শিশুদের হাঁপানি প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
হাঁপানি এমন একটি রোগ, যা হতে পারে যে কোনো বয়সেই। বড়রা \r\nনিজেদের সমস্যা বুঝতে এবং জানাতে পারেন সহজেই। কিন্তু ছোট্ট সোনামণির \r\nহাঁপানি হলে তা কীভাবে বুঝবেন? জেনে নিন শিশুর হাঁপানির লক্ষণ এবং হাঁপানির\r\n প্রকোপ প্রতিরোধ করার উপায়গুলো।
কোন বয়সে ধরা পড়বে হাঁপানি?
বিশেষজ্ঞরা\r\n বলেন, ১২ থেকে ১৮ মাস বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে বাবা-মার পক্ষে সাধারণত \r\nহাঁপানি রোগের লক্ষণ বুঝতে পারা কঠিন। কারণ তখনও বাচ্চাদের শ্বাসনালী সরু \r\nথাকে, তাই শোঁ শোঁ করে শ্বাস নেয়া স্বাভাবিক হিসেবেই ধরা হয়।
কিন্তু \r\nশিশুর বয়স ১৮ মাস পেরুনোর পর হাঁপানির লক্ষণ দেখা দিলে সেটা সহজেই চোখে \r\nপড়ে। সেক্ষেত্রে দেরি না করে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ। তাহলে ছোট \r\nথেকেই হাঁপানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব।
হাঁপানির লক্ষণগুলো কী কী?
ঠান্ডা-সর্দি\r\n ছাড়া কাশি লেগে থাকা, ঠাণ্ডা-সর্দি হলে কাশি অনেক বেড়ে যাওয়া এবং সর্দি \r\nভাল হয়ে যাবার পরও যদি কাশি ভাল না হয়ে চলতে থাকে তাহলে সেটা হতে পারে \r\nহাঁপানির একটি লক্ষণ। পাশাপাশি বাবু নিঃশ্বাস নেয়ার সময় শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া ,\r\n কিংবা নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, এসব লক্ষণও দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা\r\n বলেন, লক্ষ্য করলেই আপনি দেখতে পাবেন আপনার সন্তান নিঃশ্বাস নেয়ার সময় তার\r\n বুক খুব জোরে জোরে ওঠানামা করছে, স্বাভাবিকের চেয়ে একটু বেশিই পরিশ্রম \r\nকরতে হচ্ছে তাকে।
হাঁপানি আক্রান্ত বাচ্চাদের নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় \r\nযার ফলে তারা বেশিরভাগ সময়ই ক্লান্ত থাকে । সাধারণত বাবা-মায়েদের চোখে খুব\r\n সহজেই লক্ষণগুলো ধরা পড়ে। যদি এমন কোনো লক্ষণ আপনার সন্তানের মধ্যে দেখতে\r\n পান তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান বাবুকে।
শিশুদের হাঁপানির চিকিৎসা
একদম\r\n ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে রোগের প্রকোপ বুঝে চিকিৎসা করা হয়। হাঁপানির কষ্ট\r\n লাঘবে এবং হাঁপানির প্রকোপ প্রতিরোধের জন্য বাজারে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ \r\nসহজলভ্য।
বাচ্চাদের ওষুধ খাওয়াবেন যেভাবে
হাঁপানির\r\n চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধগুলি সাধারণত ইনহেলার বা স্প্রের মাধ্যমে দেয়া হয়। \r\nএই বয়সের বাচ্চাদের জন্য ওষুধ একেবারে নতুন, তাই তাদের ওষুধের সঙ্গে পরিচিত\r\n করাতে হবে ধৈর্যের সঙ্গে। হাঁপানির ইনহেলার বা স্প্রে সরাসরি মুখে না দিয়ে\r\n টেনে একটি স্পেসার ও মাস্কের সঙ্গে লাগিয়ে স্প্রে করার ব্যবস্থা করা যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফুসফুসে সরাসরি ওষুধ পৌঁছানোর জন্য এই পদ্ধতি খুবই কার্যকর।
বাচ্চাকে\r\n মাস্কটি নিয়ে খেলতে দিন, তাকে বোঝান এটি খেলনার মতই কিছু। আপনি নিজে মুখে\r\n লাগিয়ে দেখান, তারপর ওর মুখে লাগিয়ে দিন। এভাবে বাবু জিনিসটার সঙ্গে \r\nপরিচিত হবে, পরবর্তীতে স্প্রে করার সময় ভয় পাবে না।
এরপরও \r\nযদি বাচ্চা ভয় পায় কিংবা মাস্ক পড়তে না চায়, তাহলে আপনি স্প্রেসহ মাস্কটি \r\nতার মুখে লাগিয়ে রাখতে পারেন। বাচ্চা হয়ত হাত-পা ছোঁড়াছুড়ি করবে, চিৎকার \r\nকরবে, কিন্তু যতক্ষণ স্প্রেসহ মাস্কটি তার মুখে লাগানো আছে সে প্রয়োজনীয় \r\nওষুধ ঠিকই পাবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আপনি জোর করে তিনবার এভাবে ওষুধ \r\nদিলে পরেরবার আপনার বাচ্চা ঠিকই বুঝে যাবে এটার কাজ কী। সে বুঝবে, যখনই তার\r\n কাশি বাড়বে এবং নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হবে, তখন এই মাস্ক লাগালে সে ভাল অনুভব\r\n করবে।
সুখবর হল, যেসব বাচ্চাদের একদম ছোট বয়সে হাঁপানি ধরা পড়ে, অনেক ক্ষেত্রেই ৫-৬ বছর বয়সে রোগ ভাল হয়ে যায়।
বাবা-মায়েরা মনে রাখবেন
কিছু\r\n নির্দিষ্ট কারণে হাঁপানির টান ওঠে। একেকজন মানুষের জন্য কারণগুলো একেক \r\nরকম। শিশুরা যেহেতু নিজেরা বিষয়টি বুঝতে এবং বুঝিয়ে বলতে অক্ষম, তাই এ \r\nবিষয়গুলো খেয়াল রাখতে হবে আপনাকেই।
ঠিক কোন সময় বাচ্চার নিঃশ্বাস \r\nনিতে সমস্যা হচ্ছে, কাশি বেড়ে যাচ্ছে, তা কিছুদিনের মধ্যেই টের পাবেন। কোন \r\nনির্দিষ্ট খাবার বা ধুলাবালিতে তার হাঁপানি বেড়ে গেলে এগুলো থেকে দূরে \r\nরাখুন। পাশাপাশি হাঁপানি বেড়ে গেলে সময়মত ওষুধ দিয়ে সন্তানের কষ্ট অনেকটাই \r\nকমানো সম্ভব।
বেশিরভাগ সময় ক্ষেত্রে হাঁপানি রোগের বংশগত ইতিহাস \r\nথাকে। দেখা যায় বাবা কিংবা মায়ের কেউ একজন এই রোগে আক্রান্ত। তাই হাঁপানি \r\nসম্পর্কে অভিজ্ঞ কেউ না কেউ থাকেই বাড়িতে।
সন্তান যখন অন্যের কাছে
বাচ্চার\r\n হাঁপানি উঠলে কী কী করতে হবে চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলে তার একটি চার্ট তৈরি\r\n করুন। ডে কেয়ার, প্রি স্কুল কিংবা কিন্ডারগাটর্েন - যেখানেই শিশু যাক, \r\nসঙ্গে অবশ্যই চার্টটি দেবেন। তাহলে শিশু চোখের আড়ালে থাকলেও নিরাপদে থাকবে।