img

আর্জেন্টিনার সয়াবিন যাবে চীনে, বিপাকে বাংলাদেশ

প্রকাশিত :  ০৯:৩৩, ১৭ জানুয়ারী ২০২১

আর্জেন্টিনার সয়াবিন যাবে চীনে, বিপাকে বাংলাদেশ

জনমত ডেস্ক : জলবায়ুর প্রভাবে ব্রাজিলে এ বছর সয়াবিনের উৎপাদন কম হয়েছে। অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে সয়াবিন আমদানি করছে না চীন। তারা সয়াবিন নেবে আর্জেন্টিনা থেকে। এদিকে আর্জেন্টিনাও সয়াবিনের উৎপাদন সঙ্কট কাটিয়ে চীনের বাজার ধরতে চায়। কারণ চীনে বছরে সয়াবিনের চাহিদা রয়েছে প্রায় দুই কোটি টনের। আর তা ঘটলে অন্য কোনও দেশে সয়াবিন রফতানির সুযোগ নেই আর্জেন্টিনার। এমন পরিস্থিতির কারণেই আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়ছে সয়াবিনের দাম।

ওয়ার্ল্ড গ্রেইন ডট কম-এর খবরে জানা গেছে, এ বছর আর্জেন্টিনা প্রায় দেড় কোটি টন সয়াবিন রফতানি করবে চীনে।

যুক্তরাষ্ট্র সয়াবিন রফতানিতে শুল্ক বাড়িয়েছে। যার কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি দামে সয়াবিন কিনতে আগ্রহ হারিয়েছেন চীনা আমদানিকারকরা। এ সুযোগই লুফে নিয়েছে আর্জেন্টিনাসহ দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো।

আর্জেন্টিনার কৃষিখাতের পরিচিত প্রতিষ্ঠান রোজারিও গ্রেইন এক্সচেঞ্জের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এর আগে আর্জেন্টিনা থেকে চীনের বাজারে ২০০৯-১০ মৌসুমে রেকর্ড পরিমাণ ১ কোটি ৩৩ লাখ টন সয়াবিন রফতানি হয়েছিল। এ বছর ১ কোটি ৪০ লাখ টন সয়াবিন রফতানির সম্ভাবনা রয়েছে।

অবশ্য চাহিদা বাড়ায় সয়াবিন উৎপাদনেও জোর দিয়েছে আর্জেন্টিনা। এ কারণে চলতি বছর শেষে দেশটিতে ৫ কোটি ৫৫ লাখ টন সয়াবিন উৎপাদন হবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে মার্কিন কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ)।

জানা গেছে, গত ১০ বছরের মধ্যে ভোজ্যতেলের বাজার এখন সবচেয়ে চড়া। এক মাসের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ। বছর ব্যবধানে এ বৃদ্ধির হার ১২ দশমিক ২০ শতাংশ। এরইমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য বৃদ্ধির কথা বলে পণ্যটির দাম বাড়াতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ ট্রেড এন্ড ট্যারিফ কমিশনে চিঠি দিয়েছে ভোজ্যতেল আমদানিকারক সমিতি।

ভোজ্যতেল আমদানি সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, মিল মালিকরা টনপ্রতি এক হাজার ডলারের কাছাকাছি মূল্যে সয়াবিন আমদানিতে এলসি খুলেছেন। এতে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের খরচ প্রায় ১৩০ টাকা পড়বে। এ কারণেই দাম বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে।

সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার মনিটরিংয়ে দেখা গেছে, গত এক মাসে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বেড়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। বোতলজাত প্রতিলিটার তেল বিক্রি হচ্ছে ১২৫ টাকায়। গতবছর একই সময়ে যা ছিল ৮০-৮৫ টাকা। আমদানিকারকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিলিটার সয়াবিন তেলের দাম দাঁড়াবে ১৩০ টাকা। সঙ্গে পরিশোধন ব্যয়, মুনাফা ও বিভিন্ন প্রকার শুল্ক যুক্ত করে খুচরা পর্যায়ে আরো ৫-১০ টাকা বাড়িয়ে বিক্রি করতে হবে।

এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক অতিরিক্ত সচিব জানিয়েছেন, আমদানিকারকদের মূল্য বাড়ানোর আবেদনের পর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তরফে যাচাইয়ের জন্য বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে (বিটিটিসি) চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মিল মালিকদের সঙ্গে বৈঠকও করেছে।

জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের ভোজ্যতেলের ওপর ১৫ শতাংশ হারে তিন স্তরে ভ্যাট আরোপ করা হয়েছে। আমদানিকারকরা দাবি করছেন, তিন স্তরে ভ্যাট আরোপ করাতেও ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গতবছরের এপ্রিল থেকে জুনে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিটন সয়াবিন তেলের দর ছিল ৭০৭ মার্কিন ডলার, যা নভেম্বরে উঠেছিল ৯৭৪ ডলারে। এখন এক হাজার ডলার ছাড়িয়েছে। দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ১৯ থেকে ২০ লাখ টন। চাহিদার বিপরীতে দেশে উৎপাদিত সরিষা, তিল, তিষি, সূর্যমুখী থেকে পাওয়া যায় ৪-৫ লাখ টন। বছরে আমদানি করতে হয় ১৪ থেকে ১৫ লাখ টন।

অয়েল ওয়ার্ল্ডের তথ্যের সূত্রে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানায়, দেশে ২০১৯ সালে অপরিশোধিত ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে ১৫ লাখ ৬০ হাজার টন এবং ২০১৮ সালে ১৭ লাখ ২০ হাজার টন। ২০১৯ সালে ভোজ্যতেল আমদানি হয়েছে ১৫ লাখ ৯০ হাজার টন। অর্থমন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ইকোনোমিক রিভিউতে বলা হয়েছে, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভোজ্যতেল আমদানিতে ব্যয় হয়েছে ১১৬ কোটি ১০ লাখ ডলার। এর আগের বছর ব্যয় হয়েছিল ১৮৬ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে। তাই আমদানিতে কর-কাঠামো পুনর্বিবেচনা করা উচিত। তা না হলে ভোক্তার কষ্ট বাড়বে। ভোজ্যতেল আমদানিতে তিন স্তরের ভ্যাট পুনর্বিবেচনা করা উচিত বলেও মনে করেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে তীর ব্যান্ডের সয়াবিন তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক বিশ্বজিৎ সাহা জানিয়েছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে সয়াবিনের দাম টালমাটাল অবস্থায় আছে। পণ্যটি যেহেতু শতভাগ আমদানিনির্ভর, তাই এর দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গেই সম্পর্কিত। এখানে আমাদের কিছুই করার থাকে না।’

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, ‘বিষয়টি সরকারের নজরে রয়েছে। আমরা আমদানিকারকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলছি।’

খুচরা ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকা কেজি দরে। পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। বিভিন্ন ব্রান্ডের পাঁচ লিটারের সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৪০ টাকায়।

img

ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা যাবে কুরবানির আগেই : রাষ্ট্রদূত

প্রকাশিত :  ১১:১০, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশে নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত এইচ ই মি. পাওলো ফার্নান্দো ডিয়াজ পেরেজ জানিয়েছেন, সরকার অনুমতি দিলে কুরবানির ঈদের আগেই ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা যাবে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ডিপ্লোমেটিক কারেসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ আয়োজিত \'ডিক্যাব টক\' অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

ডিক্যাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম হাসিবের সভাপতিত্বে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডিক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান অপু।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, ব্রাজিলের খামারগুলো রপ্তানির লক্ষ্যে প্রচুর পরিমাণ পশু প্রস্তুত করেছে। দীর্ঘদিন থেকে ব্রাজিল সারা বিশ্বে গোমাংস রপ্তানি করে আসছে। এর আগে বাংলাদেশে মাংস রপ্তানির আগ্ৰহ দেখিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশে জীবন্ত পশুর বিশাল চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশ সরকার অনুমতি দিলে আগামী জুনের ভেতর জীবন্তু গরু আনা সম্ভব।

রাষ্ট্রদূত পেরেজ বলেন, বাংলাদেশ ব্রাজিলের সঙ্গে দীর্ঘদিন থেকে দ্বিপাক্ষিক চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরো উচ্চতায় নিয়ে যেতে দুই দেশের সরকার কাজ করছে।

বাংলাদেশ থেকে ব্রাজিলে পাট রপ্তানির বিষয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য নেওয়ার আগ্ৰহ প্রকাশ করেছে ব্রাজিলের ব্যবসায়ীরা। আশা করি খুব দ্রুত এ বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছাতে পারব।