img

মৃত্যুর আগে মুসলিম রোগীকে পবিত্র কালেমা পড়ে শোনালেন হিন্দু ডাক্তার

প্রকাশিত :  ১১:২৮, ২৪ মে ২০২১
সর্বশেষ আপডেট: ১১:৪১, ২৪ মে ২০২১

মৃত্যুর আগে মুসলিম রোগীকে পবিত্র কালেমা পড়ে শোনালেন হিন্দু ডাক্তার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতে মৃত্যুপথযাত্রী মুসলিম কোভিড রোগীকে কালেমা তায়্যেবা পড়ে শোনালেন এক নারী চিকিৎসক। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর প্রশংসায় ভাসছেন রেখা কৃষ্ণা নামের ওই চিকিৎসক। 

গত ১৭ মে কেরালা রাজ্যের পালঘাট জেলার পতম্বিতে সিভানা হসপিটাল ও রিসার্চ সেন্টারে এ ঘটনা ঘটে। 

দুবাইভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গলফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানানো হয়েছে। 

খবরে বলা হয়, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি পতম্বির ওই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এক মুসলিম নারী। সেখানে তার চিকিৎসার দায়িত্বে ছিলেন ডা. রেখা কৃষ্ণা। 

রেখাসহ অন্যান্য চিকিৎসকও বুঝতে পারছিলেন, ওই নারীকে সুস্থ করে তোলা কার্যত অসম্ভব। রোগীর বাড়ির সদস্যদের সে কথা জানিয়েও দেন তারা।

ডা. রেখা শুক্রবার ভারত থেকে মোবাইল ফোনে গলফ নিউজকে বলেন, ৫৭ বছর বয়সি ওই রোগী কোভিডে আক্রান্ত হয়ে নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। তিনি ১৭ দিনের জন্য ভেন্টিলেটরে ছিলেন। তার পরিবার এবং আত্মীয়স্বজনদের আইসিইউতে ঢোকার অনুমতি ছিল না। 

‘মৃত্যুর সময় আমি তার কষ্ট দেখতে পাচ্ছিলাম, কিন্তু একজন ডাক্তার হিসেবে আমি কিছুই করতে পারিনি।’ 

ডা. রেখা আরও বলেন, তাকে ভেন্টিলেটর থেকে নামানোর পর আমি কেবল ব্যথা কমাতে তার কাছে যাই এবং মুহূর্তের মধ্যে আমি কালেমা উচ্চারণ করেছিলাম— লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ {আল্লাহ ব্যতীত কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল}।

তিনি বলেন, এমনটা যে করব আগে থেকে ভাবিনি। মুহূর্তটা এমনই হৃদয়বিদারক ছিল, তাই আচমকা করে ফেলি। আমার বড় হয়ে ওঠা দুবাইতে। তাই ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে অল্প বিস্তর জানি। সে কারণেই মৃত্যুপথযাত্রী করোনা রোগীর কানে কলমা পড়ে শুনিয়েছিলাম। এটা কোনো ধর্মীয় আচার নয়,  মানবিক পদক্ষেপ। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর রেখার মানবিক প্রশংসা করেছেন সবাই। 

গলফ নিউজ জানায়, ৩৭ বছর বয়সি রেখা দুবাইতে বড় হয়েছেন। রেখা সর্বশেষ গত মার্চে দুবাইয়ে তার দুই বাচ্চাকে নিয়ে ছুটিতে বেড়াতে গিয়েছিলেন।

img

বিজয়া দশমী আজ, প্রতিমা বিসর্জনে শেষ হচ্ছে দুর্গোৎসব

প্রকাশিত :  ০৬:০০, ০২ অক্টোবর ২০২৫

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার বিজয়া দশমী আজ। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) সকালে দেবীর দশমী বিহিত পূজা দিয়ে শুরু হবে দিনব্যাপী আনুষ্ঠানিকতা। এরপর দর্পণ বিসর্জনের মধ্য দিয়ে সমাপ্তি ঘটবে পাঁচ দিনব্যাপী এই শারদ উৎসব। 

হিন্দু শাস্ত্র অনুযায়ী, দশমীর দিনে দেবী দুর্গা মর্ত্য ছেড়ে ফিরে যাবেন স্বামীগৃহ কৈলাসে। তাই মণ্ডপে মণ্ডপে আজ শুধুই বিষাদের ছায়া।

উলুধ্বনি, শঙ্খ, ঘণ্টা আর ঢাকঢোলের বাজনায় থাকবে দেবী দুর্গার বিদায়ের সুর। বিসর্জনের সকালে হবে বিহিত পূজা। এরপর হবে দর্পণ ও বিসর্জন।

বিজয়া দশমীতে সারাদেশে স্থানীয় আয়োজন ও সুবিধামতো সময়ে শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হবে।

হিন্দুশাস্ত্র মতে, এদিন দেবী দুর্গা মর্ত্য ছেড়ে কৈলাসে ফিরে যাবেন দোলায় চড়ে। এদিন দেবী দুর্গা মর্ত্যে ছেড়ে কৈলাসে ফিরে যাবেন দোলায় চড়ে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, মানুষের মনের অসুরিক প্রবৃত্তি, কাম, ক্রোধ, হিংসা, লালসা বিসর্জন দেওয়াই বিজয়া দশমীর মূল তাৎপর্য। এসব প্রবৃত্তি বিসর্জন দিয়ে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।

দেবী দুর্গার বিদায়ের আগে মণ্ডপে মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠবেন নারীরা। দেবীর চরণের সিঁদুর নিয়ে নিজেদের রাঙিয়ে তুলবেন তারা। শাস্ত্রমতে, স্বামীর মঙ্গল কামনায় দশমীর দিন নারীরা দেবী দুর্গার সিঁথিতে দেওয়া সিঁদুর নিজের সিঁথিতে লাগিয়ে আশীর্বাদ নেন। পান ও মিষ্টি নিয়ে দুর্গা মাকে সিঁদুর ছোঁয়ানোর পর একে অপরকে সিঁদুর লাগিয়ে দেন তারা। সিঁদুর খেলা শেষে শেষবারের মতো দেবীর আরাধনা করেন তারা।

রাজধানীর ১০টি ঘাটে বিসর্জন হবে দুর্গাপূজার ২৫৪টি মণ্ডপের প্রতিমা। বিসর্জন নির্বিঘ্ন করতে বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির ৭ হাজার সদস্য। আর বিসর্জনের সময় নৌ-দুর্ঘটনা রোধে টহল দেবে নৌ-পুলিশ ও কোস্টগার্ড। 

এবার রাজধানীর ২৫৪টি মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন হবে বুড়িগঙ্গা, শীতলক্ষ্যা ও তুরাগ নদীর ১০টি ঘাটে। সবচেয়ে বেশি হবে বিনাস্মৃতি স্নান, ওয়াইস ও নবাববাড়ি ঘাটে। এছাড়াও, লালকুটি, মিলব্যারাক, পোস্তগোলা শ্মশান, বসিলা ব্রিজ, আমিনবাজার ও আশুলিয়ার ধউরে বিআইডব্লিউটিসি ফেরিঘাটে হবে বিসর্জন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, ডিএমপি জানিয়েছে, রাজধানীর বেশিরভাগ মণ্ডপের প্রতিমা কড়া নিরাপত্তায় আনা হবে ঢাকেশ্বরীতে। সেখান থেকে শোভাযাত্রা নিয়ে যাবে বিনাস্মৃতি স্নান ঘাটে। আর বিসর্জন ঘিরে মোতায়েন থাকবে সাড়ে ৪ হাজার পুলিশ সদস্য। ঘাটগুলো আনা হয়েছে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায়। স্ট্যান্ডবাই থাকবে বিশেসায়িত ইউনিট, সোয়ট, বোম্ব ডিস্পোজাল ও কে-নাইন ইউনিট।

পুলিশের পাশাপাশি বিসর্জনে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে র‌্যাবও। ৯৪টি টহলের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও নিয়োজিত থাকবে তারা। সদরদফতসহ প্রতিটি ব্যাটালিয়নের কন্ট্রোল রুম থেকে মনিটরিং করা হবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা।