img

লকডাউনে কারখানা বন্ধ, বন্দরে বাড়ছে কনটেইনার জট

প্রকাশিত :  ০৮:০৯, ২৫ জুলাই ২০২১

লকডাউনে কারখানা বন্ধ, বন্দরে বাড়ছে কনটেইনার জট

ঈদের পরদিন থেকে গতকাল শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত ৪৮ ঘণ্টায় বন্দর থেকে পণ্যবোঝাই মাত্র ৩৯টি কনটেইনার খালাস করেছেন আমদানিকারকেরা। তাঁরা বলছেন, কারখানা বন্ধ থাকা অবস্থায় পণ্য খালাস করা সম্ভব নয়। আর বন্দর কর্মকর্তারা বলছেন, পণ্য খালাস না হলে তিন–চার দিন পরই ভয়াবহ জটের মুখে পড়বে বন্দর। তাতে বন্দরের কার্যক্রম সীমিত হয়ে যাবে।

প্রতিবছর ঈদের ছুটির পর পণ্য খালাস কমে যায়। এরপরও কিছুসংখ্যক কনটেইনার খালাস হয়। এবার ঈদের পরদিন থেকে কনটেইনার খালাসের হার সবচেয়ে কম। স্বাভাবিক সময়ে ২৪ ঘণ্টায় গড়ে সাড়ে তিন হাজার কনটেইনার খালাস হয়। সেখানে গত ৪৮ ঘণ্টায় খালাস হয়েছে মাত্র আমদানি পণ্যবোঝাই ৩৯টি কনটেইনার।

কনটেইনার খালাসের হার কমলেও জাহাজ থেকে প্রতিনিয়ত নামানো হচ্ছে আমদানি পণ্যবোঝাই কনটেইনার। তাতে প্রতি ঘণ্টায় বন্দর চত্বরে কনটেইনারের সংখ্যা বাড়ছে। যেমন ঈদের ছুটির আগের দিন বন্দরে কনটেইনারের সংখ্যা ছিল ৩৭ হাজার ৮১৯। এই সংখ্যা বেড়ে এখন হয়েছে ৪২ হাজার ৩৮৬। প্রতিদিন যদি গড়ে সাড়ে তিন হাজার কনটেইনার নামানো হয় তাহলে তিন–চার দিন পর বন্দর চত্বরে কনটেইনার রাখার জায়গা থাকবে না। জাহাজ থেকেও কনটেইনার নামানো যাবে না। কারণ, বন্দরের হাতে ৪৯ হাজার ১৮টি কনটেইনার রাখার জায়গা আছে। তাই কনটেইনারের স্তূপ যত বাড়তে থাকবে ততই জাহাজ থেকে কনটেইনার নামানোসহ বন্দরের পরিচালন কার্যক্রম স্থবির হয়ে আসবে।

এ পরিস্থিতিতে গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে বলেছে, বন্দর অভ্যন্তর থেকে কনটেইনার খালাস কার্যক্রম বন্ধ থাকলে আগামী দুই–তিন দিন পর বন্দরের পরিচালন কার্যক্রম স্থবির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী দুই মাসের জন্য রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া কনটেইনার ডিপোতে নিয়ে খালাসের অনুমতির ব্যবস্থা করা দরকার। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এই চিঠি দেন বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান।

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম শাহজাহান প্রথম আলোকে বলেন, বন্দরে যাতে জট তৈরি না হয়, সে জন্য বিকল্প হিসেবে কনটেইনার রাখার ব্যবস্থা করতে এই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আমদানিকারকেরা যদি পণ্য খালাস নেন তাহলে বন্দর সচল থাকবে।

কারখানা বন্ধ থাকলে কীভাবে পণ্য খালাস নেওয়া হবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, খাদ্যপণ্যের কারখানা খোলা আছে। আবার কারখানার চত্বর বা গুদামে পণ্য নিতে পারেন আমদানিকারকেরা। পণ্য খালাস না হলে বা বিকল্প ব্যবস্থা না থাকলে বন্দরে কনটেইনার–জট তৈরি হবে। এতে বন্দরের পরিচালন কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

মন্ত্রণালয়ের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোকেও চিঠি দিতে শুরু করেছে বন্দর। গতকাল শনিবার বন্দর কর্তৃপক্ষ চট্টগ্রাম চেম্বার, বিজিএমইএ, বিকেএমইএসহ ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর কাছে চিঠি দিয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘বন্দর ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকলেও কনটেইনার পণ্য খালাসে আপনাদের কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।’ এ অবস্থায় জরুরি ভিত্তিতে বন্দর থেকে কনটেইনার খালাস নেওয়ার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হচ্ছে। অন্যথায় বন্দর কর্তৃপক্ষ জমে থাকা কনটেইনারের ওপর দণ্ডভাড়া আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইএ প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কঠোর বিধিনিষেধের কারণে এখন কারখানা বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় পণ্য খালাস করা কঠিন। সরকার বন্দর–কাস্টমস ও ব্যাংক খোলা রেখেছে। কিন্তু যারা মূল ব্যবহারকারী সেই শিল্পকারখানা বন্ধ রাখা হয়েছে। বন্দর সচল রাখার জন্য কারখানা খোলা রাখা উচিত। কারণ, বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া কনটেইনারের ৩০ শতাংশই পোশাকশিল্পের কাঁচামাল।

বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া পণ্য ডিপোতে নিয়ে খালাসে বন্দরের বিকল্প ব্যবস্থা নিয়ে তিনি বলেন, ‘বেসরকারি ডিপো থেকে যদি খালাস করতে হয় তাহলে খরচ ও সময় দুটোই বেড়ে যাবে। এই উদ্যোগ পরিস্থিতি জটিল করে তুলবে। কারখানা খোলার সুযোগ দেওয়া না হলে কাঁচামাল নিয়ে পণ্য উৎপাদন করে তা রপ্তানিতে অন্তত ১৫–২০ দিন পিছিয়ে যাব আমরা। কারণ, পণ্য আমদানি থেকে রপ্তানি পর্যন্ত যে সরবরাহব্যবস্থা, সেটি এখন ভেঙে পড়েছে।’

বন্দর দিয়ে কনটেইনারে আমদানি হওয়া পণ্যের বড় অংশই পোশাকশিল্পসহ বিভিন্ন শিল্পকারখানার। এ ছাড়া যন্ত্রপাতি, বিলাসপণ্য ও বাণিজ্যিক পণ্য কনটেইনারে আমদানি হয়। বিধিনিষেধের আওতামুক্ত রাখা খাদ্যপণ্য, ওষুধের মতো পণ্য তৈরির কাঁচামালের হার খুবই কম।

কঠোর বিধিনিষেধের সময় জীবন বাঁচানোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আবার অর্থনৈতিক কার্যক্রমও যাতে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে না পড়ে, সেদিকেও খেয়াল রাখার কথা বলছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। আগে জীবন বাঁচাতে হবে। আবার পণ্য সরবরাহের যে ব্যবস্থা আছে, সেটিও কিছুটা হলে স্বাভাবিক রাখতে হবে। এ পরিস্থিতিতে যেসব শিল্পকারখানার পণ্য জরুরি ভিত্তিতে খালাস করা দরকার, তারা যাতে কারখানা খোলা রেখে অন্তত আমদানি পণ্য খালাস করতে পারে, সে ব্যবস্থা করা দরকার। কারণ, বন্দর যদি অচলাবস্থায় পড়ে তাহলে দীর্ঘ মেয়াদে আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যে জট তৈরি হবে।

img

ডিভিডেন্ড-ইপিএস ঘোষণা তারিখ জানাল ৮ কোম্পানি

প্রকাশিত :  ০৮:৪১, ১৭ এপ্রিল ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:৫৬, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

ডিভিডেন্ড ও শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ঘোষণা করার জন্য বোর্ড সভার তারিখ জানিয়েছে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ৮ কোম্পানি। ডিএসই সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।

কোম্পানিগুলো হলো-নিটল ইন্স্যুরেন্স, গ্রামীনফোন, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, রেকিট বেনকিজার, মেঘনা পেট, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স ও ওয়ান ব্যাংক পিএলসি।

৩১ ডিসেম্বর, ২০২৩ অর্থবছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ডিভিডেন্ড ঘোষণা করবে সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, নিটল ইন্স্যুরেন্স, ইউনাইটেড ফাইন্যান্স ও ওয়ান ব্যাংক।

অন্যদিকে, গ্রামীনফোন, রেকিট বেনকিজার, মেঘনা পেট ও মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক চলতি অর্থবছরের প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করবে।

কোম্পানিগুলোর মধ্যে নিটল ইন্স্যুরেন্সের বোর্ড সভা ২৫ এপ্রিল বিকাল ৪টায়, ইউনাইটেড ফাইন্যান্সের ২৪ এপ্রিল বিকাল ৩টায়, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ২৪ এপ্রিল দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটে, ওয়ান ব্যাংকের ২৪ এপ্রিল বিকাল ৩টায়, গ্রামীণফোনের ২৪ এপ্রিল বিকাল ৩টায়, রেকিট বেনকিজারের ২৫ এপ্রিল বিকাল ৩টা ১৫ মিনিটে, মেঘনা পেটের ২৮ এপ্রিল দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে, মেঘনা কনডেন্সড মিল্কের ২৮ এপ্রিল দুপুর ২টা ৩৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে।