img

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্তিত্ব এখন নেই: ড. কামাল

প্রকাশিত :  ১৪:১৬, ১৩ নভেম্বর ২০২১

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অস্তিত্ব এখন নেই: ড. কামাল

জনমত ডেস্ক: আওয়ামী লীগ বিরোধী নির্বাচনি জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের কোনো অস্তিত্ব নেই বলে স্বীকার করেছেন জোটটির প্রধান নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তবে গত নির্বাচনের এই জোটটি আবার সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে এটার কোনো অস্তিত্ব নেই। তবে একটা সম্ভাবনা তো আছে। আমাদের পুনর্জাগরণের সম্ভাবনা আছে। নতুন করে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কিছু একটা করার অবশ্যই সম্ভাবনা আছে।’
শনিবার (১৩ নভেম্বর) রাজধানীর বিজয়নগরের চু ওয়াং রেস্টুরেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচনের দাবিতে ওই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিরোধী নির্বাচনি জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বিএনপি এ জোটের বড় দল হলেও জোটের প্রধান নেতা হিসেবে আলোচনায় চলে আসেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তবে ১৯৯১ সালে আওয়ামী লীগ থেকে বের হয়ে গণফোরাম প্রতিষ্ঠা করলেও রাজনীতিতে কখনও আলোড়ন তুলেতে পারেননি এই গণফোরাম নেতা। তবে নির্বাচনের পর তিনি গুরুত্ব হারান বিএনপির কাছে।
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট প্রসঙ্গে জোটের এই প্রধান নেতা বলেন, ‘এটা নিয়ে আমরা বসব, আলোচনা করব এবং সিদ্ধান্ত নেব।’
৪ ডিসেম্বর গণফোরামের যে কাউন্সিল হওয়ার কথা ছিল সেটি পিছিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানান কামাল হোসেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দলের ৪ ডিসেম্বর যে সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল সেটা জানুয়ারির শেষে হবে। আমরা সম্মেলন মূলতবি করছি।’
কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা দুটি বিষয়ে আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। একটি হলো ডিজেলের দাম বাড়ানোর অজুহাতে যানবাহনে ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। এই অজুহাতে জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো হয়েছে। আমরা মনে করি যে, এটা অনুচিত হয়েছে। কারণ ডিজেলের দাম বাড়ানোর জন্য এতগুলোর দাম বাড়ার কথা না। ডিজেলের দাম বাড়ার অজুহাতে সবকিছুর দাম বাড়ানো হয়েছে। এতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে। এটা উচিত হয়নি এবং এটার দাম কমানোর দরকার।’
নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচনের দাবি করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘নির্দলীয় সরকারের অধীনে আগামী সংসদ নির্বাচন আমরা দাবি করি, কেন না আমরা দেখেছি যে দলীয় নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হয় না। সে কারণে আমরা জোর দাবি জানাচ্ছি, আগামী নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে হওয়া উচিত।’
নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি করছেন কিন্তু দাবি আদায়ে কোনো পরিকল্পনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপাতত তো দাবিটা সামনে আনি, তারপরে কীভাবে আন্দোলন করব সেটা আমরা পরে জানাব।’
নির্দলীয় সরকারের দাবির যৌক্তিকতা আছে কি না জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, ‘আমরা আগেই দেখেছি যে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন নিরপেক্ষ হয় না। নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে আমরা বলছি যে, যে সরকার নির্বাচনের সময় থাকবে তাকে দল নিরপেক্ষ হতে হবে। তাহলে আশা করা যায় আমরা একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন পেতে পারি।’
সংবিধানে তো নির্দলীয় সরকারের বিষয়টি নেই সেক্ষেত্রে আপনারা কী করবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা দাবি তুললে তারপর এটা আলোচনা মধ্যে আদায় করা যায়। প্রয়োজনে সংবিধান সংশোধন করা হবে। জনগণের দাবি উঠলে এটা হবে।’
কবে নাগাদ নির্দলীয় সরকারের দাবিতে কঠোর অবস্থানে যাবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আপনাদের প্রথমেই আমরা বললাম, আমরা এটা করব। দ্বিতীয় হলো আমরা বসে একটা পরিকল্পনা করব। পরবর্তীতে সেটা সবাইকে জানানো হবে।’
কোনো নির্দিষ্ট সময় আছে কিনা জানতে চাইলে কামাল হোসেন বলেন, ‘এর পরে যখন ব্রিফ করব, সেগুলো বলতে পারব।’
নির্বাচন কমিশন আইন করে করলে ভালো হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সার্চ কমিটিতে নিরপেক্ষ লোক না থাকলে সেটা নিরপেক্ষ হয় না। আমরা আইনের পক্ষে। সরকার দাবি না মানলে দেশে সংকট সৃষ্টি হবে। তারপর আন্দোলন হবে। দেশের মানুষ যদি এটা নিয়ে বিক্ষুদ্ধ হয় তাহলে জোরদার আন্দোলন হবে।’
সার্চ কমিটি নিরপেক্ষ হবে কি না এমন প্রশ্নে কামাল হোসেন বলেন, ‘নিরপেক্ষ বলতে নিরপেক্ষ। যারা বুঝতে চান নিরপেক্ষ কী সেটা তাদের বোঝানো প্রয়োজন হয় না।’
আইন করে নিরপেক্ষ লোক নির্বাচন কমিশনের জন্য পাওয়া সম্ভব কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কিছুটা সম্ভব হবে। একেবারে যে আইনকে অমান্য করবে তা নয়। তবে এটা ঠিক বলেছেন, আইন অমান্য করলে তো সেটা করা যায় না। উদ্দেশ্যে সৎ হতে হয়।’



img

মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হলেও যুক্তরাষ্ট্র স্বীকার করেনি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

প্রকাশিত :  ১৮:২৯, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লেখযোগ্য উন্নতি হলেও যুক্তরাষ্ট্রের মানবাবিধকার প্রতিবেদনে তা স্বীকার করা হয়নি বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহলী সাবরীন। এ বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরতে বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন বলেন, ২০২৩ সালের যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদন নোট করেছে বাংলাদেশ। আমরা যতই আকাঙ্ক্ষা করি না কেন, বিশ্বের কোথাও মানবাধিকার পরিস্থিতি নিখুঁত নয়। কারণ একটি দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা থাকে।‘বাংলাদেশ সরকার তার নাগরিকদের মানবাধিকার সমুন্নত রাখার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতির উল্লে­খযোগ্য উন্নতি হয়েছে, তবে যেসবের আরও উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে সেগুলোর প্রতি লক্ষ্য রেখে বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে কাজ করে যাচ্ছে।’
মুখপাত্র বলেন, ‘সরকারের প্রচেষ্টার ফলে নারীর ক্ষমতায়ন, লিঙ্গ সমতা, শিশুদের অধিকার, বয়স্ক ব্যক্তিদের অধিকার, শ্রমিকদের অধিকার, অভিযোগ নিষ্পত্তি, ন্যায়বিচারে প্রবেশাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, বাক-স্বাধীনতা এবং রাজনৈতিক সমাবেশ করার ক্ষেত্রে উল্লে­খযোগ্য স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। সরকারের এত অর্জন সত্ত্বেও দুঃখের বিষয় মার্কিন প্রতিবেদনে সরকারের অনেক উন্নতি ও অর্জন স্বীকার করা হয়নি। এছাড়া কিছু বিচ্ছিন্ন এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়েছে। প্রতিবেদনে স্পষ্ট যে, এটি পৃথক রিপোর্ট করা বা অভিযুক্ত ঘটনার রেফারেন্স দিয়ে পরিপূর্ণ নয়।’
সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘এটাও স্পষ্ট যে, প্রতিবেদনে বেশিরভাগ স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বেসরকারি বেনামি সংস্থা থেকে অনুমাননির্ভর তথ্য নিয়ে অভিযোগ তোলা হয়েছে। সে কারণে প্রতিবেদনে সহজাত এবং পক্ষপাতদুষ্ট বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়েছে।’
মার্কিন প্রতিবেদনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, ‘খালেদা জিয়া গৃহবন্দি নন।’
মুখপাত্র বলেন, ‘প্রতিবেদনে কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শক্তি প্রয়োগের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে অভিযোগ করা হয়েছে। তবে এটি সঠিক নয়। প্রতিবেদনে বিএনপি এবং এর রাজনৈতিক মিত্রদের দ্বারা সংঘটিত সহিংসতা ও ভাঙচুর তুলে ধরা হয়নি। তাদের সহিংসতা প্রায়ই সাধারণ মানুষের জীবনকে ব্যাহত করে এবং সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি করে। এতকিছুর পরও বাংলাদেশের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো অত্যন্ত সংযম প্রদর্শন করেছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ পেশাদারিত্বের সঙ্গে মোকাবিলা করেছে।’
তিনি বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, মানবাধিকার এবং শ্রম অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে মার্কিন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিক সংলাপ থাকা সত্ত্বেও প্রতিবেদনে এই বিষয়ে রাষ্ট্র-সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়িয়ে বারবার অভিযোগ তোলা হচ্ছে। অনুরূপ শ্রম অধিকারসংক্রান্ত বিষয়গুলো বিশেষ করে ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন এবং ক্রিয়াকলাপের বিষয়ে প্রতিবেদনে বেশ কয়েকটি কেস উলে­খ করা হয়েছে, যেগুলো নিয়ে একাধিক দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্মে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’
সেহেলী সাবরীন বলেন, ‘প্রতিবেদনটি স্বাধীন বিচার বিভাগ এবং কিছু সংবিধিবদ্ধ সংস্থাসহ বেশ কয়েকটি মূল্যবান রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের প্রশংসা করতে ব্যর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ সরকার সামগ্রিক প্রতিবেদনটি নোট করেছে এবং জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক অংশীদার ও স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে সব নাগরিকের মানবাধিকারের সম্পূর্ণ উপভোগ নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি বজায় রাখার জন্য যে কোনো পরিস্থিতিতে জড়িত থাকার জন্য উন্মুখ।’