img

'তত্ত্বাবায়ক সরকারের স্বপ্ন দেখে লাভ নেই'

প্রকাশিত :  ১৫:৫২, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

'তত্ত্বাবায়ক সরকারের স্বপ্ন দেখে লাভ নেই'

জনমত ডেস্ক: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি সিরিজ মিটিং করে বলেছে যে তারা আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না। কিন্তু নির্বাচন তো কোনো সরকারের অধীনে হয় না, নির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে।

তত্ত্বাবায়ক সরকারের স্বপ্ন দেখে লাভ নেই’ উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে রাত ১২টার পর যারা টেলিভিশনের পর্দা গরম করে কথা বলেন তাদের দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর হবে না।’

হাছান মাহমুদ শনিবার বিকেলে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ব্রজগোপাল টাউন হলে সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ এম এম নজরুল ইসলামের ২৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ কায়সার আহমেদ দুলালের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ভোলা-৪ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ব্যাখা করেন, যখন নির্বাচন হয় তখন প্রশাসনের কর্মকর্তারা সরকারের অধীনে থাকেন না, তাদের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের হাতে চলে যায়। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে নির্বাচন পরিচালনা করে থাকে। সরকার তখন ডিসি, এসপি, ইউএনও কাউকেই বদলি করতে পারে না। সব নির্বাচন কমিশনের হাতে চলে যায়।

ড. হাছান এসময় সরকারের উন্নয়ন কাজের চিত্র তুলে ধরে বলেন, ‘দেশে আজকে প্রতিটি মানুষের চেহারা বদলে গেছে। খালিপায়ে, ছেঁড়া কাপড়ে মানুষ দেখা যায় না। কুঁড়েঘর খুঁজে পাওয়া যায় না সহজে। এই বদলে যাওয়া কোন যাদুর কারণে হয় নাই, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যাদুকরী নেতৃত্বে আজকে এই দেশ বদলে গেছে। বিএনপি নেতারা বলেছিল, এই সরকার পদ্মাসেতু করতে পারবে না। কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার সেই পদ্মা সেতু তৈরি করে দেখিয়েছে। আমি সেদিনের অপেক্ষায় আছি যেদিন বিএনপি নেতারা পদ্মাসেতুর উপর দিয়ে গাড়ি করে যাবে।’

আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘আমরা যখন ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের কথা বললাম তখন অনেকেই এর অর্থ বোঝেনি। এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবতা। এখন ঘরে বসেই টাকা লেনদেন, বিশ্ববিদ্যায়ে ভর্তি আবেদন করা যায়, কৃষক ক্ষেত থেকে সমস্যার ছবি পাঠিয়ে সমাধান পায়। এটিই ডিজিটাল বাংলাদেশ।’

এর আগে তথ্যমন্ত্রী এমপি জ্যাকবের বাসভবনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। ভোলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সমগ্র দেশের উন্নয়নে বিশ্বাস করে। সারা দেশের উন্নয়নের মধ্যেই জাতি ও রাষ্ট্রের উন্নয়ন নিহিত। সেকারণে দেশের প্রতিটি প্রান্তে যাতে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগে, সরকার সেই লক্ষ্যে কাজ করছে।

এদিন ড. হাছান সেখাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড পরিদর্শন করেন। ভোলার ডেপুটি কমিশনার মো: তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, পুলিশ সুপার সরকার মো: কায়সার, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদিন আখন্দ, পৌর মেয়র মোহাম্মদ মোর্শেদ প্রমুখ মন্ত্রীর সাথে ছিলেন।

img

চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চাইলেন শেখ হাসিনা

প্রকাশিত :  ১১:১০, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১১:১২, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগের পাশাপাশি  হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডকে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বাংলাদেশ একটি নিকট প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বন্ধুত্ব ঐতিহাসিক, ভাষাগত এবং অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের। দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ সৌহার্দ্যপূর্ণ সহযোগিতার সম্পর্ক রয়েছে, যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।

শুক্রবার (এপ্রিল ২৬) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় গভর্নমেন্ট হাউসে থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসা কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে (থাই প্রধানমন্ত্রী) বাংলাদেশের হাসপাতাল ও চিকিৎসা খাতে বিনিয়োগের প্রস্তাবও দিয়েছিলাম।

দ্বিপক্ষীয় ও একান্ত বৈঠকের পরে, পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি-একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক এবং একটি আগ্রহপত্র (এল ও আই) - স্বাক্ষরিত হয় দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে।   

বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণবন্ত অর্থনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে আমরা থাইল্যান্ডকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখছি।

বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে, তারা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান আয়তন বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জনে একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন।  

শেখ হাসিনা বলেন, থাই প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) বাংলাদেশে বিনিয়োগ সহজিকরণ এবং ব্যবসা সহজ করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছি। থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাই-টেক পার্কগুলোতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগের এবং বিশেষভাবে একটি এসইজেড নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।

দুই পক্ষ ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রীরা এই বিষয়ে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন (এলওআই)।

থাই এবং বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের মধ্যে সহজ যোগাযোগের সুবিধার্থে, ঢাকা এবং ব্যাংকক অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা ছাড় সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ইতোমধ্যে কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য একটি চুক্তি রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের জন্য থাইল্যান্ড জ্বালানি সহযোগিতায় নিয়োজিত একটি সম্ভাব্য অংশীদার। জ্বালানি সহযোগিতার সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে, শক্তি সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর এখানে স্বাক্ষরিত দ্বিতীয় নথি।

শুল্ক সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তার বিষয়ে তৃতীয় সমঝোতা স্মারকটি স্বাক্ষরিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, থাই জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সেরা পর্যটন অনুশীলন থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য, আমরা পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছি।

তিনি বলেন, জনগণের জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে, দুই পক্ষ কৃষি ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ খাতে সহযোগিতার সম্ভাবনা অন্বেষণ করেছে।

সামুদ্রিক যোগাযোগের বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, রণং বন্দর ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি শিপিং লাইন নিয়ে দুই পক্ষ আলোচনা করেছে।  

থাই পক্ষকে দুই দেশের মধ্যে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বিশেষ করে কৃষি, মৎস্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে সহযোগিতা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।  

দুই প্রধানমন্ত্রী বিমসটেক কাঠামোর অধীনে আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা করেছেন। চলতি বছরের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া শীর্ষ সম্মেলনে বর্তমান সভাপতি ও আয়োজক হিসেবে থাইল্যান্ড বাংলাদেশের কাছে সভাপতিত্ব হস্তান্তর করবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে বিমসটেক মোট ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন জনসংখ্যার আঞ্চলিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি। রোহিঙ্গা সংকটের একটি টেকসই সমাধান অর্জনের জন্য বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সমর্থন চেয়েছে।

শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাভিসিনকে বাংলাদেশে সফরেরও আমন্ত্রণ জানান।

এর আগে গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন স্বাগত জানান এবং এরপর সেখানে তাকে লাল গালিচা উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী গার্ড পরিদর্শন করেন।  

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাই প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের আমন্ত্রণে গত বুধবার (২৪ এপ্রিল) ছয় দিনের সরকারি সফরে থাইল্যান্ডে যান।

জাতীয় এর আরও খবর