নারায়ণগঞ্জের জুস কোম্পানি থেকে লাশ হয়ে ফিরলেন নবীগঞ্জের স্বপ্না
জনমত ডেস্ক: নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার ভুলতায় সজীব গ্রুপের প্রতিষ্ঠান সেজান জুস কোম্পানির অগ্নিকাণ্ডে মারা গেছেন নবীগঞ্জের স্বপ্না রাণী। জীবিকার তাগিদে ছয়মাস আগে নারায়ণগঞ্জে পাঁচ মেয়ে ও দিনমজুর স্বামীকে নিয়ে কাজ করতে গিয়েছিলেন নবীগঞ্জের স্বপ্না রাণী। স্বপ্নার মেয়ে বিশ্ব খাঁ রাণী (১৩) তার সাথেই কাজ করতেন। ঘটনার সময় তার মেয়ে বিশ্ব খাঁ রাণী নিচ তলায় ছিল। তাই লোকজনের চিৎকার শোনে দৌড়ে সে বের হয়ে যায়।
শুক্রবার (৯ জুলাই) স্বপ্না রাণীর মৃতদেহ নবীগঞ্জ নিয়ে আসা হয়। নিহত স্বপ্না রাণী (৩৮), নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের গোলডুবা আদর্শ (ভূমিহীন) গ্রামের জতি নমের স্ত্রী।
এদিকে মায়ের সাথে একই কোম্পানিতে কাজে থাকা বিশ্ব খাঁ রাণী (১৩)প্রাণে বেঁচে বাবার কোলে ফিরেছেন। কিন্তু তার চোখে মুখে এখনো ভয়ানক সেই দিনের অগ্নিকাণ্ডের দৃশ্য ভেসে উঠছে বলে জানায় সে। চোখের সামনে মায়ের মৃত্যু সে কিছুতেই মানতে পারছে না। গর্ভধারিণী মা হারিয়ে ৫ বোনের আর্তনাদে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
স্বপ্না রাণীর মেয়ে বিশ্ব খাঁ রাণী জানায়, গত ৮ জুলাই অগ্নিকাণ্ডের সময় তার মা জীবন বাঁচাতে এই কোম্পানির ৩য় তলার জানালার কাছ থেকে লাফ দিয়ে মাটিতে লুটে পড়েন। ওই সময় তার পুরো শরীর রক্তমাখা ছিল। সেখানকার লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরে সেখানকার স্থানীয়দের সহযোগিতায় ৯ জুলাই স্বপ্না রাণীর মৃতদেহ নবীগঞ্জ নিয়ে আসা হয়।
স্বপ্না রাণীর স্বামী জতি নম জানান, পরিবারের অভাব অনটন এবং ঋণের বোঝা দুর করতে সপরিবারে ৬ মাস পূর্বে নারায়ণগঞ্জের ভাড়া বাসায় উঠেন তারা। বড় মেয়ে ভাসনা রাণী (১৭) কাজ করতেন চায়না ব্যাগ কোম্পানিতে। দ্বিতীয় মেয়ে বিশ্ব খাঁ রাণী মায়ের সাথে একই কোম্পানিতে কাজ করতো। এছাড়াও স্বপ্না রাণীর আরও তিন মেয়ে রয়েছে। তারা হলো, মিনতি রাণী (১০), মৌসুমি রাণী (৮),জবা রাণী (৩),।
জতি নম এ প্রতিবেদককে আরও বলেন, আমরা গরিব মানুষ দিনমজুরী করে খাই। স্ত্রীকে হারিয়ে আজ আমার মেয়েরা দিশেহারা। ঘরে কোনো টাকাও নেই। কাউকে বলেন আমাদের সাহায্য করতে।