img

মুনিয়ার আত্মহত্যা: আনভীরের সংশ্লিস্টতা পায়নি পুলিশ

প্রকাশিত :  ১৩:৫১, ২২ জুলাই ২০২১

মুনিয়ার আত্মহত্যা: আনভীরের সংশ্লিস্টতা পায়নি পুলিশ

রাজধানীর গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় করা আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলা থেকে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে অব্যাহতির আবেদন করেছে পুলিশ।

পুলিশের গুলশান জোনের উপকমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা পড়েছে গত ১৯ জুলাই।

চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যা প্ররোচনা মামলায় বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাই মামলার তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।’

মামলার বাদী সেই তরুণীর বড় বোন সম্প্রতি জানিয়েছিলেন, তার মামলায় যদি পুলিশ চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়, তাহলে তিনি নারাজি আবেদন করবেন। অবশ্য চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়ার বিষয়টি বাদী জানেন কি না, সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি কল কেটে দেন।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার পরিদর্শক মোল্লা আবুল হাসানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ এপ্রিল আনভীরের বিদেশযাত্রার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন ঢাকার মুখ্য মহানগর আদালতের হাকিম শহিদুল ইসলাম। সেই সঙ্গে ৩০ মের মধ্যে আদালতে মামলার প্রতিবেদন জমার আদেন দেন তিনি।

পরের দিনই মামলাটি থেকে আগাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন আনভীর। যদিও এ বিষয়ে আর শুনানি হয়নি।

গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে এই তরুণীর মরদেহ উদ্ধারের পর তার বোন বসুন্ধরার এমডির বিরুদ্ধে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা করেন

যা হয়েছিল

গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় এক তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

মেয়েটিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে ওই দিন রাতেই গুলশান থানায় মামলা করেন তার বড় বোন। এতে আসামি করা হয় বসুন্ধরার এমডি আনভীরকে।

নিহত ওই তরুণীর গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায়।

পুলিশের গুলশান জোনের উপকমিশনার (ডিসি) সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সাংবাদিকদের তখন জানান, ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে গুলশান ২ নম্বরের ১২০ নম্বর সড়কের ফ্ল্যাট থেকে ওই তরুণীর ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরে ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করার পাশাপাশি ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে ২৭ এপ্রিল গ্রামের বাড়িতে ওই তরুণীর দাফন হয়।

মামলার বরাত দিয়ে ডিসি বলেন, মেয়েটির সঙ্গে বসুন্ধরার এমডি আনভীরের সম্পর্ক দুই বছরের। এক বছর মেয়েটিকে বনানীর একটি ফ্ল্যাটে রাখেন। পরে মনোমালিন্য হলে মেয়েটি কুমিল্লায় চলে যান। পরে মার্চে ঢাকায় এসে গুলশানের ওই ফ্ল্যাটে থাকা শুরু করেন।

সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, চলতি বছরের ২৩ এপ্রিল একটি ইফতার পার্টি হয় ওই বাসায়। সেই পার্টির ছবি ফেসবুকে আপলোড করা হলে মেয়েটির সঙ্গে আনভীরের মনোমালিন্য হয়। পরে মেয়েটি তার বোনকে ফোন করে জানান, যেকোনো মুহূর্তে তার যেকোনো ঘটনা ঘটতে পারে।

এই ফোনের পর কুমিল্লা থেকে ঢাকায় আসেন ওই তরুণীর বোন। গুলশানের ফ্ল্যাটটির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পান তিনি। পরে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে শোয়ার ঘরে তরুণীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।

img

২৩ নাবিকসহ কুতুবদিয়ায় নোঙর করল এমভি আবদুল্লাহ

প্রকাশিত :  ১৪:৫০, ১৩ মে ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৯:৩৩, ১৩ মে ২০২৪

সোমালিয়ান জলদস্যুদের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত ২৩ নাবিককে নিয়ে দেশে পৌঁছাল বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। দীর্ঘ যাত্রা শেষে সোমবার (১৩ মে) সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে জাহাজটি। বিষয়টি জানিয়েছেন জাহাজের মাস্টার ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ আবদুর রশিদ।

কুতুবদিয়ায় চুনাপাথরের কিছু চালান খালাস করে জাহাজটি ১৫ মে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছবে। সেখানে বাকি মালামাল খালাস করার পর বন্দর জেটিতে আসবে এমভি আব্দুল্লাহ। এর আগে মঙ্গলবার (১৪ মে) বিকালে জিম্মিদশা থেকে মুক্ত নাবিকদের চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হবে।

কেএসআরএম গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, এমভি আবদুল্লাহ বর্তমানে কুতুবদিয়ায় নোঙর করেছে। জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত নাবিকদের লাইটার জাহাজে মঙ্গলবার সরাসরি সদরঘাট কেএসআরএম জেটিতে নিয়ে আসা হবে। সেখানেই তাদের বরণ করা হবে।

তিনি বলেন, নাবিকদের জেটিতে বরণ করার জন্য কেএসআরএমের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন। নাবিকদের স্বজনদের কেউ কেউ এ সময় জেটিতে উপস্থিত থাকবেন বলেও জানা গেছে। তারা নাবিকদের বরণ করে নেবেন।

জাহাজটির পরিচালনা প্রতিষ্ঠান এসআর শিপিং সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের দায়িত্ব নেবে নতুন একটি নাবিক দল। বর্তমান নাবিকরা দীর্ঘ ভ্রমণ ও জিম্মিদশার ট্রমা কাটিয়ে ওঠার জন্য ছুটিতে যাবেন। তবে তারা মঙ্গলবারই ছুটি পাচ্ছেন কিনা এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

২৩ নাবিকসহ বাংলাদেশের পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ জিম্মি করে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। এরপর থেকে নানা শঙ্কায় ছিলেন জিম্মি নাবিকদের স্বজনরা। দীর্ঘদিন পর তাদের অপেক্ষার প্রহর ফুরাল।

শিপিং কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাহাজের নাবিকরা সুস্থ আছেন। কুতুবদিয়ায় আসার পর নাবিক ও ক্রু সদস্যদের একটি নতুন ব্যাচ জাহাজটিতে পাঠানো হবে। জাহাজে বর্তমানে যে ২৩ জন ক্রু আছেন তাদের আগামীকাল মঙ্গলবার একটি লাইটার জাহাজে করে কেএসআরএম লাইটার জেটি সদরঘাটে আনা হবে। সেখানে তাদের বরণ করবেন স্বজনরা। সেখান থেকে তারা নিজ নিজ বাড়িতে যাবেন।

এমভি আব্দুল্লাহ সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে আমদানি করা ৫৬ হাজার টন চুনাপাথর নিয়ে এসেছে। কার্গোর কিছু অংশ কুতুবদিয়ায় খালাস করা হবে এবং বাকি পণ্য খালাসের জন্য জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আসবে বলে জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, এমভি আবদুল্লাহ ৫০ হাজার টন কয়লা নিয়ে আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুতু বন্দর থেকে গত ৪ মার্চ সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা হয়। ১৯ মার্চ আবদুল্লাহ আমিরাতের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছার কথা ছিল।

মাপুতু থেকে রওনা হওয়ার চার দিন পর গত ১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ নাবিকসহ জাহাজটি সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল।    

সোমালি জলদস্যুদের হাতে জিম্মি হওয়ার দীর্ঘ ৩৩ দিন পর গত ১৩ এপ্রিল ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ মুক্ত হয়। মুক্ত হওয়ার আট দিনের মাথায় গত ২১ এপ্রিল বিকালে নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ দুবাই পৌঁছে। জাহাজটি দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরের জেটিতে ভিড়ে ২২ এপ্রিল। এরপর ওই বন্দরে ৫০ হাজার মেট্রিক টন কয়লা খালাসের পর নতুন ট্রিপের পণ্য (পাথর) লোড করতে ইউএইর মিনা সাকার বন্দরে নিয়ে যাওয়া হয় জাহাজ। সেখানে ৫৬ হাজার টন চুনা পাথর নিয়ে এমভি আবদুল্লাহ গত ৩০ এপ্রিল দুবাই মিনা সাকার বন্দর থেকে দেশের পথে রওনা হয়।