img

রোজ চিনি, মিষ্টি খেলে হৃদরোগের সম্ভাবনা কতটা?

প্রকাশিত :  ০৮:৫২, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১
সর্বশেষ আপডেট: ০৮:৫৬, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২১

রোজ চিনি, মিষ্টি খেলে হৃদরোগের সম্ভাবনা কতটা?

জনমত ডেস্ক: অনেকেই চিনি ছাড়া খেতে পারেন না? প্রতিদিনের খাবারে অন্তত একটা মিষ্টি অবশ্যই চাই। জানেন কি এতেই হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। যে খাবারে বেশি চিনি, সেই খাবারেই পুষ্টি কম। টাইপ ২ ডায়াবিটিস থেকে অ্যাকনে, হৃদরোগ- সবের পিছনেই রয়েছে চিনি, এমনটা বললে ভুল হবে না। চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার অতিরিক্ত খেলে প্রভাব পড়বে হৃদযন্ত্রে। সতর্ক করছেন চিকিসৎক থেকে পুষ্টিবিদ।

বেশি পরিমাণে চিনি খেলে শরীরের ইনসুলিন হরমোন তা গ্রহণ করতে পারে না। শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি ফ্যাট হিসেবে মজুত হয়। অতিরিক্ত ফ্যাটে মেটাবলিক ডিসফাংশন এবং শরীরে এর ফলে ইনসুলিন রেসিস্ট্যান্স তৈরি হয়। শুধু অতিরিক্ত ওজন নয় সেই সঙ্গে বাড়ে হদরোগের সম্ভাবনা ও। শরীরে  চিনি বেশি পরিমাণে গেলে হাই অ্যাবডমিনাল ফ্যাট তৈরি হয়। ক্ষতিকারক কোলেস্টরল উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ে। যেগুলি রক্ত চলাচলে সমস্যা তৈরি করে । ব্লাড ভেসেলে রক্ত জমে। শরীরে রক্ত জমাটের সম্ভাবনা তৈরি করে। হৃদযন্ত্রের কার্যকলাপে ও প্রভাব পড়ে।

ডায়েটে অতিরিক্ত চিনি থাকলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়। হৃদপিণ্ডের স্বাভাবিক কার্যকলাপে হাইপারটেনশনের প্রভাব পড়ে। হৃদযন্ত্র আগের তুলনায় দ্রুত রক্ত পাম্প করা শুরু করে। ব্লাড ভেসেলের ক্ষতি হয়। বাড়ে স্ট্রোকের সম্ভাবনা। এই প্রসঙ্গে চিকিসৎক দেবব্রত রায় বলেন, চিনি বা অতিরিক্ত মিষ্টি খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমতে থাকে। ডায়াবিটিসের সম্ভাবনাও বাড়ে। প্রভাব পড়ে হৃদযন্ত্রে। তাই করোনা বা অন্য সংক্রামক রোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায়। ডায়াবিটিস থাকলেই ইনসুলিন তৈরির পরিমাণ কমে যায়। করোনারি ব্লকেজের সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনাও বাড়বে। হৃদপেশি সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। পাম্পিং ফাংশনে সমস্যা হয়ে হার্ট ফেলিওর পর্যন্ত হতে পারে।

চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবার খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি প্রসঙ্গে পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তী বলেন, ‘চিনি বলতে যদি চোখে দেখা যায় সে রকম চিনি অর্থাৎ সকালে চায়ের সঙ্গে খাওয়া চিনিটা ধরি, সেক্ষেত্রে ক্ষতি তো হবেই। তবে তা পরিমাপ করে খাওয়ার একটা প্রবণতা মানুষের রয়েছে। কিন্তু যে চিনি চোখে দেখা যাচ্ছে না, অর্থাৎ কুকিজ, বিস্কুট, পেস্ট্রি জাতীয় খাবারে যে চিনি রয়েছে, তা আরও বেশি ক্ষতিকর। কিন্তু সুগার ৬৩ রকমের। তাই মল্টোজ, ডেক্সট্রোজ এই যে কোনও ধরনের সুগার শরীরের মধ্যে বেশি পরিমাণে গেলেই তা শরীরের পক্ষে মারাত্মক ক্ষতিকারক। ফলে হাইপারটেনশনের সম্ভাবনা। তাই অতিরিক্ত চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়বেই। অন্য রোগেরও ঝুঁকি তৈরি হবে। তাই চিনি বর্জন করে ফাইবার জাতীয় খাবার আরও বেশি করে ডায়েটে রাখতে হবে।’


img

টাইপ টু ডায়বেটিসের সঙ্গে রয়েছে ঘুমের সম্পর্ক

প্রকাশিত :  ১৩:৪৯, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৩:৫৭, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

টাইপ টু ডায়বেটিসের সঙ্গে রয়েছে ঘুমের অত্যন্ত নিবিড় সম্পর্ক। প্রতি রাতে যারা ছয় ঘণ্টার কম ঘুমান তাদের টাইপ-টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেশি থাকে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্যা ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে জামা নেটওয়ার্ক ওপেন জার্নালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের বরাতে বলা হয়েছে, যারা প্রতিদিন ছয় ঘণ্টার কম সময় ঘুমান তাদের টাইপ-টু ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ১৬ শতাংশ। এই ক্ষতি স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করেও পূরণ করা যাবে না।

যুক্তরাজ্যের প্রায় দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার প্রাপ্তবয়স্কের উপর গবেষণায় দেখা গেছে, যারা রাতে সাত ঘণ্টার বেশি ঘুমান তাদের তুলনায় যারা তিন থেকে চার ঘণ্টা ঘুমান তাদের ডায়াবেটিস আক্রান্ত হওয়ার মাত্রা ৪১ শতাংশ বেশি। যুক্তরাজ্যে আনুমানিক ৪.৪ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ টাইপ-টু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং ১৩.৬ মিলিয়ন মানুষ তীব্র ঝুঁকিতে রয়েছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টাইপ-টু ডায়াবেটিস শরীরের চিনি বা গ্লুকোজ প্রক্রিয়ার ক্ষমতায়কে প্রভাবিত করে এবং শরীরে ইনসুলিন শোষণে বাধা দেয়; যার ফলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যায়। সময়ের সাথে সাথে এটি গুরুতর শারীরিক ক্ষতি করতে পারে, বিশেষ করে স্নায়ু এবং রক্তনালির।

 যুক্তরাজ্যের বায়োব্যাঙ্কে সংরক্ষিত ২ লাখ ৪৭ হাজার ৮৬৭ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুসের চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার ১২ বছরের সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে গবেষণাটি করা হয়েছে।

এতে গবেষকরা দেখেছেন, যারা স্বাস্থ্যকর খাবার যেমন, সপ্তাহে দুইবারের কম লাল মাংস, প্রতিদিন চার চামচের বেশি শাকসবজি, প্রতিদিন দুই বা তিন টুকরার বেশি ফল গ্রহণ করেন এবং সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন মাছ খান, এমন ৭,৯০৫ জনের টাইপ-টু ডায়াবেটিস দেখা দিয়েছে।

সুইডেনের উপসালা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং গবেষক ক্রিশ্চিয়ান বেনেডিক্ট বলেন, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভাস মেনে চলা ব্যক্তিদের টাইপ-টু ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি ২৫ শতাংশ কম এবং যারা এই খাদ্যাভাস মেনে চলেছেন কিন্তু ৬ ঘণ্টার কম ঘুমিয়েছেন তাদের আক্রান্ত হওয়ার মাত্রা বেশি।