img

ব্রিটেনে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ে মারা যেতে পারে ৫০ হাজার মানুষ

প্রকাশিত :  ০২:০৪, ১৫ এপ্রিল ২০২১
সর্বশেষ আপডেট: ০৩:২৬, ১৫ এপ্রিল ২০২১

আরো শিথিল হলো করোনা-বিধি

ব্রিটেনে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউয়ে মারা যেতে পারে ৫০ হাজার মানুষ

জনমত ডেস্কঃ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র সতর্কবার্তা উড়িয়ে দিয়ে, স্বাধীনতার ‘রোডম্যাপ’ ধরে আরও এক পা এগোল ব্রিটেন। ১২ এপ্রিল, সোমবার থেকে আরও কিছুটা শিথিল করা হল করোনা-বিধি। তবে ভ্যাকসিন বিশেষজ্ঞরা আশংকা করছেন, টিকাকরণ সত্বেও ইউকেতে তৃতীয় দফা সংক্রমণ ঢেউ আঘাত হানলে ৩০ থেকে ৫০ হাজার লোকের মৃত্যু হতে পারে।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন জানিয়েছেন, লকডাউন থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসবে ব্রিটেন। এই ধাপে অতি-প্রয়োজনীয় নয়, এমন দোকানগুলিও খুলে দেওয়া হচ্ছে। খোলা হয়েছে জিম, সেলুন, পাব, আউটডোর রেস্টুরেন্ট। চিড়িয়াখানাতেও যেতে পারবেন মানুষ। গত তিন মাস সরকারি নির্দেশে বন্ধ ছিল এই সবই।


ঘোষনা অনুযায়ি সোমবার থেকে নিত্য আবশ্যক নয় এমন প্রতিষ্ঠান খোলায় অনেক দিন পর হাইস্ট্রিটগুলোতে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরে আসে। লন্ডনের বিখ্যান শপিং ডিস্ট্রিক্ট অক্সফোর্ড স্ট্রিট সহ গুরুত্বপূর্ণ সব হাইস্ট্রিটগুলোতে লোক সমাগম দেখে ব্যবসায়িরা আশান্বিত হলেও স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞরা কিন্তু বেজায় উৎকন্ঠিত হয়ে পড়ছেন। এমনভাবে সবাই ‘নতুন স্বাধীনতা’ উপভোগ করলে আগষ্ট/সেপ্টেম্বর মাসে সংক্রমণের তৃতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে মহামারী বিশেষজ্ঞরা সরকারকে সতর্ক করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত, বিধি শিথিল সংক্রান্ত সরকারের সিদ্ধান্তে ব্যবসায়ীরা অনেকটাই স্বস্তি পাবেন। সাধারণ মানুষও এত দিন ধরে ঘরবন্দি। এবার তাঁরা এই সব জায়গায় যেতে পারবেন। তবে প্রত্যেকের কাছে আর্জি, নিজেদের দায়িত্ব ভুলবেন না। হাত ধুতে হবে, মুখ ঢাকতে হবে, দূরত্ব-বিধি আবশ্যিক এবং বিশুদ্ধ বাতাস।’’

ব্রিটেনে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। ৭০ লক্ষ বাসিন্দার দু’টি ডোজই নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এটি দেশের জনসংখ্যার ১০.৫১ শতাংশ। অর্থাৎ এখনও বিপুল সংখ্যক মানুষের টিকাকরণ সম্পূর্ণ হওয়া বাকি। যাঁদের টিকাকরণ শেষ হয়েছে, তার বড় অংশই প্রবীণ। সরকারের ভ্যাকসিন এডভাইজার গ্রুপের তৈরী করা অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ৯টি ক্যাটাগরির সবাইকেই ভ্যাকসিন দেয়া হয়ে গেছে। মঙ্গলবার থেকে বৃটেনের ৪৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের ভ্যাকসিন নিতে এপয়েন্টমেন্ট করতে বলা হয়েছে।

দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪৫ শতাংশ টিকা নিলেও নবীন প্রজন্ম এখনো প্রতিষেধকহীন। এ অবস্থায় লকডাউন তুলে দেওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন হু-র ইউরোপ শাখার বিশেষজ্ঞ ক্যাথরিন স্মলউড। সম্প্রতি তিনি একটি সাক্ষাৎকারে জানান, কড়া করোনা-বিধির জন্যই সংক্রমণ কিছুটা কমেছে। বিধিনিষেধ হাল্কা করে দিলে ফল ভাল হবে না। স্মলউড আরও বলেছিলেন, ‘‘ভাইরাস শক্তি বাড়িয়ে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। নতুন স্ট্রেনের সংক্রমণ ক্ষমতা ও মারণ ক্ষমতা, দুই-ই বেশি। এই নতুন স্ট্রেনের সামনে এখন কমবয়সিরা, যাঁদের টিকাকরণ হয়নি। এখনই নিজেদের সাফল্যে ব্রিটেনের খুশি হওয়ার মতো কিছু হয়নি।’’


সরকারের জয়েন্ট কমিটি অব ভ্যাকসিনেশন এন্ড ইমুনাইজেশন (জেসিভিএ) এর সদস্য প্রফেসর জেরেমি ব্রাউন বলেন, টিকাকরণ কর্মসূচির সফল বাস্তবায়ন সত্বেও কোভিড-১৯ এর ‘বড় আকারে তৃতীয় ঢেউ’ আসতে পারে, যাতে হাজার হাজার মৃত্যু হবে।

বিবিসিকে তিনি বলেন, আমি এখন ভীষণভাবে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছি একারণে যে, আমরা এখন এমন অবস্থানে রয়েছি যেখানে দুর্বল জনগোষ্ঠির বৃহত্তম অংশকেই টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে টিকাকরণের ফলে ভাইরাসের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলার ক্ষতির পরিমাণ ‘তুলনামূলকভাবে সীমিত রাখতে’ সাহায্য করবে। তবে আমি যখন ‘তুলনামুলক সীমিত’ বলি, তার মানে হলো বড় ধরনের তৃতীয় ঢেউয়ের ফলে ৩০ থেকে ৫০ হাজার মৃত্যু ঘটতে পারে, যা প্রথম ও দ্বিতীয় দফা সংক্রমণ ঢেউয়ের মতই সমান ভয়াবহ হতে পারে
বিধি হাল্কা হতেই সোমবার লন্ডনের অক্সফোর্ড স্ট্রিটে দোকানের বাইরে দেখা যায় ক্রেতাদের লম্বা লাইন। রেস্টুরেন্ট খুলেছে, তবে অল্পই। ৪০ শতাংশ রেস্টুরেন্টের বাইরে খেতে বসার ব্যবস্থা আছে। এ ব্যবস্থা না-থাকলে আপাতত খোলার অনুমতি নেই। তবে সরকারের আশ্বাস, এ বছর গরমের ছুটিটা উপভোগ করতে পারবে দেশবাসী।

আনন্দবাজার পত্রিকা ডিজিটালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, পড়শি দেশ জার্মানির ছবি পুরোই উল্টো। অবস্থা বেশ সঙ্গিন। আইসিইউয়ে জায়গা ফাঁকা নেই। আগামী ১০-১৫ দিনে অবস্থা আরও খারাপ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত বছর ইউরোপের অন্য দেশগুলোর তুলনায় কম ভুগতে হয়েছিল জার্মানিকে। কিন্তু এ বছর ছবিটা ভিন্ন। এ পর্যন্ত ৩০ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত। আর মারা গিয়েছেন ৭৮ হাজার ৫০০ জন। অর্থাৎ, মৃত্যুহার বেশি। দেশের এই পরিস্থিতির জন্য ব্রিটেন স্ট্রেনকে দায়ী করেছেন চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল।

ব্যাপক কড়াকড়ি জারি রয়েছে বেলজিয়ামেও। এর বিরুদ্ধে নাটক মঞ্চস্থ করতে চলেছে একটি নাট্যদল। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘এ ভাবে মানুষকে দিনের পর দিন ঘরবন্দি করে রাখার জেরে আর্থিক অবস্থা তলানিতে ঠেকেছে। লোকে খেতে পাচ্ছেন না। বাড়িভাড়া দিতে পারছেন না।’’
হু জানিয়েছে, গত ৭ সপ্তাহে বিশ্বে ৭০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সংক্রমণ ব্যাপক ভাবে বেড়েছে।

টিকার থেকেও লকডাউন বেশি কার্যকরঃ জনসন

মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে যুক্তরাজ্যে মৃত্যুর ঘটনা কম এসেছে। যা একমাত্র সম্ভব হয়েছে লকডাউনের কারণে। এমনটিই মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। খবর এনডিটিভি।

বরিস জানান, করোনাভাইরাসের প্রকোপের মাত্রা কমিয়েছে লকডাউন। এই বিধিনিষেধ শিথিল হলে আবারও বাড়বে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।

তিনি আরও জানান, সংক্রমণ কমলেও অর্থনীতি পুনরায় চালুর যে রোডম্যাপ আগে ঘোষণা করা হয়েছিল সরকার সেখান থেকে সরে আসছে না।

এর ব্যাখ্যায় জনসন বলেন, ‘আমরা যদি সব কিছু খুলে দেই তাহলে অবশ্যম্ভাবী পরিণতি হিসেবে আমরা আরও সংক্রমণ দেখতে পাব এবং দুঃখজনকভাবে আমরা হাসপাতালে আরও রোগী ও মৃত্যু দেখতে পাব।’

গত বছরের ডিসেম্বরে যুক্তরাজ্য টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে। মোট জনগোষ্ঠীকে টিকা দেওয়ার হারের ক্ষেত্রে বিশ্বের মধ্যে ইসরায়েলের পরই যুক্তরাজ্যের অবস্থান। তবে সংক্রমণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় দেশটিতে জানুয়ারি মাসে পুনরায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়। ফেব্রুয়ারি থেকে সংক্রমণের মাত্রা ও মৃত্যুর হার কমতে শুরু করে বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যমগুলো।

যুক্তরাজ্যে এখন পর্যন্ত ৪৩ লাখ ৭৫ হাজার ৮১৪ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। মৃত্যু হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ১২৩ জনের।

img

করোনায় আক্রান্ত ডিবিপ্রধান হারুন

প্রকাশিত :  ০৪:০৮, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:৩৬, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।

সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে তিনি এ তথ্য নিজেই নিশ্চিত করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক পেজে গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ লিখেছেন, হঠাৎ করে করোনা আক্রান্ত হলাম। সুস্থতার জন্য দোয়া চাই।

ডিবি সূত্রে জানা গেছে, করোনা পরীক্ষার ফল পজিটিভ আসার পরে বর্তমানে বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদ।

২০২২ সালের ১৩ জুলাই ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পান হারুন অর রশীদ।

২০২১ সালের মে মাসে যুগ্ম পুলিশ কমিশনার হিসেবে গোয়েন্দা বিভাগে পদায়ন হয় তার। এর আগে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এবং নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করেন।