আগস্টের শেষ নাগাদ দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ২০০ হতে পারে

img

ব্রিটেনে ফের জারি হতে পারে কিছু বিধিনিষেধ

প্রকাশিত :  ১৮:৫০, ২১ জুলাই ২০২১

ব্রিটেনে ফের জারি হতে পারে কিছু বিধিনিষেধ

‘ভ্যাকসিন পাসপোর্ট’ নিয়ে দলে বিদ্রোহের মুখে বরিস

জনমত রিপোর্টঃ বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা উপেক্ষা করে সকল বিধিনিষেধ তুলে নিয়ে ১৯ জুলাই সরকার ইংল্যান্ডকে ‘স্বাধীনতা’ দিলেও আবারও বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে।

সংক্রমণ পরিস্থিতি যেভাবে গুরুতর আকার ধারণ করছে, তাতে করে হাসপাতালগুলোতে ভর্তির হার আশংকাজনকভাবে বাড়তে পারে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। আর যদি পরিস্থিতি তেমনটা দাড়ায়, তাহলে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যেই ফেস মাস্ক, ঘরে বসে কাজ করা সহ বিভিন্ন ধরনের নিষেধাজ্ঞা ফের জারি করা হতে পারে।

এনএইচএস এর ওপর রোগীদের অতিরিক্ত চাপ এড়াতে আগষ্ট মাসের প্রথম সপ্তাহেই কঠোর পদক্ষেপ নিতে বরিস জনসনকে প্রস্তুত থাকতে সরকারের বৈজ্ঞানিক পরামর্শক গ্রুপের সদস্যরা বারবার বলে আসছেন। বিজ্ঞানীদের ধারনা, আগামী আগষ্ট মাসের শেষ নাগাদ যুক্তরাজ্যে প্রতিদিন ১ থেকে ২ হাজার লোক কোভিডে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেন। এবং দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা ১০০ থেকে ২০০ জনে গিয়ে ঠেকতে পারে। এমন পরিস্থিতি এড়াতে মাস্ক বাধ্যমতামূলক করা এবং ঘরে বসে কাজ করার পরামর্শমূলক নির্দেশনা আগষ্টের শুরুতে ফের বলবত করতে সেইজ এর সায়েন্টিস্টরা পরামর্শ দিয়েছেন।

সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে যে, সংক্রমণের চূড়ায় আরোহনের পূর্বাভাসের ৬ সপ্তাহ আগেই  ১৯ জুলাই কথিত ‘মুক্তি দিবস’ এর সপ্তাহে গড়ে প্রতিদিন ৭৪৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এবং এই সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে।

১৯ জুলাই সোমবার যুক্তরাজ্যেল হাসপাতালগুলোতে কোভিডে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিলো ৪,৫৬৭ জন। এদের মধ্যে ৬১১ জন রয়েছে ভেন্টিলেটর বেডে। মঙ্গলবার ২০ জুলাই নতুন করে ৪৬,৫৫৮ জনের কোভিড পজিটিভ হিসেবে সনাক্ত হয়েছে। এদিন কোভিডে মারা গেছেন ৯৬ জন, যা গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু।

গত সপ্তাহে ইংল্যান্ডের চিফ মেডিক্যাল অফিসার প্রফেসর ক্রিস উইটি বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সংখ্যা প্রতি তিন সপ্তাহে দ্বিগুন হচ্ছে এবং আগামী সপ্তাহ খানেকের মধ্যেই এই হার ‘আতংকজনক’ পর্যায়ে উন্নীত হতে পারে। বিধিনিষেধ আবার জারি করা হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

বৈজ্ঞানিক প্রজেকশন অনুযায়ি আগষ্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা দৈনিক ১৫০০তে গিয়ে ঠেকতে পারে, যা মাসের শেষ নাগাদ দৈনিক তিন হাজারে গিয়ে উন্নীত হবে। অর্থাৎ গত বছরের এপ্রিলে সংক্রমণের প্রথম ঢেউয়ের সময়কালে সংক্রমণ সংখ্যার প্রায় কাছাকাছি পর্যায়ে গিয়ে ঠেকবে তৃতীয় ঢেউয়ের সংক্রমণ সংখ্যা।

প্রাইমমিনিস্টার বরিস জনসন নতুন করে বিধিনিষেধ আরোপ করার ব্যাপারে অনাগ্রহ প্রকাশ করলেও তার অফিস টেন ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বলা হচ্ছে কিছু কিছু বিধিনিষেধ ফের আরোপ করার বিশেষটির নিয়ে মন্তব্য করার সময় এখনো আসেনি।


এদিকে, নাইট ক্লাব ও বড় বড় ইভেন্টে যোগ দিতে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক করতে গিয়ে নিজ দলের মধ্যে প্রবল বাধার মুখোমুখি হচ্ছেন প্রধান মন্ত্রী বরিস জনসন। ‘নাগরিক স্বাধীনতা’ নিয়ে উদ্বিগ্ন ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির ৪০ এর বেশি এমপি প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার কথা জানিয়েছেন। 

নিজ দলের মধ্যে বিদ্রোহ হলেও বিরোধী লেবার পার্টির পক্ষ থেকে সরকারের ভ্যাকসিন পাসপোর্ট প্রবর্তনের উদ্যোগকে সমর্থন জানানো হতে পারে।

সেপ্টেম্বর থেকে ইংল্যান্ডের নাইটক্লাব এবং ইনডোরে আয়োজিত বড় ধরনের সমাবেশমূলক অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই উদ্যোগকে আইনে রূপ দিতে পার্লামেন্টে আনা বিলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন টোরি পার্টির ৪২ জন এমপি একজোট হয়েছেন।

সংক্রমণের গতি প্রকৃতি পর্যালোচনায় সরকার মনে করছেন তরুণদের মধ্যে এখন সংক্রমণের হার বেশি। তাই শুধু নাইট ক্লাব নয়, পাব বা পানশালা সহ এ ধরনের অন্যান্য ভেন্যুতেও ভ্যাকসিন পাসপোর্ট বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি বিবেচনায় নেই - এমনটি টেন ডাউনিং স্ট্রিট থেকে বলা হচ্ছে না। এজন্য ‘নাগরিক স্বাধীনতা ক্ষুন্ন’ হতে পারে বলে এমপিরা উদ্বিগ্ন এবং এর বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন। যদি বিরোধী দলীয় এমপিদের একাংশ এই বিলের বিরুদ্ধে ভোট দেন, তাহলে সরকারের পক্ষে এটি পাশ করিয়ে আনা কঠিন হতে পারে। (MR)


যুক্তরাজ্য এর আরও খবর

ইংলিশ চ্যানেলে নৌকা ডুবে শিশুসহ নিহত ৫ | JANOMOT | জনমত

img

বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ও নারী উদ্যোক্তাদের ৫০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে ব্রিটেন

প্রকাশিত :  ১১:১৯, ১৪ মে ২০২৪

ব্রিটেনের আর্থিক উন্নয়ন সংস্থা (ডিএফআই) ব্রিটিশ ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট (বিআইআই) ‘প্রভাব বিনিয়োগ’ ছোট ব্যবসা এবং নারী উদ্যোক্তাদের সমর্থন দিতে বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় এসএমই ব্যাংক ব্র্যাক ব্যাংককে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেছে।

এই ঋণটি ক্ষুদ্র এবং ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ এবং নারী নেতৃত্বাধীন ব্যবসার বৃদ্ধিকে সমর্থন দেওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ তহবিল সরবরাহ করবে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত্তি।

মঙ্গলবার ঢাকায় ব্রিটিশ হাই কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিআইআই’র একথা বলা হয়েছে।

ঢাকাস্থ ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক এই অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এই বিনিয়োগ বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং টেকসই উন্নয়নে সহায়তার জন্য যুক্তরাজ্যের প্রতিশ্রুতিকে শক্তিশালী করেছে এবং এটি বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাজ্যের আধুনিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের একটি বড় নিদর্শন।’

তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের ক্ষুদ্র ব্যবসা এবং নারী উদ্যোক্তাদের আরও অর্থনৈতিক সুযোগ গ্রহণ করতে এবং আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে সক্ষম করবে।

বাংলাদেশে প্রায় ১০ মিলিয়ন এমএসএমই রয়েছে। এতে জনসংখ্যার প্রায় ৮০ শতাংশকে নিযুক্ত রয়েছে এবং দেশের শিল্প উৎপাদনের অর্ধেক এই খাত থেকে আসে।

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও বিশেষ করে নারী উদ্যোক্তাদের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং দারিদ্র্য নিরসনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে এই অর্থয়নকে অপরিহার্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

ব্র্যাক ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, এই ধরণের অর্থায়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেখানে দেশের মোট ঋণের মাত্র ২০ শতাংশ নারী-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানসহ এসএমইতে যাচ্ছে।

বিআইআই’র ঋণের অর্ধেক এমএসএসই খাতে যাবে এবং অবশিষ্টাংশ অর্ধেক নারী উদ্যোক্তাদের কাছে যাবে। যাতে মোট ৩ হাজার ৫শ’এমএসএসই এবং নারী উদ্যোক্তাদের কাছে পৌঁছানো হবে, যাতে তাদের ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করা যায়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই বিনিয়োগকালীন কাজ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য লিঙ্গ সমতার ওপর জাতিসংঘের ইউএন এসডিজি ৫, এসডিজি  ৮ সমর্থন দেবে। সেইসাথে শিল্প, উদ্ভাবন এবং অবকাঠামোতে এসডিজি ৯ সমর্থন করে।