img

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে ইসলাম

প্রকাশিত :  ০৯:৩৮, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২২

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে ইসলাম

 তোফায়েল গাজালি 

মানবজীবন পরিচালনার পরিপূর্ণ দিকনির্দেশনা হলো ইসলাম। জীবন ও সমাজের এমন কোনো দিক নেই, যে বিষয়ে ইসলাম সুস্পষ্ট নীতিমালা উপস্থাপন করেনি।

কৃষক-মজুর, কুলি-মালি, অফিসার-প্রফেসর, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী-গরিব সবার জন্য ইসলামের রয়েছে ভারসম্যপূর্ণ সুনিপুণ জীবনপদ্ধতি।

রাসূল (সা.) তার দীর্ঘ ২৩ বছরের নবুওয়াতি জীবনে ওহির শিক্ষার আলোকে এ জীবন পদ্ধতির বাস্তব উদাহরণ পেশ করে গেছেন। ভোক্তা অধিকার রক্ষায় তাঁর সুস্পষ্ট ঘোষণা ‘মুসলমান ভাই ভাই। কোনো মুসলিমের জন্য বৈধ নয় যে, সে তার ভাইকে না জানিয়ে তার কাছে ত্রুটিযুক্ত কোনো কিছু বিক্রি করবে।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ)।

ইসলামি আইনে পণ্য সম্পর্কিত সঠিক ও বস্তুনিষ্ঠ তথ্য ভোক্তাকে অবগত করা ওয়াজিব। পণ্যের ত্রুটি গোপন রাখা মহাঅপরাধ। পণ্যের যথাযথ দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করে বিক্রি না করলে ক্রেতার সঙ্গে প্রতারণার কারণে বিক্রেতা প্রতারক সাব্যস্ত হবে এবং প্রতারণার গোনাহের কারণে কেয়ামতের দিন কঠিন আজাবের মুখোমুখি হবে। আল্লাহর রাসূল (সা.) প্রতারকদের উম্মত থেকে বের করে দিয়েছেন।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রাসূল (সা.) একটি খাদ্য স্তূপের পাশ দিয়ে যাওয়ার পথে স্তূপের ভেতরে হাত ঢুকিয়ে দিয়ে তা ভেজা দেখতে পেলেন। তখন পণ্যের মালিককে প্রশ্ন করলেন কী ব্যাপার? সে জবাব দিল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! বৃষ্টিতে ভিজে গেছে।

রাসূল (সা.) বললেন, তা হলে তা তুমি গোপন করলে কেন? ওপরে রাখতে পারলে না? যেন ক্রেতারা দেখে-শুনে নিতে পারে? মনে রাখবে, যারা প্রতারণা করে তারা আমার উম্মত নয়।’ (রিয়াদুস সালেহিন)।

ভোক্তা অধিকার নিশ্চিত করতে মজুতদারিকে ইসলামে কঠিনভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। মজুতদারকে পাপিষ্ঠ বলে ঘোষণা করেছেন রাসূল (সা.)। মুসলিম শরিফের হাদিস-নবিজি (সা.) বলেন, ‘পাপিষ্ঠ ব্যক্তি ছাড়া কেউ মজুতদারি করে না। হানাফি মাজহাবে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য মজুত করা মাকরুহ তাহরিমি (হারাম পর্যায়ের)। অন্যান্য মাজহাবে এটি হারাম। কেননা এর ফলে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে যায় এবং বহু মানুষ দুর্ভোগে পতিত হয়। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ৪০ দিন খাদ্যদ্রব্য মূল্যবৃদ্ধির উদ্দেশ্যে গুদামজাত করে রাখবে, সে আল্লাহর হেফাজত থেকে বেরিয়ে যাবে। আর আল্লাহ তাঁর ওপর থেকে তাঁর দায়িত্ব তুলে নেবেন।’ (মুসনাদে আহমাদ)।

সাধারণ ভোক্তাদের কষ্ট দিয়ে কেউ সাময়িক সম্পদশালী হয়ে গেলেও কোনো লাভ নেই। এ সম্পদে তার জন্য দুনিয়ায়ই কাল হয়ে দাঁড়াবে। ডেকে নিয়ে আসবে বহু রকমের বিপর্যয়। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘কেউ যদি খাদ্য গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে, আল্লাহতায়ালা তাকে দুরারোগ্য ব্যাধি ও দারিদ্র্য দ্বারা শাস্তি দেবেন।’ (ইবনে মাজাহ ২১৫৫)।

একজন ভোক্তার প্রধানতম অধিকার সঠিক ওজনে পণ্য বুঝে নেওয়া। যে ওজনে কম দেয় সে মহান রবের দৃষ্টিতে অভিশপ্ত। আল্লাহ তাকে ঘৃণা করেন। এমন হারাম ভক্ষণকারীদের থেকে দূরে থাকতে আল্লাহ নির্দেশ করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা মাপে পূর্ণমাত্রায় দেবে, যারা মাপে কম দেয় তোমরা তাদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না এবং সঠিক দাঁড়িপাল্লায় ওজন করো। এবং মানুষকে তাদের বস্তু কম দিয়ো না।’ (সূরা : শুআরা, আয়াত : ১৮১-১৮৩)।

মানবতার কল্যাণে ইসলামের আবির্ভাব। মানবতার শান্তি ও মুক্তিই ইসলাম। প্রত্যেক মুসলমানের জন্য অত্যাবশ্যকীয় হলো নিজ নিজ জায়গা থেকে-ভোক্তা অধিকারের প্রতি সতর্ক থাকা। ভোক্তার মৌলিক চাহিদা পূরণ যেমন-খাদ্য, পানীয়, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার প্রতি সর্বাবস্থায় সজাগ ও সচেতন থাকা ইমানদারে মৌলিক দায়িত্বও বটে।

img

শেষ দিনে ভিসার অপেক্ষায় ৩৭ শতাংশ হজযাত্রী

প্রকাশিত :  ১০:৫৯, ১১ মে ২০২৪
সর্বশেষ আপডেট: ১২:৫৪, ১১ মে ২০২৪

হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করার জন্য দ্বিতীয় দফায় আবেদনের জন্য বাড়ানো সময় শেষ হচ্ছে আজ শনিবার।  কিন্তু এখন পর্যন্ত ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়নি। 

শনিবার সকালে আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিনে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৫৩ হাজার ৮৯৯ হজযাত্রীর ভিসা হয়েছে। এ বছর সরকারি-বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন। সেই হিসাবে এখনো ৩৭ শতাংশ হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

হজ এজেন্সি মালিক ও ধর্ম মন্ত্রণালয় আশা করছে, শনিবারের মধ্যে বেশিরভাগ হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়ে যাবে। অল্প কিছু বাকি থাকলে, সেটাও দু-একদিনের মধ্যে করার জন্য সময় পাওয়া যাবে। তাই ভিসা জটিলতায় কেউ হজে যেতে পারবেন না- এমনটা হওয়ার সুযোগ নেই।

ধর্ম মন্ত্রণালয় এর আগে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ভিসা সম্পন্নের নির্দেশনা দিয়েছিল । এরপর সেটি ৭ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সবশেষ ভিসা আবেদনের সময় বাড়িয়ে ১১ মে করা হয়। এ সময়ের মধ্যে হজযাত্রীর ভিসা কার্যক্রম সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হলে উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে দায়-দায়িত্ব বহন করতে হবে বলে জানিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪ হাজার ৫৬২ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এজেন্সির মাধ্যমে ৮০ হাজার ৬৯৫ জনসহ মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দুই দিন পবিত্র হজ পালন করতে সৌদি আরব গেছেন ৬ হাজার ৩৯২ জন যাত্রী। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার পবিত্র হজ পালনে বাংলাদেশ থেকে সাতটি ফ্লাইটে সৌদি আরব গেছেন ২ হাজার ৭৬৯ জন যাত্রী। দ্বিতীয় দিন শুক্রবার ৯টি ফ্লাইটে সৌদি আরব গেছেন ৩ হাজার ৬২৩ জন হজযাত্রী। 

এর মধ্যে বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইন্সে চারটি ফ্লাইটে ১ হাজার ৬৬৮ জন, সৌদি এয়ারলাইন্সের ১টি ফ্লাইটে ৪৪৫ জন, ফ্লাইনাস এয়ারলাইন্সে চারটি ফ্লাইটে ১ হাজার ৫১০ জন সৌদি আরব গেছেন। দুই দিনে তিন বিমান সংস্থার ১৬টি ফ্লাইটে ৬ হাজার ৩৯২ হজযাত্রী ঢাকা ছেড়েছেন।

বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় যাত্রীদের সেবা নিশ্চিত করতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। কোনো অভিযোগ ছাড়াই যাত্রীরা ঢাকা ত্যাগ করছেন।

এদিকে বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে যাদের ভিসা হয়নি তারা উৎকণ্ঠায় রয়েছেন। যদিও ধর্মমন্ত্রী আশ্বস্ত করেছেন ভিসা নিয়ে জটিলতা কেটে যাবে। ২৫৯টি বেসরকারি হজ এজেন্সির অনেকেই প্রথম দফার বর্ধিত সময়ের মধ্যে ভিসার কার্যক্রম শেষ না করায় দ্বিতীয় দফা সময় বাড়ানো হয়েছে।