img

সরকার গঠনে ফের ব্যর্থ নেতানিয়াহু

প্রকাশিত :  ০৯:৫৬, ০৫ মে ২০২১

সরকার গঠনে ফের ব্যর্থ নেতানিয়াহু

আন্তর্জাতিক ডেস্কদুই বছরে চারবার নির্বাচনের পরও এককভাবে সরকার গঠন হয়নি মধ্যপ্রাচ্যের ইহুদিবাদী দখলদার রাষ্ট্র ইসরায়েলে। সর্বশেষ নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সরকার গঠন করতে ফের ব্যর্থ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

মঙ্গলবার (৪ মে) দিবাগত রাতের মধ্যে সরকার গঠনের সময়সীমা ছিল। যদিও ওই সময়ের মধ্যে সরকার গঠনে ব্যর্থতার কথা প্রেসিডেন্ট অফিসকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি।

এবার প্রেসিডেন্ট রিভলিন অন্য দলকে সুযোগ দেবেন। তখন তারা যদি পারে, তাহলে ১২ বছর পর বিরোধী আসনে বসবেন নেতানিয়াহু এবং তার দলের নির্বাচিত সদস্যরা। খবর ডয়েচে ভেলের।

সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে গেলে নেতানিয়াহুকে ইসলামপন্থি ইউনাইটেড অরব লিস্ট (ইউএএল) এবং চরম ডানপন্থি জিওনিস্ট পার্টির সমর্থন দরকার ছিল। কিন্তু জিওনিস্ট পার্টি জানিয়ে দিয়েছে, তারা কিছুতেই ইউএএলের সঙ্গে হাত মেলাবে না। ফলে নেতানিয়াহুর পক্ষেও জোট গঠন করা সম্ভব হয়নি।

প্রেসিডেন্ট এবার ইয়াইর ল্যাপিদকে সরকার গঠনের আমন্ত্রণ জানাতে পারেন। তিনি জোট সরকার গঠন করার চেষ্টা করবেন। ল্যাপিদ সাবেক টিভি অ্যাঙ্কর এবং নেতানিয়াহুর তীব্র বিরোধী।

এছাড়া নেতানিয়াহুর সাবেক জোটসঙ্গী বেনেট আছেন, তিনি দক্ষিণপন্থি দলের নেতা। তাকেও প্রেসিডেন্ট সরকার গঠনের জন্য ডাকতে পারেন।

ইসরায়েলে গত দুই বছরে চারবার ভোট হয়েছে। নেতারা জোট গঠন করতে হিমশিম খেয়েছেন। শেষ নির্বাচন হয়েছে গত মার্চে। কোনো দল যদি সরকার গঠন করতে না পারে, তাহলে দুই বছরে পাঁচবার ভোট হবে ইসরায়েলে।

২০০৯ সাল থেকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু। ৭০ বছর বয়সী এই নেতা ইসরায়েলে সবচেয়ে বেশিদিন ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রধানমন্ত্রী। ১৯৯৬ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্তও তিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন।

নেতানিয়াহু সেনাবাহিনীতে ছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান এমআইটিতে আর্কিটেকচার নিয়ে পড়েছেন। ইরান ও ফিলিস্তিন নিয়ে তার নীতি ছিল খুবই কড়া। তিনি বারবার বলেছেন, ইরান পরমাণু বোমা বানাতে চাইছে এবং ইসরায়েল তা হতে দেবে না। তিনি ফিলিস্তিনিদের জন্য আলাদা রাষ্ট্রেরও বিরোধী।

তার বিরুদ্ধে এখন দুর্নীতি ও জালিয়াতির অভিযোগের বিচার চলছে। তিনি অবশ্য নিজেকে নির্দোষ ঘোষণা করেছেন। এই অভিযোগের ফলে তিনি বেকায়দায় পড়েছেন।

img

গাজায় যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে সম্মত হামাস

প্রকাশিত :  ২১:২৮, ০৬ মে ২০২৪

ইসরায়েলের সঙ্গে চলা সাত মাসের যুদ্ধ থামাতে কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে রাজি হয়েছে ফিলিনিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। হামাস ঠিক কী প্রস্তাব মেনে নিয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে বিশদ জানা যায়নি।

সোমবার এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান ইসমাইল হানিয়া কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল থানিকে ফোন করে জানিয়েছেন হামাস যুদ্ধবিরতির চুক্তির প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। মিসরের গোয়েন্দাবিষয়ক মন্ত্রী আব্বাস কামালকেও একই কথা জানিয়েছেন ইসমাইল হানিয়া। খবর এপির

তবে এ বিষয়ে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ইসরায়েলি গণমাধ্যম হারেৎজের খবরে বলা হচ্ছে, হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াহ সোমবার ঘোষণা করেছেন হামাস যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রস্তাবিত রূপরেখায় সম্মত। একটি সূত্রের বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়, হামাস গ্যারান্টি পেয়েছে যে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির পরে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় পুনরায় হামলা চালাবে না। হামাসের এই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা একটি কৌশল হতে পারে বলেও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে মনে করা হচ্ছে।

যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে হামাসের রাজি হওয়ার ঘোষণা এমন এক সময়  আসে যখন ইসরায়েলের সামরিক অভিযান থেকে রক্ষা পেতে দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহর থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। এতদিন এলাকাটিকে ‘নিরাপদ’ বলে মনে করা হতো। ইসরায়েলি হামলায় ঘরবাড়ি হারিয়ে সেখানকার শরণার্থী শিবিরে ঠাঁই নিয়েছিল ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি।

বিপুল এই জনগোষ্ঠীকে পূর্ব রাফা থেকে সোমবার তিন কিলোমিটার দূরে উপকূলীয় এলাকা আল-মাওয়াসিতে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয় ইসরায়েলি সেনারা। এর পরই আতঙ্কিত গাজাবাসী জীবন বাঁচাতে রাফাহ ছাড়তে শুরু করে। কেউ হেঁটে, কেউবা গাধার গাড়িতে, আবার অনেককে যানবাহনে করে মালপত্র নিয়ে শরণার্থী শিবির ছেড়ে যেতে দেখা যায়।  

মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, আল-মাওয়াসিতে খাদ্য, পানীয় কিংবা স্যানিটেশনসহ জীবনযাপনের কোনো ব্যবস্থাই নেই। হামাসের সিনিয়র কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি রাফাহ থেকে বেসামরিক নাগরিকদের সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশকে ‘বিপজ্জনক’ বলে উল্লেখ করেছেন।  

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন রাফা সম্পর্কে তাঁর স্পষ্ট অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, আশ্রয় নেওয়া বেসামরিক নাগরিকদের সাহায্য করার পরিকল্পনা ছাড়া রাফা আক্রমণকে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থন করে না।

এর আগে রোববার হামাসের রকেট হামলায় চার ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ১০ সেনা। এর জবাবে কিছুক্ষণ পরই রাফায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ১৯ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারায়।  গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের ৬১২ সেনাকে হত্যা করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীরা।

আলজাজিরা টিভি চ্যানেল বন্ধে রোববার আইন পাসের পরপরই চ্যানেলটির জেরুজালেম অফিসে অভিযান চালিয়ে সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জনপ্রিয় চ্যানেলটি।

এদিকে, ইসরায়েলে পাঠানোর জন্য প্রস্তুত গোলাবারুদের একটি চালান আটকে দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি ওই গোলাবারুদের চালান কী কারণে স্থগিত করা হয়েছে– তা জানায়নি ওয়াশিংটন। তবে এতে ইসরায়েলর প্রতি মার্কিন নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২ জনসহ সোমবার পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৪ হাজার ৭৩৫ জনে।