মিরসরাই ট্রাজেডি

img

সম্পত্তি না দেয়ায় মা-বাবা ও ভাইকে জবাই করে হত্যা

প্রকাশিত :  ১৭:২১, ১৪ অক্টোবর ২০২১

সম্পত্তি না দেয়ায় মা-বাবা ও ভাইকে জবাই করে হত্যা

জনমত ডেস্ক: মিরসরাইয়ে একই পরিবারের তিন জনকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় ওই বাড়ির বড় ছেলে সাদেক হোসেন সাদ্দামকে (৩০) আটক করেছে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ। এ ছাড়া তার স্ত্রী আইনুর নাহার পুলিশ হেফাজতে আছেন। পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে সাদ্দাম মা জোছনা আরা (৪৫), বাবা মো. মোস্তফা সওদাগর (৫৬) এবং মেজো ভাই আহমদ হোসেনকে (২৫) হত্যা করে। বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) বিকাল ৪টায় পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি। পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চুরিটি উদ্ধার করেছে।
বুধবার (১৩ অক্টোবর) দিবাগত রাত ৩টায় উপজেলার ৩নং জোরারগঞ্জ ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মধ্যম সোনাপাহাড় গ্রামের মোস্তফা সওদাগরের বাড়িতে এই ট্রিপল মার্ডারের ঘটনা ঘটে।
নিহত মো. মোস্তফার ছোট ছেলে আলতাফ হোসেন বলেন, ‘ভোর রাতে বড় ভাই সাদেক হোসেন আমাকে ফোন দিয়ে বলেন, “বাড়িতে ডাকাত এসেছিল, বাবা, মা ও মেজো ভাইকে জবাই করে ফেলেছে। তুই তাড়াতাড়ি আয়। তাদের হাসপাতালে নিতে হবে।” আমি বাড়িতে এসে দেখি, বাবা-মা আর মেজো ভাইয়ের নিথর দেহ ঘরের ভেতর পড়ে আছে। রাতে বাড়িতে বাবা-মা, বড় ভাই ও তার স্ত্রী আইনুর নাহার, তাদের চার বছর বয়সী ছেলে এবং মেজো ভাই আহমদ হোসেন ছিলেন। আমি চাকরির কারণে বারইয়ারহাট মাছের আড়তে থাকি। আমার বাবা কিছু জায়গা-জমি মেজো ভাই আহমদকে দিয়েছিলেন। ওটা নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে বড় ভাইয়ের প্রায়ই ঝগড়া হতো।’
৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মনির আহমদ ভাসানী বলেন, ‘মোস্তফা ওরফে মোস্তফা সওদাগর ভালো মানুষ ছিলেন। সম্প্রতি দুই ছেলেকে বাদ দিয়ে বাড়ির জমিটি ছোট ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রীর নামে রেজিস্ট্রি করে দেওয়ায় বড় ছেলের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো। বড় ছেলে ঘরে খরচের টাকা কম দিতো। মেজো ছেলের বিয়ের জন্য টাকা চাওয়ায় আবারও সম্ভবত ঝগড়া হয়েছিল। যার জেরে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
জোরারগঞ্জ থানার ওসি নুর হোসেন মামুন বলেন, ‘বাবা, মা ও ভাইকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছেন বড় ছেলে সাদেক হোসেন। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চুরিটিও উদ্ধার করা হয়েছে। পারিবারিক সম্পত্তির বিরোধে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানা গেছে।’
সহকারী পুলিশ সুপার (মিরসরাই সার্কেল) লাবিব আবদুল্লাহ বলেন, ‘এটি একটি হত্যাকাণ্ড। এখানে ডাকাতির কোনও ঘটনা ঘটেনি। ঘরের ভেতর থাকা মোবাইল ফোন, আসবাবপত্র সব পরিপাটি আছে। নিহত মোস্তফার স্ত্রী জোছনা ও মেজো ছেলে আহমদকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। তাদের শরীরে একাধিক জখম আছে। ধারালো ছোরা দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সাদেক হোসেন ওরফে সাদ্দামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী আইনুর নাহার পুলিশ হেফাজতে।’
তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম থেকে আসা পিবিআই ও সিআইডি বিশেষজ্ঞ টিম ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত থানায় কোনও মামলা হয়নি।’

img

রাজধানীতে রড দিয়ে পিটিয়ে শিশু গৃহকর্মী খুন, দম্পতির যাবজ্জীবন

প্রকাশিত :  ১২:৫১, ১৪ মে ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১৩:১০, ১৪ মে ২০২৪

১৮ বছর আগে রাজধানীর মতিঝিল থানাধীন এলাকায় রড দিয়ে পিটিয়ে শিল্পী বেগম নামে ১১ বছর বয়সি গৃহকর্মীকে খুনের দায়ে নজরুল ইসলাম ও তার স্ত্রী রাবেয়া আক্তারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাদের আরও ৬ মাসের কারাভোগের আদেশ দেন।

মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মো. ইকবাল হোসেন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী আরিফুল ইসলাম সাজার বিষয় নিশ্চিত করেন। 

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ভিকটিম শিল্পী বেগম উত্তর কমলাপুর কবি জসিম উদ্দিন রোডে মতিঝিল থানাধীন এলাকায় আসামি নজরুল ইসলামের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ করত। ২০০৬ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি ভিকটিমের মা অজ্ঞাত ফোন কলের মাধ্যমে জানতে পারেন, তার মেয়ে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। 

পরে ভিকটিমের মা হাসপাতালে গিয়ে দেখতে পান, তার মেয়ে গুরুতর জখম অবস্থায় ভর্তি রয়েছে। আশপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারেন, আসামিরা ভিকটিমকে ঘরের দরজা আটকে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত করেছে। এর আগে বিভিন্ন সময়ে নানা অজুহাতে ভিকটিমকে আঘাত করা হতো বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

ঘটনার তিনদিন পর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিল্পী মারা যায়। এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা সিরাজুল ইসলাম মতিঝিল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে মতিঝিল থানার এসআই গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম একই বছরের ৩০ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। 

পরের বছরের ২৬ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। মামলাটির বিচার চলাকালে আদালত ২২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।