিয়েছে তার সঙ্গে একমত নয় যুক্তরাজ্য সরকার।

ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন মনে করেন, ইসরাইলের ওপর যুক্তরাজ্যের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা হামাসকে আরও শক্তিশালী করবে। খবর বিবিসির

ক্যামেরন জানান, গাজার রাফাহ শহরে বড় ধরনের স্থল অভিযানকে সমর্থন করেন না তিনি। তবে দেশটির কাছে অস্ত্র বিক্রির ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের পথে হাঁটার পক্ষে না তিনি। 

এদিকে দেশটির প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতা জনাথন অ্যাশওয়ার্থ বলেছেন, তিনি চান না যুক্তরাজ্যের তৈরি অস্ত্র রাফায় ব্যবহার হোক।

ইসরাইল প্রতিবছর যে অস্ত্র কেনে তার মাত্র ১ শতাংশ যুক্তরাজ্য থেকে যায় বলেও জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যামেরন।

যু্ক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা আরও কয়েকটি দেশ ইসরাইলকে সতর্ক করে বলেছে, যদি তারা রাফায় সর্বাত্মক অভিযান শুরু করে তবে সেখানে গণহারে বেসামরিক ফিলিস্তিনিরা নিহত হবে এবং বড় ধরণের মানবিক বিপর্যয় নেমে আসবে।

এদিকে সব সতর্কবার্তা এবং হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, তিনি তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী রাফায় স্থল অভিযান পরিচালনা করবেন।

ইসরাইলের দাবি, রাফায় হাজারের বেশি হামাস যোদ্ধা অবস্থান করেছে। তাই সেখানে পূর্ণমাত্রায় অভিযান ছাড়া গাজায় হামাসকে নির্মূল করার তাদের লক্ষ্য পূরণ হবে না।

সোমবার থেকে রাফায় আকাশ হামলা শুরু করেছে ইসরাইল। মিশর সীমান্তবর্তী এই নগরীতে স্থল অভিযানের প্রস্তুতিও নিচ্ছে তারা। এজন্য রাফার বাসিন্দা এবং সেখানে আশ্রয় নেওয়া প্রায় ১৪ লাখ ফিলিস্তিনিকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইলি বাহিনী।

গাজায় ইসরাইলের আকাশ হামলায় তিন ব্রিটিশ ত্রাণকর্মী নিহত হওয়ার পর ক্যামেরন নিজেই ইসরাইলের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।

সে কথা উল্লেখ করে ক্যামেরন আরও বলেন, শেষবার আমি যখন ইসরাইলে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে বলেছিলাম তার মাত্র কয়েকদিন পর ইরান নিষ্ঠুরভাবে ইসরাইলে হামলা করে বসে। তাই আমি আজ খুব সাধারণ ভাবে ঘোষণা দিতে চাই যে, আমরা আমাদের অস্ত্র রপ্তানির কৌশল পরিবর্তন করলে সেটা হামাসকে আরও শক্তিশালী করবে এবং এটা জিম্মিদের মুক্ত করে আনার চুক্তিকে আরও কঠিন করে তুলবে।