সীমার বেশি বিনিয়োগ

img

শেয়ার বিক্রি না করায় প্রতিদিন জরিমানা গুনছে সাউথইস্ট ব্যাংক

প্রকাশিত :  ০৯:২৫, ১৪ জানুয়ারী ২০২২
সর্বশেষ আপডেট: ০৯:৩৩, ১৪ জানুয়ারী ২০২২

শেয়ার বিক্রি না করায় প্রতিদিন জরিমানা গুনছে সাউথইস্ট ব্যাংক

জনমত ডেস্ক: গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটি থেকে ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নিয়ম ভেঙে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার কিনে এখন প্রতিদিন জরিমানা গুনছে সাউথইস্ট ব্যাংক। কোম্পানিটিতে সীমার অতিরিক্ত বিনিয়োগ করায় গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংকটি থেকে ২১ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখনো প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা গুনতে হচ্ছে। ব্যাংকটির বিনিয়োগ যত দিন সীমার নিচে না আসবে, তত দিন এ জরিমানা গুনতে হবে।
আইন অনুযায়ী, কোনো কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার কোনো ব্যাংক ধারণ করতে পারবে না। তবে ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের প্রায় ২৩ লাখ শেয়ার রয়েছে সাউথইস্ট ব্যাংকের কাছে, যা ওই কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের প্রায় ১৩ শতাংশ। এখন তা ১০ শতাংশে নামিয়ে আনতে প্রতিদিন শেয়ার বিক্রি করছে ব্যাংকটি। কিন্তু পর্যাপ্ত ক্রেতা না থাকায় শেয়ার বিক্রি করতে গিয়েও বেগ পেতে হচ্ছে ব্যাংকটিকে।
সাউথইস্ট ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম কামাল হোসেন গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভালো কোম্পানি দেখে ওই বিমার শেয়ার বেশি কেনা হয়েছিল। অন্য কোনো উদ্দেশ্যে নয়। এখন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মেনে আমরা শেয়ার ছেড়ে দিতে চাচ্ছি। কিন্তু বিক্রি করতে গিয়ে ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না। এ জন্য বিক্রি করতে সময় লাগছে। আমাদের চেষ্টার কমতি নেই। আবার একবারে সব শেয়ার বিক্রির আদেশ দিলে বিভিন্ন মহল থেকে চাপ আসছে।’
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, গত রোববার ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের ২ হাজার ৩৩৩টি শেয়ার, সোমবার ৪ হাজার ৩১৬টি, মঙ্গলবার ৬ হাজার ৬৯৭টি ও গতকাল বুধবার ৩ হাজার ১৭৮টি শেয়ারের হাতবদল হয়। ফলে ব্যাংকটি চাইলেও একেবারে শেয়ার ছেড়ে সীমায় আনতে পারছে না।
গত বছরের বিভিন্ন সময় সীমা অতিক্রম করে দফায় দফায় ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির শেয়ার কেনে সাউথইস্ট ব্যাংক। সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলমগীর কবির ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সেরও উপদেষ্টা। আবার সাউথইস্ট ব্যাংকের সাবেক উপদেষ্টা জাকির আহমেদ খান ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের স্বতন্ত্র পরিচালক।
আর ওই সময়ে শেয়ার কেনার জন্য বে লিজিং অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বিএলআই ক্যাপিটালকে ২০০ কোটি টাকা ঋণ দেয় সাউথইস্ট ব্যাংক। বে লিজিংয়ের একজন শেয়ারধারক রায়হান কবির, যিনি সাউথইস্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান আলমগীর কবিরের ছেলে। আবার জাকির আহমেদ খানও বে লিজিংয়ের স্বতন্ত্র পরিচালক। এ ঘটনায় সাউথইস্ট ব্যাংককে এর আগে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
ব্যাংক কোম্পানি আইনের ২৬ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক তার আদায় করা মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন আর্নিংয়ের ৫ শতাংশের বেশি অন্য কোম্পানির শেয়ার ধারণ করতে পারবে না, যার হিসাব হবে বাজারমূল্যে। আরও বলা হয়েছে, কোনো কোম্পানির পরিশোধিত মূলধনের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার কোনো ব্যাংক ধারণ করতে পারবে না।
এদিকে ইএম পাওয়ার নামের এক কোম্পানির প্লেসমেন্ট (প্রাক্‌–আইপিও) শেয়ারে ২২ কোটি ৫০ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছে সাউথইস্ট ব্যাংক। তবে এই বিনিয়োগ থেকে কোনো আয় হচ্ছে না। এ জন্য ঝুঁকি এড়াতে পুরো টাকা নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। পরিচালন মুনাফা থেকে এই সঞ্চিতি রাখতে হবে।

img

শেয়ারবাজার স্থিতিশীল করতে আইসিবি পাচ্ছে ৩ থেকে ৫ হাজার কোটি টাকা

প্রকাশিত :  ১০:১৯, ১৩ মে ২০২৪

সরকারি প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) মূলত শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে থাকে। শেয়ারবাজারের কার্যক্রম বাড়ানো এবং কিছু মেয়াদি আমানত পরিশোধ করার জন্য সংস্থাটি সরকারের কাছ থেকে তিন হাজার থেকে পাঁচ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত তহবিল পেতে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), অর্থ মন্ত্রণালয়, এবং আইসিবি-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঋণ-নিশ্চয়তার (সভরেইন গ্যারান্টি) সাপেক্ষে বাংলাদেশ ব্যাংক বিনিয়োগ ব্যাংকটিকে এই তহবিল সরবরাহ করবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন দিয়েছেন, শেয়ারবাজারের অন্যতম বৃহত্তম বিনিয়োগকারী আইসিবি\'র শেয়ারবাজারের কার্যক্রমকে সমর্থনে সরকারের তৎপরতার অংশ হিসেব সরকারি সুপারিশের সাথে সঙ্গতি রেখে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আইসিবি\'র চেয়ারম্যান সুবর্ণ বড়ুয়া সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, শেয়ারবাজারের জন্য সরকারের কাছ থেকে তহবিল সহায়তা পাওয়ার ব্যাপারে আমরা খুবই ইতিবাচক ও আশাবাদী। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইসিবিকে এই সংক্রান্ত প্রস্তাব জমা দিতে বলেছে এবং আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি।

আইসিবি\'র আরেক কর্মকর্তা সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এই তহবিলের বড় অংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা হবে। এছাড়া বাজারকে সহায়তা দিতে কয়েক বছর ধরে আইসিবি\'র নেওয়া উচ্চ-সুদের মেয়াদি কিছু আমানত পরিশোধ করতেও তহবিলের কিছু অংশ ব্যবহার করা হবে। তিনি বলেন, সরকারি এই তহবিল আইসিবি\'র বিনিয়োগ সক্ষমতা শক্তিশালী করার পাশাপাশি বাজারকে স্থিতিশীল করতে সহায়তা করবে। তাই এটি আমাদের এবং শেয়ার বাজারের জন্য খুব ইতিবাচক হবে।

এসইসি\'র একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বি বলেন, তারা তহবিল সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গেও কথা বলেছেন। \'কেন্দ্রীয় ব্যাংক তহবিল দিতে রাজি হয়েছে। তহবিল ছাড় হলে আইসিবি\'র বিনিয়োগ সক্ষমতা জোরদার হবে এবং সামগ্রিক বাজার উপকৃত হবে,\' তিনি আরও বলেন।