img

মা-কে নিয়ে সঞ্জয় দে-র 'তুমি মা' গানটি ছুঁয়ে গেছে শ্রোতাদের হৃদয়

প্রকাশিত :  ১৩:৫১, ২৭ মার্চ ২০২২
সর্বশেষ আপডেট: ১৪:১৪, ২৭ মার্চ ২০২২

মা-কে নিয়ে সঞ্জয় দে-র 'তুমি মা' গানটি ছুঁয়ে গেছে শ্রোতাদের হৃদয়

২৭ মার্চ, রোববার - 'মা দিবস' মা-কে নিয়ে বাংলা গান খুব বেশি আছে, তা বলা যাবে না। যেটুকু আছে, তার মধ্যে মা-কে হারানোর, হারিয়ে ফেলে মনে করার গানই বেশি। নিজেরই কথায়-সুরে রচিত সঞ্জয় দে- গাওয়া গান 'তুমি মা' সেই দিক থেকে দেখতে গেলে একটি ব্যতিক্রম। এই গানে মায়ের প্রতি সন্তানের মনের কৃতজ্ঞতার, ভালোবাসার ভাবটি সহজ কথায় ধরা পড়েছে। উদযাপিত হয়েছে মা-সন্তানের মধুর সম্পর্কটি। 

'তুমি মা' গানটি ইতোমধ্যে বহু মানুষের মন জয় করেছে। গানটি বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হচ্ছে এবং রেকর্ড করা শুরু হয়েছে। এইভাবেই প্রত্যেকের মধ্যে ফিরে আসুক নিজেদের জীবনের সর্বপ্রথম সম্পর্কটির প্রতি সম্মানবোধ। ফিরে আসুক পারিবারিক সামাজিক মূল্যবোধ, যা দেখে আমাদের নতুন প্রজন্মও শিখবে কৃতজ্ঞতা শ্রদ্ধা জানাতে। গানটি ইউটিউবে শোনা যাচ্ছে। 

কথায় -সুরে - সঙ্গীতায়জনে অসাধারণ গানটি সহজেই ছুঁয়ে যাবে সবার মন...


গানটির লিরিক্স এমন -


কত যে কথা তোমার বুকে

রয়েছে লেখা 

সব সয়ে যাওয়া তোমারি 

কাছে শেখা 

বলো তোমার মতো জগতে 

 কে আর আছে মা 

 

তুমি মা পৃথিবীতে 

কত খুশি যে হও অল্পে

কষ্ট  ভার বুকে বয়ে 

সুখের কথা শোনাও  গল্পে

কখনো মায়েরই মতো এমন 

আর কেউ  হয় না মা 


তুমি মা অভয় দিয়ে 

আগলে রাখো ঝড়ে তুফানে  

যেমনি বাধা আসুক 

সামলে নিয়ে চলো সমানে 

পেরিয়ে যাবো সব বাধা  আজ  

পাশে তুমি  থেকো মা

 

 

 

img

মানুষ শারীরিক সক্ষমতার চেয়ে মানসিক শক্তিতে বড় হয়.....

প্রকাশিত :  ০৬:৩১, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ০৭:০৯, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

রেজুয়ান আহম্মেদ

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বেডে শুয়ে থাকা ফুটফুটে সেই ছেলেটির চেহারা আমাদের হৃদয়ে অমোঘ এক দাগ কেটে গেছে। সে একটি স্বপ্ন দেখত, ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন। কিন্তু জীবন কখনো কখনো নিষ্ঠুর বাস্তবতার মুখোমুখি করে দেয়, যেখানে সব স্বপ্নগুলো যেন মুহূর্তেই ভেঙে পড়ে। তার পা হারিয়ে যাওয়া মানে শুধুমাত্র শারীরিক অসুস্থতা নয়, তার সমস্ত স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষারও বিনাশ। এই বাস্তবতা এতটাই নির্মম যে, তার মতো সাহসী একটি তরুণের চোখেও নিরাশার ছায়া পড়েছে।

ছেলেটির মুখে কথা ফোটে, “স্যার, আমার ক্রিকেট খেলার অনেক শখ ছিল, আমি এখন কিভাবে ক্রিকেট খেলব?” কথাটি শুনে মুহূর্তের জন্য থমকে যান আমাদের মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। ড. ইউনুস মানুষের দুঃখ, কষ্ট, স্বপ্ন ও বেদনা বোঝার অসামান্য ক্ষমতা রাখেন। তিনি শুধুমাত্র একজন নেতা নন, তিনি একজন মানবদরদী। তার চোখে তখন অশ্রু চলে আসে, একটি তরুণ হৃদয়ের স্বপ্ন ভাঙার এই মুহূর্তে তার মানবিকতা তাকে গভীরভাবে আঘাত করে।

ড. ইউনুস কিছুক্ষণ নীরব থাকেন। তিনি বুঝতে পারেন, শুধু একটি পা হারানো নয়, এই ছেলেটি তার জীবন হারিয়েছে, তার স্বপ্নগুলোও যেন ঝরে গেছে। কিন্তু ড. ইউনুস একজন লড়াকু মানুষ। তিনি জানেন, জীবনে বড় কিছু করতে গেলে শুধুমাত্র শারীরিক সক্ষমতা নয়, মানসিক শক্তিও অপরিহার্য। তিনি বুঝতে পারছেন, এই ছেলেটির জীবন থেকে ক্রিকেটের স্বপ্ন হারিয়ে গেছে, কিন্তু তার সামনে জীবনের আরও অনেক পথ খোলা।

তিনি সেই ছেলেটির মাথায় হাত বুলিয়ে বলেন, "তুমি শুধু একজন ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলে, কিন্তু তুমি জীবনে আরও অনেক কিছু করতে পারো। পা হারিয়ে গেছে, কিন্তু তোমার ইচ্ছাশক্তি, তোমার মেধা, তোমার মনোবল এখনও অটুট আছে। মানুষ শারীরিক সক্ষমতার চেয়ে মানসিক শক্তিতে বড় হয়। তুমি যদি চেষ্টা করো, তাহলে জীবন তোমাকে অন্য কোনো পথ খুলে দেবে।"

ড. ইউনুসের এই কথাগুলো ছিল শুধু কথাই নয়, এটি ছিল সেই ছেলেটির ভেতরে নতুন করে আশার সঞ্চার করা। জীবন কখনোই থেমে যায় না, এবং একজন প্রকৃত যোদ্ধা জীবনের প্রতিটি ধাপে লড়াই চালিয়ে যায়। ছেলেটি হয়তো তার শারীরিক সামর্থ্য হারিয়েছে, কিন্তু তার মানসিক শক্তি এখনও অপরাজেয়। এই ছেলেটিকে নতুন করে উৎসাহিত করতে ড. ইউনুসের মতো একজন মানবিক নেতার প্রয়োজন ছিল।

জীবনে এমন অনেক পরিস্থিতি আসে যখন আমরা মনে করি, সব শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কিছুই শেষ হয় না। যেখানেই হোক না কেন, জীবনের নতুন দরজা খোলা অপেক্ষা করে। আমাদের নিজেদের মধ্যে সেই মনোবল রাখতে হবে, যে কোনো পরিস্থিতি থেকে ফিরে আসার ক্ষমতা থাকতে হবে। যারা নিজেদের ভেতরের শক্তিকে কাজে লাগায়, তারা কখনোই হেরে যায় না।

এই ছেলেটি যদি নিজের ভেতরে সেই আশার আলো জ্বালাতে পারে, তবে সে জীবনের অন্য কোনো দিক থেকে সফল হতে পারবে। জীবনের একটি দিক বন্ধ হলে, অন্য দিক খুলে যায়। জীবন শুধু শারীরিক সক্ষমতার উপর নির্ভর করে না, এটি আমাদের মন ও মস্তিষ্কের শক্তিতে পরিচালিত হয়।

মানুষের জীবনে অনেক সংগ্রাম আসে, কিন্তু সেই সংগ্রামগুলোই মানুষকে আরও দৃঢ় ও শক্তিশালী করে তোলে। এই ছেলেটির মতো যারা নিজেদের স্বপ্ন হারিয়েছে, তাদের জন্য আমাদের সমর্থন ও ভালোবাসা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়িয়ে নতুন স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করা। কারণ জীবন কখনো থেমে থাকে না, জীবন সবসময় এগিয়ে যায়।

ড. ইউনুসের এই হৃদয়বিদারক মুহূর্ত আমাদেরকে শিখিয়ে দেয়, মানুষের জীবনে যতই দুঃখ ও বেদনা আসুক না কেন, সেই বেদনাকে অতিক্রম করে সামনে এগিয়ে যাওয়ার সাহসিকতা রাখতে হবে। জীবন যতই কঠিন হোক, তার সামনে মাথা নত করতে নেই।




রেজুয়ান আহম্মেদ: কলামিস্ট, বিশ্লেষক; সম্পাদক অর্থনীতি ডটকম