img

চোখের পাতা লম্বা ও ঘন করার ঘরোয়া ৬ উপায়

প্রকাশিত :  ০৯:৫৩, ০৪ অক্টোবর ২০২১

চোখের পাতা লম্বা ও ঘন করার ঘরোয়া ৬ উপায়
জনমত ডেস্ক : মানুষের সৌন্দর্যের মূলে আকর্ষণীয় মুখাবয়ব। নাক, ঠোঁট, চোখ ব্রু—এসব মুখের সৌন্দর্য বাড়ায়। আর চোখের সৌন্দর্যের মূলে পাতা। ঘন, কালো ও লম্বা চোখের পাতা কে না চায়?

ঘন ও লম্বা চোখের পাতা সাধারণত সবার হয় না।  চোখের সৌন্দর্য বাড়াতে অনেকে ব্যবহার করে থাকেন নকল চোখের পাতা। কিন্তু কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে সহজেই মিলতে পারে ঘন, কালো ও লম্বা চোখের পাতা।

১. অলিভ অয়েল: ত্বকের যত্নে বহুল ব্যবহৃত উপাদান হিসেবে ব্যবহার হয় অলিভ অয়েল। প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে মাশকারা ব্রাশে করে চোখের পাতায় অলিভ ওয়েল লাগালে মিলবে অনেক সুফল, মিলবে ঘন ও লম্বা চোখের পাতা।

২. ক্যাস্টর অয়েল: চোখের পাতা ঘন করতে অনেক উপকারী ক্যাস্টর অয়েল। এতে রয়েছে ভিটামিন, প্রোটিন ও ওমেগা-৬ ফ্যাট, যা চোখের পাতা বৃদ্ধি করতে কার্যকরী। এটি চোখের পাতা অনেক দ্রুত লম্বা ও ঘন করতে পারে। রাতে ঘুমানোর আগে চোখের পাতায় হালকা গরম করা ক্যাস্টর অয়েল তুলার সাহায্যে লাগালে মিলবে উপকার। এর সঙ্গে অলিভ অয়েল মিশিয়ে চোখের পাতায় লাগাতে মিলতে পারে আরও ভালো সুফল।

৩. অ্যালোভেরা: মাশকারা ব্রাশের মাধ্যমে অ্যালোভেরা জেল চোখের পাতায় সারারাত লাগিয়ে রাখতে হবে। হালকা গরম ও ঠাণ্ডা পানি মিশিয়ে সকালে ধুয়ে ফেললে মিলবে ভালো ফল। এ ছাড়া এক চা চামচ অ্যালোভেরা জলের সঙ্গে এক চামচ জোজোবা অয়েল ও দুই ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে প্রতিদিন দুবার লাগাতে পারেন। এটি ১০-১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললে মিলবে উপকার।

৪. পেট্রোলিয়াম জেলি: মাশকারা ব্রাশের মাধ্যমে চোখের পাতায় পেট্রোলিয়াম জেলি সারারাত লাগিয়ে রাখলেও মিলবে ভালো ফল। সকালে হালকা গরম ও ঠাণ্ডা পানি মিশিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।

৫. ম্যাসাজ: অলিভ অয়েল বা নারিকেল তেল কয়েক ফোঁটা নিয়ে আঙুলের সাহায্যে চোখের পাতা ও চোখের চারপাশে ধীরে ধীরে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করলে মিলতে পারে ঘন ও লম্বা চোখের পাতা।

৬. ডিম: ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে এক চা চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে ঘন প্যাক তৈরি করতে হবে। ইয়ার বাডের সাহায্যে প্যাকটি চোখের পাপড়িতে লাগিয়ে তা ১০-১৫ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ভালো করে ধুয়ে নিলেই পাওয়া যাবে উপকার।
img

ডেঙ্গুজ্বর নিয়ে সচেতন হতে হবে এখনই

প্রকাশিত :  ১০:১৮, ০৫ মে ২০২৪

দাবদাহের কাল গ্রীষ্ম শেষ হলেই শুরু হবে বর্ষা। সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে ডেঙ্গুর প্রকোপ। কারণ, বছরের নির্দিষ্ট কিছু সময় রোগটির প্রকোপ আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পায়। অসচেতনতা এবং আক্রান্ত অবস্থায় করণীয় সম্পর্কে আমাদের স্পষ্ট ধারণা না থাকার ফলে ডেঙ্গু অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে ওঠে। তাই ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে সবাইকে সম্যক সচেতন হয়ে উঠতে হবে।

 লক্ষণ ও ধরন

সাধারণত এডিস মশা কামড়ানোর তিন থেকে দশ দিনের মধ্যে এর লক্ষণ প্রকাশ পেতে শুরু করে। প্রধানতম লক্ষণ হচ্ছে উচ্চমাত্রার জ্বর। কখনো কখনো এ মাত্রা ৯৯হ্ন থেকে ১০৪হ্ন ফারেনহাইট পর্যন্ত উঠে যায়। এ ছাড়া নিম্নোক্ত লক্ষণগুলো দেখা দেয়-

▶ শরীরে প্রবল ক্লান্তি, সারা দিন অবসন্ন লাগা।

▶ শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যার পাশাপাশি বুকে ব্যথা।

▶ শরীর বা মাথায় তীব্র ব্যথা হতে পারে।

▶ পেটে ব্যথা হতে পারে।

▶ বমিভাব বা অনবরত বমিও হয়ে থাকে।

▶ দাঁতের মাড়ি, নাক দিয়ে রক্ত বের হতে পারে। বমি বা মলের সঙ্গেও রক্ত আসতে পারে।

▶ প্রস্রাবে সমস্যা হয়। ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা ধরে প্রস্রাব না হওয়া বা খুবই অল্প পরিমাণে প্রস্রাব হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়। কোনো নারীর পিরিয়ড চলাকালে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হলে অতিরিক্ত রক্তপাত হয়ে থাকে।

▶ ত্বকে লালচে ছোপ, র্যাশ বা ফুসকুড়ি উঠা।

▶ খাবারে অরুচি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।

তবে ডেঙ্গুর ধরন অনুযায়ী এসব লক্ষণের ক্ষেত্রে ভিন্নতা দেখা যায়। আমাদের দেশে সাধারণত দুই ধরনের ডেঙ্গু দেখা যায়-ক্ল্যাসিকাল ও হেমোরেজিক।

 ক্ল্যাসিকাল ডেঙ্গু : এ ধরনের ডেঙ্গুতে খুব একটা জটিলতা হয় না। মশার কামড়ের তিন থেকে ১৪ দিনের মাথায় তীব্র জ্বর শুরু হয়। তবে দ্রুতই এ জ্বর সেরে যায় এবং রোগী স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেন।

হেমোরেজিক ডেঙ্গু : হেমোরেজিক ডেঙ্গু বা শকজনিত জ্বর ডেঙ্গুর ভয়াবহ পর্যায়। দ্রুত না সারলে পরিস্থিতি খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার দিকে যেতে থাকে। এক্ষেত্রে রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং রক্তনালিতে ছিদ্র হয়ে যায়। তখন দ্রুতহারে প্লাটিলেট (রক্ত জমাট বাঁধার কোষ) কমে যেতে থাকে। ফলে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হয় এবং অঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। এমনকি রোগী মারা যেতে পারেন। ডেঙ্গুজ্বরে মৃত্যুর প্রধান কারণ এই হেমোরেজিক ডেঙ্গু।

পরীক্ষা-নিরীক্ষা

জ্বর হলেই যে তা ডেঙ্গু, বিষয়টি এমন নয়। ডেঙ্গু হয়েছে কিনা প্রথমে তা নিশ্চিত হতে হবে। এজন্য পরীক্ষা করাতে হবে। নিজে নিজে পরীক্ষা না করে বিষয়টি চিকিৎসকের ওপর ছেড়ে দেওয়াই ভালো। লক্ষণ-উপসর্গ দেখে চিকিৎসকরা জ্বর শুরুর প্রথম দিকে ডেঙ্গু এনএস১ অ্যান্টিজেন পরীক্ষা দিয়ে থাকেন। তবে জ্বর যদি চার-পাঁচ দিন পেরিয়ে যায় সেক্ষেত্রে ডেঙ্গু আইজিএম অ্যান্টিবডি টেস্ট দেওয়া হয়। অ্যান্টিজেন পরীক্ষার পাশাপাশি শ্বেতরক্তকণিকা, হিমাটোক্রিট, অণুচক্রিকা প্রভৃতি টেস্ট করাও দরকার হয়।

হাসপাতালে যাবেন কখন 

ডেঙ্গু ভাইরাস মোটামুটি শরীরের সব অঙ্গকেই আক্রমণ করার ক্ষমতা রাখে। এতে আক্রান্ত হলে হার্ট, কিডনি, যকৃৎ কিংবা মস্তিষ্কের মতো গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর কর্মক্ষমতা নষ্ট হতে পারে। এতে মৃতুহারও বাড়ে। সুতরাং রক্তের শ্বেতকণিকা পাঁচ হাজারের নিচে এবং প্লাটিলেট এক লাখের নিচে নেমে যাওয়ার পাশাপাশি ঝুঁকিপূর্ণ অন্যান্য লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।

সতর্কতা

▶ ডেঙ্গু প্রতিরোধে বৃষ্টির মৌসুমে বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন। বাড়ি বা কর্মস্থলের আশপাশে মশার উপদ্রব যেন বাড়তে না পারে তার জন্য সার্বিক ব্যবস্থা নিতে হবে।

▶ বাড়ির আঙিনা, ছাদ, ব্যালকনিতে সবজি বা গাছ লাগালে সেসব জায়গা পরিচ্ছন্ন রাখুন। কোথাও যেন বৃষ্টির পানি আটকে না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

▶ এডিস মশা সাধারণত সূর্যোদয়ের পরে ও সূর্যাস্তের আগে কামড়ায়। এ সময় বাইরে অবস্থান করলে ফুলহাতা জামা, প্যান্ট পরিধান করুন।

▶ ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টাঙিয়ে ঘুমাবেন। সম্ভব হলে ঘরের জানালায় নেট লাগিয়ে নিতে পারেন।

▶ নিয়মিত ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাবেন। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার বিকল্প নেই।

▶ ধূমপানের অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করুন। ধূমপান রক্তের উপাদানে তারতম্য তৈরি করে।