আবারও বেড়েছে সয়াবিন ও পেঁয়াজের দাম

প্রকাশিত :  ০৭:৫৯, ৩০ এপ্রিল ২০২১

আবারও বেড়েছে সয়াবিন ও পেঁয়াজের দাম

জনমত ডেস্ক: আবারও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে পাঁচ টাকা করে। শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবি’র তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৩ শতাংশের বেশি। আর আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৭ শতাংশের বেশি। আর রাজধানীর বাজারগুলোয় বোতল ও খোলা উভয় ধরনের সয়াবিন তেলের দামও বেড়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে পাম সুপার তেলের দাম। বোতলের সয়াবিন তেলের দাম লিটারে বেড়েছে পাঁচ টাকা। আর খোলা সয়াবিন ও পাম সুপারের দাম কেজিতে চার টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

তবে মোটা চালের দাম না কমলেও চিকন ও মাঝারি মানের চালের দাম অতি সামান্য পরিমাণ কমেছে। গত সপ্তাহের ৫৮ টাকা কেজি চাল এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ৫৭ টাকা। আদা ও চাল ছাড়াও দাম কমার তালিকায় রয়েছে ছোলা, আলু ও ময়দা। তবে এই সপ্তাহে কমেছে আদার দাম। আমদানি ও দেশী দুই ধরনের আদার দামই কমেছে। টিসিবির হিসাব বলছে, গত এক সপ্তাহে আদার দাম কমেছে সাড়ে ১২ শতাংশ। ব্যবসায়ীরা বলছেন, দেশি প্রতি কেজি আদার দাম কমেছে ১০-২০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ ১০০-১৪০  টাকা কেজি আদা এখন ৯০-১২০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। আর ৮০ টাকা কেজি আমদানি আদা পাওয়া যাচ্ছে ৭০ টাকায়। 

বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে তেল

বাজারে এক লিটারের যে বোতল পাওয়া যাচ্ছে তার গায়ে ১৩৯ টাকা লেখা রয়েছে। কিন্তু বেশিরভাগ খুচরা ব্যবসায়ী এই সয়াবিন তেল বিক্রি করছেন ১৪৫ টাকা। 

রাজধানীর কাপ্তান বাজার এলাকায়  বোতলে ভরা এক লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকা দরে। কাপ্তান বাজার এলাকার ব্যবসায়ী শফিকুল হক মিলন বলেন, ‘সয়াবিন তেলের বাজার বাড়তি। বোতলের গায়ে লেখা থাকুক না কেন, এক লিটারের বোতল নিতে হলে ১৪৫ টাকায় দিতে হবে।’

তবে মানিক নগর এলাকার ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী বলেন, সয়াবিন তেলের দাম নতুন করে বেড়েছে। এক লিটারের বোতল ১৪০ টাকা বিক্রি করছেন। খোলা সয়াবিন তেলের দামও কেজিতে ৪ টাকা বেড়ে গেছে।

খোলা সয়াবিনের দাম বাড়ার তথ্য মিলেছে অন্য বাজারগুলোতেও। দু’দিন আগে ১৩০-১৩২ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া খোলা সয়াবিন তেল এখন বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৩৬ টাকায়। এর সঙ্গে বেড়েছে পাম সুপারের দাম। ১২০-১২২ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া পাম সুপারের দাম বেড়ে ১২৫-১২৭ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

৫-১০ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়ে পেঁয়াজ ৪০-৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ৩০-৩৫ টাকায় নেমেছিল।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রসঙ্গে গোপীবাগ এলাকার  ব্যবসায়ী আসলাম পারভেজ বলেন, ‘হঠাৎ করে পেঁয়াজের চাহিদা বেড়ে গেছে। এ কারণে দামও বাড়ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু সবজির দাম কমেছে। আর অধিকাংশ সবজির দাম আগের মতোই আছে।

সবজির দামে স্বস্তি

সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে নতুন আসা ফুলকপির পিস বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকায়। এর সঙ্গে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের সবজি। রোজার শুরুতে ১২০ টাকায় উঠে যাওয়া বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ টাকা।  তবে রোজার শুরুতে অস্বাভাবিক দাম বেড়ে যাওয়া শসার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে। মানভেদে শসার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা এবং রোজার শুরুতে ছিল ৮০ টাকা। পটলের কেজি ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০-৫০ টাকা। গত শুক্রবার ৬০-৭০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া বরবটির দাম কমে ৪০-৫০ টাকা হয়েছে। ঢেঁড়সের কেজিও বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০-৬০ টাকা। ৬০-৮০ টাকা বিক্রি হওয়া ঝিঙের দাম কমে ৪০-৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর লাউয়ের পিস আগের সপ্তাহের মতো বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা।

বেশিরভাগ সবজির দাম কমার মধ্যে সজনের ডাটার দাম বেড়েছে। গত সপ্তাহে ৭০-৮০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া সজনের ডাটার দাম বেড়ে ৯০-১০০ টাকা হয়েছে। পাকা টমেটো আগের সপ্তাহের মতো ২৫-৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে নতুন আসা কাঁকরোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা। কাঁকরোলের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কচুর লতি।  প্রতিকেজি কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা। কাঁচাকলার হালি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা।

ব্রয়লার মুরগি আগের মতো ১৪০-১৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি কক বা সোনালী মুরগি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৭০ টাকা। ফার্মের মুরগির ডিম প্রতি হালি বিক্রি হচ্ছে আগের মতোই ২৮-৩০ টাকা। প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৬৮-৭০ টাকা। 

বিশ্বে প্রতিদিন ১০০ কোটি টন খাবার নষ্ট হয় : জাতিসংঘ

প্রকাশিত :  ১৭:৫৩, ২৮ মার্চ ২০২৪

জাতিসংঘের নতুন এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বিশ্বে প্রতিদিন প্রায় ১০০ কোটি টনের বেশি খাবার নষ্ট হচ্ছে। যদিও এর বিপরীতে প্রতিদিন অনাহারে থাকছে প্রায় ৮০ কোটি মানুষ।

বুধবার (২৭ মার্চ) জাতিসংঘ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। খাবার অপচয়ের এ ঘটনাকে উল্লেখ করা হয়েছে ‘বৈশ্বিক ট্র্যাজেডি’ হিসেবে।

জাতিসংঘের ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের প্রায় ৮০ কোটি মানুষ যখন না খেয়ে আছে, তখন লাখ কোটি ডলার মূল্যের খাবার ময়লার ঝুড়িতে ফেলা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২২ সালে যত খাবার নষ্ট হয়েছে, তার ২৮ শতাংশ নষ্ট হয়েছে রেস্তোরাঁ, ক্যান্টিন ও হোটেলের মতো খাদ্য পরিষেবা ব্যবস্থাগুলোতে। কসাই ও মুদিদোকানে নষ্ট হয়েছে ১২ শতাংশ খাবার। তবে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৬০ শতাংশ খাবার নষ্ট হয়েছে বাসাবাড়িতে। এর পরিমাণ ৬৩ কোটি ১০ লাখ টন।

বাড়িঘরগুলোতে প্রতি বছর যে পরিমাণ খাদ্য নষ্ট হয়, তা এক বছরে বিশ্বে মোট উৎপাদিত খাদ্যের এক পঞ্চমাংশ। জাতিসংঘের বৈশ্বিক পরিবেশ রক্ষা বিষয়ক প্রকল্প ইউনাইটেড নেশন্স এনভায়র্নমেন্ট প্রোগ্রামের (ইউএনইপি) নির্বাহী পরিচালক ইঙ্গের অ্যান্ডারসেন এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘খাদ্যের অপচয় একটি বৈশ্বিক ট্র্যাজেডি। শুধুমাত্র এই অপচয়ের কারণে প্রতিদিন বিশ্বে লাখ লাখ মানুষ না খেয়ে থাকেন।’

বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, ‘খাদ্যের অপচয় কেবল মানুষের আদর্শগত ব্যর্থতা নয়, বরং পরিবেশের জন্যও হুমকি। অপচয়িত বা ফেলে দেওয়া খাবার থেকে বিপুল পরিমাণ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের জন্য দায়ী। আমাদের হাতে থাকা তথ্য বলছে, , ফেলে দেওয়া খাবার থেকে প্রতিদিন যে পরিমাণ গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গত হয়, বিশ্বে প্রতিদিন বিমান চলাচলজনিত কারণে নির্গত হওয়া গ্রিনহাউস গ্যাসের তুলনায় তা পাঁচগুণ বেশি।

প্রতিবেদনটির তথ্য সংগ্রহ ও তা বিশ্লেষণের কাজে জাতিসংঘকে সহযোগিতা করেছে র‌্যাপ নামের একটি অলাভজনক গবেষণা সংস্থা। ইউএনইপির কর্মকর্তা ক্লেমেন্টেন ও’কনর এএফপিকে বলেন,‘আমরা এখানে শুধু বাড়িঘরগুলোর তথ্য দিয়েছি। এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে জরিপের ভিত্তিতে। এছাড়া রেস্তোরাঁয় খাদ্য অপচয়ের তথ্য এখানে দেওয়া হয়নি। তাই আমাদের বিশ্বাস, বাড়িঘর ও রেস্তোরাঁয় অপচয় হওয়া খাদ্যের প্রকৃত আরও অনেক, অনেক বেশি।

এখন পর্যন্ত বিশ্বে খাবারের অপচয় নিয়ে জাতিসংঘের সংকলিত দ্বিতীয় প্রতিবেদন এটি। প্রতিবেদনটি তৈরিতে জাতিসংঘকে সহযোগিতা করেছে অলাভজনক সংস্থা ডব্লিউআরএপি। সূত্র: সিএনএন