ইরানের জ্বালানি বিতরণ ব্যবস্থায় সাইবার হামলার নেপথ্যে কারা?

প্রকাশিত :  ০৭:১৫, ০১ নভেম্বর ২০২১

ইরানের জ্বালানি বিতরণ ব্যবস্থায় সাইবার হামলার নেপথ্যে কারা?

জনমত ডেস্ক: ২৬ অক্টোবর সাইবার হামলা চালিয়ে অচল করে দেওয়া হয়েছিল ইরানের জ্বালানি বিতরণব্যবস্থা। এ সাইবার হামলার পেছনে কারা জড়িত তা নিয়ে কথা বলেছেন ইরানের বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার প্রধান জেনারেল গোলাম রেজা জালালি।
জেনারেল গোলাম রেজা জালালি বলেন, ২৬ অক্টোবর যে হামলা হয়েছে, তার পেছনে অবশ্যই আমেরিকান ও ইহুদিরা ছিলেন। যে সাইবার হামলা জ্বালানি বিতরণ ব্যাহত করেছিল। খবর তাসনিম নিউজের।
টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জেনারেল গোলাম রেজা জালালি বলেন, আমাদের দৃষ্টিকোণ থেকে, এ হামলা অবশ্যই আমেরিকান এবং ইহুদিরা চালিয়েছে।
 এ সাইবার হামলার মাধ্যমে ইরানের পেট্রল বিক্রির বিভিন্ন সংস্থার আন্তঃসংযুক্ত নেটওয়ার্ককে বিকল করে দিয়েছে। এই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে দেশটির মোটরগাড়ি চালকরা সরকারের ইস্যু করা স্মার্টকার্ড দিয়ে কম মূল্যে পেট্রল কিনতে পারতেন। তাই ভর্তুকি দেওয়া জ্বালানি কেনার জন্য দেশটির পেট্রল স্টেশনগুলোতে সবসময়ই দীর্ঘ লাইন থাকত।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি বলেছিলেন, এ সাইবার হামলার লক্ষ্য ছিল— মানুষের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি করা।
যে ধরনের হামলা চালানো হয়েছিল তা অত্যন্ত জটিল উল্লেখ করে ইরানের বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থার এ প্রধান বলেন, এ ধরনের হামলা খুবই জটিল এবং প্রতিরোধ করা কঠিন।
তিনি আরও বলেন, সাইবার হামলার তিন ঘণ্টা পর ৩০ শতাংশ গ্যাস স্টেশন পুনরায় তাদের অফলাইন সেবা শুরু করে। হামলার ১২ ঘণ্টা পর ৬০ শতাংশ স্টেশন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে।
সাইবার হামলা প্রতিহত করতে গত বছর ইরানে এক হাজার ৪০০টি মহড়া অনুষ্ঠিত হয়।  বর্তমানে দেশটি এ ধরনের সাইবার হামলা ব্যর্থ করে দিতে নানা কৌশল ব্যবহার করছে।

ডিপফেক ভিডিও থেকে নিজেকে রক্ষা করবেন যেভাবে

প্রকাশিত :  ১০:১৪, ২৮ মার্চ ২০২৪

বিজ্ঞানের উৎকর্ষকালে প্রযুক্তি যেমন মানুষের উপকার করছে, তেমনি কিছু প্রযুক্তি মানুষের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম একটি প্রযুক্তি হলো ডিপফেক প্রযুক্তি বা ডিপফেক ইন্টেলিজেন্সি।

অনেকে ডিপফেক এআইকে একুশ শতকের ফটোশপিং বলে থাকে। সহজ ভাষায় ডিপফেক হলো এআই নির্ভর এমন এক প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে যেকোনো ভিডিও, ছবি এবং অডিও রেকর্ডিংয়ে বিশ্বাসযোগ্যভাবে মানুষের মুখমণ্ডল বা কণ্ঠস্বর নকল করা যায়।

দিন দিন বাড়ছে ডিপফেক প্রযুক্তির অপব্যবহারের সংখ্যা। প্রথম প্রথম বিশ্বের নামকরা সেলিব্রিটি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ডিপফেক ইন্টেলিজেন্সি দিয়ে তৈরি নকল ভিডিও দ্বারা হেনস্তার শিকার হন।

ডিপফেক প্রযুক্তি থেকে নিজের ডেটার সুরক্ষার জন্য কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যায়। সেগুলো উঠে এসেছে এনডিটিভির প্রতিবেদনে। 

১. যতদূর সম্ভব নিজের ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্য কোনো পাবলিক প্ল্যাটফর্মে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন। এসব প্ল্যাটফর্মে প্রাইভেসি সেটিংসগুলো সঠিকভাবে নির্বাচন করতে হবে। 

২. শক্তিশালী ও অনন্য পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অনলাইন অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। ফলে ছবি ও ভিডিওগুলোয় অননুমোদিত অ্যাকসেস লাভ করা হ্যাকারদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে এবং ডিপফেক প্রযুক্তি দিয়ে নিজের গোপনীয়তা লঙ্ঘনের সম্ভাবনা কমে যায়। 

৩. কম্পিউটারে ম্যালওয়্যার প্রবেশ করিয়ে হ্যাকাররা ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত ডেটা ও ছবি চুরি করতে পারে। এসব ডেটা ও ছবি দিয়ে ডিপফেক কনটেন্ট তৈরি করে হ্যাকাররা। এজন্য কম্পিউটারে ভালোমানের অ্যান্টিভাইরাস ব্যবহার করা উচিত। এভাবে ব্যক্তিগত মিডিয়াতে ক্ষতিকারক টুলগুলোর অ্যাকসেস পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়।

৪. ডিপফেক কনটেন্টের সাধারণ লক্ষণগুলো সম্পর্কে জানতে হবে। যদি কোনো ভিডিও, ছবি ও কণ্ঠ খুবই নিখুঁত বা অবাস্তব বলে মনে হয় তবে এটি শেয়ার করা বা বিশ্বাস করার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। লক্ষণ সম্পর্কে সচেতন হওয়ার মাধ্যমে এ ধরনের কারসাজি ভিডিও শনাক্ত করা যাবে। 

৫. নিজের ছবি ও ভিডিওতে জলছাপ বা ওয়াটারমার্ক যুক্ত করুন। এসব ওয়াটারমার্ক অনেক সময় সম্পূর্ণ মুছে ফেলা যায় না। আর সম্পূর্ণ মুছে ফেলার সময় ছবি ও ভিডিও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। ফলে এসব ছবি ও ভিডিও দিয়ে ডিপফেক তৈরি কঠিন হয়ে পড়ে। জলছাপ একটি অতিরিক্ত সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে।

৬. নিজের ফাইলগুলোয় মেটাডেটা সঠিকভাবে এম্বেড করা হয়েছে নাকি তা নিশ্চিত করতে হবে। মেটাডেটা হলো ফাইল সম্পর্কে প্রাসঙ্গিক তথ্য। যেমন- কে তৈরি করেছে, কবে তৈরি করা হয়, কোথায় তৈরি হয়েছে, কবে এডিট করা হয়েছে, টাইটেল ইত্যাদি। মিডিয়া ফাইল ব্যবহার নিয়ে বিরোধ বা দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে এটি মালিকানার প্রমাণ হিসেবে কাজ করতে পারে। 

তবে এসব পদ্ধতি নিজের ডেটা সুরক্ষা দেবে তার শতভাগ নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না।