যেভাবে চলছে ভেজাল মদের ব্যবসা
জনমত ডেস্ক : বিদেশি বিভিন্ন ব্রান্ডের বোতলে ভেজাল মদ ভরে বিক্রি করে আসছিল একটি চক্র। আর তা পান করেই সম্প্রতি মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। করোনায় মদের আমদানি বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়েই চলছিল এ বাণিজ্য।
সোমবার (১ ফেব্রুয়ারি) গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর ভাটারা থানার খিলবাড়ীর টেকমুক্তি পল্লী ইউনিয়ন পরিষদ রোডের বেস্ট ফিউচার স্কুলের কাছে একটি কারখানায় অভিযান চালায় ডিবি গুলশান টিম ও সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় ছয়জনকে। অভিযানে উদ্ধার হয় দুই শতাধিক ভেজাল মদের বোতল।
গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, কাঠের কাজে যে স্পিরিট ব্যবহার করা হয় সেটার সঙ্গে প্রথমে মেশানো হয় কাপড় বা খাবারের রং। পরে চিনির রস ও কিছু রাসায়নিক। এসব দিয়েই তারা ভেজাল মদ বানাতো।
বগুড়া ও ঢাকায় ১৩ জনের মৃত্যু
ভেজাল মদ পান করে বগুড়া ও ঢাকায় গত দুদিনে ১৩ জন মারা গেছে। এরমধ্যে বগুড়ার দুটি হোমিও হল থেকে কেনা মদ পান করে মারা যান আটজন। এখনও অসুস্থ সাতজন। অপরদিকে গাজীপুরের একটি রিসোর্টে একই ধরনের মদ পান করে মারা যান পাঁচজন। এরপরই নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। অভিযান শুরু করে রাজধানী ও রাজধানীর বাইরের জেলাগুলোতে।
যেভাবে বানানো হচ্ছে
এ কাজে মাদক কারবারিরা বেছে নেন কাঠের রং মেশানোর স্পিরিট। এর সঙ্গে চিনির রস ও পানি মিশিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি হয় ভেজাল মদ। যার কারণে তাৎক্ষণিকভাবেই দেখা দেয় বিষক্রিয়া।
এ বিষয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের কেন্দ্রীয় প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক ডা. দুলাল কৃষ্ণ সাহা বলেন, ভেজাল মদে ইথানলের পরিবর্তে মিথাইল মেশানো হয়। এটাই বিষক্রিয়ার প্রধান কারণ।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)-এর উপ-কমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, এই নকল মদ কারবারিরা এক গ্যালন স্পিরিট দিয়ে ১০০ বোতল ‘বিদেশি মদ’ বানায়। পরে তা হোম ডেলিভারি করে। ভাটারা থানা এলাকার গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে একজনের ছদ্মনাম ‘ক্যামিকাল ম্যান’। তার বুদ্ধিতেই ভেজাল মদ তৈরি শুরু করে চক্রটি।
হোম ডেলিভারি
ফোনে ফোনে অর্ডার নিয়ে স্পটে ভেজাল মদ পৌঁছে দিত চক্রটি। বিশেষ কায়দায় মেশিন দিয়ে লাগানো হতো বোতলগুলোর ছিপি। এসব মদ তুলনামূলক কম দামে দেওয়া হতো বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ধরনের চক্রের বিরুদ্ধে অভিযান আরো জোরদার করা হবে বলে জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার একেএম হাফিজ আক্তার।