img

সংক্রমণের শঙ্কা নিয়েই শুরু হচ্ছে বিপিএল

প্রকাশিত :  ০৬:৪৮, ২১ জানুয়ারী ২০২২

সংক্রমণের শঙ্কা নিয়েই শুরু হচ্ছে বিপিএল

জনমত ডেস্ক: ১৬ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে বিপিএলের দলগুলোর করোনা টেস্ট। ১৭ জানুয়ারি প্রাথমিক টেস্টেই দেখা গেছে, তিন থেকে চারজন ক্রিকেটার পজিটিভ। সেদিনই বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী শঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, দেশে হু হু করে বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমিত হতে পারে ক্রিকেটারদেরও।
ডাঃ দেবাশীষ চৌধুরীর অনুমান সত্য। আরও কজন ক্রিকেটার করোনা পজিটিভ হিসেবে ধরা পড়েছেন। তবে তাদের নাম, সংখ্যা কিংবা কোন দলের ক্রিকেটার, সে ব্যাপারে জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন দেবাশীষ।
এমনিতে বিপিএল শুরুর আগে নিয়মিত দৃশ্য হলো মিরপুরের একাডেমি মাঠে গাদাগাদি করে দিনের নানা সময়ে একসঙ্গে একাধিক দলের অনুশীলন। kalerkanthoএবার অন্য বিকল্পের সন্ধান মেলায় অবশ্য কোনো কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি অনুশীলন নিয়ে গেছে সেখানেও। পূর্বাচলের মাসকো-সাকিব একাডেমিতে গিয়ে যেমন এক দিন অনুশীলন করে এসেছে সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বাধীন ফরচুন বরিশাল। গতকাল সেই একই গন্তব্যে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সও।
সেখানে নিজেদের মধ্যে দুই দলে ভাগ হয়ে খেলা টি-টোয়েন্টি ম্যাচের রানোৎসবই আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া বঙ্গবন্ধু বিপিএলজুড়ে দেখতে চাইবে দর্শকরা। যে ম্যাচে এক দল আরেক দলের ছুড়ে দেওয়া ২০৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছে ৪ উইকেটে!
কিন্তু আসরের শুরু থেকেই এ রকম কিছু দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনায় আস্থাহীনতাও প্রবল। কারণ আজ উদ্বোধনী দিনে দুপুর দেড়টায় ফরচুন বরিশাল-চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় খুলনা টাইগার্স-মিনিস্টার গ্রুপ ঢাকার লড়াইয়ের উত্তাপ কেড়ে নেওয়ার জন্য যে আছে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের উইকেট। ব্যাটারদের জন্য যা অনেক দিন থেকেই বধ্যভূমি হিসেবে পরিচিত। গত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে এখানকার উইকেটে খেলে নাস্তানাবুদ হয়ে গেছে এমনকি অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের ব্যাটাররাও। একই সঙ্গে এখানকার নিচু বাউন্স ও ধীরগতির উইকেটে খেলার কুফল মধ্যপ্রাচ্যে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েও ভোগ করে এসেছে বাংলাদেশ দল। কাজেই শুরুর রং অনেকটাই মলিন হওয়ার সংশয় থাকছেই।
অবশ্য দুই বছরের বিরতির পর যখন আরেকটি বিপিএল শুরু হচ্ছে, তখন সেটি অনেক কিছু না থাকার আসরও হয়ে উঠতে চলেছে। আয়োজক বিসিবির পক্ষ থেকে বরাবরই এটিকে আন্তর্জাতিক মানের আয়োজন বলে গলা ফাটানো হলেও আবশ্যিক অনেক অনুষঙ্গই নেই বিপিএলের এই অষ্টম আসরে। যেমন—এই ধরনের আয়োজনে বাধ্যতামূলক বলে গণ্য ডিআরএস বা ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম থাকছেই না। যদিও ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে যাওয়া পাকিস্তান সুপার লিগে (পিএসএল) তা আছে। এমনকি আছে শ্রীলঙ্কায় জিম্বাবুয়ের সঙ্গে চলতি ‘লো প্রফাইল’ সিরিজেও। এটি না থাকায় আম্পায়ারদের মানবীয় ভুলে যেকোনো সময় যেকোনো দলের বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকিও উন্মুক্ত থাকছে ভালোভাবেই। ডিআরএস আনতে না পারুক, বিসিবি অন্তত বিদেশি আম্পায়ার এনে ম্যাচ পরিচালনার আশায় ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিদেশি কোনো আম্পায়ারকেও আনা যায়নি। আর দেশে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় খেলার প্রাণ দর্শকদেরও এবার গ্যালারিতে প্রবেশাধিকার থাকছে না।
এত কিছু না থাকার সঙ্গে আবার যুক্ত হয়েছে কভিড সংক্রমণের শঙ্কাও। আসর শুরুর এক দিন আগেও এমইই (ম্যানেজড ইভেন্ট এনভায়রনমেন্ট) যথাযথভাবে শুরু করা যায়নি। প্রায় প্রতিদিনই কোনো না কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির জার্সি উন্মোচন অনুষ্ঠানে ব্যাপক জনসমাগমে সংক্রমণের ঝুঁকি যে শুধুই বেড়েছে, গতকাল সংশ্লিষ্ট অনেকের কভিড পজিটিভ হওয়ার মধ্য দিয়ে তা প্রমাণিতও। তবু আসর স্থগিত হওয়ার মতো কিছু না ঘটার আশায় আয়োজকরা। যে আয়োজনে প্রতিবারই কোনো না কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলেও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্যসচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক এই ভেবে তুষ্ট, ‘ওয়ার্নার বলুন, স্টিভ স্মিথ বা রশীদ খান, কোনো বড় খেলোয়াড় বিপিএলে এসে খেলে যায়নি? বড় বড় খেলোয়াড়রা এসে খেলছে এখানে। সেদিক থেকে আমরা খুশি। ’
এই আসরেও বড় তারকার অভাব নেই। টি-টোয়েন্টির মহাতারকা আন্দ্রে রাসেল খেলবেন মিনিস্টার ঢাকার হয়ে। টি-টোয়েন্টির সফলতম বোলার ডোয়াইন ব্রাভোর সঙ্গে ফরচুন বরিশালে এসে যোগ দেওয়ার কথা আছে ‘ইউনিভার্স বস’ ক্রিস গেইলেরও। প্রথমবারের মতো কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের হয়ে বিপিএল মাতাতে এসেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ফাফ দু প্লেসিও। অবশ্য এই তারকাদের উপস্থিতিও কোনোভাবেই এবারের বিপিএলের অনেক না থাকা আড়াল করতে পারছে না!


img

যে কারণে বাদ সাইফউদ্দিন

প্রকাশিত :  ১০:৪৯, ১৪ মে ২০২৪

অনেক অপেক্ষার পর অবশেষে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছে। এই দলে রয়েছে বেশ কয়েকটা চমকও। ইনজুরিতে থাকা তাসকিন আহমেদকে আইসিসির এই মেগা আসরে টাইগারদের সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে দলে জায়গা মেলেনি পেস অলরাউন্ডার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের। তার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় উৎরে গেছেন পেসার তানজিম হাসান সাকিব।

৩৬ মিনিটের সংবাদ সম্মলেনে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুকে সবচেয়ে বেশি প্রশ্নের উত্তর দিতে হয়েছে সাইফুদ্দিনের বাদ পড়া আর তানজীমের অন্তর্ভুক্তি নিয়ে। প্রধান নির্বাচকের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাকি দুই নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাক ও হান্নান সরকার। 

এক প্রশ্নের উত্তর লিপু বলেন, ‘এখানে সবাই খুব ক্লোজ লড়াই করেছে। যে দলটা দিয়েছিলাম ৩০ তারিখে সেটা এক প্রেক্ষাপটে দিয়েছিলাম। সেখানে দুটো চিন্তা ছিল যে বর্তমান ক্রিকেটারদের নিয়েই দল করা। আর একটা চিন্তা ছিল ইনজুরি থেকে ফেরা ক্রিকেটাররা যেমন সাইফউদ্দিন কেমন করে তা দেখা। তো আমাদের যে আস্থার জায়গাটা। সেখানে সাইফউদ্দিনের চেয়ে তানজিম একটু এগিয়ে ছিল। এজন্য ওকে আমরা দলে রেখেছি।’

সদ্য শেষ হওয়া জিম্বাবুয়ে সিরিজে সাইফুদ্দিন খেলেছেন ৪ ম্যাচ। চট্টগ্রামে প্রথম তিনটি আর ঢাকায় শেষ ম্যাচটি। চট্টগ্রামে প্রথম ম্যাচে ছিলেন দুর্দান্ত, ১৫ রানে নেন ৩ উইকেট। এরপরের তিন ম্যাচে সাইফুদ্দিনের পারফরম্যান্স যথাক্রমে ১ উইকেটে ৩৭, ৩ উইকেটে ৪২ ও ১ উইকেটে ৫৫ রান।

শেষ ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে হাত খুলে রান দেয়াটাই কাল হয়েছে সাইফুদ্দিনের। এই ম্যাচটি বাংলাদেশ হারে শেষ পর্যন্ত। অন্যদিকে তানজীম হাসান সাকিব দুই ম্যাচ খেলেন। চট্টগ্রামে ১ ম্যাচে ২৬ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট, ঢাকায় চতুর্থ ম্যাচে ৪২ রান দিয়ে কোনো উইকেট পাননি। 

৪ ম্যাচে সাইফুদ্দিন ৮ উইকেট নিয়েও কেন বাদ? অন্যদিকে মাত্র ১ উইকেট নেওয়া তানজীমে কেন নির্বাচকদের আস্থা? সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন প্রধান নির্বাচক, ‘সাকিবকে (তানজীম) শ্রীলঙ্কা সিরিজেও আমরা দেখেছি। তার একাগ্রতা, মাঠে দেয়ার চেষ্টা সেটা সাইফুদ্দিনের চেয়ে কিছুটা এগিয়ে রেখেছে।’

‘আমরা যে কারণে সাইফউদ্দিনের দিকে তাকিয়ে ছিলাম যে ডেথ ওভারে ইয়র্কার করা, সেটা ঘরোয়া ক্রিকেটে যেমন ছিল তার চেয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একটু ব্যতিক্রম মনে হয়েছে। তাই আমরা একটু ভিন্ন চিন্তা করেছি। ৩০ তারিখে যে দলটা দিয়েছিলাম সেখান থেকে একমাত্র এ জায়গাটাতেই পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের আসলে সাইফউদ্দিন ও সাকিবের সঙ্গেই লড়াই চলছিল’-আরও যোগ করেন প্রধান নির্বাচক। 

বিপিএলে দুর্দান্ত পারফর্ম করে নির্বাচকদের নজরে আসেন ইনজুরির সঙ্গে লড়াই করা সাইফুদ্দিন। ৯ ম্যাচে ১৫ উইকেটের পাশাপাশি ব্যাট হাতে করেন ৬৩ রান। ফরচুন বরিশালের চ্যাম্পিয়নে রাখেন বড় ভূমিকা। তবে সেই পারফরম্যান্স ধরে রাখতে পারেননি জিম্বাবুয়ে সিরিজে। তাই তো দলে থেকেও শেষ পর্যন্ত নাই হয়ে গেলেন।