৪ বছরে ৩০ হাজার ৫৭৩ মিথ্যে! আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিরল ‘নজির’ ট্রাম্পের

প্রকাশিত :  ২০:১৮, ২৪ জানুয়ারী ২০২১

৪ বছরে ৩০ হাজার ৫৭৩ মিথ্যে! আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিরল ‘নজির’ ট্রাম্পের

জনমত ডেস্কঃ হোয়াইট হাউস ছেড়ে বেরিয়ে গেলেও, সেনেটে তাঁকে ইমপিচমেন্ট শুনানি এখনও বাকি। তার মধ্যেই ফের অস্বস্তি বাড়ল আমেরিকার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। আমেরিকার ইতিহাসে সবচেয়ে মিথ্যেবাদী প্রেসিডেন্টের তকমা বসে গেল তাঁর নামের পাশে। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি সকালে হোয়াইট হাউস ছেড়ে যাওয়া পর্যন্ত তিনি প্রকাশ্যে ৩০ হাজার ৫৭৩ বার মিথ্যে দাবি করেছেন বলে জানা গিয়েছে।
আমেরিকার জনপ্রিয় সংবাদপত্র ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ এই পরিসংখ্যান তুলে ধরেছে। তারা জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগেও বিচক্ষণ হিসেবে তেমন সুখ্যাতি ছিল না ট্রাম্পের। নির্বাচনী প্রচারেও বিভিন্ন অযৌক্তিক দাবি করতে দেখা যায় তাঁকে। তাই তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর থেকে প্রথম ১০০ দিন তাঁর প্রতিটি মন্তব্যের রেকর্ড রাখতে শুরু করে তারা। পরে পাঠকদের আর্জি মেনে নিয়মিত রেকর্ড রাখা শুরু হয়।
সত্যাসত্য যাচাই করে ট্রাম্পের মন্তব্যের মধ্যে থেকে সঠিক এবং ভুয়ো তথ্য আলাদা করার জন্য বিশেষ ‘ফ্যাক্ট চেক টিম’ও তৈরি করা হয়। গত বুধবার হোয়াইট হাউস থেকে ট্রাম্প বিদায় নেওয়ার পর সেই হিসেব মেলানো শুরু হয়। তাতেই ট্রাম্পের সমস্ত ভুয়ো দাবির যোগফল ৩০ হাজার ৫৭৩-এ গিয়ে ঠেকেছে।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রথম বছরে প্রকাশ্যে দিনে অন্তত ৪টে করে মিথ্যে বলেছেন। দ্বিতীয় বছরে তা বেড়ে হয় দৈনিক ১৬টি। তৃতীয় বছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় দিনে ২২টি এবং চতুর্থ বছরে তা বেড়ে হয় দিনে ৩৯টি! হোয়াইট হাউসে প্রথম ২৭ মাসে ট্রাম্প ১০ হাজার মিথ্যে বলার রেকর্ড পার করে ফেলেন বলে জানা গিয়েছে। পরবর্তী ১৪ মাসে মিথ্যের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার। তার পরের পাঁচ মাসে তাঁর বলা মিথ্যের সংখ্যা ৩০ হাজার ছাড়িয়ে যায়।
তবে জনসভা এবং নিজের টুইটার হ্যান্ডলেই ট্রাম্প সবচেয়ে বেশি মিথ্যে দাবি করেছেন বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। তারা জানিয়েছে, অভিবাসীদের দল সীমান্তে পেরিয়ে আমেরিকায় ঢুকতে ধেয়ে আসছেন বলে দাবি করে হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-কেও বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন তিনি। ২০১৯ সালে ফোনে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা হয়েছে এবং তিনি জো বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্তের কথা জানিয়েছেন বলেও দাবি করেন ট্রাম্প। ওই বিষয়ে ৪ মাসে প্রায় ১ হাজার মিথ্যে কথা বলেন ট্রাম্প।
২০২০ সালে অতিমারির প্রকোপে গোটা দেশ যখন যুঝছে, সেই সময়ও ট্রাম্প মিথ্যে বলা থেকে বিরত হননি। বরং তা আগের তুলনায় বেড়ে যায় বলে দাবি করেছে ওই সংবাদপত্র। তাদের দাবি, করোনাভাইরাস নিয়ে আড়াই হাজারেরও বেশি মিথ্যে দাবি করেছেন ট্রাম্প। অক্টোবর মাসে নিজে কোভিডে সংক্রমিত হওয়ার পর ৬ দিন চুপ করে ছিলেন তিনি। তবে সব মিলিয়ে ওই মাসে ট্রাম্প মোট ৪ হাজার মিথ্যে দাবি করেন। অর্থাৎ ওই সময়ে দিনে প্রায় ১৫০টি মিথ্যে দাবি করেন তিনি।
নির্বাচন নিয়েও একই কাজ করে গিয়েছেন বলে হিসেব দিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। তাদের দাবি, ভোট কারচুপি সংক্রান্ত কমপক্ষে ৬০টি মামলা আদালতে খারিজ হয়ে গেলেও, ৩ নভেম্বর থেকে তা নিয়ে ৮০০-র বেশি মিথ্যে দাবি করেছেন তিনি। ৬ জানুয়ারি যে বক্তৃতায় ট্রাম্প সমর্থকদের ক্যাপিটলে হামলা চালাতে উস্কানি দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ, সেই বক্তৃতায় তিনি ১০৭টি মিথ্যে দাবি করেন বলে দাবি ওই সংবাদপত্রের।
ট্রাম্পের সমস্ত মিথ্যে দাবির মধ্যে, যেগুলি উল্লেখযোগ্য, তারও তালিকা দিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। এমনকি একই মিথ্যে কমপক্ষে ৭৫০ বার তাঁকে আওড়াতে দেখা গিয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা। বিগত ১০ বছর ধরে প্রেসিডেন্টদের মন্তব্যের রেকর্ড রাখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন পোস্ট। সূত্রঃ আনন্দবাজার পত্রিকা

আন্তর্জাতিক এর আরও খবর

টাকার বিছানায় ঘুমিয়ে ভাইরাল নেতা

প্রকাশিত :  ০৯:১৮, ২৮ মার্চ ২০২৪

বিছানায় ছড়িয়ে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকা। আর সেই টাকার মধ্যে শুয়ে আছেন ভারতের আসাম রাজ্যের দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাজনীতিবিদ বেঞ্জামিন বসুমাতারি। এমন একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চারদিকে হৈ চৈ পড়ে যায়। সবার জানার আগ্রহ কে এই নেতা যিনি দেশের মানুষের এত টাকা মেরে দিয়েছেন।

জানা যায়, বেঞ্জামিন বসুমাতারি। ভারতের আসামের ইউনাইটেড পিপলস পার্টি লিবারেল (ইউপিপিএল)-এর একজন নেতা। প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্প এবং গ্রামীণ চাকরি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বড় এক দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত তিনি। অদ্ভুত এক কাণ্ড ঘটিয়ে আবারও আলোচনায় এসেছেন এই নেতা।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে একটি ছবি ভাইরাল হয়েছে বসুমাতারির। আর তাতেই ভারত জুড়ে তোলপাড়। ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, টাকার বিছানায় ঘুমিয়ে আছেন আসামের ওদালগুড়ি জেলার ভৈরাগুড়িতে গ্রাম পরিষদ উন্নয়ন কমিটির (ভিসিডিসি) এই চেয়ারম্যান। তার ওপর ৫০০ রুপির নোটের স্তূপ।

ছবিটি নিয়ে ইতোমধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। এদিকে বসুমাতারির এমন কাণ্ডের দায় নিতে অস্বীকার করেছে তার দল ইউপিপিএল। বোডোল্যান্ড-ভিত্তিক দলটির প্রধান এবং বোডোল্যান্ড টেরিটোরিয়াল কাউন্সিলের (বিটিসি) প্রধান নির্বাহী সদস্য প্রমোদ বোরো বুধবার সকালে বিষয়টি স্পষ্ট করে জানিয়েছেন, বেঞ্জামিন বসুমাতারি আর দলের সঙ্গে যুক্ত নন। কয়েক মাস আগেই তাকে বহিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতি দিয়ে প্রমোদ বোরো বলেছেন, ‘বেঞ্জামিন বসুমাতারির একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমগুলোয় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা স্পষ্ট করতে চাই যে, বেঞ্জামিন বসুমাতারি আর ইউপিপিএলের সঙ্গে যুক্ত নন। তাকে গত ১০ জানুয়ারি দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি সকল গণমাধ্যম এবং সামাজিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারকারীদের অনুরোধ করছি যে, বেঞ্জামিন বসুমাতারিকে ইউপিপিএলের সঙ্গে যুক্ত করা থেকে বিরত থাকুন। তার ক্রিয়াকলাপের দায়িত্ব সম্পূর্ণ তার নিজের। দল তার ব্যক্তিগত কোনো কাজের জন্য দায়ী নয়।’

বিরোধীরা অবশ্য ইউপিপিএল প্রধানের এমন বক্তব্য মানতে নারাজ। তাদের দাবি, বেঞ্জামিন বসুমাতারি এখনও ইউপিপিএলে যুক্ত আছেন।

ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বোডোল্যান্ডের এই নেতা প্রধানমন্ত্রীর আবাসন প্রকল্প এবং গ্রামীণ চাকরি প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বড় আকারের একটি দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত। ওদালগুড়ি উন্নয়ন অঞ্চলে বসুমাতারি ভিসিডিসির অধীনে পিএমএওয়াই এবং এমএনআরইজিএ প্রকল্পের অধীন দরিদ্র সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে তিনি ঘুষ নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।